লাল সিং চাড্ডা || মুভি রিভিউ
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
৬ই নভেম্বর, রবিবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।বেশ অনেকদিন হলো মুভি দেখা হয়না, তবে একটা সময় মুভি দেখার ছিল আমার শখের একটি বিষয়। আজ হঠাৎ এই মুভি দেখতে ইচ্ছে করল এবং সেটি আপনাদের সামনে রিভিউ করার চেষ্টা করব। আশা করি আপনারা উপভোগ করবেন।
পরিচালনা | অদ্বৈত চন্দন |
---|---|
লিখেছেন | উইনস্টন বর |
উপর ভিত্তি করে | ফরেস্ট গাম্প |
অভিনয় | আমির খান |
কারিনা কাপুর | |
নাগা চৈতন্য | |
মোনা সিং | |
প্রোডাকশন | আমির খান প্রোডাকশন & ভায়াকম 18 স্টুডিও |
এই মুভিতে দেখানো হয়েছে জীবনে সাকসেস হওয়ার জন্য খুব বেশি বুদ্ধি কিংবা স্মার্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই, খুব সাধারন কিংবা একজন স্পেশাল চাইল্ড সেও একজন বড় বিজনেসম্যান হতে পারে। ভালোবাসা এবং বন্ধুত্ব দিয়ে যে কাউকে আপন করে নেয়া যায়।
গল্পের শুরু আমির খানের মুখে তার গল্প শুনছি তাও একটি ট্রেন যাত্রার মধ্যে, আমির খান খুবই সাধারণভাবে ট্রেনের সাধারণ জনগণের সাথেই যাতায়াত করছে, আস্তে আস্তে আমরা তার মুখে তার ছোটবেলার গল্প শুনতে থাকি।
মুভিটা দেখা শুরু করলে কিছুটা সময়ের জন্য আপনি আমির খানের ডন ৩ এবং পি.কে. মুভির ক্যারেক্টারের একটু কম্বিনেশন লক্ষ্য করবেন। কিছুটা স্পেশাল চাইল্ড এর মতই অভিনয় করেছে। তিনি ছোটবেলা অসুস্থ ছিল ঠিক ভাবে হাঁটতে পারত না। তার মা তাকে নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিল।
পরক্ষণেই দেখা যায় তার মা তাকে স্কুলে ভর্তি করতে চান , কিন্তু কোন স্কুলে এরকম বাচ্চাকে তার স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ দিচ্ছিলাম, তার মা তাকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছে, তার মায়ের এতটা আগ্রহ এবং এতটা চিন্তা দেখে তাকে স্কুলের পড়াশোনার সুযোগ দেয়া হয়।
বাচ্চাটির বুদ্ধিমত্তা কম থাকার কারণে তাকে সবসময় সব জায়গাতে অবহেলা করা হয়, ফ্যামিলি প্রোগ্রাম তাতেও দূরে দূরে থাকে।
এখানে কিছুটা অযৌক্তিক ব্যাপার ছিল যেটা আমার মনে হয়েছিল, শাহরুখ খানকে দেখানো হচ্ছিল তাদের ফ্যামিলি ফ্রেন্ড, এবং বাচ্চাটি শাহরুখ খানকে তার ডান্স শেখাচ্ছে এবং সেই ডান্স দিয়েই শাহরুখ খান বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিত হোন।
ডাক্তার সবসময় বলত বাচ্চাটি একটু দুষ্টু সেজন্য সে ইচ্ছে করেই হাঁটাহাঁটি করতে চায়না, হঠাৎ একদিন এলাকার দুষ্টু ছেলেরা তাকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে, সেই সময় সে পালাতে থাকে এবং দৌড়াতে দৌড়াতে তার পায়ের প্রবলেম ঠিক হয়ে যায়।
হঠাৎ করে দেখানো হয় তারা বড় হয়ে গেছে, সে এবং তার বান্ধবী তারা কলেজে ভর্তি হয়, সেখানেও তাদের এলাকায় দুষ্টু ছেলেরা ভর্তি হয়েছিল সেম আগের মত তাকে আবার আক্রমণ করার চেষ্টা।
তবে এইবার দৌড় দেওয়ার পর তার জীবনটা পরিবর্তন হয়ে যায়, সে দৌড়াতে দৌড়াতে কলেজের দৌড় প্রতিযোগিতার সে মাঠে প্রবেশ করে ফেলেন এবং সে হয়ে যায় ওই প্রতিযোগিতার প্রথম। সেখান থেকে সে পরিচিতি লাভ করে এবং দৌড়ের জন্য সে খুব পরিচিত একটি মুখ হয়ে যায়।
এখানে আমির খান তার বান্ধবীকে প্রপোজ করে কিন্তু সেই রিজেক্ট করে দেয়, সে মডেল হতে চায় তাই সে মডেলিংয়ের জন্য অন্য কোথাও চলে যায়, আমির খান তার মায়ের ইচ্ছা পূরণের জন্য আর্মিতে যোগদান করে।
আর্মিতে যোগদান করার পর তার একটি বন্ধু হয়, তার বন্ধুর প্ল্যান ছিল আর্মি থেকে বের হওয়ার পর সে আন্ডার গার্মেন্টস এর একটি ব্যবসা করবে। আমির খানকে সে কাপড় গুলো তৈরি করার প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল, খুব অল্প সময়ের মধ্যে সে পারদর্শী হয়ে যায় টেইলারী কাজে।
এরপর দেখানো হয় ইন্ডিয়া পাকিস্তানের একটি যুদ্ধ, সেখানে আমির খান খুব ফাস্ট দৌড়াতে পারত তাই সে অনেকগুলো ইন্ডিয়ান আর্মি কে হসপিটালে পৌঁছে দিয়েছিল যুদ্ধের সময়, সেজন্য তাকে স্পেশালভাবে পুরস্কৃত করা হয় এবং সম্মান পদক দেয়া হয়।
খানিকটা সময়ের জন্য তাদের আবার দেখা হয়, একজন আর্মি অফিসার এবং আরেকজন ফিল্মের নায়িকা ও মডেল। দুজনেই তাদের মনের ইচ্ছা পূরণ করতে পেরেছে কিন্তু কেউই যেন সুখী ছিল না। আজও আমির খান তাকে প্রপোজ করেছিল কিন্তু কারিনা কাপুর তাদের কোন উত্তর না দিয়ে চলে যায়।
আর্মি ট্রেনিং নেওয়ার সময় তার সেই বন্ধুর প্রশিক্ষণ দেয়া এবং তার প্লান অনুযায়ী সে গার্মেন্টস এর বিজনেস শুরু করে, তার বন্ধুরা প্লান মোতাবেক সে সামনের দিকে এগিয়ে যায় এবং সে ভাল প্রফিট করা শুরু করে দেয়।
তার নায়িকা রুপা (কারিনা কাপুর) তাকে ছেড়ে চলে যায়, এদিকে তার মা মারা যায় সে আবার পাগল হয়ে যায়, সে একটানা ৪ বছর দৌড়াতে থাকে সে দৌড়াতে দৌড়াতে ইন্ডিয়ার অনেকগুলো প্রদেশ ঘুরে ফেলেছে।
এরপর একটা সময় দেখালাম হয় কারিনা কাপুর তার ক্যারিয়ার ছেড়ে আমির খানের কাছে চলে আসে, এইবার সে আমির খানের প্রপোজাল আক্সেপ্ট করে, তারা খুবই ধুমধাম করে বিয়ে করে এবং খুব সুখে শান্তিতে থাকা শুরু করে কিন্তু হঠাৎ এই আমাদের মুভির নায়িকা অসুস্থ হয়ে যায় এবং মারা যায়।
- দর্শক যতটা আগ্রহ নিয়ে দেখা শুরু করে ক্রমশ যেন আকর্ষণটা কমতে থাকে।
- বাচ্চা আমির খান আরো বেশি ভালো অভিনয় করেছে, আসল আমির খানের তুলনায়।
- এরকম একটা মানুষ এত সহজেই কিভাবে আর্মিতে যোগদান করতে পারে।
- বিজনেসম্যান হওয়া এবং জীবনের সাক্সেস হওয়া বিষয়টাকে খুবই সহজ ভাবে দেখানো হয়েছে।
- একটানা চার বছর পর্যন্ত মানুষ কিভাবে দৌড়াতে পারে কোন কারণ ছাড়া।
- চার বছরে তার কোম্পানি কি অবস্থা হয়েছিল সেটি মুভিতে আর উল্লেখ করাই হয়নি।
- শাহরুখ খান, ইন্ডিয়া পাকিস্তানের যুদ্ধ, দাউদ ইব্রাহিম ইত্যাদি জিনিসগুলো গল্পের মধ্যে যেন জোরপূর্বক ঢোকানো হয়েছে।
- মুভিটা অনেক লম্বা এবং স্লো গতিতে এগিয়ে গেছে, ঘটনা গুলো বেশ দীর্ঘ করা হয়েছে তাই মুভির সময়টা অনেক বেশি, গল্পের শুরুতে যতটা ইন্টারেস্টিং ছিল শেষের দিকে সে আমেজ ধরে রাখতে পারেনি।
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

VOTE @bangla.witness as witness

OR
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আপনি সুন্দর বিবরণ লিখেছেন তবে অনেকের মুখেই শুনেছিলাম যে আমির খানের মত অ্যাক্টর খুব অ্যাভারেজ কাজ করেছে এই সিনেমাতে। লাল সিং চাড্ডা ইন্ডিয়া তে অত ভালো চলেই নি। কারণ ইন্ডিয়ান আর্মির সাথে ওই স্টোরি যায় না।
আমিও কিন্তু শেষে বেশ কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরেছিলাম যেগুলো মুভির মধ্যে না থাকলে ভাল হত। এই কারণগুলোর জন্য মুভিটা এতটা পছন্দ হয়নি সবার কাছে।
এই মুভি দেখা হয়নি তবে এর নাম শুনেছিলাম। আপনার মূলভাব পড়ে অনেক ভালো লেগেছে মনে হচ্ছে এই মুভি দেখতেই হবে। সত্যিই তো জীবনে সাকসেস হতে হলে বুদ্ধি কিংবা স্মার্ট হওয়ার প্রয়োজন হয়না। অনেক সময় ভালোবাসা দিয়েই জীবনে সাকসেস হওয়া যায়। মুভির সম্পূর্ণ বিবরণ খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মুভি রিভিউ দেওয়ার জন্য।
আমির খানের মুভি সেই হিসেবে আপনি দেখতে পারেন, তবে আমার রিভিউ তেমন ভালো কিছু উল্লেখ করা হয়নি। বরংচ নিরাশ হবেন যদি আমার রিভিউ করার পর আপনি মুভিটি দেখেন।
আমারও খুব পছন্দের নায়ক এই ভেবেই আমি দেখা শুরু করেছিলাম, পরবর্তীতে খুব বড়সড় একটা ধাক্কা খেলাম নিরাশ হলাম।
মুভিটা আমি দেখেছি ভাই। আমার কাছে মোটামুটি বেশ ভালোই লেগেছে। কাহিনী টা বেশ আলাদা ছিল তবে হ্যা ঐ কিছু অযৌক্তিক বিষয় ছিল। আপনার তুলে ধরা বিষয় গুলো ঠিকই আছে এইরকম বিষয় গুলো টেনে না আনলেও হতো। বেশ দারুণ রিভিউ করেছেন মুভিটার। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
আমির খান মূলত যে ধরনের মুভি করে আমরা সবাই তার মুভি গুলো পছন্দ করি। সে হিসেবে আমরা তাঁর কাছে আরো ভালো কিছু আশা করেছিলাম।
ভাইয়া এই মুভিটি আমার দেখা হয়নি। তবে আমি একবার ছোট ট্রেলার দেখেছিলাম। আপনার রিভিউটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। তাই আমি সময়সূযোগ পেলে অবশ্যই এই মুভিটি দেখে নেব।
অযৌক্তিক বিষয়গুলো এবং পার্সোনাল রেটিং দেখে মনে হয় না আপনার দেখা ঠিক হবে তাও আবার আমার পোস্ট দেখে। তবু দেখতে পারেন।
মুভির মূলভাব ও অযৌক্তিক দিকগুলো দুর্দান্তভাবে তুলে ধরেছেন। আর এই মুভিটি ছিল হলিউডের ফরেস্ট গাম্প মুভির রিমেক। এইজন্য এই মুভির প্রতি সবার প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। আর মুভিটি আমিও দেখেছি খুব একটা ভালো লাগেনি। আর আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর একটা রিভিউ দেওয়ার জন্য।
আমি হলিউডের মুভি টি দেখিনি, তাই আমার আগ্রহ ছিল তবুও নেগেটিভ জিনিসগুলো জানতাম, তবুও ভেবেছিলাম ভালো কিছু থাকবে কারণ আমার পছন্দের নায়ক বলে কথা। কিন্তু পরবর্তীতে দেখলাম অভিনয় হতাশাজনক।