তুমি যে আমার আলো গল্প পর্ব:৬
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'তুমি যে আমার আলো'গল্পের ষষ্ঠ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি,আপনাদের সবার গল্পটি ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
সৌরভ ও লাবনী যার যার বাড়িতে ফিরে যায়। লাবনী বাড়িতে যেয়ে আজকের এই দিনগুলির কথা মনে করতে থাকে। লাবনী বুঝতে পারে যত দিন যাচ্ছে সৌরভের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছে। সৌরভ বাড়িতে ফিরে লাবনীর কথা চিন্তা করতে থাকে। সেও বুঝতে পারে লাবনী কে সে ভালবাসতে শুরু করেছে। পরের দিন সকালে আবারো ক্লাস ফাঁকি দিয়ে তারা দুজনে ঘুরতে যায়। এমনটি বহুদিন ধরে তারা করছে এ বিষয়টি লাবনীর বন্ধু-বান্ধবরা দেখতে পায়। একদিন লাবনীকে তার বন্ধু বান্ধবরা তাকে বোঝায়। দেখ লাবনী তুই যে পরিবেশের মেয়ে তুই এমন কোন কাজ করিস না যেটি তোর বাবার সম্মান নষ্ট করে। তুই যেভাবে সৌরভের সাথে মেলামেশা করছিস তুই ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়বি। একটা সময় তুই ওকে ছাড়া থাকতে পারবি না তুই ওকে ভালবাসতে শুরু করবি। তখন তুই ওর কাছ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবি না আর রাখতে ও পারবি না।আর তোদের ভালোবাসাটা তোর পরিবার কোনদিন মেনে ও নিবে না। তার থেকে ভালো হয় তুই ওর সাথে মেলামেশা কমিয়ে দে। আমরা বুঝতে পারছি সৌরভ তোর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে আর তুইও সৌরভের প্রতি কিন্তু এটা যে ঠিক নয় তোর এটা চিন্তা করা উচিত। এখনো সময় আছে তুই বেরিয়ে আয়। সৌরভ খুব ভালো ছেলে ও যদি একবার তোকে ভালোবেসে ফেলে তখন তোকে ও ভুলতে পারবেনা। লাবনী কোন কথা বলে না শুধু শুনে যাই।
এরমধ্যে লাবনীর ফোনে ফোন আসে। লাবনী ব্যাগ থেকে ফোনটি বের করে দেখে সৌরভ ফোন করেছে। সঙ্গে সঙ্গে লাবনী ফোনটি রিসিভ করে।
লাবনী: হ্যাঁ সৌরভ বল।
(সৌরভ কথা বলছিল না সৌরভের সাথে একটি ছোট ভাই থাকে সে ফোন দিয়েছিল লাবনীকে। ছোট ভাইটির নাম অপূর্ব। অপূর্ব লাবনীকে বলে।)
অপূর্ব: দিদি আমি অপূর্ব বলছি। আমি সৌরভ দাদার সঙ্গেই থাকি।
লাবনী: হ্যাঁ অপূর্ব বলো সৌরভের কিছু হয়েছে?
অপূর্ব: হ্যাঁ দিদি দাদার খুব জ্বর এসেছে।
লাবনী: কখন জ্বর এসেছে?
অপূর্ব: দাদা কাল রাতে সারারাত কাজ করেছে হঠাৎ আমাকে বলছে আমার শরীরটা ভালো লাগছে না তাই আমি দাদাকে বললাম শুয়ে পড়তে। একটু পরে দাদা কাছে আসতেই আমি দাদার গায়ে হাত দেই দেখি দাদার প্রচন্ড জ্বর এসেছে। জ্বরের মধ্যে আপনার কথা বলছিল আমি বুঝতে পারছি না এখন কি করব।
লাবনী: তুমি চিন্তা করো না আমি এখনই আসছি। তুমি তোমার দাদার মাথায় জল পটি দিতে থাকো।
অপূর্ব: আচ্ছা দিদি আপনি একটু তাড়াতাড়ি আসেন।
সৌরভের অসুস্থতার কথা শুনে লাবনী আর দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটি বের করে চলে গেল। সৌরভের বাসাতে যে দেখে অপূর্ব সৌরভের মাথায় জলপটি জলপটি দিচ্ছে আর মাঝে মধ্যে লাবনীর নাম ধরে ডাকছে। এটি তখনই হয় যখন প্রচন্ড জ্বর হয় তখন মানুষের চেঞ্জ হারিয়ে যায় আর তখন কাছের মানুষগুলোকে ডাকে। এই অবস্থা দেখে লাবনী দেরি না করে অপূর্বকে বলে সৌরভকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে তুমি আমাকে একটু সাহায্য করো। লাবনী ও অপূর্ব দুজনই সৌরভ কে ধরে লাবনীর গাড়িতে উঠালো। আর দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের দিকে রওনা হল। আগে থেকেই লাবনী ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করেছিল তাই হাসপাতালে যাওয়ার পর কোন সমস্যার মধ্যে পড়তে হলো না। ডাক্তার সৌরভকে দেখে বলল কিছু টেস্ট করতে হবে। লাবনী বলে সামান্য জ্বরের জন্য কেনো টেস্ট করতে হবে। তখন ডাক্তার লাবনীকে বলে আমার সাধারণ জ্বর মনে হচ্ছে না তার জন্য টেস্ট করার কথা বলেছি।
ডাক্তারের কথা শুনে লাবনী একটু ঘাবড়ে যায়। যাই হোক সব টেস্ট করা হলো আর সব টেস্ট দেখে ডাক্তার যেটি ভেবেছিল সেটি হয়েছে। লাবনী বলে কি হয়েছে ডাক্তার বাবু সব ঠিক আছে তো। ডাক্তার লাবনীকে বলে আমি যেটি ভেবেছিলাম সেটি হয়েছে। লাবনী বলে কি হয়েছে? ডাক্তার বলে তার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। ডেঙ্গু জ্বরের কথা শুনে লাবনী খুব ঘাবড়ে যায়। কিন্তু ডাক্তার তাকে বলে ভয় পাবেন না সঠিক চিকিৎসা করলে সৌরভ তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে। তার জন্য সৌরভকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। লাবনী দেরি না করে সৌরভকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিল। আর ডাক্তার কিছু ওষুধ লিখে দিল সেগুলো আনার কথা বললো। লাবনীর কাছে এত টাকা ছিল না তাই সে বাবার কাছে ফোন দেয়। তোর বাবাকে বলে তাকে কিছু টাকা দিতে। তার বাবা বলে কত টাকা লাগবে? উত্তরে লাবনী বলে ১০০০০ টাকার মত। তখন তার বাবা বলে এত টাকা কেন কি জন্য লাগবে? তখন লাবনী তার বাবাকে বলে যে তার একটি বন্ধু খুব অসুস্থ তার কাছে এত টাকা নেই চিকিৎসা করার। তাই আমি চাই আমার এই বন্ধুটিকে সাহায্য করতে। একমাত্র মেয়ে ছিল লাবনী খুব আদরের তাই যখন যা চাইতো তখন তার বাবা এটি পূরণ করত। যাই হোক তার বাবা লাবনীকে সঙ্গে সঙ্গে দশ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিল। আর এই টাকা দিয়ে লাবনী সৌরভের জন্য ওষুধ কিনলো আর কিছু ফল কিনে দিল। আর অপূর্বকে সৌরভের পাশে থাকতে বললো। আর অপূর্বকে লাবনী বলে গেল কোন রকম সমস্যা হলে তাকে যেন ফোন করে জানায় আর তাকে চিন্তা না করতে। লাবনী তারপর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
এই গল্পের পূর্ববর্তী পর্বগুলো আমি পড়েছিলাম৷ আজকে এর পরবর্তী পর্ব পড়ে খুবই ভালো লাগলো৷ ধীরে ধীরে লাবনী সৌরভের প্রতি দুর্বল হতে যাচ্ছে এবং সৌরভও তার প্রতি দুর্বল হতে থাকে৷ তাদের দুজনের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি হতে থাকে৷ এভাবে যখন তাদের এই মেলামেশা বৃদ্ধি পায় তখন তার বন্ধু-বান্ধবরা তা দেখতে পায়৷ তখন তাকে তার বন্ধু-বান্ধবরা বোঝাতে শুরু করে৷ তারপরও লাভনী কিছুতেই বুঝতে চাচ্ছিল না৷ এরপরে যখন সৌরভের জ্বর হলো তখন সে সঙ্গে সঙ্গে তার কাছে চলে গেল এবং তাকে নিয়ে হাসপাতালে গেল৷ ডাক্তার তাকে বলল যে তার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে এবং এর ফলে লাবনী তার সকল চিকিৎসার খরচ বহন করে৷ তার কাছে এত টাকা ছিল না তাই সে তার বাবাকে বলে টাকা পাঠানোর জন্য৷ পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম৷