এক ভিলেন রিটার্নস || মুভি রিভিউ
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
৩০শে অক্টোবর, রবিবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।বেশ অনেকদিন হলো মুভি দেখা হয়না, তবে একটা সময় মুভি দেখার ছিল আমার শখের একটি বিষয়। আজ হঠাৎ এই মুভি দেখতে ইচ্ছে করল এবং সেটি আপনাদের সামনে রিভিউ করার চেষ্টা করব। আশা করি আপনারা উপভোগ করবেন।
পরিচালনা | মোহিত সুরি |
---|---|
লিখেছেন | মোহিত সুরি ও অসীম অরোরা |
অভিনয় | জন আব্রাহাম |
দিশা পাটানি | |
তারা সুতারিয়া | |
অর্জুন কাপুর | |
প্রোডাকশন | টি-সিরিজ |
একটা মানুষ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মানসিক চাপের এবং পারিপার্শ্বিক চাপায় কতটুকু হিংস্র হতে পারে সেটি তুলে ধরা হয়েছে এই মুভির মধ্যে। একজন ভারসাম্যহীন মানুষ কতটুকু অমানবিক হতে পারে তার আংশিক রয়েছে এই মুভির পুরো গল্প জুড়ে।প্রথম দিকে বেশ কনফিউশন হলেও শেষের দিকে বোঝা যায় আসল খুনি কে ছিল।
শুরুতে আমরা দেখতে পাচ্ছি, বন্ধু-বান্ধব মিলে পার্টি করছে আনন্দ করছে, ভালো একটি মুহূর্ত দিয়েই শুরু হয়েছিল এই মুভির প্রথম ধাপটি, কিন্তু শুরু থেকেই বেশ রোমাঞ্চকর একটি ঘটনা দেখা যায়। তাদের আনন্দময় মুহূর্তের মধ্যে হঠাৎ করেই একজন এসে সবাইকে খুন করার চেষ্টা করে।
এই মুভির মধ্যে একটা জিনিস লক্ষ্য করা যায় সবাই প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করছে এখানে, মুভির একজন হিরো যাকে তার গার্লফ্রেন্ড ছেড়ে চলে গেছে, বিয়ের দিনে সে তার বিয়ে ভেঙে দিয়ে, সেই গার্লফ্রেন্ডকে ছেড়ে আবার চলে যাচ্ছে এ যেন তার গার্লফ্রেন্ডের প্রতি প্রতিশোধ।
বিয়ে ভেঙে দেয়ার এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে আমাদের এই হিরো বেশ চর্চার মুখে চলে আসে, তাকে নিয়ে মিডিয়াতে অনেক লেখালেখি হচ্ছিল এবং অনেক বড়োসড়ো ঝামেলা হচ্ছিল, আমাদেরই হিরোর বাবা তাকে সাবধান হতে বলেছিল, এসময় তাকে কোম্পানি থেকে বের করে দেয়া হয় তার ক্রেডিট কার্ড ব্যাংক একাউন্ট সবকিছু খালি করে দেয়া হয়। বলা হয় কারো ক্ষতি করে নাই কারো উপকার করে দেখাও।
এখানে বেশ বড়সড় একটি ঘটনা রয়েছে, একটি মেয়ে বেশ ভালো গান করে, হিরোর মনে হলো এই মেয়েটিকে উপরে ওঠানো ও তার দায়িত্ব, আমরা পূর্বেই জানি আমাদের এই হিরো মানুষের ক্ষতি করে থাকে বেশি, সে তার আরেকজন গায়িকা বান্ধবীর সো ক্যানসেল করে তাকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে তার প্রোগ্রামগুলোকে এই মেয়ের ধারা পরিচালনা করত, এতে করে নতুন এই মেয়েটির ফেমাস হতে শুরু করে।
আমাদের হিরো যেভাবে ভয় দেখাতো একটি ইসমাইলি মুখোশ পড়ে, ঠিক একই ভাবে ওই মুখোশ পড়ে বেশ অনেকগুলো মার্ডার হয়েছিল, মুভির এই পর্যন্ত আমরা ধরে নিয়েছিলাম আমাদের এই হিরো হয়তোবা আমাদের মেইন ভিলেন তাকে পুলিশ ধরতে এসেছে।
এতোটুকু সময়ের মধ্যে আমাদের আরেকজন হিরোর এন্ট্রি হয়, দেখানো হয় তিনি খুব সাধারন মানুষ এবং তিনি একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে। আমাদের জন্য সাহেব চিড়িয়াখানায় গার্ড হিসেবে চাকরি করেন ও ড্রাইভারি করেন এবং যে টাকা পায় তা দিয়ে সেই মেয়েটির শোরুম থেকে শপিং করার চেষ্টা করে ।
এভাবে তাদের মধ্যে প্রেম হয় তারা যখন একদিন ঘুরতে বের হয় তখন হঠাৎ করেই খেয়াল করলো আমাদের এই নায়িকা তারমধ্যে একটা হিংস্র ক্যারেক্টার রয়েছে, একটা মোটরসাইকেল তার পাশ দিয়ে অতিক্রম করার কারণে সে ওই বাইকটাকে গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দেয়।
মনে আছে আমাদের এক হিরো কে এই মুভির ভিলেন বানিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তার পেছনে পুলিশ ছিল, এই হিরো এবং ভিলেনের মধ্যে দেখা হয়ে যায়। এখন আমরা বুঝতে পারছিলাম না আসল খুনি কে, কিন্তু ফাইটের দৃশ্য টুকুর মধ্যে আমরা বুঝতে পারলাম পুলিশ ভুল মানুষের সন্দেহ করছে।
আমাদের এই হিরোর খারাপ হওয়ার পেছনে ও সেই একই ঘটনা তার প্রেমিকা তাকে দুঃখ দিয়েছে, প্রতারণা করেছে তার সাথে। এভাবে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং আস্তে আস্তে তার আশেপাশে যত মানুষ প্রতারণা করে তার প্রিয় মানুষের সাথে সেই মানুষগুলোকে সে খুন করা শুরু করেন।
তাই কিছু সময় পরে আমরা দেখতে পেলাম, আমাদের হিরো সাথে তার নায়িকাও রয়েছে আমরা প্রথমেই জানতে পেরেছিলাম তার নায়িকা তার সাথে প্রতারণা করে ছিলো কিন্তু নায়ক যাচ্ছিল সে যেন তার সাথে থাকে। নায়িকা কে খুশি করার জন্য সে অন্য মেয়েদেরকে খুন করা শুরু করে কিছুটা এরকম।
এই অংশটুকুর মধ্যে আমরা জানতে পারলাম আসল খুনি কে ছিল, যখনই আমাদের এই মুভির ভিলেন যাকে সন্দেহ করা হচ্ছিল যার পেছনে পুলিশ ছিল সে যখন জানতে পারল তার প্রেমিকা কেও একইভাবে অপহরণ করা হয়েছে তখন সে পাগলের মত রাস্তায় ছোটাছুটি শুরু করে , এরমধ্যে পুলিশ তাকে এরেস্ট করে ফেলায়।
আপনারা ছবিতে যে বাচ্চাটা কি দেখতে পাচ্ছেন এর বাবাও চিড়িয়াখানার গার্ড এসবে কাজ করতো, বাচ্চাটির মা ছিলনা বাবা তাকে বেশ অত্যাচার করত, সে মানসিকভাবে বেশ ডিপ্রেশনে ছিল এই সময়ের মধ্যে আমাদের যেই ভিলেন তাকে সে মার্ডার করতে অনেক ভাবেই দেখেছে কারণ লাশগুলোকে বাঘের খাঁচাতেই দেয়া হতো খাবার হিসেবে।
পুলিশ যখন চিড়িয়াখানায় আসে এবং লাশের সন্ধান পায় তখন বাচ্চাটি তার বাবার প্রতি প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তার বাবাকে খুনি হিসেবে ধরিয়ে দেয় কিন্তু তার বাবাই কিছুক্ষণ আগে মারা যান। পুলিশ এখানেই কেসটা কে শেষ করতে চেয়েছিল। যেহেতু উনি মারা গেছে এবং তার উপযুক্ত প্রমাণ রয়েছে। এখানে দেখতে পাচ্ছি একটি শিশুর তার বাবার প্রতি প্রতিশোধ।
এই দৃশ্যটায় নায়ক এবং ভিলেন দুজনে একসাথে বেশ ফাইট করে। একপর্যায়ে নায়ক তাকে জানায় সে যে নায়িকার জন্য এতকিছু করছে সে নায়িকা টি বেচে নেই সে নায়িকা টি শুধুমাত্র তার কল্পনা। সে নায়িকা টি মারা গেছে বহুকাল আগে এবং সেটাই ছিল আমাদের ভিলেনের প্রথম খুন।
অর্থাৎ আমাদের এই ভিলেনের প্রেমিকা যখন তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিল তখন সে অনেক আকুতি-মিনতি করছিল এবং তাকে এত জোরে জড়িয়ে ধরেছিল যে তার মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে মেয়েটি মারা যায়। তারপর থেকে আমাদের হিরো ভারসাম্যহীন এবং খুনি হয়ে গেল।
যখন আমাদের এই ভিলেন বুঝতে পারল যে ঘটনা আসলেই সত্যি তার প্রেমিকা আর বেঁচে নেই তার সবটাই ছিল কল্পনা, এবং সে শুধুমাত্র তার প্রেমিকাকে খুশি করানোর জন্য যে খুনগুলো করেছিল সেগুলো আসলে সে নিজেই করেছিল প্রেমিকা তো শুধু ছিল তার কল্পনাতে। সে এতগুলো মানুষকে বাঘের খাবার হিসেবে দিয়েছিল তাই সে অনুতপ্ত হয়ে নিজেই বাঘের খাঁচার মধ্যে চলে যায়।
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
অনেক হাইপড ছিলাম মুভিটি নিয়ে। ফার্স্ট পার্ট যেমন হয়েছিল তাতে আশা করছিলাম ভাল কিছু পাব।কিন্তু একটু যেন হতাশই হয়েছিলাম।আপনার রিভিউ অনেক সুন্দর হয়েছে।প্লট বুঝতে অনেক সাহায্য করেছে।ধন্যবাদ ভাইয়া দারুন একটি রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
যাই বলেন ভাই আমার কাছে মোটামুটি ভালোই লেগেছে, যদিও খানিকটা সময় যেন নিজের মধ্যে ভিলেন ভাব চলে এসেছিল, আমি বেশ ইনজয় করেছিলাম বলতে পারি।
মুভিটি কিন্তু দারুন। একজন প্রেমিক প্রেমে ব্যার্থ হয়ে যে কতটুকু পর্যন্ত যেতে পারে তার বহিঃপ্রকাশ দেখানো হয়েছে। পুরো কাহিনীটা বেশ সুন্দর এবং আপনার পোস্টের মাধ্যমে এক ঝলক দেখে নিলাম মনে হলো। যাক এবার একটু সময় নিয়ে পুরো ছবিটি আবার দেখতে হবে।
আপনার পোস্টের প্রথম ছবিটি কপিরাইট ফ্রি নয় এটি পরিবর্তন করা উচিত বলে মনে করছি। তার পরিবর্তে ছবিটি শুরুর দিককার একটি স্ক্রিনশট যুক্ত করতে পারেন। তাছাড়া সব ঠিক আছে। ধন্যবাদ ভাই, ভালো থাকবেন।
জি ভাই একটা মানুষের মধ্যে কতটা পরিবর্তন আসতে পারে মানসিক চাপের কারণে সেটি তুলে ধরা হয়েছে, আমার কাছেও মুভিটা বেশ ভালো লেগেছে আপনিও দেখতে পারেন, আমি ছবি নিচে ছবির উৎস উল্লেখ করে দিয়েছি, আশাকরি উৎস উল্লেখ করলেন আর সমস্যা হয় না। তবু আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ কিছু গাইডলাইন দেয়ার জন্য এবং পাশে থাকার জন্য।
এক ভিলেন মুভিটা দেখছিলাম অনেক আগে। মুভিটির সম্পর্কে কোন কিছু মনে নেই। কিন্তু আপনার রিভিউ দেখে আবার পুরনো সবকিছু মনে পড়ে গেল ভাইয়া।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল
এক ভিলেন মুভি দ্বিতীয় পার্ট হচ্ছে এক ভিলেন রিটার্ন, আগের মুভিটা বেশ ভালো ছিল তবে এটি নতুন মুভি, আপনিও দেখতে পারেন মুভিটা বেশ ভালই লাগবে আশা করি।
ভাইয়া আমার এই মুভির দেখার দরকার নেই আর নিজেকে ভিলেন ভাবারও প্রয়োজন নেই 😀। তাই হোক খুব সুন্দর একটি মুভি রিভিউ দিয়েছেন দেখতে পাচ্ছি। এই মুভির সচরাচর দেখা হয়না। তবে আপনার রেটিং নাম্বার দেখে মনে হচ্ছে দেখতে হবে। আমার কাছে কোনো মুভি ভালো লাগলে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মুভি রিভিউ দেওয়ার জন্য।
এই কথাটি বলার কারণ হচ্ছে যখন আমরা মুভি দেখি তখন মুভির মেইন ক্যারেক্টার এর বৈশিষ্ট্যগুলো সাময়িক সময়ের জন্য আমরা ফিল করি, অবসর সময়ে হলে দেখতে পারেন আশা করি ভালো লাগবে।