"হঠাৎ করেই মেলায় ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত"
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। অনেকদিন আগে আমি হঠাৎ করেই মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলাম সেই মুহূর্তটা সবার সাথে ভাগ করে নিচ্ছি। আশা করি, আমার এই মুহূর্তটা আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
অনেকদিন আগে কথা। আমার পাশের বাসার দাদার স্ত্রী খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি সেদিন সকালে ভাত খাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছি হঠাৎ করেই আমার ফোনে ফোন এলো। ফোনটি ধরতেই দেখি আমার সেই দাদা ফোন দিয়েছে। আমি ফোনটি ধরতেই দাদা আমাকে বলল তুই কোথায় তাড়াতাড়ি আয় তোর বৌদি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। আমি কথাটি শোনার পর সকালে ভাত খাওয়ার কথাই ভুলে গেলাম সঙ্গে সঙ্গে তৈরি হয়ে রওনা করলাম হাসপাতালে যাওয়ার জন্য। আমি এমনিতে মানুষের বিপদে-আপদে সবসময় আগে এগিয়ে যাই তখন আমার নিজের কথাই মনে থাকে না। যাই হোক বাড়ি থেকে কিছুটা পথ দাদার বাড়ি যেতে লাগে। আমি কিছু দূর যেতেই দেখি দাদা বাড়ি থেকে বৌদিকে নিয়ে বের হয়ে এসেছে এটি দেখে আমি দৌড়ে দাদার কাছে গেলাম। দাদার কাছে যেতেই দাদাকে বললাম গাড়ি কি ঠিক করেছ? দাদা বললো একটি টোটো ঠিক করতে পেরেছি এই টোটো করেই আমরা হাসপাতালে যেতে পারবো। আমি তাড়াতাড়ি করে দাদার সাথে বৌদিকে টোটোতে ওঠার জন্য সাহায্য করলাম। টোটো তে ওঠার পর টোটো ছেড়ে দিল আমরা প্রায় দেড় ঘণ্টার মতন পথ পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছলাম। বৌদি হাঁটতে পারছিল না তাই উইল চেয়ার এনে বৌদিকে বসিয়ে দিলাম এবং রিসিপশনে যে দ্রুত ডাক্তার দেখানোর জন্য ভিজিট কাটলাম। ডাক্তার দেখানোর পর ডাক্তার আমাদেরকে বলল বৌদির কিছু টেস্ট করতে হবে তাই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। আমাদের কাছেও কোন অপশন ছিল না তাই বৌদিকে হাসপাতালে ভর্তি করালাম ডাক্তার কিছু ওষুধ লিখে দিয়েছিল সেই ওষুধগুলো আনিয়ে নিলাম।
তারিখ:১২.০৫.২০২৩
সময়:১২.০৫মিনিট
স্থান: গোবিন্দপুর।
সবকিছু ঠিকঠাক করার পর দাদা হঠাৎ করেই আমাকে বলল সৈকত তুই সকালে কি খেয়েছিস? আমি দাদাকে একটু মিথ্যে কথা বললাম কারণ দাদা খুব টেনশনে ছিল তাই আমি দাদাকে সত্যিটা বলতে পারলাম না দাদাকে বললাম আমি খেয়েছি। দাদার সাথে আমার অনেক দিনের সম্পর্ক আমরা বেশিরভাগ সময় একসাথে সময় কাটিয়ে থাকি দাদাকে দাদা বলা যায় না আমার বন্ধু বলা যায়। দাদা আমার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল যে আমি মিথ্যা কথা বলেছি। তারপর দাদা আমাকে বলল আমার না খুব ক্ষুধা লেগেছে বাইরে থেকে কিছু খেয়ে আসি। কিন্তু আমি দাদাকে বললাম এই মুহূর্তে খাওয়া কি ঠিক হবে। দাদা কোন কথা না বলে হাঁটতে শুরু করল আমিও দাদার সাথে হাঁটতে শুরু করলাম। হাসপাতালে আসার সময় একটি মাঠ সামনে পড়েছিল সেই মাঠেই মেলা বসেছে।
তারিখ:১২.০৫.২০২৩
সময়:৩.৪৪মিনিট
স্থান: গোবিন্দপুর।
দেখলাম দাদা সেই মাঠের দিকেই যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে দাদাকে বললাম দাদা তুমি কোথায় চলেছ? দাদা বলল আমার ক্ষুধা লেগেছে সামনে মেলা বসেছে আমি ওখানে যাচ্ছি কিছু খেতে। তোর যদি আসতে ইচ্ছা করে আয় আমার সাথে তা না হলে তুই হাসপাতালে যে তোর বৌদির কাছে যে বসে থাক। দাদা বেশিরভাগ সময় আমার সাথে এমন কথা বলে না কিন্তু আজ যখন বলেছে তখন আমি একটু বুঝতে পারলাম যে দাদা হয়তো বা আমার মিথ্যা কথাটা ধরে ফেলেছে। আমারও খুব ক্ষুধা লেগেছিল কারণ সকাল থেকে আমিও কিছু খায়নি তাই কোন কথা না বলেই দাদার সাথে গেলাম। মেলার ভেতরে ঢুকতেই দেখলাম অনেক অনেক প্রকারের আসবাবপত্র, হস্তশিল্প, বাচ্চাদের খেলনা ইত্যাদি ইত্যাদি এই মেলায় এসেছে। আমার কাছে তেমন টাকাও ছিল না কারণ খুব দ্রুতই বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম এমন করে যে মেলায় আসবো সেটাও ভাবতে পারিনি তাই শুধু ঘোরা ছাড়া কিছু কিনতে পারলাম না।
বাজারে ঘুরতে ঘুরতেই নাকে খাবারের গন্ধ আসতে শুরু করল। আমি সহ্য করতে না পেরে দাদাকে বললাম দাদা চলো একটু খেয়ে আসি আমার ক্ষুদা লেগেছে খাবারের গন্ধে আমি আর থাকতে পারছি না। দাদা হেসে দিয়ে আমাকে বলল তুই নাকি সকালে খেয়ে এসেছিস তাহলে এখন ক্ষুধা লাগলো কি করে? আমিও দাদার মুখে দিকে তাকিয়ে হেসে দিয়ে বললাম দাদা আমি মিথ্যা কথা বলেছিলাম কিন্তু খাবারের গন্ধে আমি আর থাকতে পারছি না চলো না কিছু খেয়ে আসি। দাদা ও রাজি হয়ে গেল কিছু দূর যেতেই দেখলাম অনেকগুলো মিষ্টির দোকান ওনারা ও এই মেলায় বসেছে। প্রত্যেক দোকানে আলাদা আলাদা মিষ্টি বানিয়ে সাজিয়ে রেখেছে। মিষ্টিগুলোর দিক তাকাতেই মিষ্টি যেন আমাকে হাত নাড়িয়ে ডাকছে। আমি আবার মিষ্টি ভালো খাই এ কারণে মিষ্টির দিক তাকাতেই আমি আর লোভ সামলাতে পারলাম না সঙ্গে সঙ্গে দাদাকে নিয়ে দোকানের যে অর্ডার করলাম কিছু মিষ্টি।
ক্যামেরা পরিচিতি:oppo
ক্যামেরা মডেল:oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:১২.০৫.২০২৩
সময়:৪.১২মিনিট
স্থান: গোবিন্দপুর।
মিষ্টি খাওয়ার পর ওয়েটারকে বললাম আমাদের বিল টা দিতে। বিল দিতেই আমার চোখ কপালে উঠে গেল কারণ শুধু মিষ্টি খেয়ে দুজনে ১০৫২ টাকা বিল করেছি। আমার তো খুবই ভয় করছিল কারণ পকেটে একটা টাকাও আমার ছিল না মনে মনে ভাবছিলাম টাকা যদি না দিতে পারি তাহলে আজ হয়তো এই দোকানে থালা-বাসন মাজতে হবে। কিন্তু দাদা আমার ভয়টা কাটিয়ে দিল দাদা সঙ্গে সঙ্গে তার পকেট থেকে টাকা বের করে বিলটা পরিশোধ করে দিল। আমিও মনে মনে ভাবলাম যাক এই যাত্রায় বেজে গিয়েছি দাদাকে সঙ্গে সঙ্গে বললাম দাদা চলো এখন ফিরে যাক। দাদা আমাকে বলল আর একটু সময় মেলাতে ঘুরি। অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরির পর মেলা থেকে যখন বেরিয়ে আসছিলাম তখন সামনে দেখতে পেলাম একটি ঝাল মুড়ির দোকান ।সেখান থেকে ঝাল মুড়ি কিনে খেতে খেতে রওনা করলাম হাসপাতালে দিকে।যাই হোক হঠাৎ করেই মেলায় ঘুরতে পেরে খুবই ভালো লাগলো সময়টা খুব মজাদার ছিল।
আসলে মানুষের বিপদে আপদে তার পাশে থাকলে নিজের কাছেও ভীষণ ভালো লাগে। যদিও আপনি ওনাকে খাওয়ার বিষয় মিথ্যা কথা বলেছিলেন, কিন্তু আপনার দাদা ঠিক বুঝতে পেরেছিলেন। হঠাৎ করে মেলায় ঘুরতে গিয়ে দেখছি বেশ ভালোই খাওয়া দাওয়া করেছিলেন। যদিও মিষ্টি জিনিস খেতে আমি তেমন একটা পছন্দ করি না, কিন্তু আপনার তোলা ফটোগ্রাফি দেখে অনেক বেশ লোভনীয় মনে হচ্ছে মিষ্টিগুলো। যাইহোক মুহূর্তটা শেয়ার করলাম দেখে ভালো লাগলো।
আসলে বিপদ এমন একটা জিনিস যা যে কোন সময় হতে পারে। আর আমরা যদি সেই মানুষগুলোর পাশে থাকি তাহলে ভালোই হয়। আমাদের সবারই উচিত সবার বিপদ-আপদে পাশে থাকা। আপনারা তো দেখছি খাওয়া-দাওয়া টা অনেক ভালোভাবে করেছিলেন। খাবারের ফটোগ্রাফি দেখে ইচ্ছে করছে এখান থেকে নিয়ে খেয়ে নিতে। মেলায় গিয়ে ঘোরাঘুরি করতে খুব ভালো লাগে আমার কাছে। আপনার ঘোরাঘুরি করার মুহূর্তটা ও ভালো লেগেছে।
টোটোতে গাড়িটা বলতে কোন গাড়িকে বুঝিয়েছেন হয়তো সেটা আমার জানা নেই। তবে যাই হোক ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে বেশ দারুন খাওয়ার আইটেম তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে। অবশ্যই পানিফলটা আমার খুবই প্রিয় আর মিষ্টি জিনিস তেমন একটা বেশি প্রয়োজন হয় না। আনন্দঘন এই মুহূর্তটা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।