'ভালোবাসি তোমাকে ' গল্পের পঞ্চম পর্ব

in আমার বাংলা ব্লগ9 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনার সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আমাদের মাঝে 'ভালোবাসি তোমাকে' গল্পের পঞ্চম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে।তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-radmila-1635622306-27601104 (1).jpg

সোর্স


মনিকার রান্না শেষ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুভকে ডাক দেয় খাবার খাওয়ার জন্য। শুভ মনিকাকে বলে সে একটু পরে খাবে। মনিকা আবারো শুভকে ডাক দিয়ে বলে খাবার গুলো ঠান্ডা হয়ে যাবে তাড়াতাড়ি আসেন। শুভ চিৎকার করে বলে সে পরে খাবে সে এখন খেলা দেখছে। মনিকা চলে যায় বেডরুমে যে শুভর কাছ থেকে টিভির রিমোটটা নিয়ে টিভিটি অফ করে দেয়। শুভ প্রচন্ড রেগে গিয়ে মনিকাকে বলে একি করলে আমি না তোমাকে বললাম যে আমি খেলা দেখছি। মনিকা শুভর রাগোনিত রূপ দেখে ভয় পেয়ে যায়। দৌড়ে চলে যায় রুমে আর কান্না করতে থাকে। শুভ মনে মনে ভাবতে থাকে তার এমন করা উচিত হয়নি। তাই সে সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় রুমে আর রুমে যে দেখতে পায় মনিকা বিছানার শুয়ে পড়ে কান্না করছে। শুভ মনিকাকে ডাক দেয় কিন্তু মনিকা কোন ডাকের সারা দেয়না। অবশেষে শুভ তার কাছে ক্ষমা চায়। তখন মনিকা বলে আপনি কেন ক্ষমা চাচ্ছেন ক্ষমাতো চাওয়ার কথা আমার। কারণ আপনি খেলা দেখছেন সেটা আমার বোঝা উচিত ছিল। আমি কিছু মনে করিনি আপনি যান খেলা দেখুন। শুভ বলে এখন ভাত খাব দুজনে চলো ওঠো। আর হবে না এমনটা অনেক রাত হয়েছে সকালে আবার অফিস আছে।


শুধু অনেকক্ষণ মনিকাকে ভালোবেসে ডাকার পর মনিকা উঠে খাইতে যায়। মনিকা শুভকে খাবার দিচ্ছিল শুভ তখন বলে আমি নিয়ে খেতে পারব তুমি বসে পড়ো অনেক রাত হয়ে গিয়েছে লেট করো না। তখন শুভ মনিকাকে খাবার গুছিয়ে দেয় মনিকা বসে খাবার খাইতে থাকে। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে শুভ চলে যায় রুমে। হঠাৎ মনিকার ফোনে অনেকগুলো এসএমএস আসে। শুভ ভাবতে থাকে একি সেই ব্যক্তি আমার সামনে মনিকা যার কল কেটে দিয়েছিল। শুভর খুব ইচ্ছা করে মনিকার ফোনটি দেখার জন্য কে এসএমএস দিয়েছে। কিন্তু আবারো ভাবতে থাকে এটা অন্যায় হবে কারো ফোন তার অনুমতি ছাড়া হাত দিতে নেই। কিন্তু আবারো ভাবতে থেকে আমি তো তার স্বামী আমার তো সম্পূর্ণ অধিকার আছে সবকিছু দেখার। সে মনটাকে শান্ত করতে পারছিল না তাই অবশেষে সে এসএমএস গুলো দেখে। আর এসএমএস দেখে তার চোখ কপালে উঠে যায় কারণ সে ভাবতে পারেনি সে এমন কোন এসএমএস দেখবে তার স্ত্রীর ফনে। প্রথম এসএমএস টি ছিল তুমি কেন আমার ফোনটি কেটে দিলে। আমি তোমার উপর খুব রাগ করেছি। আমি বুঝতে পেরেছি তোমার স্বামী হয়তো তোমার সামনে রয়েছে তার জন্য কেটে দিয়েছো। তোমার স্বামী ঘুমিয়ে পড়লে আমাকে ফোন দিও। এই এসএমএস গুলো দেখার পর শুভ ফোনটি রেখে দেয়।


ফোনটি রেখে শুভ ব্যালকনিতে চলে যায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট খেতে থাকে। ঠিক তখন মনিকা রুমে আসে। মনিকা রুমে এসেই সিগারেটের গন্ধ পায় সে বুঝতে পারছিল না কোথা থেকে সিগারেটের গন্ধ আছে। একটু পরে সে দেখতে পায় ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে শুভ সিগারেট খাচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় মনিকা শুভর কাছে। শুভর কাছে যে রাগান্বিত কন্ঠে শুভকে বলে আমি এসব পছন্দ করি না। আমি সিগারেটের গন্ধ সহ্য করতে পারি না। আপনি সিগারেট খান আগে তো বলেননি আমাকে। তখন শুভ বলে কেন আগে বললে কি আমাকে বিয়ে করতে না। অবশ্য ভালই হতো আমার আগে বলা উচিত ছিল তাহলে তোমার এসব দেখতে হতো না। মনিকা বলে আমি আপনার কোন কথা শুনতে চাই না যখন আমার পছন্দ না তখন আপনি এসব আর খাবেন না। শুভ ও বলে জীবনটা আমার আর আমি চাইনা তুমি আমার ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে হস্তক্ষেপ কর। আর তুমি এত কেন ভালবাসা দেখাচ্ছ। আমরা তো নামের মাত্র স্বামী-স্ত্রী তুমি তোমার লাইফটা এনজয় করছ আমি আমার লাইফটা এনজয় করছি। শুভর এই কথাগুলো শুনে মনিকার খুব খারাপ লাগে তাই সে বারান্দা থেকে সোজা রুমে এসে শুয়ে পড়ে। তখন মনিকার ফোন বেজে ওঠে কিন্তু সে ফোনটি কেটে দেয়।


শুভ রুমে এসে শুয়ে পড়ে। শুভ যখন ঘুমিয়ে পড়েছিল তখন মনিকা সেই ব্যক্তিকে ফোন দেয়। আর মনিকা বারান্দায় যেয়ে কথা বলতে থাকে। স্পষ্টভাবে শুভ সবকিছু শুনতে পারে। সে মনে মনে ভাবতে থাকে কাকে সে বিয়ে করেছে। বিবাহের আগে তার জীবনে যে ছিল সে ছিল কিন্তু বিবাহের পর সে তো আমাকে ভালবাসতে পারতো। সেতো আমাকে সত্যি কথাটা বলতে পারতো এরকম ভাবে নির্যাতন কেন করছে। আমি তার কাছে আছি তাই সে এমনটি করছে আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে। আর আমি যখন অফিসে চলে যাই না জানি কি হবে। এসব ভাবতে ভাবতে শুভ ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে উঠেই সে দেখে মনিকার রুমে নেই। সে একটু চিন্তায় পড়ে যায় এত সকালে মনিকা কোথায় গেল। সে ভাবতে থাকে সে কি রাত্রে সেই অচেনা ব্যক্তির সঙ্গে চলে গেল। এদিকে অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে। যাই কিছু হয়ে যাক অফিস তো করতেই হবে। তাই সে ফ্রেশ হয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তখন পেছন থেকে মনিকা ডাক দিয়ে বলে না খেয়ে কোথায় যাচ্ছেন। শুভ মনিকার কণ্ঠ পেয়ে অবাক হয়ে যায় কারণ সে যা ভেবেছিল তা হয়নি। শুভ মনিকাকে বলে অফিসে লেট হয়ে যাচ্ছে তাই তার অফিসে যেতে হবে। মনিকা দৌড়ে এসে শুভকে বলে হালকা কিছু খেয়ে যান আমি খাবার দিচ্ছি। কিন্তু শুভ বলে সে খাবে না কিন্তু মনিকার জড়াজড়ির কারণে অবশেষে শুভ খেয়ে নেয়। আর অফিসে যাওয়ার পথে মনিকা শুভর জন্য টিফিন দিয়ে দেয়। আর মনিকা বলে অনেক কষ্ট করে বাড়িয়েছি সময় মতন টিফিন টি খেয়ে নিবেন। শুভকে বিদায় জানিয়ে ঘরের অন্যান্য কাজ গুলো সে করতে থাকে। শুভ মনে মনে ভাবতে থেকে কি সব হচ্ছে। এই আমাকে ভালবাসছে এই আমাকে দূরে ছড়িয়ে দিচ্ছে আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।

আজ এখানেই শেষ করছি। গল্পের বাকি পর্ব খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। সেই পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 9 days ago 

যদিও এর আগের পর্বগুলো পড়া হয়নি তবে এই পর্বটি পড়ে বেশ ভালই লাগলো। পরের পর্বগুলো পড়ার জন্য খুবই ইচ্ছা করছে ভাইয়া।দেখা যাক মনিকা ও শুভর জীবনে কি হতে চলেছে।বেশ চমৎকার একটি গল্প লিখেছেন ভাইয়া।আপনার লেখা গল্পটি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 9 days ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ দিদি আপনার মূল্যবান বক্তব্য আমার সাথে শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64349.87
ETH 2775.11
USDT 1.00
SBD 2.65