ভার্সিটির একটি মিটিং || ১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাকের🦊 জন্য থাকলো
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
১৯ই- মার্চ, শনিবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।কিছুদিন আগে ভার্সিটিতে আমাদের সকল ডিপার্টমেন্টের সাথে একটি মিটিং ছিল। সেই দিনটি আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
বড় ভাই এবং আমাদের ভার্সিটির ক্লাবের সকলের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে, এজন্য তারা আমাকে অনেক আদর করে ছোট ভাই হিসেবে। তারা শুক্রবারে একটি মিটিংয়ের আয়োজন করল এবং সেই মিটিং-এ আমাকে এবং আমার ব্যাচ থেকে কয়েকজনকে আসতে বলল। আমি তাদেরকে বললাম শুক্রবার আমাদের পরীক্ষা রয়েছে আমরা আসতে পারবো না, কিন্তু ভার্সিটির বড় ভাইরা কোনভাবে রাজী হচ্ছিল না আমাকে থাকতেই হবে, সত্যি বলতে আমারও ভার্সিটি যেতে খুব ইচ্ছা করছে কারণ সেমিস্টার গুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে অনলাইনে।
মিটিং এর সময় ছিল ১১ টা থেকে কিন্তু আমাদের সকাল থেকেই এক্সাম ছিল আমার লাস্ট এক্সাম ছিল দুপুর ২ টায়। আমি সবাইকে বললাম আমি আসতে পারবো কিন্তু যেহেতু পরীক্ষা অনলাইনে আমাকে একটি পরীক্ষা অ্যাটেন্ড করতে হবে তারপর আমি মিটিংয়ে আসতে পারবো।
আমরা একসাথে পড়াশোনা করছি কিন্তু আমরা একে অপরকে চিনি না, এরকম প্রোগ্রামগুলোতে আসলেই দু একজনের সাথে পরিচয় হয়, এবং ভালো লাগবে সেজন্য আমি সবাইকে আসতে বলি। তবে বেশীরভাগ মানুষই চাকরিজীবী তাই তাদের সময় হয়নি।
আমরা কোন রকম ভাবে দুইটা পরীক্ষা অনলাইনে শেষ করলাম, তারপর রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হলাম, হালকা কিছু নাস্তা করে নিলাম কারণ আমাদের আসতে আসতে রাত হয়ে যাবে। সবাই তাদের নির্দিষ্ট হাতের কাছে মসজিদগুলোতে জুম্মার নামাজ পড়ে নিল। আমাদের সবার একসাথে হতে হতে প্রায় দুটো বেজে যায়।
প্রথমে আমরা লাইব্রেরীতে বসে আমাদের অনলাইন পরীক্ষা জন্য প্রস্তুতি নিলাম। কিন্তু লাইব্রেরীতে নেটওয়ার্ক জনিত সমস্যা থাকার কারণে আমরা বাহিরে বসলাম পরীক্ষা দেয়ার জন্য, এক ঘণ্টার মধ্যে আমরা আমাদের পরীক্ষা দিয়ে শেষ করতে পারলাম।
এরপর আমরা চায়ের একটি বিরতি নিলাম আমরা ভার্সিটি থেকে বের হয়ে খানিকটা দূরে আসলাম চা খাওয়ার জন্য, অনেকেই আসতে পারেনি, কারণ পরীক্ষা এবং খুবই কম সময় নিয়ে এখানে আসতে হবে, অনেকের ক্ষেত্রে সেটি পসিবল হয়নি।
চা খাওয়ার সময় আমরা ছবি তুললাম, মাক্স পড়া ছেলেটি ছবি তোলার পর এই হাত থেকে চা ফেলে দেয়। তারপর আমরা বললাম আরেকটি চা নেয়ার জন্য কিন্তু ছেলেটি খেতে চাইলো না, তারপর আমরা বাড়ির দিকে রওনা হলাম।
এর মধ্যে বড় ভাইয়েরা ফোন করলো যে টিচাররা প্রায় এসে পড়েছে এখন আমাদেরকে ভার্সিটির ভিতর থাকতে হবে কিছু সময়ের মধ্যে মিটিং শুরু হয়ে যাবে।
আমরা ভার্সিটির বাইরে দাঁড়িয়ে একটি ছবি তুললাম তারপরে আমরা ভার্সিটি ভিতরে চলে গেলাম। তারপর আমরা অডিটোরিয়ামে চলে গেলাম যেখানে আমাদের মিটিং হবে, টিচার আসতে একটু দেরি করলো তাই আমরা সঠিক সময়ে পৌছাতে পারলাম।
আস্তে আস্তে সব স্টুডেন্ট গুলো অডিটোরিয়ামে দিকে আসতে থাকে, টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট অনেক কিন্তু প্রায় সকলেই চাকরিজীবী কিংবা ব্যস্ত, তাই অন্য ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট দের কে অনেক বেশি মনে হচ্ছে। আমরা অপেক্ষা করছি টিচাররা কখন আসবে।
এর মধ্যে আমি দেখলাম আমাদের কিছু বড় ভাইরা চলে এসেছে তাদের সাথে কথাবার্তা পড়লাম এবং তার পর আমি আবার আমার বন্ধুদের কাছে ফেরত আসলাম। কিছু সময়ের মধ্যে টিচাররাও চলে আসলো তারপর আমাদের কাঙ্খিত মিটিং শুরু হয়ে গেল।
সম্পূর্ণ মিটিংটা উপস্থাপন করলো এক সিনিয়র আপু। তারপর শুরু হল আমাদের টিচারদের কথা, আজকে সবার একসাথে হওয়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে। প্রায় দু'বছর পর ভার্সিটি খুলেছে। আস্তে আস্তে আমরা অনলাইন থেকে অফলাইনে ক্লাস করার সুযোগ পাবো এবং যেহেতু ভার্সিটিতে অনেকদিন কোন প্রোগ্রাম হয়নি তাই ২৬ শে মার্চ উপলক্ষে ২৫ এবং ২৬ তারিখ ভার্সিটিতে একটি অনুষ্ঠান হবে। এই নিয়েই ছিল আমাদের মিটিং এর আলোচনা।
পরীক্ষা শেষ করেই সবাই দৌড় দিয়ে ভার্সিটিতে আসছি সকলের অবস্থাই খারাপ, ওই যে পিছনে একটা নিগ্রো দেখা যাচ্ছে, ওরাও বাংলাদেশে এসেছে পড়াশোনা করার জন্য, আমাদের ভার্সিটিতে কিছু বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী ও রয়েছে।
এই ভাইয়া এবং আপু খুব সুন্দর ভাবে দুটি কবিতা আবৃত্তি করল, স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে তারা এই কবিতা দুটিকে সেলেক্ট করেছিল উপস্থাপন করার জন্য ,তারা খুব সুন্দরভাবে আবৃত্তি করল তারা এই বিষয়গুলোতে খুবই দক্ষ।
এবার গিটারের ছিল আমাদের ভার্সিটির টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্ট এর একজন টিচার, এবং এক সিনিয়র আপু একটি দেশাত্মবোধক গান করলেন। মিটিং শেষ করে হঠাৎ যখন গানের পালা আসলো তখন বেশ জমজমাট হয়ে গেল। আমরা খুব উপভোগ করছিলাম গান কবিতা এগুলো। আপনি খুব সুন্দরভাবে গান উপস্থাপন করলো।
আমাদের স্যার কিছুদিন আগে কয়েকটি গান রিলিজ করেছিল এবং তিনি এই গানের জগতে রয়েছে অনেক দিন যাবত, আমরা তাকে রিকোয়েস্ট করলাম কয়েকটি গান গাওয়ার জন্য। তারপর উনি আমাদের জন্য স্টেজে উঠলেন গান করার জন্য।
আমাদের জন্য দুইটি দেশাত্মবোধক গান করল, অডিটোরিয়াম একদম কেঁপে উঠল হাতের তালিতে। স্টুডেন্টরা এরও গান শুনতে চাই কিন্তু এত গান বলা সম্ভব না। আমরা অনেক রিকোয়েস্ট করলাম তার গাওয়া একটি গান উপস্থাপন করার জন্য, কিন্তু যেহেতু এটি দেশাত্মবোধক একটি প্রোগ্রাম ছিল তাই অন্য গান করো না। গান শেষ হওয়ার পর আমরা স্যারের সাথে ছবি তুল্লাম।
ছবি তোলা এবং আনন্দর পর্বের পর একে একে সবাই বাহিরে বের হয়ে আসে, শুধু আমাদের টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্ট এর স্টুডেন্টরা থেকে যায়। আমাদের ডিপার্টমেন্টের খুব কমসংখ্যক স্টুডেন্ট এখানে আছে, শিক্ষকরা ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সাথে কিছু কথাবার্তা বলতে চায়, আমাদের সাথে ডিসকাস করলো কিভাবে প্রোগ্রামটি করা যায়, এবং আমরাও বেশ কিছু আইডিয়া দিলাম।
আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করলাম কিভাবে প্রোগ্রামটিকে সুষ্ঠুভাবে করা যায় সেই নিয়ে আলোচনা করার জন্য, আমাদের এই প্রোগ্রাম টিকে থাকবে নাচ, গান , কবিতা আবৃত্তি, ক্রিকেট ,ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, মেয়েদের জন্য লুডু ।
শিক্ষকরা আমাদেরকে বলল কিছুই স্টল তৈরি করার জন্য যেখানে আমাদের টেক্সটাইলের অনেক কিছু থাকবে, যেন মানুষের আগ্রহ হয় এবং আমাদের স্টলগুলোতে আসে নতুন কিছু দেখার জন্য, আমরাও সে রকম প্রস্তুতি নেয়া শুরু করলাম।
আমরা অনেকটা সময় এখানে আড্ডা দিলাম, তারপর আমাদের নাস্তা করার জন্য ভার্সিটি থেকে কয়েকটি প্যাকেট দেওয়া হল। সবাই এক এক করে আমরা নিলাম। সিনিয়র ভাইরা থাকার কারণে তারা আরো কয়েকটি প্যাকের আমাদের হাতে দিয়ে দিল। বাহিরে বের হয়ে কিছু সময় তাদের সাথে কথা বললাম তারপর আমরা খাওয়া-দাওয়া করলাম।
আমাদের কথা যেন শেষই হয় না একটার পর একটা নতুন আইডিয়া মাথায় আসছে, আবার আমরা টিচারদের মাঝখানে যাচ্ছি আমাদের প্রস্তাবগুলো রাখার জন্য। এভাবে টিচারদের সাথে আমাদের কথা বলতে বলতে অনেকটা সময় পার হয়ে যায়। আমাদের টেক্সটাইল ক্লাব নিয়েও অনেক কথা বাত্রা হয়, সব মিলিয়ে বেশ রাত হয়ে যায়।
তারপর আমরা সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ভার্সিটি থেকে বের হলাম। শেষ পর্যন্ত মাত্র আমরা তিনজন ছিলাম আমাদের ব্যাচ থেকে, আমরা কিছু সময় হাটাহাটি করলাম তারপর বাসস্টপে আসলাম। তারপর আমরা বাসে উঠলাম এবং বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
এই ছিল আমার আজকের পোস্ট। আশা করি সবার ভালো লেগেছে। আজ এখানে আমি বিদায় নিচ্ছি। আশা করি সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই দোয়া রইল।
আপনার ভিডিও গুলো ভালই লাগল। খুবই সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ভাই। খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং তা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন বলে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাই। 💞💞
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ার জন্য এবং ভিডিও গুলো দেখার জন্য।
খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন ভাই।ভার্সিটি লাইফ এ অনেক মিটিং সম্পন্ন করতে হয়।আপনাদের ভার্সিটিতে বিদেশিরা পড়ে দেখে ভালো লাগলো।আপনাদের মিটিং এ কাটানো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্ট সম্পূর্ণভাবে পড়ার জন্য।
অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। ভিডিও গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ার জন্য এবং ভিডিও গুলো দেখার জন্য।
ভিডিও গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। সেই করোনার আগে ভার্সিটিতে সময় কাটিয়েছি ভালো ভাবে। তার পর ভালো সময় পার করা হয় নাই। আপনার ফটোগ্রাফি দেখে ভার্সিটির বন্ধুদের অনেক মিস করছি ভাই। আপনার কাটানো মুহুর্তগুলো ভালোই ছিলো। পিছনের মেয়েটা আপনার বান্ধুবী? 😁
আমিও প্রথম ভার্সিটির আজকেই এই প্রোগ্রামটি পেলাম, সহপাঠী বলা যায় কারণ এখনো আমরা কেউ কাউকে ঠিকভাবে চিনি না।