প্রতিযোগিতা - ২৩ || স্কুল জীবনের কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা।
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
২৯শে সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।আজকে আমি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগিতা - ২৩ স্কুল জীবনের কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা।আপনাদের সাথে শেয়ার করব আশা করি মজা পাবেন আমার ঘটনাটিতে।
আমার বাংলা ব্লগ সবসময় ইউনিক কিছু করে থাকে, চমৎকার চমৎকার সব প্রতিযোগিতা আমাদের মধ্যে দেয়া হয় আমরা বেশ উপভোগ করি। এবারের প্রতিযোগিতায় বিষয়টি বেশ অন্যরকম, মজার ছলে হলেও আমরা অনেক কিছু জানতে পারবো আমাদের সকলের বিষয়ে, তেমনি আমি আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি, বুঝতেই পারছেন ভালোবাসা দিবস। তখন আমরা ক্লাস সেভেনের বাচ্চা, বাচ্চা বলছি কারন তখন আমরা কিছু বুঝি না। আমি না বুঝলেও আমার বন্ধুরা কিন্তু বেশ পাকা ছিল।
আমার বন্ধুরা তখন থেকেই প্রেম করতো, ঐদিন আমার এক বন্ধুর জন্মদিন ছিল। সেজন্য আমাদের সবাইকে ইনভাইট করলো, আমরা তিন বন্ধু আমি ছাড়া বাকি দুইজন প্রেম করতাম। হঠাৎ করেই আমাকে না জানিয়ে আমার বন্ধুরা আমার বাসায় এসে হাজির। তারা আমাকে রেডি হতে বলল কোথাও একটা যেতে হবে। আমি রেডি হলাম আমার বন্ধুর এক্সট্রা একটি ব্লেজার ছিল আমি সেটিং পড়ে একদম ফিট ফাট।
আমি যখন রেডি হবে বাসা থেকে বের হলাম তখন জানতে পারলাম আমার দুই বন্ধুর গার্লফ্রেন্ড আসবে তাদের সাথে আমার দেখা করতে যাবো। আমি যেতে না চাইলেও তারা জোর করে নিয়ে যায় আর যেহেতু আমি রেডি হয়ে গেছি তাই বাধ্য হয়েই তাদের সাথে যেতে হল।
স্কুল ছুটি হলে মেয়ে দুটো একটি গলির মধ্যে এসে দাঁড়ায় আমরা তিনজন এসে দেখা করি। আমার বন্ধু দুজন কথা বলছিল আর আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। মেয়েটির বাবা ছিল পুলিশ। কিছু বুঝে উঠতে না পেরে হঠাৎ করেই দেখি পেছন থেকে মেয়েটির বাবা এসে হাজির। আমরা দৌড় দিয়ে একটি নিরাপদ স্থানে লুকোলাম। মেয়েগুলো তার বাবাকে কি বলেছে আমরা তা জানি না।
বেশ কিছু সময় আমরা সেখানে লুকিয়ে ছিলাম, অনেকক্ষণ পরে মেয়ের বাবা আমাদেরকে খুঁজে বের করলো। আমাদের বিভিন্নভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছিলাম, অদ্ভুতভাবে যেই বন্ধু এত প্ল্যান ছিল সে বন্ধু বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তাদের হাত থেকে বেঁচে চলে গেল। পুলিশের মেয়ের সাথে আমার যে বন্ধুর রিলেশন সেও কিভাবে কিভাবে যেনো তাদের কাছে ভাল হয়ে গেল।
সবাই কেমন করে আমার দিকে তাকাচ্ছে যেমন দোষটা আমার। তারা জানত আমি রিলেশন করি না আমি কেন বাধা দিলাম না এটা হয়ে গেল আমার দোষ। বেশ অনেকক্ষণ আমাদেরকে হুমকি-ধামকি দেয়া হলো।
হঠাৎ করেই বন্ধুর এরকম পোল্টি দেয়ার কারনে আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো। আমি বললাম আমাদেরকে এরকম ভয় দেখিয়ে লাভ নেই যা বলার আমাদের গার্জিয়ান কে বলুন। এখানে গার্জিয়ান চলে আসলে অবশ্যই আমার বাসায় লোক আসবে না কারণ প্রেমটা করিনি।
তাছাড়াও এলাকাটি আমার ছিল অনেক পরিচিত লোক ছিল, তাই এখান থেকে আমাকে একটু দূরে যাওয়া দরকার। আমার সেই বন্ধু তার ঠিকানা দিল এবং তার বাসা চিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলাতে তারা রাজি হলো আমরা হাঁটতে হাঁটতে আমার বন্ধুর বাসার দিকে যাচ্ছি।
আমি বুঝতে পারছিলাম আমার বন্ধু একটু ঘুরিয়ে পেচিয়ে নিয়ে যাচ্ছে যে রাস্তা দিয়ে যেতে সময় বেশি লাগে। চোখের ইশারাতে আমার বন্ধু আমাকে জানিয়ে দিল কিছু একটা করতে হবে না হলে বাসায় বিচার গেলে সমস্যা। এমনি ও আমরা সবাই আত্মীয়র মধ্যে পড়ি তাই একজনের বাসায় বিচার গেলে সবার কাছে বিচার চলে যাব।
আমার বন্ধু ইশারা দিল আমরা যেখানে আড্ডা দেই সেখানে নিয়ে যাবো। সেই ফাঁকা মাঠের মধ্যে আমরা হঠাৎ করেই আড়াল হয়ে যেতে পারবো। আস্তে আস্তে আমরা সেই দিকে রওনা হলাম।
মেইন রোড থেকে সেই বালির মাঠে যাওয়ার আগে একটি সাকুর রয়েছে, মেয়ের পুলিশ বাবা ভেবেছিলো বাচ্চাগুলো ছোট পালাবে না। আমার বন্ধু আগেই ইশারা দিয়ে জানিয়ে দিল সে সাকুর মধ্যে ওঠার পরেই আমরা পালাবো।
রাস্তার মধ্যেও অনেকবার দৌড় দেয়ার চেষ্টা করেছে আমার বন্ধু তা আমি আটকালাম কিন্তু এটাই হচ্ছে আমাদের সে সুযোগ সেটা আমিও বুঝতে পেরেছিলাম তাই আমি ও সাড়া দিলাম।
রাস্তার মধ্যে দৌড় দিলে অনেক সমস্যা হতে পারে অনেক মানুষ, কিন্তু আমরা যদি সেই খেলার মাঠের মধ্যে দিয়ে দৌড় দেই তাহলে আমরা বেশ খানিকটা সময় পাব এবং পুলিশ আমাদের পিছনে তারা সাকু পার হতে একটু দেরি করবে।
যেই ভাবা সেই কাজ সাঁকোতে আমরা দুজন আগে উঠলাম পুলিশ পেছনে ছিল, আমরা জানতাম প্রেমের বিষয়টার জন্য পুলিশ আমাদের কিছু করতে পারবে না কিন্তু বাসায় বিচার দেওয়ার জন্য তিনি উঠে পড়ে লেগেছিল।
যেই না আমার বন্ধু সাঁকো পার হয়েছে অমনি সে দৌড় শুরু করলো, আমিও তার পিছু পিছু ছুটলাম পুলিশ আমাদের পিছনে দৌড় দিয়েছিল কিনা তা আমরা জানিনা প্রাণপণে যতটুকু শক্তি ছিল আমরা দৌড়ে গেছি।
তারপর বিভিন্ন অলিগলি ভেতর দিয়ে আমরা একটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম বেশ কিছু সময়, বেশ ভয় পেয়েছিলাম এবং হাপিয়ে গেছি অনেকটা সময় আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে আমরা সেই স্থান থেকে সরাসরি বাসায় চলে আসি। আমাদের স্কুল বারোটার পরে শুরু হতো, কিন্তু ঐদিন আমরা এই ঘটনার কারণে এক ঘন্টা লেট করে ফেলে তাই আর স্কুলে যাওয়া হয়নি।
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ভাই এমন পল্টিবাজ বন্ধু দেখি নি।এরকম এক বন্ধুর সাথে গিয়ে আমিও ফেসে গেছিলাম।ব্যাটা একেবারে মেয়ের বাড়ির সামনে গিয়েছিল গিফট দিতে।পরে সাইকেলে টান দিয়ে কোন রকমে রক্ষা।আপনি দারুন ভাবে আপনার তিক্ত অনুভূতি তুলে ধরেছেন।শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
কি আর বলবো ভাই গল্পটা যেদিন লিখেছি তার পরের দিনই ওই বন্ধুদের সাথে দেখা হল বহু বছর পর সেই একই জায়গায় আমরা আড্ডা দিলাম, তাদের কাছে শেয়ার করলাম আমি এখন লিখালিখি করি আর এই গল্পটা আমি লিখেছি।
প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আপনার তিক্ত অনুভূতি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আসলে এরকম ঘটনা আমাদের সাথে ঘটেছে। আমার এক বন্ধু ছিল অনেক সাহসী। সে একটি মেয়েটিকে গিফট দিতে তার বাড়িতে গিয়েছিল এবং সামনে গিয়ে হাত ধরেছিল। সত্যিই অল্পের জন্য মারের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম। আপনার অনুভূতি জানতে পেরে ভালো লাগলো।
এরকম ঘটনা আমার সাথে হয়েছে গিফটের ঘটনা কোন এক সময় বলব হয়তো ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।