তুমি যে আমার আলো গল্প পর্ব:৯
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'তুমি যে আমার আলো'গল্পের নবম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি,আপনাদের সবার গল্পটি ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
তারা দুজনেই কোন কিছুই বলছিল না। অনেকক্ষণ পর অবশেষে সৌরভ লাবনীকে বলল। লাবনী তোমায় যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিনই তোমাকে আমার ভালো লেগেছিল। কিন্তু আমি বলতে পারিনি কারণ আমি জানতাম আমি গরিব আর তুমি অনেক বড়লোক। তোমার মনে আছে তোমার গাড়ি নষ্ট হয়ে যায় আর তুমি আমার কাছে ঠিক করতে এসেছিলে। আমি ঠিক করে দিয়েছিলাম তোমার কাছে টাকা চেয়েছিলাম। তুমি বলেছিলে তোমার কাছে খুচরা টাকা নাই। পরে তুমি দুই হাজার টাকার একটি নোট আমাকে দিয়েছিলে। সেই টাকাটি আমি এখনো আমার কাছে খুব যত্ন করে রেখেছি কারণ তোমার কাছ থেকে সেই প্রথম আমার কিছু পাওয়া। আমি কখনোই ভাবতে পারিনি তুমি আমাকে এতটা আপন করে নেবে। কলেজে সবাই আমাকে অপমান করত সেটি তোমার সহ্য হতো না। তুমি আমাকে নিয়ে মার্কেটে নিয়ে গিয়েছো। নতুন নতুন জামা প্যান্ট কিনে দিয়েছ। আমি অসুস্থ হলে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছ চিকিৎসা করিয়েছো। তোমাকে আমার ভালো লাগতো কিন্তু তোমার সাথে মেলামেশা করতে করতে কখন যে ভালোবেসে ফেলেছি আমি জানিনা। তুমি হয়তো জানো না এই কয়টা দিন তোমার সাথে কথা না বলতে পারাতে আমার কতটা খারাপ লেগেছে। সেটি আমি তোমাকে কোনদিন বোঝাতে পারবো না।
লাবনী সৌরভের অনুভূতির কথা শুনলো তারপর লাবনী সৌরভ কে বলল। সৌরভ আমিও তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমাকে প্রথমে বন্ধু হিসেবেই দেখতাম। কিন্তু পরবর্তীতে আমি যখন বুঝতে পারলাম যে আমি আস্তে আস্তে তোমার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছি। যখন তোমার কন্ঠ না শুনতে পারলে তোমাকে না দেখলে তখন আমার খুব খারাপ লাগতো। আমি তখনই বুঝতে পেরেছিলাম আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি। আমিও তোমাকে খুব খুব ভালোবাসি। কিন্তু আমাদের এই ভালোবাসা সফল হবে যদি তুমি চাকরি করতে পারো। দেখো এটি আমার ইচ্ছা না তুমি হয়তো ভাবতে পারো চাকরির জন্য আমি তোমাকে বিয়ে করবো এটি নয়। আমি কেন তোমাকে চাকরি করার কথা বলছি কারণ তুমি তো জানো আমার বাবা অনেক টাকা পয়সার মালিক। সমাজে তার একটা সম্মান আছে। সে যখন তার মেয়েকে একটি ছেলের হাতে তুলে দেবে তখন সমাজ তাকে প্রশ্ন করবে ছেলেটি কি করে। তার জন্য তোমাকে বলছি। তুমি ভালো একটি চাকরি খোঁজার চেষ্টা করো। আমার বিশ্বাস তুমি চেষ্টা করলে অবশ্যই সফল হবে। কারণ তুমি খুব মেধাবী ছাত্র তুমি পারবে আর তোমাকে যে পারতেই হবে আমার ভালোবাসার জন্য তোমাকে পারতেই হবে।
সৌরভ লাবনীর কথাগুলো বুঝতে পারে কিন্তু সৌরভ লাবনীকে বলে। লাবনী তুমি যে কথাগুলো বলছো আমি বুঝতে পারছি। তোমাকে পাবার জন্য আমাকে ভালো চাকরি করতে হবে। কিন্তু ভালো চাকরি করতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন হবে। কারণ এখন টাকা না হলে চাকরি হয় না। হয়তো আমার রেজাল্ট ভালো কিন্তু তারপরেও আমি হয়তো পারবো না। কারন আমার কোন আত্মীয় নাই টাকা নাই আমার চাকরি হবে না। তুমি আমাকে ভুলে যাও। তুমি অনেক বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে। আজ থেকে আমার মতন সামান্য একটি মেকারের সাথে আর যোগাযোগ করবে না। তোমার বাবা জানতে পারলে তার মান সম্মান থাকবে না। আমারই তো ভুল হয়েছে আমারই বোঝা উচিত ছিল। কোথায় তুমি আর কোথায় আমি আমি তো তোমার পায়ের জুতার সমান ও না।
এইসব কথা শোনার পর লাবনীর প্রচন্ড রাগ হয়ে যায়। রাগের মাথায় সৌরভের মুখে চড় মারে। আর সৌরভকে বলে। এখন তুই এমন কথা বলছিস তাহলে একটু আগে কেন ভালোবাসার কথা বললি। আর যখন বলেছিস ভালবাসার কথা তখন তুই আমাকে ভালোবাসিস। আর কাউকে ভালবাসলে তার হাতটি শক্ত করে ধরতে হয়। আমিও তোকে ভালবাসি শুধু তুই একা আমাকে ভালোবাসিস না। তোর কত টাকা লাগবে আমি দেবো তোর বিপদে আপদে সব সময় তোর পাশে থাকব। আমি তোকে চাকরির করার কথা বলেছি এই কারণে যাতে আমি আমার বাবার সামনে জোর গলায় বলতে পারি আমি যাকে ভালোবাসি সে বেকার নয় সে চাকরিজীবী। প্রত্যেক মেয়ের বাবা চিন্তা করে তার মেয়েটি জানো সুখে থাকে শান্তিতে থাকে কোন বেকার ছেলের হাতে তুলে দিতে চায় না। সৌরভ লাবনীকে জড়িয়ে ধরে আর বলে। তুমি আমাকে এতটা ভালোবাসো আমাকে পাওয়ার জন্য তুমি এতটা কষ্ট করছ আমি সেটা বুঝতে পারিনি ক্ষমা করো আমাকে। আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমি চাকরি করব এবং খুব সম্মানের চাকরি আমি করব। আমার আর একটি কথা। আমাকে কথা দাও যতদিন পর্যন্ত আমার চাকরি না হচ্ছে। এর মধ্যে যতই ঝড় আসুক আমার হাত ছেড়ে যাবে না। লাবনী বলে যতই ঝড় আসুক আমি তোমার হাত কখনোই ছাড়বো না।
অনেক সুন্দর একটি গল্প আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। আসলে এরকম গল্প গুলো পড়তে আমার খুবই ভালো লাগে। আজকে আপনার এই গল্প পড়ে লাবনীর বিষয়টি জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। এখন দেখা যাক পরবর্তী পর্বে লাবনী তার কথাগুলো কিভাবে রক্ষা করে।
এই গল্পের বেশ কয়েকটি পর্ব আমার পড়া হয়েছে। তবে এই পর্বটি পড়ে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। কারণ সৌরভ এবং লাবণী একে অপরকে ভালোবাসার কথা বলেছে এবং দু'জন এক হয়ে গিয়েছে। লাবণী সবসময়ই সৌরভকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। আশা করি সৌরভ খুব শীঘ্রই ভালো একটি চাকরি খুঁজে পাবে এবং তাদের দু'জনের বিয়ে লাবণীর বাবা মেনে নিবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।