জীবন যুদ্ধ গল্প পর্ব:১১

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের মাঝে জীবন যুদ্ধ গল্পের একাদশ পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, এই পর্বটি ও আপনাদের খুব ভালো লাগবে।তাই বিলম্ব করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-jonathan-borba-2917382.jpg
সোর্স



ছেলেপক্ষ আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়ার মা প্রিয়া কে তৈরি হয়ে তাদের সামনে যেতে বলেন। প্রিয়া কিছুক্ষণ পর ছেলে পক্ষের সামনে এসে উপস্থিত হয়। আকাশের বাবা প্রিয়াকে সামনে বসতে বলে প্রিয়া ও তার কথা মতো তাদের সামনে বসে পড়ে। প্রিয়া প্রথমে বুঝতেই পারেনি যে, তার সামনে আকাশ বসে রয়েছে। অনেকক্ষণ কথোপকথন হয় কিন্তু প্রিয়া একটিবারও আকাশের দিকে তাকায় না সে মাথা নিচু করেই বসে থাকে। একটু পরে প্রিয়ার বাবা এবং আকাশের বাবা দুজনেই বলে তাদের নিজেদের মধ্যে কথা বলে নিতে।
বড়দের কথার মত তারা কথা বলার জন্য বাড়ির ছাদে যায়। বাড়ির ছাদে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আকাশ প্রিয়াকে বলে আমি আসার পথ থেকে তুমি আমার দিকে একটি বার তাকালে না একটি বার তাকিয়ে দেখো আমাকে। আকাশের কন্ঠ শুনে প্রিয়া একটু চমকে যায় আর সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়া আকাশের দিকে তাকিয়ে পড়ে। সে দেখতে পাই আকাশ দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে। সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়া বলে আকাশ তুমি। আমি তো ভাবতেও পারিনি যে আমাকে দেখতে তুমি এসেছ। আকাশ কথাটি শুনে প্রিয়াকে বলে জানতে পারলে বুঝি আমাদের আসার অনুমতি দিতে না। প্রিয়া বলে তা ঠিক নয় আমার আগে থেকেই একটু সন্দেহ ছিল যে একমাত্র তুমি ছাড়া এমনটি কেউ করবে না। আমি বাবা মার মুখে শুনেছিলাম ছেলের বর্ণনা কিন্তু তারা নাম আমাকে বলেনি কিন্তু তাদের কথার অনুমান করে বুঝতে পারলাম সবকিছু মিলে যাচ্ছে তোমার সাথে। প্রিয়া আকাশ কে বলে দেখো আমি তোমাকে আগেও বলেছি আর এখনো বলছি তুমি আমাকে ভুলে যাও। তুমি নতুন জীবন শুরু কর আমার পিছে কেন পড়ে আছো। আকাশ বলে আমি তোমাকে ভালবাসি প্রিয়া। সারাটা জীবন তোমার সাথে কাটাতে চাই একটি সুযোগ দাও আমাকে। প্রিয়া বলে দেখো আকাশ আমি তোমাকে আগেও বলেছি আর এখনো বলছি যে আমি আমার এই জীবনটা আমি একা থাকতে চাই তুমি আমাকে একা থাকতে দাও। তখন আকাশ বলে প্রিয়া তুমি মনে করে দেখো আমাদের সেই ছোট্ট বেলার কথাগুলো যে, তুমি একটা দিন আমাকে না দেখে থাকতে পারতে না আমার সাথে কথা না বলতে পারলে তুমি ছটফট করতে। আজ তুমি এতটাই পরিবর্তন হয়ে গেছো যে, এখন আমাকে তোমার দেখতে ও ইচ্ছা করে না আমার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করে না। তুমি তো আমাকে না দেখে আমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারছ কিন্তু আমি প্রতিটা মুহূর্ত তোমার কথাই চিন্তা করছি। যখন তোমার এই বিয়েতে মত নেই আমি আর তোমাকে জোর করব না। আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমার এই মুখ তুমি আর কোনদিনই দেখবে না।


এই বলে আকাশ চলে আসছিল। তখন প্রিয়া পিছন থেকে আকাশকে জড়িয়ে ধরে আর বলে আমি যাই কিছু বলি না কেন তাই বলে তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। একটা বার আমার মনের কথাগুলো বুঝলে না আমি কি বলতে চাচ্ছি। তুমি একা একাই সবকিছু বলে গেলে কিন্তু আমি মুখ ফুটে তোমাকে কিছুই বলতে পারলাম না। খুব ভালোবাসি তোমাকে একটা মুহূর্ত তোমাকে না দেখে আমি থাকতে পারিনা। প্রতিটা মুহূর্ত তোমার কথাই মনে করি আমার এই জীবনে আমি তো শুধু তোমাকেই চাই আর তুমি আজ আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছো। পরবর্তীতে আকাশও প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরে দুজনে কান্নায় ভেঙে পড়ে এতদিনের অপেক্ষা আজ অবসান ঘটলো। কিছুক্ষণ পর তারা দুজনে ই পরিবারের সামনে উপস্থিত হলো আর ছেলে মেয়ের সম্মতিতে তাদের বিবাহর দিনক্ষণ ঠিক করা হলো।


খুব ধুমধাম ভাবে বিয়ের কাজ সম্পন্ন হল। বিয়ের কিছুদিন পর একদিন রাতে আকাশের প্রচন্ড জ্বর আসে। সারাটা রাত জেগে প্রিয়া, তার মাথায় জল পটি দিতে থাকে হাত পায়ে মালিশ করতে থাকে। সারাটা রাত আকাশের মাথায় জল পটি দিতে দিতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ে ছিলো প্রিয়া জানে না। সকাল হলেই আকাশ দেখে প্রিয়া তার বুকের উপর ঘুমিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর প্রিয়ার ও ঘুম ভেঙ্গে যায়। প্রিয়া আকাশের কপালে হাত দিয়ে বলে এখন আর জ্বর নেই। কথাগুলো শুনে আকাশ একটু অবাক হয়ে যায় কেন রাত্রে আমার জ্বর এসেছিল। প্রিয়া বলে এতটা পরিমাণে জ্বর এসেছিল তুমি জ্বরে উল্টাপাল্টা বলছিলে। এত রাত্রে ডাক্তার ও কোথায় পাবো আর বাড়িতে একটি মাত্র ওষুধ ছিল সেটি তোমাকে খাইয়ে ছিলাম আর মাথায় জলপটি দিচ্ছিলাম আর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছিলাম যে তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠো। আকাশ বলে তুমি সারাটা রাত জেগে আমার সেবা করেছ। আকাশ বলে তোমার তো অফিসের সময় হয়ে গিয়েছে এখনো তো কিছু রান্নাও হয়নি। তুমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসো আমি রান্না করে আনছি তারপর খেয়ে তুমি অফিসে যাও। প্রিয়া আকাশ কে বলে তোমার কাল জ্বর এসেছে আর তুমি এই শরীরে আমার জন্য রান্না করে আনবে আর সেই রান্না খেয়ে আমি অফিসে যাব। না গো তুমি রেস্ট নাও আজ আমি অফিসে যাব না আজ আমি সারাটা দিন তোমার কাছেই থাকতে চাই কিগো থাকতে দেবে না আমায়। আকাশ বলে এ কেমন কথা বলছ আমি তো চাই তুমি আমার কাছে সব সময় থাকো কিন্তু সে তো হয়ে ওঠে না সকাল হলে দুজনেরই অফিসে যেতে হয় আর দেখা হয় রাত্রে। প্রিয়া বলে চলো না আজ দুজনে বাইরে খেতে যাই আজ সারাটা দিন আমরা ঘুরবো।

সেদিন আকাশ ও প্রিয়া দুজনেই বাইরে ঘুরতে গিয়েছিল আর সারাটা দিন খুব ভালো এনজয় করেছিল। আজ গল্পটি এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 7 months ago 

বেশি রোমান্টিক একটা গল্প লিখেছেন দাদা। এই ধরনের গল্প পড়তে বেশ ভালোই লাগে। গল্পের হ্যাপি এন্ডিং হলে তাতে পাঠকের মুখে হাসি ফোটে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 7 months ago 

বেশ ভালোই লিখেছেন ভাই, একটা আকর্ষণবোধ করেছি লেখাটি পড়ার সময়, ভাবছিলাম হয়তো অনাকাংখিত কিছু ঘটবে কিন্তু না বেশ সুন্দরভাবেই আপনি গল্পটি শেষ করেছেন। অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57956.22
ETH 3126.99
USDT 1.00
SBD 2.45