'ভালোবাসি তোমাকে ' গল্পের চতুর্থ পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ11 hours ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনার সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আমাদের মাঝে 'ভালোবাসি তোমাকে' গল্পের চতুর্থ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে।তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-radmila-1635622306-27601104.jpg

সোর্স



শুভ অফিসের কাজ সেরে বাড়ি আসতে আসতে রাত হয়ে যায়। লেট হয়ে যাওয়ার কারণে বাড়িতে এসে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ে। এদিকে মনিকা রাত বারোটার দিকে শুভকে ফোন দেয় কিন্তু মনিকার শুভর ফোনটি বন্ধ পায়। মনিকা বুঝতে পারে না শুভ কেন তার সাথে এমন ব্যবহারটি করছে। শুভ হঠাৎ করে মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যায়। শুভর মনিকার কথা খুব মনে পড়ে তাই তখন মনিকাকে ফোন দেওয়ার জন্য ফোনটি বের করে। কিন্তু আবার ভাবতে থাকে রাত অনেক হয়ে গিয়েছে। এত রাত্রে ফোন দেওয়াটা কি ঠিক হবে। কিন্তু এদিকে তার মনটাও শান্ত হচ্ছিল না।খুব ইচ্ছে করছিল তার সঙ্গে কথা বলার জন্য। সে ভাবলো যা হবার হবে সে ফোন দিবেই। যেই ভাবা সেই কাজ শুভ মনিকাকে ফোন দেয় কিন্তু আবারো শুভর মনটি ভেঙ্গে যায় কারণ মনিকার ফোন ওয়েটিং ছিল। সে ভাবতে থাকে মনিকা কেন এমনটি করছে সে তো আমাকে জানাতে পারতো। আমি নিজে থেকেই ওদের জীবন থেকে সরে আসবো থাকতে চাইনা তাদের মাঝে দেয়াল হয়ে😔😔😔।


সকালে মনিকা ফোন দেয় শুভকে শুভ ফোনটি রিসিভ করে। মনিকা সঙ্গে সঙ্গে তাকে বলে আপনি কেন আমাকে না বলে চলে গেছেন? কি হয়েছে? কি এমন কাজ পড়ে গেল যে আমাকে বলার সময়টুকু পেলেন না।রাতে আপনাকে ফোনে কতবার ট্রাই করছি কিন্তু আপনি ফোনটা বন্ধ করে রেখেছেন। আমি এখানে থাকতে চাই না। আমাকে নিয়ে যান আমি আপনার সঙ্গে থাকতে চাই। শুভ বলে আমি বাড়িতে নেই আমি শহরে চলে এসেছি। তুমি থাকো বাবার বাড়িতে যতদিন মন চায় ততদিন থাকো আমি তোমাকে বারণ করব না। কিন্তু মনিকা বলে ওঠে আমি আপনাকে বললাম যে আমি থাকতে চাই না। আপনি যেখানে থাকেন আমি সেখানেই থাকবো। আমিতো শহরে চিনি না আপনি কোথায় থাকেন।আমি বাড়িতে আসছি আপনি আমাকে এসে নিয়ে যান।


ফোনটি কেটে দিয়ে মনিকা দ্রুত ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দেয় শুভদের বাড়িতে। হঠাৎ মনিকা শশুর বাড়িতে আসার পর তার শশুর শাশুড়ি অবাক হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বলে কি হয়েছে বৌমা তুমি হঠাৎ চলে এলে? মনিকা তখন বলে ভালো লাগছে না ওখানে। আপনাদের কথা খুব মনে পড়ছিল তাই চলে এলাম। তখন শাশুড়ি বলে শুভ বলল তুমি অনেক দিন পরে আসবে তাই তোমাকে বললাম । তুমি কিছু মনে করো না।তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও আমি তোমাকে খাবার দিচ্ছি। মনিকা রুমে যে শুভকে আবারো ফোন দেয়। শুভ ফোনটি রিসিভ করে। মনিকা শুভকে বলে আমি বাড়িতে পৌঁছে গেছি।আপনি কখন আছেন আমাকে নিতে? তখন শুভ বলে দেখো মনিকা আমি এখানে একা থাকি আর এটা একজনের ঘর তুমি আসলে আমি পেরে উঠবো না তুমি মা-বাবার এখানে থাকো। মনিকা বলে আমাকে যখন নিয়ে যেতেই পারবেন না তাহলে আমাকে বিয়ে করেছিলেন কেন? আমি কোন কথা শুনতে চাই না আপনি বাড়িতে আসবেন আর আমাকে আপনার সঙ্গে নিয়ে যাবেন আমি থাকতে পারবো না আপনাকে ছাড়া। এই কথা বলে মনিকা ফোনটি কেটে দেয়।


শুভ কোন উপায় না পেয়ে শুভ বাড়িতে যায়। আর যে মনিকা কে তার সঙ্গে করে নিয়ে আসে শহরে। শুভ শহরে একটি বাসা ভাড়া করে থাকে। বাসার মালিকও জানতো যে শুভ বিবাহ করেছে তাই কোন সমস্যাই হবে না। শুভ রুমটি খোলার সঙ্গে সঙ্গে মনিকা রুমটি দেখে বলল অনেক বড় রুম আমরা দুজনে ভালোভাবে থাকতে পারবো। তুমি অনেক অগোছালো জিনিসপত্র সবকিছু এলোমেলো করে রেখেছো। চিন্তা করো না আমি যখন চলে এসেছি তখন সবকিছু গুছিয়ে রাখব। তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে আসো আমি তোমার জন্য খাবার তৈরি করছি। শুভ ফ্রেশ হতে চলে যায় আর মনিকা তার জন্য কিছু খাবার বানানোর জন্য রান্না করে চলে যায়। মনিকা ফ্রিজ খুলতেই দেখে ফ্রিজে কোন খাবার নাই। সঙ্গে সঙ্গে শুভকে ডাক দেয় শুভ বাথরুম থেকে বের হয়ে আসে আর বলে কি হয়েছে? মনিকা শুভকে বলে আপনি কি কিছু খান না সারাদিন না খেয়ে থাকেন। শুভ মনিকার কথা কিছুই বুঝতে পারে না তাই আবারও জিজ্ঞাসা করে কেন কি হয়েছে? তখন মনিকা বলে ফ্রিজে কিছু নাই কিছু যে রান্না করব তাও পারছি না। আপনি জামা প্যান্ট পড়ে বাজার থেকে কিছু সবজি কিনে আনেন। আর আমি আপনাকে একটি চ্যাট করে দিচ্ছি সেই সব মালামাল গুলো নিয়ে আসবেন। শুভ বলে এসবের কোন প্রয়োজন নাই বাইরে থেকে খেয়ে নিব।


তখন মনিকা রেগে গিয়ে বলে সারাজীবন কি বাইরে খাবেন আপনি। শুভ বলে না তা কেন হবে। মনিকা বলে তাহলে বললেন কেন যে বাইরে খাবেন। আমি আপনাকে যেটা বলেছি আপনি সেটা করেন।আপনার বাইরে খেতে হবে না আমি আপনাকে রান্না করে দিবো। শুভ তর্ক না করে রেডি হয়ে চলে গেল বাজারে শাকসবজি কিনে আবারো বাসায় ফিরে এলাম। রুমে ঢুকতে দেখে এক নতুন ঘর কারণ সবকিছু এলোমেলো ছিল মনিকা আসার সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু সাজিয়ে গুছিয়ে পরিষ্কার করে ফেলেছে রুমটা। মনিকাকে ডাক দিয়ে বলে এসবের কোন দরকার ছিল না। মনিকা বলে সব সময় বেশি বুঝবেন না মাঝেমধ্যে একটু একটু কম বুঝবেন। মনিকা রান্না করতে চলে যায় আর এই মুহূর্তে মনিকার ফোনে ফোন আসে। শুভ মানিকার ফোন বাঁচাতে মনিকাকে ডাক দেয়। মনিকা রান্নাঘর থেকে ছুটে চলে আসে। মনিকা ফোনটি কেটে দেয় আর তখনই শুভ বলে কে ফোন দিয়েছে আর ফোনটি না ধরে কেটে দিলে যে। মনিকা বলে হবে একজন এখন কথা বলার সময় নাই। মনিকার কথা শুনে শুভর প্রচন্ড রাগ হয় সবকিছু বুঝতে পেরে কিন্তু সে কিছুই বলতে পারছিল না মনিকাকে।

আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60814.60
ETH 2715.64
USDT 1.00
SBD 2.44