'ভালোবাসি তোমাকে ' গল্পের চতুর্দশ পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনার সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আমাদের মাঝে 'ভালোবাসি তোমাকে' গল্পের চতুর্দশ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে।তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
জয় ও মনিকা, তারা দুজনেই রেস্টুরেন্টে খেতে গেলো। খাবার খেতে খেতে জয় মনিকা কে বলল মনিকা তুমি সবই জানো নতুন করে কিছু বলার নেই। শুধু একটা কথাই বলবো তুমি আমার কাছে ফিরে এসো। আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমরা নতুন করে আবার শুরু করব। আমাদের অসমাপ্ত ভালোবাসা আবার নতুন করে সাজাবো। মনিকা বলে দেখো জয় এটা হয় না। জয় বলে কেন হবে না তুমি যদি চেষ্টা করো অবশ্যই সেটা সম্ভব। তখন মনিকা বলে বিবাহের পর থেকে তাকে আমি স্বামীর অধিকার দেইনি। সে কোনদিন জোর করে আমাকে ছোঁয়ার চেষ্টাও করেনি। আর এখন তার এই বিপদের সময় আমি তাকে যদি ছেড়ে চলে আসি খুব খারাপ হবে। জয় বলে এত কেন ভাবছো তুমি? তোমাকে তো সে জোর করেই বিয়ে করেছে। আর তুমি তাকে ভালোবাসো না সে কথা তুমি আমাকে বলেছ। আমি তোমাকে যতবার আমার কাছে চলে আসার কথা বলেছি ততবার তুমি আমাকে বলেছ অপেক্ষা করতে। আর আজ যখন আমি তোমার এত কাছে এসে তোমাকে বলছি তাহলে আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছ কেন? মনিকা বলে বাদ দাও এসব কথা আমি চাইনা এসব কথা গুলো শুনতে।
জয় বলে আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু একটা কথা তোমাকে বলে রাখি আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করবো। খাবার খাওয়া শেষ হলে মনিকা বলে এবার আমার বাড়িতে ফিরতে হবে। জয় বলে চিন্তা করো না আমি তোমাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আসব। এদিকে শুভ চিন্তা করতে থাকে কারণ মনিকা সেই সকালে বেরিয়েছে রাত হয়ে গিয়েছে এখনো বাড়িতে আসেনি। শুভ মনিকাকে অনেক বার ফোন দেয় কিন্তু ফোনটি ধরে না মনিকা। শুভর খুব টেনশন হচ্ছিল কারণ সে শহরটা এখনো ভালোভাবে চিনে না। শুভর করার কিছু ছিল না কারণ সে এখন প্রতিবন্ধী ইচ্ছা করলেও সে বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না। চার দেয়ালের ভেতর তার বসবাস তাই অপেক্ষা করা ছাড়া শুভর পক্ষে আর কোন কিছু করার ছিল না। এরমধ্যে মনিকা ও জয় চলে আসে। জয়কে বিদায় জানিয়ে মনিকা বাসার ভেতর প্রবেশ করতে যাবে ঠিক তখন জয় পেছন থেকে মনিকাকে ডাক দিয়ে বলে কাল সময় মত অফিসে যেও। মনিকা জয়ের দিকে তাকিয়ে একটি মুচকি হাসি দিয়ে মাথা নেড়ে ভিতরে প্রবেশ করল।
মনিকা রুমের দরজা খুলতেই দেখে শুভ বসে আছে। শুভ মনিকা কে দেখে মনিকা কে বলে এত রাত হয়ে গেল কোন প্রবলেম হয়েছিল কি? মনিকা বলে কোন প্রবলেম হয়নি একটা খুশির সংবাদ আছে। শুভ মনিকা কে বলে কি সেই সুখের সংবাদ। তখন মনিকা তার ব্যাগ থেকে মিষ্টির একটি বাক্স বের করে শুভকে মিষ্টি খাইয়ে দেয়। শুভ বলে কি হয়েছে মনিকা হঠাৎ মিষ্টি। মনিকা বলে আমি চাকরি পেয়েছি এবং খুব ভালো সেলারি দিবে কাল থেকে জয়েন। শুভ মনিকার চাকরির খবরটি শুনে খুবই খুশি হয়। শুভ আনন্দে কান্না করতে থাকে আর মনিকা কে বলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। যেখানে আমি তোমাকে সারা জীবনের ভরণ পোষণের দায়িত্ব নিয়েছি সেখানে আজ তুমি সেই দায়িত্বটা পালন করছো। মনিকা শুভর কাছে যে তার দুই চোখের জল মুছিয়ে দেয় আর বলে দায়িত্বটা আমরা দুজনে নিয়েছিলাম। তুমি মন খারাপ করো না তুমি যখন ভালো হয়ে যাবে তখন তো সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি তোমার জন্য খাবার এনেছি খেয়ে নেবে চলো। মনিকা শুভ কে খাইয়ে দেয় শুভ তখন অবাক চোখে মনিকাকে দেখতে থাকে। মনিকা বলে এমন করে কি দেখছ আমাকে। শুভ বলে অনেক ভাগ্য করে তোমার মতন একটা জীবনসঙ্গী পেয়েছি। মনিকা খুবই লজ্জা পায় আর বলে অনেক হয়েছে থাক আর বলতে হবে না। খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো সকালে আবার অফিসে যেতে হবে আবার।
সকাল হতেই মনিকা ঘরের যাবতীয় কাজ কাম সেরে শুভকে ঔষধ খাইয়ে রওনা দেয় অফিসে। যাওয়ার সময় শুভকে বলে তুমি একটু কষ্ট করে দুপুরে খেয়ে নিও আমি তাড়াতাড়ি চলে আসব। আর কোন প্রবলেম হলে আমাকে অবশ্যই ফোন করো। এই বলে মনিকা অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। মনিকার আজ প্রথম অফিস ছিলো তাই সে খুব তাড়াহুড়ো করেই পৌঁছে যায় অফিসে। অফিসে যেতেই মনিকাকে বলা হয় বসের রুমে যেতে। মনিকার চাকরি হয়েছিল বসের সহকারী এসিস্ট্যান্ট। মনিকা বসের রুমে যেতেই সে অবাক হয়ে যায়। কারণ বসের চেয়ারে যে বসেছিল সে আর কেউ নয় সে হলো জয়। মনিকা জয়কে দেখে সঙ্গে সঙ্গে বলেন তুমি এখানে। জয় মনিকাকে বলে যেখানে তুমি সেখানেই তো আমি থাকবো এটাই তো কথা ছিল। মনিকা বলে সব সময় মজা ভালো লাগে না। স্যার কোথায়? তখন জয় বলে তোমার স্যার অফিসের কাজের জন্য কিছুদিনের জন্য বাইরে গেছে। তাই আমাকে বলে গিয়েছে তার অফিসের দায়িত্ব নিতে। একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে এই দায়িত্বটা আমি আর বাবাকে দিব না। মনিকা বলে কেন দিবে না? তখন জয় বলে দায়িত্বটা বাবাকে দিয়ে দিলে তখন তুমি আমার চোখের সামনে থাকবে না। আর দায়িত্ব না দিলে তুমি আমার চোখের সামনে সব সময় থাকবে আমি তোমাকে দুচোখ ভরে দেখতে পারব। মনিকা বলে জয় তুমি ভুলে যাচ্ছ আমি একজন বিবাহিত মেয়ে। তুমি যা চিন্তা ভাবনা করছো সেটা আমার পক্ষে করাটা সম্ভব নয় একটু বুঝার চেষ্টা করো। জয় বলে আমি শুধু তোমাকে চাই আর কোন কিছু বুঝতে চাই না মনিকা।
জয় যেভাবে মনিকার পিছনে লেগেছে এবং শুভ যেহেতু এখন প্রতিবন্ধী, এতে করে মনে হচ্ছে জয় তাদের দুজনের সংসার ভেঙে দিবে। তবে শুভর জন্য বেশ খারাপ লাগছে। বেচারা এখন কিছুই করতে পারবে না। দেখা যাক কি হয় পরবর্তীতে।
আজকের গল্পের চতুর্দশ পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। তবে গল্পের এই মুহূর্তে এসে একটি মুভির কথা মনে পড়ে গেলো। আপনার গল্পের মতো ঠিক এমনই একটা মুভি রয়েছে আর সেই মুভি আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। মনিকা আর শুভর মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি চলে এসেছে। এখন মনে হচ্ছে না মনিকার সংসার আর সুখের হবে। যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ দিদি আপনাকে