"জীবন যুদ্ধ গল্প পর্ব: ৭"

in আমার বাংলা ব্লগ8 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে জীবন যুদ্ধ গল্পের আরো একটি নতুন পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, এই পর্বটি ও আপনাদের খুব ভালো লাগবে।তাই বিলম্ব করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-asad-photo-maldives-1024960.jpg
সোর্স



এর পর থেকে সে নিয়মিত কলেজে যাওয়া শুরু করে। কিন্তু কলেজে গেলে প্রিয়ার পাশে কেউই বসতো না সবাই তাকে দেখে হাসাহাসি করত। তার এই চেহারা দেখে সবাই তাকে অপমান জনিত কথা বলত। কিন্তু প্রিয়া তাদের সব কথাই মুখ বুজে সহ্য করতো কোন সময় একটা প্রতিবাদ করত না। কারণ সে নিজেকে তৈরি করতে চেয়েছিল সে সব সময় ভাবতো আজ যে মানুষগুলো তাকে অপমান করছে। একটা সময় সেই মানুষগুলো তাকে সম্মানের চোখে দেখবে। প্রিয়া ক্লাসে সব সময় একা একাই বসত কিন্তু শিক্ষকদের খুব প্রিয় ছিল প্রিয়া কারণ আগেই বলেছি প্রিয়া ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিল। যখন প্রিয়া কলেজে ভালো রেজাল্ট করা শুরু করল তখন আস্তে আস্তে সবাই তার বন্ধু হতে শুরু করল। এমনটাই হয়ে থাকে যখন কেউ বিপদে থাকে তখন কোন বন্ধুকেই পাওয়া যায় না আর যখন সেই মানুষটা সফলতার মুখ দেখতে পায় তখন বন্ধুর অভাব হয় না এটাই পৃথিবীর নিয়ম।


এমনভাবে সফলতার মুখ দেখতে দেখতে প্রিয়া তার পড়াশোনার জীবন শেষ করে। পড়াশোনা শেষ করে বসে থাকতে হয়নি চাকরির জন্য কারণ সে একজন মেধাবী ছাত্রী ছিল। পড়াশোনা শেষ করতেই একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে সে চাকরি পায়। বেশ কয়েক বছর চাকরি করার পর ওই প্রতিষ্ঠানের সে সবার বস হয়ে যায়। আজকের প্রিয়ার সফলতার পিছনে একমাত্র হাত বন্ধু লাবনীর। কারণ প্রিয়া যখন খুব দুঃখে কষ্টে ছিল তখন একমাত্র সাথী হয়েছিল লাবনী। এটাই প্রকৃত বন্ধুর কর্তব্য একটা বন্ধুর দায়িত্ব তার সুখে দুখে সব সময় তার সঙ্গ দেওয়া। আমাদের সব সময় চিন্তা করা উচিত যে বন্ধু সর্বদা সুখের সময় পাওয়া যায় কিন্তু দুঃখের সময় পাওয়া যায় না সেই বন্ধুকে আমাদের জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দাওয়াই মঙ্গল। কারণ এই বন্ধুগুলো সব সময় স্বার্থবাদী হয় এদের স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে আর একটা মুহূর্ত সেখানে থাকবে না।যাই হোক যেহেতু লাবনী সব সময় প্রিয়ার সুখে দুঃখে সঙ্গের সাথী হয়েছিল তাই সে লাবনীকে কোনদিন ভুলে যেতে পারেনি। প্রিয়া যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো সেখানে লাবনীকে একটি বড় পদে চাকরি দেয় প্রিয়া।


অন্যদিকে আকাশ ও পড়াশোনা শেষ করে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পায়। সেও প্রতিষ্ঠানের বড় একটি পদেই চাকরি করে। একদিন আকাশ একটি রেস্টুরেন্টে খেতে চায়, প্রিয়া এবং লাবনী ও সেই রেস্টুরেন্টে খেতে চায়। তারা বেশিরভাগ সময় এই রেস্টুরেন্টে খেতে এসে থাকে কিন্তু সেদিন হঠাৎ তাদের দেখা হয়ে যায় কিন্তু তারা কেউ কাউকেই চিনতে পারে না। চিনবেই বা কেমন করে সেই ছোটবেলার প্রিয়া এখন অনেক বড় হয়ে গিয়েছে আর আকাশ ও অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাদের একটি স্মৃতি কিন্তু ছিল একটি ঘড়ি। আকাশ ও প্রিয়ার যখন দেখা হয়েছিল আকাশের চোখ পড়েছিল প্রিয়ার হাতের দিকে। সে অনেকটা সময় তার হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে সে ভাবতে থাকে তার এই ঘড়িটা খুব পরিচিত। কিন্তু সে বুঝতে পারছিল না কারণ অনেকটা সময় অনেকটা বছর আগের কথা। রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া শেষ করে আকাশ বাসায় আসে। বাসায় এসেই সে বিছানায় শুয়ে পড়ে আর ভাবতে থাকে ওই ঘড়িটার কথা সে ভাবতে থাকে সেই ছোটবেলার সেই বান্ধবী প্রিয়ার কথা। কিন্তু সে ভেবে পারছিল না যে এখনো তার দেওয়া ঘড়ি সে বান্ধবী কি তার সঙ্গে রেখেছে কারণ অনেকটা বছর তাদের দেখা হয় না ভুলে যাওয়ারই কথা। কিন্তু আকাশ কোনমতেই ভুলতে পারছিল না রেস্টুরেন্টে প্রিয়ার হাতের ঘড়িটার কথা।


আকাশের মন কিছুতেই মান ছিল না তাই সে অনেক কষ্টে খবর জোগাড় করে আকাশ যে রেস্টুরেন্টে খেতে যায় ওই রেস্টুরেন্টে প্রিয়া ও প্রায় খেতে যায়। তাইতো আকাশ প্রতিদিন রেস্টুরেন্টে খেতে যায় শুধু একটা বার প্রিয়াকে দেখার জন্য। কিন্তু বেশ কিছুদিন হয়ে গেল প্রিয়া রেস্টুরেন্টে আসে না। অনেক অপেক্ষার পর প্রিয়ার বান্ধবী লাবনীর সাথে দেখা হয়। লাবনীকে দেখে আকাশ আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় লাবণীর কাছে। তার কাছে যেই লাবনীকে বলে আপনার সাথে আগের দিন একটি মেয়ে এসেছিল আজ উনি আসেনি। লাবনী তার প্রশ্নের উত্তরে বলে কে আপনি আপনি? আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না তো। আকাশ লাবনীকে বসতে বলে তারপর আকাশ তার পরিচয়টা দেয়।

আজ গল্পটি এখানেই শেষ করছি। বাকি পর্বটি খুব শীঘ্রই আপনাদের সবার মাঝে উপস্থাপন করব। আশা করি, আপনাদের পর্বটি ভালো লাগবে সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.026
BTC 58961.27
ETH 2500.29
USDT 1.00
SBD 2.45