রাজা চায়ের আড্ডায় এক সন্ধ্যা || ১০% প্রিয় লাজুক-খ্যাকের🦊 জন্য থাকলো
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
১৪ই- মার্চ, সোমবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি। কিছুদিন আগে আমরা রাজা চায়ের আড্ডায় বসে চা খাচ্ছিলাম এবং আড্ডা দিয়েছিলাম, হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া সেই প্লান আজকে পোস্ট আকারে আপনাদের কাছে শেয়ার করছি আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
হঠাৎ করে মনে হলো অনেকদিন হল বন্ধুদের সাথে দেখা হয় না। তাই মনের অজান্তেই এক বন্ধুকে রাতে মেসেজ করলাম, চল কলেজ বন্ধুরা কোথা থেকে ঘুরে আসি। আমাদের সাভারে অনেকগুলো বন্ধু রয়েছে, আমরা বিভিন্ন কারণে সাভার গিয়েছি কিন্তু কখনো এলাকা ঘুরে দেখা হয়নি। তাই আমি ভাবলাম ওইদিকেই আমরা সকলে ঘুরতে চাই। তখন এক বন্ধু বলল ঠিক আছে কালকে আমরা এক জায়গায় বসে আড্ডা দেই কথাবার্তা বলি এবং সবকিছু ঠিকঠাক করি তারপর না হয় একদিন যাওয়া যাবে।
এমনিতেও আমাকে এয়ারপোর্ট যেতে হবে একটা কাজের জন্য, তার উপর বন্ধুকে একটি বই দিতে হবে এবং দেখা হবে সব মিলিয়ে পরেরদিন বিকেলে আমি বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে বন্ধুদের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে।
রাস্তায় জ্যাম ছিল এবং একটু দেরি করে বের হয়েছিলাম তাই অন্ধকার হয়ে গেছে সন্ধ্যার সময় মনে হচ্ছে। বন্ধুরা বলল তারা অনেকক্ষণ আগেই এখানে চলে এসেছে কিন্তু আমি যাওয়ার পরে গিয়ে দেখি কেউ নেই। মূলত গিয়েছিলাম একটি বন্ধুর সাথে দেখা করতে বই দেয়ার জন্য। দুই বন্ধু বসে কিছু সময় আড্ডা দিলাম এবং কথাবাত্রা বলছিলাম।
হঠাৎ আরেকটি বন্ধুর কথা মনে পড়ল ও সাভার থেকে ধানমন্ডিতে আসে একটি ক্লাস করার জন্য, মাঝে মাঝে এখানে এসে চা খেয়ে যায় আজও তার ক্লাস থাকার কথা। আমরা তাকে ফোন করলাম এবং জানতে পারলাম ও আশেপাশেই আছে বাসের মধ্যে, বললাম আমরা এয়ারপোর্ট আছি তুই চাইলে আমাদের সাথে দেখা করতে পারিস, ওর সাথে আরও কিছু বন্ধুরা ছিল ওদের বিদায় জানিয়ে আমাদের সাথে দেখা করার জন্য আসলো। মূলত আমাদের ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান নিয়ে কথা বলা ছিল। কিন্তু আমরা সকলে একত্রে হওয়ার পর ভুলেই গিয়েছিলাম আমরা আড্ডায় মেতে উঠি।
এখানকার মোটামুটি সবগুলো চা আমার খাওয়া হয়েছে, কেন যেন আমার মিষ্টি জাতীয় চা আর ভালো লাগছে না, আমি ব্যতিক্রম অনেক ধরনের চা ট্রাই করছি। তবে রেগুলার আমি রং চা খাই। জানতে পারলাম এখানেও রং চা পাওয়া যায় তাই তার হাতের স্পেশাল রং চা খাবার ইচ্ছে হলো। আমরা দুইজন রং চা অর্ডার করলাম এবং আমার বন্ধুরা রাজা মামা স্পেশাল চা একটি অর্ডার করলো। শুরু হয়ে গেল আমাদের আড্ডার প্রহর।
যখনই আমরা এই তিনজন মানুষ একসাথে হই আমরা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে আলোচনা করি। আমরা প্রত্যেকেই অনলাইনে কাজ করার জন্যে অনেক কষ্ট করেছে, আমি ছাড়া এই দুইজন মোটামুটি ধরনের ভালো ফ্রিল্যান্সার বলা যায় কারন তারা প্রায় লাখ টাকার কাছাকাছি আয় করে থাকে। তার মধ্যে একজন হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইনার, একজন হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং উদ্যোক্তা, শেষে আমি ব্লকচেইন ভিত্তিক এই প্লাটফর্মে আপনাদের সাথে ব্লগিং করে আসছি। কেন যেন এইখানে ব্লগিং করার মাধ্যমে একটি আনন্দ রয়েছে, হয়তো ওদের মত এত ডলার ইনকাম হয় না তবে এখানে ভালোবাসা রয়েছে অনেক।
আমরা যে কারণে একসাথে হয়েছিলাম সে কারণে কথাই আমরা ভুলে গেছি, আমরা অনলাইন ভিত্তিক কথাগুলোই বলছি এবং কার কি অবস্থা সেই নিয়ে আলোচনা করছি। তবে এর মধ্যে বেশ মজার হয়েছে কিভাবে কিভাবে আমাদের সময়গুলো কেটে যাচ্ছে আমরা বুঝতেই পারছি না। আমরা একে অপরের কাজ করা প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কথাবাত্রা বলছি।
অনেক সময় ধরে বসে আছি আমরা এবং আড্ডা দিচ্ছি সময় কাটানোর জন্য আমরা চা অর্ডার দিয়ে যাচ্ছি। যেহেতু কয়েক ঘন্টা আমরা এখানে বসে আছি তাই আমরা বেশ কয়েকবার চা খেলাম। ভালোই লাগে এখানে চা খেতে বিরক্ত লাগে না। একসাথে অনেক ধরনের চাও টেস্ট করা যায় কারণ প্রত্যেকটা টেস্ট আলাদা।
একসময় এই চা বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল, মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে এই চা খেতে আসতো। টিভি ফেসবুক ইউটিউব সব জায়গায় তার চায়ের আভিজাত্য ছড়িয়ে পড়ে। একসময় এখানে মানুষের অনেক ভিড় থাকতো, কিন্তু জায়গা পরিবর্তন করার কারণে অল্পসংখ্যক গ্রাহক কমে গেছে। তবে এখনো আড্ডা জমে যায় রাজা মামার চায়ের দোকানে।
অনেকদিন পর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলাম ভালো একটি সময় কাটলো যত সময় যাচ্ছে ততই খারাপ লাগছে বিদায় নেয়ার পালা চলে আসছে। কিন্তু যেতে চায় না মন আমাদের আড্ডা যেন শেষ হতে চায় না, আমরা অনলাইনের অনেক সাইট নিয়ে কথাবার্তা বলছিলাম, জানতে পারলাম এক বন্ধু অফিস নিয়েছে এবং আরেক বন্ধু একটি স্টুডিও দিবে তার ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রচার এর জন্য।
আমি অধম এখন পর্যন্ত তেমন কিছু করতে পারলাম না তবে একদিন কিছু একটা হবে সেই আশা বুকে বেঁধে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
অনেক রাত হয়ে গেছে এখন আমাদেরকে বাসায় যেতে হবে, আমরা যে কারণে এসেছিলাম সে কারণটাই ভুলে যাই আমরা অন্য কথা বলতে বলতে সময় শেষ করে ফেলি, যেহেতু মনে ছিল না তাই আর কিছু করার নেই আমরা আম সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে একে একে বাসার দিকে রওনা হলাম। স্মৃতির পাতায় নতুন একটি সন্ধ্যা সংযুক্ত হলো এ অনুভূতি ভালোবাসার এ অনুভূতি বন্ধুত্বের।
ডিভাইস | Xiaomi redmi Note 10 Pro Max |
---|---|
লোকেশন | https://w3w.co/rinses.hound.voters |
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

কি ভাই চা খেয়ে শরীরে একটা রাজা রাজা ভাব আইছে না? 😄 আমিও খেয়েছিলাম রাজা চা। আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। তবে আমরা যখন গেছিলাম কোনো ভিড় ছিলো না। সত্যি বলতে চা একা খেতে ভালো লাগে না। বন্ধুরা থাকলে বেশি মজা হয়।
আগে এখানে অনেক ভিড় হতো কিন্তু কালের পরিবর্তে এখন মানুষ তেমন একটা আসেনা। তুমি আমার কাছে মোটামুটি ভালই লাগে।
সত্যি ভাই বন্ধুদের সাথে কাটানো এমন মূহুর্ত গুলো অনেক সুন্দর হয়। আমি নিজেও মাঝে মাঝে এইরকম চায়ের টং এ আমার বন্ধুদের সাথে দেখা করি আড্ডা দেয়। কত রং বেরংয়ের কত স্বাদের চায়ের সাথে মজাদার গল্প। আপনি নিজেও অনেক টা এইরকমভাবেই সময় টা অতিবাহিত করেছেন। অনেক সুন্দর উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।।
আপনার কমেন্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো আপনার জন্য রইল অনেক অনেক ভালোবাসা এবং অভিনন্দন।