আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২০ || আমার জীবনে প্রথম প্রেমের অনুভূতি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.

২রা শ্রাবণ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।

১৭ই জুলাই, ,রবিবার।



মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।সবার জীবনের প্রেমের গল্প গুলো পড়লাম, নিজের মধ্যেও কিছু অনুভূতি কাজ করছিল কিছু স্মৃতি মনে পড়ছিল বারবার যা লিখে দিতে ইচ্ছে করছে আপনাদের সামনে, তাই মনের আবেগ গুলো আজকে লিখে দেবো আপনাদের কাছে আশা করি ভালো লাগবে।


"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২০"

সকলে জীবনের প্রেমের গল্প গুলো পড়ে নিজের মধ্যেও একটা অনুভূতি কাজ করছে সেখান থেকে ভাবলাম আমার গল্পটা আপনাদের কাছে শেয়ার করা যায়।

I love you (1).png

ক্যানভা প্রো দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।


তাই অনেক ভাবনাচিন্তার পর ফাইনালি আজকে আমার গল্পটি লিখতে বসে গেলাম। প্রথমেই বলে রাখি তেমন গুছিয়ে আমি বলতে হয়তো পারবোনা কারণ আমার গল্পটি কোন গোছানো কাহিনীর মত নয়। আমার মত আমার গল্পটিও ছিল কনফিউশন ও অগোছালো।


প্রেম নাকি অনুভূতি

যেদিন অ্যানাউন্সমেন্টে এই প্রতিযোগিতায় নোটিশ আমরা পাই সেদিন থেকে আমার মাথায় একটা জিনিসই ঘুরপাক খাচ্ছে । প্রেম নাকি অনুভূতি। যদি বলি প্রেমের কথা তাহলে আমার জীবনে প্রেম এসেছিল কলেজ, আর যদি বলি অনুভূতির কথা তাহলে ক্লাস সিক্স।

খুব চেষ্টা করছিলাম সবার মত প্রেমের গল্পটাই বলার জন্য, কিন্তু অবচেতন মন বারবার অনুভূতির কথাটাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল তাই অনিচ্ছাসত্ত্বেও এই গল্পটায় প্রেমের থেকে বেশি প্রাধান্য পেল প্রথম অনুভূতির কথা।



আমার জীবনে প্রথম প্রেমের অনুভূতি।

ক্লাস সিক্সে আমি একজন টিচারের কাছে প্রাইভেট পড়তাম তিনি আমার বাসায় এসে প্রাইভেট পড়াতেন। তিনি একজন প্রফেশনাল শিক্ষক ছিলেন, তবে তিনি ছিলেন খুবই চালাক। আমাকে তিন মাস বাসায় এসে পড়ায় হঠাৎ তিনি আমাকে তার প্রবলেমের কথা বলেন এবং উনি আমাকে বলেন আমি যেন তার স্কুলে এসে প্রাইভেট পড়ি।

ভদ্রতার খাতিরে আমি রাজি হয়ে গেলাম । স্কুল দুপুর একটার মধ্যে শেষ হয়ে যায় আমার প্রাইভেট পড়ার কথা ছিল দুপুর তিনটায়, সেদিন প্রাইভেট পড়তে গিয়ে দেখি তিনি আমার মত আরো ছয় থেকে আট জনকে প্রাইভেট পড়াতেন সবাইকে তিনি একই কথা বলে স্কুলে নিয়ে এসেছেন যেন তিনি দু'ঘণ্টার মধ্যে সব ছাত্রছাত্রীকে একসাথে পড়াতে পারেন।

অর্থাৎ তারা সারাদিনের পরিশ্রম করতে হবে না স্কুলে বসেই সে স্কুলের কাজ করতে পারবে এবং সবগুলো ছাত্রছাত্রীকে একত্রে পরিয়ে সে মোটা অংকের টাকা আয় করতে পারবেন।


people-2557399_1920.jpg

Image by StockSnap from Pixabay


যাইহোক প্রথমদিন আমি বাসা থেকে একটু আগেই বের হয়েছি আমার বাসা থেকে খুব বেশি একটা দূরে নয়, তবুও আমি ৩০ মিনিট আগে গিয়ে সেখানে পৌঁছেছি, স্কুল বন্ধ কারণ আমাদের স্যার এখনো আসেনি আমি দেখলাম আশেপাশের সবগুলো দোকান বন্ধ আমি একটি দোকানের বেঞ্চে বসে ছিলাম। দেখলাম স্কুলের সামনে একটা সুন্দর মেয়ে ঘোরাঘুরি করছে, বুঝতে পারলাম এই মেয়েটি হয়তো আমাদের স্যারের কাছে পড়ে, মেয়েটিও আমার দিকে কয়েকবার তাকালো সে হয়তো আন্দাজ করতে পেরেছে আমরা একই স্যারের কাছে পড়তে এসেছি।


man-3471202_1920.jpg

Image by Gerd Altmann from Pixabay


মেয়েটি অনেক দুষ্টু এবং অনেক চঞ্চল, আমি তখন একদম বোকাসোকা, যদিও মেয়েটি আমার এক বছরের ছোট তবুও আমি বেশি লাজুক ছিলাম।

প্রথম দিন আমরা দুজনে অপেক্ষা করছি আমাদের স্যারের জন্য হঠাৎ মেয়েটি সেই বেঞ্চে এসে বসলো, তার স্কুল ব্যাগ থেকে একটা ঈদ কার্ড বের করে আমার দিকে বাড়িয়ে দিল। আমি এমনিতেই লজ্জায় লাল আমার মুখে কোনো উত্তর নেই, তার ব্যাগ থেকে বের করে সে আমার ব্যাগের ওপরে রাখল বুঝতে পারলাম এটি আমার জন্য।

শুধু আমাকে এত টুকু জিজ্ঞেস করল তুমি কি স্যারের জন্য অপেক্ষা করছো, আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁসূচক উত্তর দিলাম। বেশ কিছুসময় চুপ করে দুজনই বসেছিলাম দোকানের বেঞ্চের মধ্যে।

suwancoffee-2370934_1920.jpg

Image by computer10455 from Pixabay


আমার পাশে বসে থাকা সেই সুন্দর মেয়েটির নাম ছিল সাফা, এই সময় ভারতীয় বাংলা গানের প্রচলন ছিল আমাদের মাঝে , মেয়েটি দেখতে একদম কোয়েল মল্লিক এর মত, কিছু সময়ের মধ্যে আমাদের সাথে যুক্ত হয় রিয়াদ নামের একটি ছেলে তারপর দুটি মেয়ে আমাদের সাথে যুক্ত হয় একজন উর্মি এবং আরেকজন সাথী।

তার কিছু সময়ের মধ্যেই আমাদের স্যার চলে আসেন এবং আমরা ঐ স্কুলের ভিতরে ঢুকে যাই নির্দিষ্ট একটি ক্লাস রুমে আমরা সবাই বসি, আমরা সবাই যারা প্রাইভেট পড়তাম এখন হয়ে গেছে একটি ছোটখাটো কোচিং।

ভালো এবং ভদ্র ছাত্র হওয়ার কারণে স্যার আমাকে একটু বেশি আদর করত, আমি আগে থেকে রিয়াদকে চিনতাম বাকি সবার সাথে আমার সেখানে পরিচয়। স্যার পরিচয় হওয়ার তেমন সুযোগ দিল না আমরা পড়া শুরু করে দিলাম।

তিনি আমাদের পড়ানোর জন্য তার যে অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিল সেই স্যার কে নিয়োগ দিল, আমরাও বেশ মজা করে পড়ছিলাম একত্রে এতগুলো মানুষ নতুন নতুন বন্ধু ভালো একটা সময় কাটছিল।


chinese-1840332_1920.jpg

Image by Pexels from Pixabay


আমাদের সবার সাথে মোটামুটি একটা পরিচয় হয়ে যায়, সাফা নামের সেই মেয়েটি আমার সাথে সুযোগ পেলেই কথা বলার চেষ্টা করত, আমি কথা কম বললেও লুকিয়ে তার দিকে বেশ কয়েকবার তাকাতাম। এলাকার বড় ভাইয়েরা ও কোচিংয়ে আসতো ওই মেয়েটাকে দেখার জন্য, যদিও প্রথমদিকে ভালো লাগত কিন্তু পরবর্তীতে ওই বড় ভাইদের আসা আমার একদমই পছন্দ হতো না।

বুঝতে পারতাম সবাই তার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতো, হঠাৎ একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় একুশে ফেব্রুয়ারি দিন, স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের ভাষা আন্দোলনের উপলক্ষে একটি রেলি বের করবে আমাদের কেও ইনভাইট করলো স্যার।

এই প্রথম আমরা পড়াশুনা বাদে একে অপরের সাথে সময় কাটান, কথা বলার সুযোগ পেলাম। সাফা এবং অন্যান্য মেয়ে তুলনা শর্ট ছিল তাই তাদেরকে সামনে রাখা হলো, আমি ছেলে হিসেবে একটু পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু সাফা বার বার আমার সামনে আসার জন্য বায়না করছিল এবং সে আমার সামনেই দাঁড়িয়ে পুরো এলাকা ঘুরলো, সাফা কে দেখে সাথী নামের মেয়েটির আমার সাথে বেশ আন্তরিকতা শুরু করলো। বুঝতে পারলাম দুজন কম্পিটিশন করে আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চায়।


women-1487825_1920.jpg

Image by Adina Voicu from Pixabay


আগেই বলে রাখি সাফা এবং উর্মি ছিল এক ক্লাসের অর্থাৎ তারা দুজন আমার ছোট, সাথী ছিল আমার এক বছরের বড়। সেই দিন সাফা এবং সাথীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়, সাফা কর্মকান্ড দেখে সাথী স্যারের কাছে বিচার দেয় এই নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়।

অনুষ্ঠান শেষে সাথী আমাকে ডাইরেক বলল সাজ্জাদ আমি তোমার এক বছরের বড় তবুও আমি নিজে থেকে তোমার বন্ধু হতে চাই তুমি কি আমার বন্ধু হবে? দেখলাম অপর পাশে সাফা রাগী মুখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে, কিন্তু আমি নিরুপায় হয়ে সাথীর সাথে হ্যান্ডশেক করলাম কারণ তিনি হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।


salvation-2292499_1920.jpg

Image by jacqueline macou from Pixabay


সাথীর সাথে হ্যান্ডশেক করতে দেখে সাফা আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়, আর উর্মি মনে মনে কষ্ট পাচ্ছিল। তখন আমি প্রেম-ভালোবাসা এগুলো কিছুই বুঝতাম না, তখন আমার জীবনে একসাথে তিনজন মানুষের আবির্ভাব ঘটে। আমি বুঝতে পারছিলাম না কার সাথে বন্ধুত্ব রাখা উচিত।

তাদের মধ্যে সবথেকে সুন্দর ছিল সাফা তাই তার প্রতি আমার আকর্ষণ ছিল বেশি, এবং সাফা সবথেকে বেশি কাছের ও ছিল আমার, সাথী কে আমি ভয় পেতাম কারণ সে আমার থেকে একটু বড়, উচ্চতাও খানিকটা লম্বা।


এভাবে বেশ কয়েকটা দিন চলছিল এবং আমরাও খুব ভালো বন্ধু হয়ে যাই, স্যার আমাদের সাথে বেশ রসিকতা করতে এবং ভালই মজা করতাম আমরা। স্কুলে মাঝে মাঝেই আমরা অনুষ্ঠান করতাম সেখানে সাউন্ডবক্স এনে আমি গান প্লে করতাম সবাই নাচানাচি করত, একটা সময় স্যার ম্যাডামরাও আমাদের বন্ধু হয়ে যায় যদিও আমাদের বয়সের পার্থক্য অনেক।

আস্তে আস্তে স্যারের অনেক ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বাড়তে থাকল, আমরা যারা স্যারের বেশি ক্লোজ ছিলাম আমি সাফা রিয়াদ। আমরা আলাদা একটি রুমে বসলাম, বাকি সবাই এক রুমে বসে।

আমরা তিনজন যেই রুমে বসতাম সেটি মূলত ছিল প্রিন্সিপালের রুম মানে আমরা যে টিচারের কাছে পড়তাম তার ব্যক্তিগত রুম। তিনি আমাদের তেমন একটা সময় দিতেন না কারণ আমরা ভালো ছাত্র ছিলাম।


chinese-medicine-3666272_1920.jpg

Image by kian2018 from Pixabay


আমরা তিনজন এক রুমে পড়াশোনা করতাম তাই আমাদের মধ্যে একটু ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়। অনুভব করছিলাম আমাদের মধ্যে একটা অন্যরকম ভালোবাসার ও ফিলিংস হচ্ছে।

আমাদের ঘনিষ্ঠতা দেখে সাথী নামের মেয়েটি চলে যায় সে আর কখনো পড়তে আসিনি, দূর থেকে উর্মি মেয়েটি শুধু কষ্টই পেত। একটা সময় বুঝতে পারলাম রিয়াদ সাফা কে পছন্দ করে, অপরদিকে সাফা সাথী উর্মি তিনজনেই আমাকে পছন্দ করতাম।

বিষয়টি স্যারও লক্ষ করে এবং তিনি আমাকে মজার ছলে বলেন সাজ্জাদ এই তিনটি মেয়ে কিন্তু তোমাকে পছন্দ করে, কিন্তু তুমি কখনো প্রেম করো না কারণ এ বয়সে এটা খারাপ।

মনে মনে আমার সাফাকে খুব ভালো লাগতো কারন পূর্বেই বলেছিলাম আমার কোয়েল মল্লিকের খুব ভালো লাগতো মেয়েটি একদম তার মতন ছিলো।


fashion-3080644_1920.jpg

Image by himanshu gunarathna from Pixabay


এরকম একটা দিন কথার ছলে সাফা কে রিয়াদ জিজ্ঞাসা করল আচ্ছা তুমি কি কাউকে ভালোবাসো? উত্তরে সে বলল হ্যাঁ আমি একজনকে ভালোবাসি এবং সে তোমার বাসার আশেপাশেই থাকে। কথাটা শুনেই রিয়াদের মনটা খারাপ হয়ে গেল, রিয়াদ বলল আমার বাসার পাশে কে থাকে, মেয়েটি আস্তে আস্তে তার প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে একটা সময় আমি এবং রিয়াদ দুজনই বুঝে যাই মেয়েটি আমাকে উদ্দেশ্য করছে। আমি বুঝেও না বোঝার ভান করছি, রিয়াদ জ্বলে-পুড়ে আগুন।


বিষয়টি আমাদের প্রাইভেট স্যারের কাছে পৌঁছে যায়, তিনি আমাকে ডেকে বলেন সাফা মেয়েটা কিন্তু খুবই চঞ্চল, উর্মি ও তোমাকে ভালোবাসে এখন তুমি ভেবেচিন্তে নিও। স্যারের মুখে এরকম কথা শুনে সত্যি আমি আশ্চর্য হয়ে যাই এবং লজ্জায় মাথা নিচু করে রাখি।

এভাবে এক বছর চলে যায়, তখন আমি ক্লাস সেভেনে কোন একটা কারণে মেয়েটির বাসায় আমি গিয়েছিলাম, মেয়েটি খুব খুশি হয়েছিল তার যত খেলনা ছিল সব গুলো আমাকে দেখিয়েছে, তার দুইটা পাখি ছিল সে পাখির সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে, অনেকগুলো ছোট ছোট মুরগির বাচ্চা কিনে ছিল সেগুলোর সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে মনে মনে আমি হাসছিলাম বাচ্চা মেয়ের কাহিনী দেখে। যদিও আমি নিজেও বাচ্চা ছিলাম।

এভাবে আমাদের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে, আবার কোন একটা প্রোগ্রামের সময় সবাই ব্যস্ত ছিল, তখন আমরা প্রিন্সিপাল রুমে ছিলাম তিনজন, আমি রিয়াদ এবং সাফা, সাফা দুষ্টামির ছলে আমার কোলে এসে বসে এবং আমাকে বলল তুমি এত বোকা কেন এতো লজ্জা পাও কেন? এই বলে আমার গালে একটা……. 💋 দিয়ে দৌড় দিল।

সত্যি বলতে আমার কাছে আসা, কিস করা এবং এরকম একটি কথা বলা, কোনটার জন্যই আমি আর প্রস্তুত ছিলাম না। এবার আমি তার প্রেমে একদম হাবুডুবু খাচ্ছি। মুখে না বললেও হতো আমাদের মধ্যে প্রেম ছিল, কারণ কোনদিন আমরা কাউ কাউকে প্রপোজ করিনি।


lovers-3640828_1920.jpg

Image by mohamed Hassan from Pixabay


হঠাৎ কোন একটা কারণে আমি ক্লাস রুমের বাইরে গিয়েছিলাম, সেদিন রিয়াদ আসেনি স্যার এবং সাফা ছিল ক্লাসরুমে। আমি ক্লাস রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই মেয়েটিও দৌড় দিয়ে বের হয়ে আসে, তার চোখমুখ দেখে আমি বুঝতে পারলাম ক্লাসে হয়তো কোন একটা কিছু হয়েছে, মেয়েটির কান্না কান্না চোখে স্কুল ব্যাগ নিয়ে সেদিন চলে যায় বাসায়। ক্লাস রুমে গিয়ে আমি তেমন কিছুই দেখলাম না স্যার এমন একটা ভান করল যেন কিছুই হয়নি।

আমিও আর মেয়েটির চলে যাওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে স্যারের সাথে কথা বলিনি, বাচ্চা ছিলাম সেদিন আমি চুপ ছিলাম। মেয়েটি আর কোনদিন কোচিং আসেনি পড়তে, আমার মনটা খুব খারাপ ছিল, বড় ভাই এগুলো আর কোচিংয়ে আসতো না কারণ সেই মেয়েটি আর আসে না।

রিয়াদ দুঃখ পেয়ে চলে যায় অন্য টিচারের কাছে পড়ার জন্য, আমিও আর কয়েক মাস স্যারের কাছে পড়েছিলাম নতুন বছর শুরু হতেই আমিও টিচার চেঞ্জ করে ফেলি।


man-1845814_1920.jpg

Image by Pexels from Pixabay


না চাইতেও আমার জীবনে এসেছিল এতগুলো মানুষ, যখন আমি তাদেরকে আপন করতে নিয়েছিলাম তখনই সবাই চলে গেল। আমি হারালাম ভালোবাসার অনুভূতি, হারিয়ে ছিলাম বন্ধু, সে আনন্দের মুহূর্ত গুলো।

তখন মোবাইল ছিলনা, ছিলনা ফেইসবুক, ছিলনা আমাদের কোনো ব্যক্তিগত নাম্বার। মেয়েটি যেহেতু পড়তে আসিনি তাই তার সাথে আমার কোন দিন কন্টাক হয়নি, জানি না আমার জন্য নাকি স্যারের সেদিনের ব্যবহার আমাদের ভালোবাসার মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

তার উত্তর আজও আমার জানা নেই।

hd-wallpaper-3915438_1920.jpg

Image by S. Hermann & F. Richter from Pixabay


বলেছিলাম উর্মি আমাকে মনে মনে ভালোবাসতো সে এখনো আমার খোঁজ খবর নেয় বিভিন্নভাবে আমি জানি, কিন্তু আমি কোনদিন তার প্রতি সে রকম অনুভব করিনি।

সাথী নামের সেই মেয়েটির কলেজে উঠার সাথে সাথে অনেক ভালো বন্ধু পায় সব বন্ধুর মাঝে আমি হারিয়ে যাই।

লাস্ট কয়েক বছর আগে আমি সাফার ইনস্টাগ্রাম আইডি পেয়েছিলাম মেয়েটি আগে থেকেই সুন্দর ছিল। এখন সে ভয়ঙ্কর সুন্দরী একজন মেয়ে। এখন শুধু আমি তার ইনস্টাগ্রামে ছবিতে লাভ দিয়ে যাই, কোনদিন তাকে মেসেজ করার দূরসাহস আমার মধ্যে জন্মায়নি।

জীবনের প্রথম অনুভুতিতেই একসাথে তিনজন এসেছিল আমার কাছে, আবার তিনটা মানুষই হারিয়ে যায় ।


জানি সবার গল্প থেকে আমার গল্পটা একটু ব্যতিক্রম ছিল, এটা ভালোবাসা ছিল কিনা জানিনা, তবে কেউ যদি আমাকে প্রশ্ন করে প্রথম প্রেম, অবচেতন মন সেই মেয়েটির কথাই মনে করিয়ে দেয়।
দুজনই দুজনকে ভালোবেসে ছিলাম কিন্তু কেউ আর সাহস করে ভালোবাসাটা প্রকাশ করেনি।

image.png



আমি কে?

আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।


@sajjadsohan (1).gif


image.png



logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


image.png

𝕋𝕙𝕒𝕟𝕜 𝕪𝕠𝕦 𝕖𝕧𝕖𝕣𝕪𝕠𝕟𝕖

115.png

Sort:  
 2 years ago 

আপনার প্রথম প্রেমের অনুভূতি আমার কাছে দারুন লাগলো।
সাফা উর্মি সাথী,,
প্রথম প্রেমের বাতি।
সাভার দেওয়া কিস যেন
অনন্য এক গীতি।
এ যেন ত্রিধারার মাঝি।
♥♥

 2 years ago 

বাহ বেশ ছন্দে ছন্দে মন্তব্য করেছেন খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আসলে ভালোবাসার মানুষটি যেন এমনই হয় কারণ তাকে আমরা দূর থেকে ভালোবেসে যাই। যেমনটা আপনি তাকে ভুলেও মেসেজ করেন না ।তারপরেও তার পোস্টে লাভ দিয়ে যান ।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

আসলে একটা সময় আমি তাকে পাত্তা দেইনি, এখন সে এত পরিমান সুন্দর হয়ে গেছে যে আমার তাকে মেসেজ দিতে ভয় করে 😆

 2 years ago 

আপনার প্রথম প্রেমের অনুভূতি পড়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো । আপনি খুব চমৎকারভাবে প্রেমের অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এত চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

 2 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্যের মাধ্যমে পাশে থাকার জন্য এবং গল্পটি পড়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 57941.45
ETH 2579.63
USDT 1.00
SBD 2.39