"তুমি যে আমার আলো গল্প পর্ব:৫"
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'তুমি যে আমার আলো'গল্পের পঞ্চম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি,আপনাদের সবার গল্পটি ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
লাবনী ও সৌরভ তারা রিকশা থেকে নেমে একটি নদীর সাইডে যে বসলো। পাশে থেকে যাচ্ছিল একজন বাদাম বিক্রেতা। সৌরভ বাদাম বিক্রেতাকে ডাক দিয়ে কিছু বাদাম দিতে বললো। লাবনী বললো আমি বাদাম খাব না আর তুমি তো জানো আমি বাইরে কোন কিছু খাই না। সৌরভ বললো আমি জানি তুমি বাইরের কোন খাবার খাও না কিন্তু আজ যেহেতু আমি তোমাকে নিয়ে এসেছি। আজ না হয় আমার জন্য একটু বাইরেই খেলে। আমার জন্য নয় একটু পেট খারাপ হলো। একদিন না একদিন তো বলতে পারবে যে অমুকের সাথে বের হয়েছিলাম বাইরের খাবার খেয়েছি। আর সেদিন আমি অসুস্থ হয়ে পড়ে ছিলাম।এই স্মৃতিটা রেখে দিও ভবিষ্যতের জন্য। তোমার জামাইকে বলবে যে আমার একটা বন্ধু ছিল তার সাথে বাইরে ঘুরতে গিয়েছিলাম আর তার সাথে বাইরের খাবার খেয়েই পেট খারাপ হয়েছিল 😄😄😄। তখন লাবনী বলল।
লাবনী: তুমি কি থামবে কিছুই হবে না দাও আমি খাচ্ছি।
সৌরভ: তোমার যদি খেতে ইচ্ছা না করে তাহলে জোর করে খেও না।
লাবনী: কিছুই হবে না বললাম তো।
সৌরভ: আমি সিনেমাতে দেখেছি এই বাদাম ছিলে খেতে খেতে একজন আরেকজনের প্রতি প্রেম ভালোবাসা বেড়ে যায়।
(লাবনী হেসে বলে)
লাবনী: তুমি ও কি আমার প্রেমে পড়ে গিয়েছো?
সৌরভ: আরে না আমি কেন তোমার প্রেমে পড়তে যাব। আমি তো জাস্ট বললাম যে সিনেমায় এমনটা হয়।
লাবনী: যদি বাস্তবে কোনদিন হয়ে যায় তখন কি করবে?
সৌরভ: এটা কোনদিন সম্ভব নয়।
লাবনী: মনে কর কোনদিন যদি তোমাকে আমার ভালো লাগে আর আমি যদি তোমাকে বলি তোমাকে ভালোবাসি তখন তুমি কি করে? আমার ভালোবাসা গ্রহণ করবে?
সৌরভ: আমি যে তোমাকে বললাম এটা কোনদিন সম্ভব না। আর যদি কোনদিন এমনটি হয় তাহলে আমার প্রশ্নের উত্তর থাকবে না। আর তুমি কেন এই সমস্ত কথা বলছো আমি তো তোমার ফ্রেন্ড। এসব বাদ দাও প্রকৃতিকে উপভোগ করো ভালো লাগবে। আমার যখন মন খারাপ হয় আমি তখন কোন সমুদ্রে অথবা নদীর কাছে এসে বসে থাকি। কারণ এখানে আসলে নিজেকে অনেক ফ্রেশ লাগে।
তারা এখানে অনেক সময় পার করে এবং অনেক কথা বলে। একটা সময়ে লাবনী সৌরভকে বলে তার ক্ষুধা লেগেছে তাকে কিছু খাওয়াতে। কথাটি বলার সঙ্গে সঙ্গে সৌরভ তাকে খাবার খাওয়ানোর জন্য একটি হোটেলে নিয়ে গেলো। লাবনী খাবারের হোটেলের কাছে যেতেই বলে ।
লাবনী: সৌরভ তুমি আমাকে এ কোথায় নিয়ে এলে?
সৌরভ:তুমি তো বললে তোমার ক্ষুধা লেগেছে তাইতো তোমায় খাবার খেতে নিয়ে এলাম।
লাবনী: তাই বলে এখালে খাবো। তুমি এখানের পরিবেশ দেখছো।আমি এখানে খেতে পারবো না।
সৌরভ:আমি তোমাকে বলছি কিছু হবে না। আমি জানি তুমি এখানে খাওয়ার অভ্যস্ত না। তুমি বড় বড় রেস্টুরেন্টে গেলে তোমাকে ম্যাডাম বলে সম্বোধন করবে। আর তুমি কোন কিছু অর্ডার করতে গেলে ওয়েটারকে প্রথমে ডাকতে হবে তারপর অর্ডার দিতে হবে। তারপর কখন যে অর্ডারটি আসবে তা তুমি নিজেও জানো না। আর এখানে হাত উঁচু করে দাদা বলে ডাক দিয়ে অর্ডার দিলেই তোমার অর্ডারটি চলে আসবে। এখানে তোমার টিপস ও দেওয়া লাগবে না। তোমাকে এইটুকু গ্যারান্টি আমি দিতে পারি এখানে খাবারগুলো মানসম্মত। হতে পারে রাস্তার ফুটপাতে কিন্তু এখানে বসে খাওয়ার মজাটাই আলাদা।
অবশেষে সৌরভের কথা মেনে নিলো লাবনী। তেমন একটা খাবার তারা অর্ডার করেনি ডাল, ভাত, ভর্তা,ভাজি,আর একটি মাছের তরকারি। লাবনীর প্রথম প্রথম খেতে একটু সংকোচ বোধ হচ্ছিল কিন্তু পরবর্তীতে সৌরভকে ধন্যবাদ জানায় লাবনী। সৌরভ বললো কি কারনে ধন্যবাদ। লাবনী বলে সত্যি কথা বলতে আমি অনেক বড় বড় রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করেছি কিন্তু এই নরমাল একটি খাবারের দোকানে এসে এইসব খাবার খেয়ে সত্যি বলতে খুব দারুণ লাগছে। আসলে বড় বড় রেস্টুরেন্টে ও এত সুন্দর খাবারের টেস্ট হয়তো হয় না। তার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানালাম এত সুন্দর খাবার খাওয়ানোর জন্য। যাইহোক খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবারো রিকশায় করে লাবনীকে পৌঁছে দিল তার বাড়ি। লাবনীকে নামিয়ে দিয়ে সৌরভ তার বাড়িতেই ফিরছিলো। তখন লাবনী পেছন থেকে ডাক দিয়ে সৌরভকে থামতে বলে আর তাকে ধন্যবাদ জানায়। লাবনী বলে তোমার সাথে হয়তো আমার জীবনে এই প্রথম কোথাও যাওয়া আর এই দিনটি খুব সুন্দর ছিল। তুমি বলেছিলে জীবনের স্মৃতির পাতায় লিখে রাখতে।মনে করো আমার জীবনে তোমার সাথে কাটানোর একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে।
লাবণী আর সৌরভ তো বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি এবং খাওয়া দাওয়া করলো। আসলেই অনেক সময় বড় বড় রেস্টুরেন্টে খেয়েও ততোটা তৃপ্তি পাওয়া যায় না, যতটুকু তৃপ্তি পাওয়া যায় রাস্তার পাশে থাকা হোটেলে খাবার খেলে। আমার তো মনে হচ্ছে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে যাবে। সৌরভ যদিও বলছে যে এমনটা কখনো হবে না,কিন্তু আমার মনে হয় লাবণী যদি বলে,তাহলে সৌরভ কোনো ভাবেই না করতে পারবে না। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।
লাবনী ও সৌরভের গল্পের খুব সুন্দর পর্ব আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করে যাচ্ছেন৷ যেভাবে সৌরভকে বিভিন্ন ভাবে লাভনী সাহায্য সহযোগিতা করছে। বিভিন্ন ভাবে তাদের মেলামেশা বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে, এতে মনে হচ্ছে তাদের দুজনের মধ্যে কিছুটা প্রেমের ভাব রয়েছে৷ তবে হয়তো সৌরভ এই বিষয়টি মেনে নিবে না। তবে লাবনী যেহেতু সৌরবভকে যে কথাই বলে সে কথাই সে মেনে নেয়। যদি লাবনী তাকে এই বিষয়টিও গ্রহণ করার জন্য বলে হয়তো সে ওই বিষয়টিও মেনে নেবে৷ একই সাথে তারা দুজনে খুব সুন্দর কিছু সময় অতিবাহিত করছে এবং ঘোরাঘুরি করছে। আসলে দুজনে মিলে যখন রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করা হয় সেইখানে যে মজা পাওয়া যায়, তার থেকেও বেশি মজা পাওয়া যায় যখন দুজন মিলে বাইরে খাওয়া দাওয়া করা হয়। অসংখ্য ধন্যবাদ এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য৷ পরবর্তী পর্ব দেখার আশায় রইলাম৷