ভার্সিটির বড় ভাইয়ের সাথে দেখা
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
৫ইঅক্টোবর, বুধবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি।কালকের অবস্থা তো আমরা সবাই জানি বিদ্যুৎ নিয়ে একদম কেলেঙ্কারি অবস্থা। তারপর আজকে এক বড় ভাইয়ের সাথে দেখা করার কথা ছিল এরকম পরিস্থিতিতে বড় ভাইয়ের সাথে দেখা করার অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আপনারা সবাই তো জানেন কালকে পরিস্থিতি কেমন ছিল। ভার্সিটির মোস্ট অফ দা সিনিয়র ভাই, পাস করে বের হয়ে গেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। এখনো ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করে ক্যাম্পাসের কি অবস্থা সবার কি অবস্থা। ক্লাব নিয়ে তার অনেক চিন্তাভাবনা। প্রায় সময় আমাকে ফোন দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে ভার্সিটি ক্লাব ভার্সিটির বর্তমান অবস্থা ইত্যাদি নিয়ে।
প্রথম প্রথম ভালো লাগলেও এখন তার সাথে তাল মিলিয়ে জবাব দিতে পারছি না, কারণ আমরা করোনার সময় ভর্তি হয়েছি সে সময় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা অনেক কম ছিল। গত দুবছর আমাদের ক্লাব ছিল না এখন নতুন করে শুরু হওয়া তে পুরনো মানুষগুলো নেই এবং দায়িত্ব এমন কিছু মানুষের হাতে যারা চাইছি না কিছু করতে।
আমাকে নিয়ে ভাইয়ের অনেক স্বপ্ন তাই আমাকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন কিছু জিজ্ঞাসা করেন, ভাই ফোন দিল আমি ফোন হাতে নিয়ে তাকিয়ে আছি কারণ তাকে জবাব দেয়ার মত ভাষা নেই আমার, দিন গড়িয়ে বিকেল বেলা আমি ফোন করলাম ভাই ব্যস্ত ছিলাম তাই কথা বলতে পারলাম না। ভাই খুব বিনয়ের সাথে আমাকে বলল কোন ব্যাপার না যদি সম্ভব হয় আমার সাথে দেখা করো আমি তোমাদের এলাকা তে আছি, আমি বেশ লজ্জায় পড়ে গেলাম আমার রাতে ক্লাস রয়েছে ভাইকে জানালাম আসতে আসতে রাত আটটা বেজে যাবে।
ক্লাস শেষ করে রাতে যখন বের হলাম দেখলাম রাস্তার গাড়ির অবস্থা ভালো না, কোন গাড়িতে লোক নিচ্ছে না পুরো রাস্তা জ্যাম অনেক মানুষের ভিড়। এরমধ্যে ভাই ফোন করে বলছে কখন আসবে, যাইহোক প্রায় দেড় ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকার পর একটি বাসে উঠতে পারলাম। ভাইকে আবার জিজ্ঞাসা করলাম আমি কি আসবো ভাই বলল আসো।
কারণ বেশি রাত হয়ে গেছে এখন যদি ভাই না আসে আমি এতদূর বাসে করে যাব পরবর্তীতে ফেরত আসতে পারবো কিনা সন্দেহ, বেশ আরো ঘন্টাখানেক জার্নি করলাম, যেখানে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট লাগে সেখানে ঘণ্টা পার হয়ে গেল। যাইহোক এয়ারপোর্টে গিয়ে ভাইকে ফোন করলাম দেখলাম আমার আগেই তিনি এসে হাজির ভালই লাগলো এত আন্তরিক মানুষ সিনিয়র ভাইদের মধ্যে পাওয়া যায় না।
এয়ারপোর্ট রেলওয়ে স্টেশনের সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কথাটা তো বললাম, তারপর বললাম চলুন পিছনে চায়ের দোকান আছে সেখানে গিয়ে বসি। সেখানে যেতেই ভাই বলল চল ভাজা পোড়া কিছু খাই। কি একটা অবস্থা কারেন্ট না থাকার কারণে বেশ নিরব ছিমছাম পরিবেশ হয়ে গেছে তবুও মানুষের আনাগোনা কিন্তু কম নেই।
তিনি একটি ধমক দিলে এখনো ভার্সিটি কাপে, কিন্তু মানুষটা দেখতে আমার মতো রোগা চিকন চাকন। ক্লাবের বিভিন্ন ইতিহাস বিভিন্ন জিনিস আমাকে বলা শুরু করলো, এই ক্লাবের প্রথমে আমি রক্ত ও স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক ছিলাম পরবর্তীতে এখন আমি অর্থ সম্পাদক। তিনি আমাকে নিয়ে বেশ ভালো স্বপ্ন দেখেন এটা আমার ভালো লাগছে কিন্তু কেমন যেন রাজনীতিক রাজনীতিক একটি ফ্লেভার পাওয়া যায়। সে চায় আমি যেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হই আমার যেন ক্লাবটি ধরে রাখার মতো ক্ষমতা হয়।
আমি ছোট মানুষ আনন্দ-ফুর্তি করতে আমার বেশ ভালো লাগে, রাজনীতির আমাকে দিয়ে হবে না। বুঝতে পারছিলাম আমাকে দিয়ে তার বেশ কিছু কাজ রয়েছে যেটা সে করতে পারবে না কিন্তু রানিং স্টুডেন্ট হিসেবে আমি সেটি করতে পারব। আমারও যে পাওয়ার পেতে ভালো লাগবে না তা নয়, কিন্তু এ বেশ ঝামেলার কাজ নিজের সময় পরিবারের সময় ইত্যাদি সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ভার্সিটি বসে থাকতে হয়।
আমাকে জাস্ট একের পর এক উপদেশ দিয়ে যাচ্ছে দিয়েই যাচ্ছে। আমি তার কথায় হা তে হা করে যাচ্ছি। ভার্সিটির ক্লাব ভার্সিটির ঐতিহ্য ইত্যাদি প্রায় মুখস্থ হয়ে গেছে। বর্তমান কমিটি কিছুই করতে পারছে না আমাদেরকে এখন হাল ধরতে হবে, ইত্যাদি অনেক কিছু বললো এবং আমাকে অনেক কিছু সম্পর্কে তথ্য দিল। আমার চিন্তা চাকরি করা এসব ঝামেলা থেকে একটু দূরেই থাকতে চাই, আবার ভালো লাগে সবার সাথে কাজ করতে শেখার আছে অনেক কিছু। চা খেতে খেতে এক ঝুড়ি জ্ঞান দিল আমাকে।
সচরাচর আমি দেরি করে বাসায় যায় না, একেতো ক্লাস শেষ করে আসতে আসতে দেরি হয়েছে, তার উপর এখানে বড় ভাইয়ের সাথে প্রায় দু ঘন্টা যাবৎ কথা বলছি। সব মিলিয়ে প্রায় 10 টার বেশি, ভাইকে বিদায় জানাতে পারছি না।
ভাই একের পর এক আমাকে দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছে একের পর এক কথা শুনিয়ে যাচ্ছে। তারপর যখন সাড়ে দশটা বেজে গেল আমার পক্ষে আর সম্ভব হল না আমি বললাম ভাই চলুন হাঁটতে হাঁটতে কথা বলি, ভাই বুঝতে পারল বিষয়টি দেরি না করে আমরা হাঁটতে থাকলাম তিনি আমাকে বাসস্টপ পর্যন্ত এগিয়ে দিল। তিনি আমাকে যতটুকু সময় পেয়েছেন ততটুকু সময় তিনি আমাকে কনভেন্স করার চেষ্টা করছিলো আমি যেন ক্লাবটাকে নিয়ে মন থেকে কিছু করি।
আপনারা হয়তো ভাবছেন এত আদর করার কারণ কি? কারণ কি তা আমিও জানি না তবে ভার্সিটির অনেক মানুষই আমাকে চেনেন কারণ হৈ-হুল্লোড় দৌড়োদৌড়ি আমি একটু বেশি করে থাকি, সে ফার্স্ট সেমিস্টার থেকে আমি সবার কাছে পরিচিত, তাই অনেক বড় ভাই আমার মাধ্যমে তারা প্রভাব বিস্তার করতে চায় এটা আমি বুঝি। তবে যাই হোক প্রত্যেক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু না কিছু শেখার রয়েছে, প্রত্যেকে আমাকে নতুন করে ভাবার মতো কিছু জিনিস শিখিয়ে দিয়ে গেছে এটাই বোধহয় আমার প্রাপ্তি।
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
.gif)
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
𝕋𝕙𝕒𝕟𝕜 𝕪𝕠𝕦 𝕖𝕧𝕖𝕣𝕪𝕠𝕟𝕖
Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)