গাছ লাগাও পরিবেশ বাঁচাও
আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.
২২ আগস্ট, মঙ্গলবার।
আ মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি, আজকে নিজের কিছু মনের কথায় লিখে দেয়ার চেষ্টা করব, নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করব।
যদিও এখন বর্ষার সময়টা শেষের দিকে বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে আমরা এটা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, সেটা হল আমরা আমাদের ইউনিভারসিটির চারপাশে বৃক্ষরোপণ করব, অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম কোন কার্যক্রমটা করা যায়। তারপর হঠাৎ একদিন ডিসিশন নিলাম এখন যেহেতু বৃক্ষ রোপনের সময় তাই আমরা এই কাজটা করতে পারি।
ইউনিভার্সিটির মধ্যে গাছ লাগানো এটা সহজ বিষয় নয়, এর জন্য অনেক উপর মহল থেকে পারমিশন নেয়া হয়েছে, যেহেতু আমাদের এই ক্যাম্পাসটা নতুন তাই এই ক্যাম্পাসের আর্কিটেকচার ডিজাইনের উপর ভিত্তি করে কোথায় কোথায় গাছ হবে এবং কি কি গাছ রোপন করা হবে সে বিষয়ে স্যারদের মধ্যে একটা মিটিং করা হয়, পরবর্তীতে যখন আমাদেরকে জানানো হয় আমরাও সেই মোতাবেক প্রস্তুতি নিয়ে শুরু করি।
শিক্ষকরা আমাদেরকে বলেছিল কাঠবাদাম এবং কৃষ্ণচূড়া গাছ হবে আমাদের ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের ডিজাইনের জন্য পারফেক্ট, আমরা আর বেশি কথা না বাড়িয়ে এ দুটো গাছের মধ্যেই রাজি হয়ে গেলাম। যদিও আমাদের আরও বেশ কয়েকটি গাছ পছন্দের ছিল, বিপত্তি আসলো আমাদের প্রত্যেকের বাসা বেশ অনেক দূরে, কেননা আমরা সবাই বনানী ক্যাম্পাসের ছাত্র, এইখান থেকে চারা গাছ সংগ্রহ করে আমাদের একটা সাভার নিয়ে যেতে হবে নতুন ক্যাম্পাসে।
এখানে আমার ক্লাব বেশ ভালো ভূমিকা রাখে, সাভারের মধ্যেই পাওয়া গেল বেশ কয়েকটা ছোট ভাই তাদের মধ্যে একজন খুব ইচ্ছুক হয়ে বিষয়টি দেখবে বলে জানালো, একদিনের মধ্যেই প্ল্যান করা হয়ে গেল এবং পরের দিন শুক্রবার আমরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি করবো এরকম চিন্তা ভাবনা।
আমরা দশটা কৃষ্ণচূড়া গাছ এবং দশটা কাঠবাদাম গাছ রোপন করবো বলে চিন্তা করলাম, ছোট একটা পিকআপ ভাড়া করা হলো এবং গাছগুলো কেনা হলো একদম সকাল সকাল, যতটুক খরচ হবে আমরা তা পাঠিয়ে দিলাম সেই ছোট ভাইয়ের কাছে। আমরা ইউনিভার্সিটি তে আসার আগেই গাছগুলো এসে পড়েছে।
ঐদিন আমাদের প্রত্যেকেরই ক্লাস ছিল যাই হোক দুপুরের লাঞ্চের পর আমরা সবাই প্রস্তুতি নিলাম বিকালের মধ্যে গাছ রোপন করে ফেলব, যেভাবে সেই কাজ লাঞ্চের পর আমরা গর্ত করার শুরু করলাম এবং বিকেলের সময় সকল টিচারদের কে ডাকলাম বৃক্ষরোপনে অংশগ্রহণ করার জন্য।
গরমে অনেক কষ্ট হয়েছে অনেক পরিশ্রম গিয়েছে, তবে সত্যি কথা বলতে মন থেকে একটা অন্যরকম শান্তি কাজ করেছে। কেননা আমরা হয়তো সংগঠন থেকে অনেক কাজে করি হয়তো দুদিন পর আমাদেরকে কেউ মনে রাখবেন না। কিন্তু আজকে থেকে ১০ বছর ১৫ বছর পরও যখন আমি আমার ইউনিভার্সিটিতে যাব, যখন আমার হাতের রোপন করার ছোট্ট চারাগুলো বৃহৎ আকারে এক বৃক্ষতে রূপান্তরিত হবে, যখন ক্যাম্পাসটা পুরো সবুজে ঢেকে যাবে, গর্ব করে বলতে পারবেন এগুলো আমাদের তৈরি করা।
পরিশেষে বলতে চাই যে যাই করুন, আমরাই কিন্তু পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী, পৃথিবী আজ হুমকির মুখে আমাদের জন্য, আমরাই আমাদের সভ্যতাকে আর ও উন্নত করার জন্য পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছি। তাই আসুন আমরা গাছ লাগাই পরিবেশ বাঁচায়, নিজে বৃক্ষরোপণ করি এবং অন্য কেউও উৎসাহিত করি।
আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ভাই আপনারা দারুণ একটি কাজ করেছেন। কারণ পরিবেশ বাঁচাতে বৃক্ষরোপণের কোনো বিকল্প নেই। নয়তো দিনদিন পরিবেশের অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাবে। আমি কিছুদিনের মধ্যেই ছাদবাগান করবো ইনশাআল্লাহ। কাঠগোলাপ এবং কৃষ্ণচূড়া গাছ আমার খুব পছন্দ। তবে ছাদবাগানের জন্য এই গাছ দুটি পারফেক্ট নয়। এটা ঠিক কয়েক বছর পর ক্যাম্পাসে গিয়ে যখন দেখবেন, গাছ গুলো বড় হয়ে গিয়েছে তখন মনটা একেবারে ভরে যাবে। যাইহোক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ আসলে দেখানোর জন্য নয় কিংবা নিজের শখের জন্য নয়, এখন গাছ লাগানো টা আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক। কারণ আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনেক অনেক সম্পদ রেখে যাচ্ছে কিন্তু অসুস্থ একটা পরিবেশ উপহার দিয়ে যাব আমার নেক্সট প্রজন্মকে, এটা খুব একটা সুখকর খবর নয়।
ছোটবেলা যখন স্কুলে লেখাপড়া করেছি এই ধরনের গাছ লাগানোর উদ্যোগ স্কুলের পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গাছ লাগানো হতো কিন্তু এখন আর সেই ধরনের কর্মকাণ্ড দেখিনা। আপনার ইউনিভার্সিটি তে গাছ লাগানোর গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো। যেটা সত্যি একজন ছাত্র হিসেবে দায়িত্ব শিক্ষকের সাথে পরামর্শ করে ভালো ভালো গাছ লাগানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বৃক্ষরোপণ এখন আমাদের কর্তব্য, আমরা পরিবেশের সাথে এত পরিমাণ অত্যাচার করেছি প্রকৃতি এখন আমাদের সে প্রতিশোধ নেবে, আমাদের বর্তমানে এখন উচিত প্রচুর পরিমাণ গাছ লাগানো, না হলে হয়তো মানব সভ্যতা বিপদের মুখোমুখি হবে।
ভাই আপনি অনকে সুন্দর একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। আপনি যে কাজটি করছেন সেটা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। গাছ আমার খুব ভালো লাগে। প্রকৃতির
সাথে মিশে যেতে ইচ্ছা করে। সাধুবাদ জানাই আপনার এই কাজ কে। ভালো থাকবেন।
এটা শুধু আমার একার চিন্তাভাবনা ছিল না, আমরা চারজন পুরো প্ল্যানিংটা করেছিলাম, এবং বাস্তবায়নের সময় আরো অনেক মানুষের সাহায্য নিতে হয়েছে। তবে হ্যাঁ খুব ভালো লেগেছে ওই দিন, এবং আজও ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য দেখে।
ভাইয়া আপনার গাছ লাগানোর উদ্যোগটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।নিজের ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকদের কাছে জেনে তাদের পরামর্শ মতো গাছ লাগালেন খুব ভালো করেছেন। এটা ঠিক বলেছেন ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয়ে গেলেও অনেক পরে যখন যাবেন সেখানে তখন নিজের হাতের গাছগুলোকে বড় হতে দেখলে অনেক ভালো লাগবে।অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাই।
শিক্ষকদের সাথে প্ল্যান করতে হয়েছিল কারণ আমরা চাচ্ছিলাম না আমাদের এই গাছগুলো ভবিষ্যতে কাঁটা পড়ুক, তাই আমরা ইউনিভার্সিটির নীল নকশা দেখে এমন এমন জায়গা গুলো সিলেট করেছি যেখানে গাছগুলো কাটা পড়বে না। একদম ফিটা মেপে মেপে আমরা গাছগুলো রোপন করেছি যেন কোনো কারণেই একটা ও কাটা না পরে।
ভাইয়া আপনাদের ক্যাম্পাসে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে দেখলাম সবাই অংশ গ্রহন করেছে। সম্মানিত স্যারগনও অংশগ্রহন করেছেন। কাঠবাদাম এবং কৃষ্ণচূড়া গাছ গুলো বড় হলে ক্যাম্পাসটা সুন্দর ভাবেই ফুটে উঠবে। ধন্যবাদ।
হ্যাঁ একসময় এই গাছগুলো যখন অনেক বড় হবে তখন দেখতে খুব সুন্দর হবে, হয়তো আমরা সেটা উপভোগ করতে পারবো না কিন্তু ভবিষ্যতে যারা আসবে তারা কিন্তু খুব সুন্দর একটা পরিবেশ পাবে।