"সেই প্রথম দেখা"শেষ পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আমার গল্পের "সেই প্রথম দেখা"শেষ পর্বটি সবার মাঝে উপস্থাপন করছি। আশা করি,সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
www.pexels.com
পাখির কথা ভাবতে ভাবতে সৌরভের খাওয়া দাওয়া সবকিছু ছেড়ে দিতে বসে শুধু ভাবতে থাকে কবে সেই রূপসীর দেখা পাবে।এর মাঝে হঠাৎ একদিন রাস্তায় পাখির সাথে দেখা হয়ে যায় পাখি তখন তার বাবার জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছিল জমিতে। পাখিকে দেখেই সৌরভ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে কারণ এতদিনের অপেক্ষা কারণ সৌরভ যাকে নিয়ে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল শুধু তার কথাই ভাবতো তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখত আর সেই স্বপ্নের মানুষ তার সামনে হেঁটে আসছে ।পাখিকে দেখতে পেরে ভাবতে থাকে আজ সে পাখিকে তার মনের কথাটি বলবে। কিন্তু পাখি সৌরভের কাছে যত আসছে ততই যেন সৌরভের হৃদয়ের কম্পন বেড়ে যাচ্ছে শরীর থেকে অঝরে ঘাম ঝরছে। কারণ সে এই প্রথম কোন মেয়েকে সে মনের কথা বলবে। আমরা তো জানি প্রথম কোন ভালোবাসার মানুষটাকে মনের কথা বলতে গেলে নিজেকে কতটা নার্ভাস মনে হয়।
যাই হোক পাখি সৌরভ কে এই অবস্থায় দেখতে পেয়ে তার কাছে জিজ্ঞেস করে আপনার কি হয়েছে আপনি কি অসুস্থ ?সৌরভ কিছুই বলতে পারেনা শুধু তার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে আর ঘামতে থাকে। পাখি আবার জিজ্ঞেস করে আপনি কি অসুস্থ?সৌরভ তখন কাঁপা কাঁপা কন্ঠে উত্তর দেয় না। পাখি তখন আবার জিজ্ঞেস করে তাহলে আপনি এমন করে ঘামছেন কেন? সৌরভ বলে আজ অনেক গরম পড়েছে তাই এত ঘামছি। সৌরভ পাখিকে বলে আমি আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই,আপনি কি সময় করে কথাগুলো শুনবেন? পাখি হ্যাঁ বলুন কি বলবেন।
তখন সৌরভ বলে আমি শহরে থাকি আর এখানে আমার দাদা দিদার বাড়িতে ঘুরতে এসেছি ।একদিন আমি দাদার সঙ্গে গ্রামের বাজারে বাজার করতে যাচ্ছিলাম হঠাৎ রাস্তায় আপনার সাথে দেখা হয় আর সেই প্রথম দেখাতেই আপনাকে আমার খুব ভালো লেগে যায়। আপনাকে দেখার পর আমি কোন কাজই করতে পারছি না শুধু আপনার কথাই ভাবছি সত্যি বলছি আমি আপনাকে অসম্ভব পরিমাণে ভালবেসে ফেলেছি ।আপনি কি আমার ভালোবাসাটি গ্রহণ করবেন?এই কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে পাখি রেগে যায় সঙ্গে সঙ্গে সৌরভ কে চুপ করতে বলে। সৌরভ একটু অবাক হয়ে যায় পাখি কে বলে আপনি কি আমার কথায় রাগ করলেন?
পাখি উত্তর দেয় রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক দেখুন আপনি শহরের ছেলে আর আমি গ্রামের মেয়ে।আমাদের মাঝে ভালোবাসার সম্পর্কটা তৈরি হতে পারে না কারণ আপনি কিছুদিন আমাদের এখানে ঘুরতে এসেছেন ।আজ আমাকে ভালো লাগছে দুদিন পরে যখন চলে যাবেন শহরে যে আপনার অন্য আরেকটা মেয়েকে ভালো লাগবে তখন আপনি আমাকেই ভুলে যাবেন। আমি শহরের ছেলেদের বিশ্বাস করিনা তাই বলছি আপনি গ্রামে ঘুরতে এসেছেন গ্রামের সৌন্দর্য একটাকে উপভোগ করুন। এই বলে পাখি তার বাবার জন্য খাবার নিয়ে চলে যায়।
সৌরভ ও বাড়িতে চলে আসে আর ভাবতে থাকে পাখি তাকে নিয়ে ভুল ধারণা করছে কিন্তু আমি তো এমন প্রকৃতির ছেলে না । তাই তাকে আমার প্রতি যে ভুল ধারণা সেটির সমাধান করতে হবে।
সে প্রতিদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবো একটাবার পাখির সাথে কথা বলার জন্য কিন্তু পাখি তার কোন কথাই শুনতো না। এমন করে বেশ কয়েকদিন হয়ে গেল কিন্তু কোন সমাধান হলো না। হঠাৎ একদিন সৌরভের বাবা বলল আমাদের শহরে ফিরে যাওয়ার সময় হয়েছে তুমি তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও। বাবার কথা শুনে সৌরভ উত্তর দেয় আমি যেতে চাই না। বাবা বলে কেন যেতে চাও না? সৌরভ আবারো তার বাবাকে বলে আমি গ্রামে থাকতে চাই। তার বাবা আবার সৌরভ কে বলে কি হয়েছে সৌরভ তোমার তুমি তো এমনটা কোনদিনও করো না তবে আজ কেন জেদ করছো। তখন সৌরভ উত্তর দেয় আমি এখানে একটি মেয়েকে অসম্ভব ভালোবেসে ফেলেছি কিন্তু সে আমার ভালোবাসায় সারা দেয়নি কারণ আমি শহরের ছেলে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে পাওয়ার জন্য আমি গ্রামের মানুষের সাথে কাজ করব তার বিশ্বাস অর্জন করব।
এ কথা শোনার পর তার বাবা-মা পরিবারের সবাই হাসতে থাকে তারা কোনদিনও চিন্তাই করতে পারিনি যে তার ছেলে এতটা বড় হয়ে গেছে। তাই তারা ছেলের ইচ্ছাটাকে পূরণ করার জন্য পাখির বাবার সঙ্গে কথা বলে এবং তাদের বিবাহর দিন ঠিক করে। এ কথা শোনার পর পাখিও অনেক খুশি হয় কারণ মনে মনে সৌরভকে ভালোবাসতো কিন্তু তার কিছু করার ছিল না কারণ সে গরিব কৃষকের মেয়ে আর সৌরভ ধনী পরিবারের ছেলে।