নিঝুম রাত ভুতের গল্প পর্ব:১

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে নিঝুম রাত ভূতের গল্পের প্রথম পর্বটি উপস্থাপন করছি।আশা করি, গল্পটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-plato-terentev-3804555-5891794.jpg সোর্স



গল্পটি তৈরি করা হয়েছে একটি মেয়ের জীবন কাহিনী নিয়ে। মেয়েটির নাম পায়েল। বহু বছর আগে পায়েল নামের এই মেয়েটি একটি ছেলেকে খুব ভালবাসতো। ছেলেটির নাম উজ্জ্বল। কিন্তু উজ্জ্বল কোনদিন সিরিয়াস ভাবে পায়েলকে ভালোবাসেনি। কিন্তু পায়েল সব সময় ভাবতো যে উজ্জ্বল তাকে তার থেকে অধিক ভালোবাসে। একদিন উজ্জ্বলকে অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে মেলামেশা করতে দেখে ফেলে পায়েল। পরবর্তীতে উজ্জ্বলের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর পায়েল তার কাছে জিজ্ঞাসা করে মেয়েটি পরিচয়। কিন্তু প্রথমে উজ্জ্বল বলতে অস্বীকার করে। তখন পায়েল উজ্জ্বলের মুখে চড় মারে। উজ্জ্বল ও সঙ্গে সঙ্গে পায়েলের মুখে চড় মারে। তখন পায়েল উজ্জ্বলকে বলে আজ তুমি আমার গায়ে হাত তুললে। তখন উজ্জ্বল তাকে বলে হ্যাঁ তুললাম। সে আরো বলে তুই নিজেকে কি ভাবিস। তোর কথা সবসময় আমাকে মেনে চলতে হবে।আমার কি নিজের কোন স্বাধীনতা নেই। তখন পায়েল বলে আজ তুমি আমার সাথে তুই তুই করে কথা বলছো। উজ্জ্বল বলে হ্যাঁ বলছি কারন তুই ভাবিস সবসময় যে আমি তোকে ভালোবাসি কিন্তু আজ আমি তোকে সত্যিটাই বলছি। আমি কোনদিন তোকে ভালোবাসি নি আমি শুধু চেয়েছিলাম তোকে ব্যবহার করতে। তোর প্রতি আমার কোন ফিলিংস নেই। দয়া করে আর কোনদিন তুই আমার জীবনে আসার চেষ্টা করিস না। আজকের পর থেকে তোর মুখ আমি যেন আর কোনদিন না দেখি।


এই কথাগুলো শোনার পর পায়েল প্রচন্ড ভেঙে পড়ে। আর উজ্জ্বলকে শেষবারের মতন জড়িয়ে ধরে বলে। আমি তোমাকেই ভালোবেসেছিলাম আর আমার ভালোবাসার মানুষটি যখন আমার সাথে বেইমানি করল। সে যখন আমার মুখ দেখতে চায় না আজ আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আজকের পর থেকে তুমি আমার মুখ কখনোই দেখতে পারবে না। এই বলে কান্না করতে করতে সে বাড়িতে চলে আসে। বাড়িতে আসার পর সে তার নিজের রুমে দরজা বন্ধ করে কান্না করতে থাকে। হঠাৎ তার মা রুমের পাশ থেকে যাচ্ছিল। পায়েলের জানলা থেকে সে দেখতে পায় পায়েল ফ্যানে তার ওড়না বেঁধে গলায় দড়ি দিতে যাচ্ছে। এটি দেখার পর পায়েলের মা জোরে চিৎকার করে ওঠে। তার চিৎকার শুনে পায়েলের বাবা এবং পায়েলের আরেকটি বোন দূরে চলে আসে। তারা এসে সঙ্গে সঙ্গে বলে কি হয়েছে? তুমি এত জোরে চিৎকার করে উঠলে কেনো? তখন পায়েলের মা পায়েলের বাবাকে বলে পায়েল গলায় দড়ি দিতে যাচ্ছে তুমি আমার মেয়েকে বাঁচাও। তার বাবা জানলা দিয়ে দেখে সত্যিই তার মেয়ে গলায় দড়ি দিতে যাচ্ছে। তার বাবা সঙ্গে সঙ্গে পায়েলের রুমের দরজা খোলার চেষ্টা করে কিন্তু সে ব্যর্থ হয় কারণ ভেতর থেকে দরজা লক করা ছিল। তাই তার বাবা দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। দরজা খুলতে খুলতে পায়েল পুরোপুরি গলায় দড়ি দিয়ে ঝাঁপ দেয়। তার বাবা সঙ্গে সঙ্গে তার দুটি পা ধরে উঁচু করে ধরে কিন্তু পায়েল ঝাঁপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার গলায় ফাঁস আটকে যায় এবং গলার হারটি ভেঙ্গে যায়। চটপট করতে করতে কিছু সময়ের মধ্যেই পায়েল মারা যায়।


এই ঘটনাটি হওয়ার পর মুহূর্তের মধ্যে গ্রামের সবাই জেনে যায়। পায়েলের বাড়িতে লোকের ভিড় জমে যায়। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে পায়েলের মৃত দেহটি উদ্ধার করে। এবং পায়েলের পড়ার টেবিল থেকে একটি চিরকুট তারা পায়।এই চিরকুটে লেখা ছিল। আমার মৃত্যুর জন্য আমার বেইমান ভালবাসা দায়ী। আমি একটি ছেলেকে খুবই ভালবাসতাম কিন্তু সে আমার সাথে বেঈমানি করেছে। আমি এই কষ্টটা সহ্য করতে না পেরে সুইসাইডের দিকে গিয়েছি। আমি আমার মা-বাবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তোমরা অনেক কষ্ট করে আমাকে মানুষ করেছ কিন্তু আমি তোমাদের সেই মান রাখতে পারলাম না। সুইসাইড করা ছাড়া আমার কাছে আর কিছুই করার ছিল না কারণ আমি যাকে ভালোবাসতাম তার সন্তান আমার পেটে। সে আমাকে মেনে নিতে চাইনি সে শুধু আমাকে ব্যবহার করেছে। তাই নিজের সম্মান আর আমার পরিবারের সম্মান বাঁচাতে আজ আমি এই পথ বেছে নিয়েছি। পারলে তোমাদের মেয়েকে ক্ষমা করে দিও। মা বাবা পায়েলের জন্য কান্না করতে থাকে। পুলিশের নিয়ম কারণ শেষ হওয়ার পর পায়েলের সৎ কাজ করা হয়।

আজ গল্পটি এখানেই শেষ করছি‌।বাকি পর্বটি আপনাদের মাঝে খুব শীঘ্রই উপস্থাপন করব। আশা করি, সেই পর্বটি ও আপনাদের খুব ভালো লাগবে। সেই পর্যন্ত আপনারা সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 2 months ago 

পায়েল উজ্জল এর প্রেম কাহিনীটি শুনে ভীষণ খারাপ লাগলো ভাইয়া। এরকম অনেক ছেলে আছে যারা ভালোবাসার অভিনয় করে আর দূরে ছুরে মারে।কিন্তু অপর পাশের মানুষটি যে তাকে ভালোবাসে সে তা বুঝতে পারেনা। সেরকম পায়েল উজ্জ্বলকে এতটাই ভালবেসে ছিলো যে উজ্জলের কথা গুলো শোনার পর অপমানিত হয়ে আত্মহত্যা পথ বেছে নিতে বাধ্য হলো। পরবর্তী পর্বে কি হবে তা জানার অধীর আগ্রহে রইলাম।

 last month 

উজ্জ্বলের মতো ছেলেদেরকে চরমভাবে শাস্তি দেওয়া দরকার। কারণ মানুষের মন নিয়ে খেলার অধিকার কারোরই নেই। কিন্তু আত্মহত্যা মহাপাপ এবং এটা আমাদেরকে মানতে হবে। তাই পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেনো, আত্মহত্যার কথা চিন্তাও করা যাবে না। পায়েলের বাবা মায়ের জন্য খারাপ লাগছে। যাইহোক গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 56456.73
ETH 2990.61
USDT 1.00
SBD 2.13