কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ শেষ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

হ্যালো বন্ধুরা

আপনারা সবাই কেমন আছে? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমিও ঈশ্বরের আশীর্বাদে ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি,আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



সবাই যখন বিশ্রাম করছে আমি তখন হোটেলের রুমের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলাম। অনেকটা সময় হয়ে গেল কিন্তু কেউ যেন ঘুরতে যাওয়ার কথা বলছে না। তাই আমি বাধ্য হয়ে দাদাকে জিজ্ঞাসা করলাম আমরা কখন বের হব হোটেল থেকে। দাদা আমার প্রশ্নের উত্তরে বলল সন্ধ্যার দিকে বের হবে। দাদার কথা শুনে আমার মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল মনে মনে অনেক কিছুই ভেবেছিলাম কিন্তু তার কিছুই হলো না। যাইহোক সন্ধ্যা হতেই আমরা সবাই রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম আবারও সমুদ্র সৈকত দেখতে। সন্ধ্যের দিকে আসতে পেরে খুবই ভালো লেগেছিল কারণ আমরা যখন এসেছিলাম তখন সূর্যাস্তের সময় হয়ে গিয়েছিল। সূর্যাস্তের সময় সূর্যের লাল আলোর কিরণ যখন সমুদ্রের জলের উপর পড়েছিলাম তখন সমুদ্রের সৌন্দর্যটা আরো বেশি বেড়ে গিয়েছিল।
IMG-20230423-WA0007.jpg

সূর্যাস্তের যাওয়ার সাথে সাথে কিছুক্ষণের মধ্যেই চারিদিকে অন্ধকার নেমে এলো।আর রাতের বেলায় সমুদ্র সৈকত যেন এক অন্য একটি রূপ ধারণ করল। আমরা সবাই সমুদ্রের কিনারা থেকে হাঁটছিলাম হাঁটতে হাঁটতে দেখতে পেলাম সমুদ্রের পাশে অনেক দোকান বসেছে। অনেক দোকান ছিল সব দোকানেই এত পরিমানের লোকের ভিড় ছিল যে কোন পণ্য ভালো করে দেখতে পারছিলাম না। এখানে বেশিরভাগ দোকানেই সাগর থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ঝিনুক, মুক্তা,শঙ্খ ইত্যাদি দিয়ে মালামাল বানিয়েছে উনারা বিক্রি করছে। আমরাও কিছু জিনিসপত্র কিনলাম তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে সোজা চলে গেলাম চা খেতে।


চা খাওয়ার পর সোজা চলে গেলাম একটি টোটো করে রেস্টুরেন্টে। এখানে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবারও চলে এলাম হোটেলে। এত পরিমানে খেয়েছিলাম যে ভালোভাবে শুতে ও পারছিলাম না বসতে পারছিলাম না। রুমের ভিতর একটু হাঁটাহাঁটি করে যখন একটু খাবারগুলো হজম হলো তখন ঘুমাতে গেলাম। বিছানায় শুতেই আমার দু চোখের পাতা বন্ধ হয়ে এলো কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম আমি জানিনা। সকালে আমার ঘুম ভাঙলো দাদার কন্ঠ শুনে। দাদা বলো তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আটটার ভিতর খাবার খেয়ে আবার ঘুরতে বের হতে হবে। আমি ঘুড়ার কথা শুনে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে তৈরি হয়ে নিলাম। একটু পর আমরা সবাই হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়লাম অন্য একটি নতুন জায়গার উদ্দেশ্যে। আসলে আমার জায়গাটির নাম মনে নেই কিন্তু যে জায়গায় আমরা গিয়েছিলাম সেখানে অনেক সামুদ্রিক মাছ দেখতে পেয়েছিলাম। জেলেরা সাগর থেকে সবেমাত্র মাছ ধরে এনেছে। আবার সাগরের পাশেই দেখতে পেলাম অনেক মাছ সূর্যের আলোতে শুকাতে। আসলে এগুলো শুটকি নাম হিসেবে জানি আমরা। আমি আগে পরেও শুনেছি শুটকি মাছের কথা কিন্তু এভাবে যে শুটকি মাছ তৈরি করা হয় সেটা আমার জানা ছিল না আসলে সাগরে ঘুরতে এসে দেখে জানতে পারলাম।
IMG-20230423-WA0018.jpg

IMG-20230423-WA0016.jpg

IMG-20230423-WA0043.jpg

IMG-20230423-WA0013.jpg

IMG-20230423-WA0045.jpg

IMG-20230423-WA0048.jpg


আমি এখানকার মানুষের সাথে একটু কথা বলার চেষ্টা করলাম কিন্তু আমি তাদের কথা কিছুই বুঝতে পারলাম না। তারা বাংলায় কথা বলছিল কিন্তু আমার কাছে খুব অদ্ভুত লাগছিল আমি কিছু বুঝতে পারছিলাম না। তাদের একটা কথা বুঝতে পারলাম সেটা হল সাগরে এসে আমার কেমন লাগছে। আমিও উত্তরে বললাম সাগরে এসে আমার খুব ভালই লাগছে।


হঠাৎ দিদি আমাকে বলল আমাদের হোটেলে ফিরে যেতে হবে। শুনে আবারো মনটা খারাপ হয়ে গেল কারণ কাল সকাল হলেই আমরা কক্সবাজার ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিব। তাই খুবই মন খারাপ হচ্ছিল কারণ আমার প্রথম আশা ছিল এখানে। আমি সত্যি বলতে এখানে মায়ায় পড়ে গিয়েছিলাম এই অল্প কিছুদিনের।
IMG-20230423-WA0023.jpg

IMG-20230423-WA0022.jpg

IMG-20230423-WA0021.jpg

IMG-20230423-WA0035.jpg

IMG-20230423-WA0036.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি:oppo
ক্যামেরা মডেল :oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:১১.০১.২০২৩
সময়:০২.২০মিনিট
স্থান : কক্সবাজার।

যাই হোক কিছুই করার ছিল না কারণ আমাদের ফিরতেই হবে। একটা কথাই বলবো সাগরে আসার পর আমার খুবই ভালো লাগছিল কারণ এখানে মুক্ত বাতাস গ্রহণ করতে পারছিলাম আর চারিদিকে এত সবুজে সবুজে আঠা ছিল চারিপাশটা। সত্যিই অসাধারণ। সমুদ্র সৈকতে এসে সমুদ্রের তাজা মাছ খেতে পেরেছি যার সাধটা অসাধারণ ছিল। পরের দিন সকাল হতেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে বিদায় জানিয়ে রওনা করলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।

আজ এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 11 months ago 

এক অপর সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
যতবার চাই ঘুরে আবার মন ছুটে যায় অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
শেষ পর্বে এসে আপনার সুন্দর ফটোগ্রাফি এবং বর্ণনা পড়ে খুবই ভালো লাগলো।

 11 months ago 

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের শেষ পর্বটি অসাধারণ ভাইয়া। এর আগে আমি অনেকবার শুটকি মাছ খেয়েছি। কিন্তু কখনো দেখিনি শুটকি মাছ কিভাবে তৈরি করে। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে সেটাও দেখে নিলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 11 months ago 

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য।

 11 months ago 

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের ভ্রমণ পর্বের আগের কয়েকটি পর্ব আমি এখন দেখেছিলাম। আজ শেষ পর্ব দেখে খুবই ভালো লাগলো অনেক ঘুরাঘুরি করেছেন বোঝাই যাচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি খাওয়া-দাওয়া সব সময় একটু কম করা উচিত খাওয়া-দাওয়া যদি স্বস্তি না দেয় তাহলে সে খাবার খেয়ে কোন লাভ নেই। যাই হোক শেষমেষ ভালোই কক্সবাজার ঘোরাঘুরি করেছেন বোঝাই যাচ্ছে। আপনাদের কাটানো মুহূর্তটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান কিছু কথা আমাকে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59493.68
ETH 2649.33
USDT 1.00
SBD 2.45