"পূজায় ভ্রমণের সুন্দর মুহূর্ত "

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন আজ আমি আপনাদের মাঝে পূজায় ভ্রমনে যাওয়ার কিছু আনন্দের মুহূর্ত শেয়ার করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



কথায় আছে হিন্দুদের বারো মাসে ১৩ পূজা এর মধ্যে একটি হচ্ছে মনসা পূজা। আমরা যারা হিন্দু আছি তারা সবাই জানি যে সাপের দেবী হচ্ছে মনসা। লক্ষিন্দরের গল্প আমরা অনেকেই জানি এটি নিয়ে একটি মুভি ও রয়েছে। যাই হোক এই পূজাটি আসলে ভদ্র মাসের শেষে হয়ে থাকে। আমাদের এলাকাতে ও মনসা পূজা হয়ে থাকে এই দিনটিতে। এই দিনটাতে সবাই সাপকে কলা এবং দুধ দেয় খেতে ।এখানে একটি প্রশ্ন আছে যে সাপে কি কলা খায়। না সাপে কলা খায় না সাপে শুধু দুধ খায় আর কলাতে সাপের বিষ ছেড়ে দিয়ে যায়। মনসা পূজা সবাই ভক্তি সহকারে করে থাকে। আমার এখনো মনে পড়ে ছোটবেলায় এই দিনটাতে রাতে আমি কোথাও বের হতাম না শুধু সাপের ভয়ে।


অনেকদিন বৃষ্টি হওয়ার কারণে কোথাও ঘুরতে যেতে পারেনি তাই বন্ধুরা মিলে ভাবলাম যে এই পূজাতে আমরা বন্ধুরা মিলে সবাই ঘুরতে বের হব। একা একা ঘুরতে কিন্তু সত্যিই ভালো লাগেনা যদি বন্ধুরা পাশে থাকে তাহলে ঘোরার আনন্দটা বেড়ে যায়। পূজার দিনে সবাই ঠিক করলাম বিকেল চারটার দিকে বের হব। যেহেতু পূজায় যাচ্ছি সেহেতু নিজেকে একটু পরিবর্তন করা খুবই দরকার কারণ অনেক লোক সেখানে আসবে নিজেকে যদি একটু পরিপাটি করা যায় তাহলে নিজের কাছে ও ভালো লাগবে। তাই আমি সকালে খাওয়া দাওয়া করে চলে গেলাম সেলুনে চুল, দাড়ি কাটানোর জন্য। কিন্তু ওখানে যে আরেক সমস্যা কারণ এত পরিমাণে সিরিয়াল ছিল যে আমার আসতে আসতে অনেক দেরি হয়ে গেল। আমি তাড়াতাড়ি বাড়িতে এসে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম পূজা দেখতে। প্রথমে আমার এলাকাতে পূজা দেখলাম ওখান থেকে পূজার প্রসাদ গ্রহণ করে চলে গেলাম অন্য এলাকাতে। যেতে যেতে শুনলাম ওই এলাকাতে অনেক যাক চমক করে পূজার আয়োজন করা হয়। তাই আর দেরি না করে সোজা বাইক চালিয়ে চলে গেলাম পূজার স্থানে। ওখানে যে আমি খুবই অবাক হয়ে যাই কারণ এত পরিমান লোকের ভিড় ছিল যে কিছুতেই সামনের দিকে আগাতে পারছিলাম না। অনেক কষ্টে মনসা মায়ের মন্দিরে যেতে পারলাম। মন্দিরে যে মায়ের সামনে নিজেকে সমর্পণ করলাম।
IMG20230818183040.jpg
মন্দিরে আসার সময় দেখলাম এখানে মেলা বসেছে। আমি মায়ের মন্দির থেকে বেরিয়ে সোজা বন্ধুদের নিয়ে চলে গেলাম মেলাতে।সেখানে দেখলাম অনেক খাবারের দোকান এসেছে ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য খেলনার দোকান এসেছে। যাই হোক আমি তো এখন ছোট নেই এই কারণে খেলনা দোকানে আর গেলাম না সোজা চলে গেলাম খাবারের দোকানে। দেখতে পেলাম এখানে একটি দোকানে ১২ রকমের চানাচুর দিয়ে খাবার তৈরি করছে এটি নাম হল ১২ ভাজি। ১২ ভাজি খাওয়ার পর এবার খেলাম পেয়ারা মাখা। গোটা একটি পেয়ারা ছোট ছোট টুকরো করে ঝাল, লবণ আর অন্যান্য মসলা দিয়ে মাখিয়ে তৈরি করছে খেতেও অনেক স্বাদ । তারপর অন্য একটি খাবার খেয়েছিলাম এটিও পেয়ারা মাখার মতন তৈরি করছিল কিন্তু এটির নাম আমি আসলে জানিনা কিন্তু খেতে একটু টক টক লেগেছিল কিন্তু খেতে দারুন।
IMG20230818230322.jpg

IMG20230818230254.jpg

IMG20230818193130.jpg

IMG20230818190018.jpg

IMG20230818185812.jpg
বাজারে অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরির পর হঠাৎ অনেকদিন পর একটি বন্ধুর সাথে দেখা হল বন্ধুটির সাথে কথা বলে খুবই ভালো লাগলো কারণ অনেক দিন পরে ওর সাথে দেখা হয়েছিল। কথা বলতে বলতে বন্ধুটি বলল তাদের নাকি ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলা রয়েছে। আমি বললাম কোথায় আর কবে? প্রশ্নের উত্তরে বন্ধুটি বলল তাদের নাইট টুর্নামেন্ট ফুটবল খেলা। আমি মনে মনে ভাবলাম যেহেতু ঘুরতে বের হয়েছি অনেকদিন পরে। আবার যেহেতু ফুটবল খেলার কথা বলছে তাহলে একটু ফুটবল খেলা উপভোগ করে আসা যাক। আমি বন্ধুদের বললাম খেলা দেখতে যাওয়ার কথা কিন্তু আমার কিছু বন্ধুরা বলল তারা যাবে না। তাই আমার দুজন বন্ধুকে নিয়ে আমি সোজা রওনা হলাম ফুটবল খেলা দেখার জন্য। আসলে বন্ধুটি জায়গাটির নাম বলেছিল আসলে সেই জায়গাটি আমি চিনি না। পথে লোকের কাছে শুনতে শুনতে অনেক কষ্টে ফুটবল খেলার মাঠে পৌছালাম। খুবই ভালো লাগছিল কারণ রাত্রে ফুটবল খেলা তেমন একটা দেখা যায় না। প্রথমে যে চোখের সামনের বেঁধে গেল আখের রসের শরবত। আখের রস খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকার তাই দেরি না করে তিন গ্লাস আখের রস আমি একাই খেলাম। শরীর চাঙ্গা করে তারপর চলে গেলাম ফুটবল খেলা দেখার জন্য খেলা দেখতে দেখতে কখন যে রাত দুটো বেজে গেছে বুঝতেই পারলাম না। যাই হোক আরো একটু সময় থাকার পর রওনা করলাম বাড়ির উদ্দেশ্য।
IMG20230819002347.jpg

IMG20230819002344.jpg

IMG20230818230136.jpg

IMG20230818210536.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি :oppo
ক্যামেরা মডেল :oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য :3.37mm
তারিখ :১৮.০৮.২০২৩
সময়:১১.৪৫মিনিট


অনেকদিন পর ঘুরতে বের হয়ে অনেক ভালো লাগলো। পূজা দেখতে এসে আবার রাত্রে ফুটবল খেলা দেখা সব মিলিয়ে আজ খুব ভালো সময় কাটালাম সবার সাথে নিজের ও অনেক ভালো লাগলো।

আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 11 months ago 

মনসা পূজা আমাদের বাড়িতেও হয় তবে সেটা ভাদ্র মাসের যেকোন বৃহস্পতিবার। আমিও সাপ খুব ভয় পাই ছোট বেলায় সব বাচ্চারা সাঁতার কাটতে নামতো পুকুরে আমি নামতাম না সাপের ভয়ে।আর যেদিন মনসা পূজা হতো খুব ভয়ে ভয়ে রাতটা পার করতাম আর পূজার দিন সাপ বের হতো।মনসা পূজায় বসে ভক্তি ভরে মা মনসাকে স্বরণ করতে ভালোই লাগে।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 11 months ago 

সারা বছর জুড়ে আপনাদের অনেকগুলো পূজা থাকে। বেশ আনন্দ করতে পারেন প্রতিটি পূজাতে। যাইহোক সাপ ভয় লাগে না এমন মানুষ খুব কমই আছে। আমার তো সাপ ভীষণ ভয় লাগে। পেয়ারা মাখা খেতে দারুণ লাগে। তাছাড়া অনেক কিছুই তো খেয়েছেন দেখছি। রাতের বেলা ক্রিকেট কিংবা ফুটবল খেলা দেখার মজাই আলাদা। সবমিলিয়ে দারুণ সময় অতিবাহিত করেছেন। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

বাহ্ দাদা পূজা দেখতে গিয়ে তো দেখছি অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন। সত্যি বলেছেন দাদা আখের রস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 11 months ago 

আপনাদের ধর্ম সম্পর্কে আমার বেশি একটা জানা নেই। তবে আপনারা যখন এই সমস্ত বিষয়ে আমাদের মাঝে পোস্ট শেয়ার করে থাকেন তখন অনেক কিছু সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পারি। অবশ্য এক এক জনার ভালোলাগার মুহূর্তগুলো জানতে পারলেও বেশ ভালো লাগে আমার। খুব সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন পূজার স্থানে। আর সেই সময়ের দারুন অনুভূতিগুলো শেয়ার করার চেষ্টা করেছেন এই পোস্টের মধ্যে। বেশ ভালো লাগলো সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফির মাধ্যমে বর্ণনার সাথে তুলে ধরেছেন দেখে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 67310.11
ETH 3522.28
USDT 1.00
SBD 2.71