"প্রকৃতির মাঝে কিছুটা সময় ও ফটোগ্রাফি"
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি ভ্রমণ পোস্ট উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
কিছুদিন আগে বর্তির বিলে ঘুরতে গেছিলাম। সেদিন ছিল মঙ্গলবার আর আমি মঙ্গলবারে মাছ,মাংস খাই না। বাইরে গেলে কিছু না খেলে কি ভালো লাগে কিন্তু আজ এমন দিনটাতেই ঘুরতে গেলাম যে সেদিনই আমি মাছ, মাংস খাইনা।সপ্তাহের এই একটা দিন আমি নিরামিষ খেয়ে থাকি কোন ধরনের বাইরের খাবার খাই না। শহর থেকে বর্তির বিল অনেকটাই ভিতরে। আমি আগেও আমার কিছু পোস্টে এই বর্তির বিলের কথা বলেছিলাম। যখন পৃথিবীতে মহামারী সৃষ্টি হয়েছিল তখন সবাই এই বিলটাতে আসা যাওয়া করতো কারণ তখন বেশিরভাগ সবার অক্সিজেনের খুব দরকার ছিল আর অক্সিজেন পেতে হলে অবশ্যই গ্রামের দিকেই আসতেই হবে। কারণ এই কথা কেন বলছি শহর অঞ্চলে বেশিরভাগ সবসময় ধুলাবালি বাতাসের সাথে মিশে থাকে আর সেই ধুলাবালি আমাদের নিশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে রোগ ব্যাধির সৃষ্টি করে থাকে। কিন্তু গ্রামের সম্পূর্ণ আলাদা কারণ গ্রামে অক্সিজেনের পরিমাণটা বেশি থাকে কারণ গ্রামে ধুলাবালির পরিমাণটা বাতাসে কম থাকে। বলতে গেলে জিরো পার্সেন্ট।এখানে ফ্রেশ অক্সিজেন পাওয়া যায় এ কারণে নিঃশ্বাস নিতে কোন সমস্যা হয় না।
যাই হোক অনেকদিন পরে যাচ্ছি এখানে।বেশিরভাগ আমরা বাইকে করে যেয়ে থাকি কারণ বাইক চালাতে আমার খুবই ভালো লাগে। সেদিনও আমরা বাইকে করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আজ বাইক চালাতে প্রচন্ড রাগ হচ্ছিল কারণ রাস্তায় প্রচন্ড জ্যাম ছিল আর ধুলাবালি ও ছিল। আমি সেদিন হেলমেট পড়েছিলাম না যার কারণে নিঃশ্বাস নিতেও একটু কষ্ট হচ্ছিল। খুব খারাপ অবস্থা হয়েছিল সেদিন আমার। বেশ কিছুক্ষণ বাইক চালানোর পর আমরা গ্রামের রাস্তায় ঢুকে পড়লাম। প্রচন্ড খারাপ রাস্তা বাইকের গতি ১০ এর বেশি উঠলেই স্থির ভাবে বসে থাকা যায় না বাইকের উপরে এতটাই বাজে অবস্থা। আমরা সকাল সকাল বেরিয়ে ছিলাম কিন্তু শীতের সময়ে সূর্যাস্ত যেন তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। আমাদের পৌঁছাতে পৌঁছাতে সূর্যাস্তের সময় হয়ে গিয়েছিল। গ্রামের কিছুটা পথ পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম বর্তির বিলে। এখানে দেখতে পেলাম বর্তির বিল এখন আর আগের মতো নেই কারণ দিন যাচ্ছে আর এখানে পরিবর্তন হচ্ছে। সর্বপ্রথম যখন এসেছিলাম আমরা মনে পড়ে এখানে কোন দোকান ছিল না কিন্তু এখন দিন যাচ্ছে আর এখানে দোকান রেস্টুরেন্ট হয়ে যাচ্ছে। এটা হওয়ারই কথা কারণ যেখানে লোকসমাগম বেশি হয় সেখানে এমনটাই হবে এটাই স্বাভাবিক। এখানে আগে একটি পিকনিক রিসোর্ট ছিল কিন্তু সেদিন যে দেখলাম আরও একটি নতুন পিকনিক রিসোর্ট এখানে তৈরি করা হয়েছে। যাই হোক আমরা যখন যাই তখন বেশিরভাগ সময় আমরা খালের পাশে ওখানে দিয়ে থাকি কারণ এখানে বসে থাকতে হাঁটাচলা করতে খুবই ভালো লাগে।
আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন সূর্যাস্তের সময় হয়ে গিয়েছিল। সূর্যাস্তের সময় একটা জিনিস লক্ষ্য করা যায় কারণ সেটা হচ্ছে সূর্যাস্তের সময় চারি পাশে লাল বর্ণ ধারণ করে এই সৌন্দর্যটা দেখতে খুবই সুন্দর লাগে যেটি শহরে কোনদিন ও সম্ভব নয়। গ্রামে একটা জিনিস লক্ষ্য করা যায়। এখানে সকাল হলেই সবাই জমিতে কাজ করতে বের হয়ে যায় আর যখন সূর্যাস্তের সময় হয়ে যায় তখন সবাই একে একে তাদের গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়। আমরা যেহেতু খালের পাশে ছিলাম সামনেই দেখতে পেলাম একটি নৌকায় তিনজন লোক দুইজন মহিলা একটি পুরুষ। সম্ভবত উনারা অনেক দূরে কাজে গেছিল আর সেখান থেকেই এখন তারা ফিরছে। আবার কিছু দূরে দেখতে পেলাম কিছু মানুষ গরু মহিষকে জমিতে খেতে নিয়ে গিয়েছিল আর সেখান থেকে তারা এখন ফিরছে। এগুলো দেখলে সত্যিই মনটা ভরে যায় ইচ্ছা হয় না যে শহরে ইট পাথরের মধ্যে থাকি। মনে হয় যে সব সময় যদি উনাদের সাথে থাকতে পারতাম এই গ্রামের পরিবেশ সাথে মিশে একাকার হয়ে যেতে পারতাম।
তারিখ:১২.১২.২০২৩
স্থান: বর্তির বিল
গ্রামের মানুষ খুব সাধারণভাবে জীবন যাপন করে থাকে। আমরা যখন গেছিলাম হয়তোবা তখন পেঁয়াজের মৌসুম চলছিল কারণ সব জমিতেই তখন পেঁয়াজ রোপন করা হচ্ছিল। আমরা যখনই যাই তখনই কিছু না কিছু খেয়ে থাকি আর বেশিরভাগ আমরা চা খেয়ে থাকি কারণ চায়ে চুমুকের সাথে প্রকৃতিকে উপলব্ধি করতে খুব দারুণ লাগে। নিজেকে তখন কবি কবি ভাবতে শুরু করি আমি 😃😃😃😃। আপনাদের সাথে এমনটা হয় কিনা আমি জানিনা কিন্তু আমার সাথে বেশিরভাগ এমনটাই হয়। যখন গ্রামে পরিবেশে মিশে যে, খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে চায়ের কাপে চুমুক দেই তখন নিজের ভেতর কবি কবি অনুভূতি হতে থাকে।এখানে একটি ব্রীজ আছে আর ব্রীজের পাশে একটি চায়ের দোকান আছে। আমরা যখনই যাই তখনই এই দোকানেই চা খেয়ে থাকি কারণ এখানে চায়ের মানটা খুব ভালো। আমরা চা খেয়ে দেরি করলাম না কারণ সন্ধ্যা হয়ে এসেছিল। আর এখানে সন্ধ্যা হয়ে এলে অনেক সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। তাই আর দেরি না করে আমার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলাম এবং যেতে যেতে কিছু ফটোগ্রাফি ও করলাম।
ক্যামেরা পরিচিত:oppo
ক্যামেরা মডেল:oppo A79 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:4.05mm
তারিখ:১২.১২.২০২৩
সময়:০৫.০৭মিনিট
স্থান: বর্তির বিল
খুব অল্প সময় থেকে ছিলাম কিন্তু যতটুকু সময় ছিলাম ততটুকুই খুব আনন্দে ছিলাম পিওর অক্সিজেন নিতে পেরেছিলাম, প্রকৃতির সাথে মিশে সে একাকার হয়ে গিয়েছিলাম। মন চাচ্ছিল না যে এই প্রকৃতির মাঝ থেকে চলে যেতে। কিন্তু বাস্তবটা খুব কঠিন হয়ে থাকে তাকে মেনে নিয়েই আমাদের সামনের দিকে আগাতে হয়। কিছুই করার ছিল না মায়াটা কাটিয়ে বেরিয়ে পড়লাম বাড়ির উদ্দেশ্যে কারণ সকাল হলেই আবার জীবনের নতুন একটি অধ্যায় শুরু হবে।
শহরের ইট, কাঠ,পাথরের জঙ্গলে থেকে হাপিয়ে ওঠার পর এরকম মুক্ত অক্সিজেন যুক্ত জায়গা থেকে ঘুরে আসা আসলেই দরকার। অনেক ভাল লাগল বিলের পরিবেশ, দাদার পোস্টেও এই বিলটা দেখেছি। আপনার ট্রাভেল ব্লগটি সুন্দর ছিল।ধন্যবাদ ভাইয়া ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।
নিজের মন মাইন্ড ফ্রেশ রাখতে এবং উৎফুল্ল মনে থাকতে অবশ্যই ভ্রমণের কোন বিকল্প নেই।
এমন একটি জায়গা ভ্রমণ করেছেন ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যি আমার অনেক ভালো লেগেছে।
বিশেষ করে প্রথম দ্বিতীয় এবং তৃতীয় নম্বর ফটো অসাধারণ।
ঘুরাঘুরি করলে মনটা যেমন ফ্রেশ হয়, তেমনি মনটা একেবারে ভালো হয়ে যায়। মন মাইন্ড ফ্রেশ রাখার জন্য মাঝে মাঝে এরকম জায়গা গুলোতে ঘুরতে যাওয়া অনেক বেশি প্রয়োজন। আপনার ঘুরাঘুরি করার মুহূর্তটা আমি বেশ ভালোই উপভোগ করেছি। সে সাথে আপনার করা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে তো আমার আরো বেশি ভালো লেগেছে দেখতে। এরকম প্রকৃতির মাঝে গেলে আর ফিরে আসতে সত্যি ইচ্ছে করে না। ধন্যবাদ ঘুরাঘুরি করার মুহূর্তটা এবং ফটোগ্রাফি গুলো ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
Thank you very much for giving me the opportunity to travel with you. Very beautiful natural landscape of your region, impressive photographs and good text of the post. Thank you very much.
আপনি, নিলয় দা এবং আমাদের দাদা বর্তির বিলে ঘুরতে গিয়েছিলেন, এটা দাদার পোস্টে পড়েছিলাম। আসলে এমন জায়গায় ঘুরাঘুরি করতে খুব ভালো লাগে। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে চোখ দুটি একেবারে জুড়িয়ে গেল। প্রতিটি ফটোগ্রাফি এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। আপনারা পুরোটা বিকেল দারুণ কাটিয়েছেন ভাই। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।