"তুমি যে আমার আলো গল্প পর্ব:৪"
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'তুমি যে আমার আলো'গল্পের চতুর্থ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি,আপনাদের সবার গল্পটি ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
সৌরভ ও লাবনী মার্কেট শেষ করে সৌরভকে নিয়ে লাবনীর একটি ফোনের শোরুমে যায়। সৌরভ গাড়ি থেকে নেমেই বুঝতে পারে লাবনী তাকে ফোনের দোকানে নিয়ে এসেছে। তখন সৌরভ লাবনীকে বলে আমরা এখানে কেন এসেছি? লাবনী সৌরভের প্রশ্নের উত্তরে বলে। আমাদের তো জামা প্যান্ট কেনা হয়ে গিয়েছে কিন্তু তোমার এখন একটা স্মার্টফোনের খুব দরকার। সৌরভ সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি করে। সৌরভ বলে দেখো লাবনী তুমি আমাকে জামা প্যান্ট কিনে দিয়েছো আমি আপত্তি করিনি কিন্তু আমি তোমার কাছ থেকে আর কোন কিছুই নিতে পারব না। তখন লাবনী একটু রাগান্বিত হয়ে বলে। তোমার তো নিতেই হবে কারণ আমি চাইনা আমার বন্ধুর একটা ফোন থাকবে না। তোমার একটা ফোন নেই আমি তোমার সাথে কিভাবে যোগাযোগ করবো। আমার বন্ধু খেয়েছে কিনা ঘুমিয়েছে কিনা এগুলো তো আমারই শুনতে হবে।আর এগুলো আমি কিভাবে শুনতে পারবো তার জন্য ফোন অবশ্যই কিনতে হবে। এসব শোনার পর সৌরভ আর কোন কথাই বলতে পারল না। চুপচাপ ফোনের দোকানে গেল আর সুন্দর একটি ফোন কিনলো। এরপর তারা একটি রেস্টুরেন্টে যেয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে লাবনী সৌরভ কে পৌঁছে দিল আর লাবনী ও বিদায় জানিয়ে বাড়িতে ফিরে এলো।
পরের দিন লাবনী খুব সকাল সকাল কলেজে চলে আসে আর সৌরভের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। সময় পার হয়ে যাচ্ছিল কিন্তু সৌরভ আসছিল না। যার কারণে লাবনীর খুব মন খারাপ হচ্ছিল সে মনে মনে ভাবছিল কি হলো সৌরভের। লাবনীর বন্ধু বান্ধবরা লাবনীকে জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে তোর কি নিয়ে এত মন খারাপ করে বসে আছিস?লাবনী বলে কিছু হয়নি আমাকে একটু একা থাকতে দে। বন্ধু-বান্ধবরা বলে তুই কি সৌরভের কথা ভাবছিস। লাবনী বলে হ্যাঁ দেখ না কাল ওর সাথে অনেকটা সময় কাটিয়েছি। ওকে এত করে বললাম কাল তুমি কলেজে এসো কিন্তু দেখ এখনো পর্যন্ত সে কলেজে এলো না তাই একটু চিন্তা হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর সৌরভ কলেজে এলো। লাবনীর বন্ধু-বান্ধবরা সৌরভকে দেখে পেয়ে লাবনীকে বলল ওই দেখ সৌরভ আসছে। লাবনী ও তার বন্ধু-বান্ধবরা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে সৌরভের দিকে। কারণ লাবনীর বন্ধু-বান্ধবরা যে সৌরভকে আগে পরে দেখেছিল কিন্তু আজ যেন অন্যরকম সৌরভ। সৌরভ কাছে আসতেই সবাই তাকে হাই বললো। সৌরভ ও সবাইকে হাই বলল। সৌরভ লাবনীকে বলল গুড মর্নিং। কিন্তু লাবনী কোন উত্তর দিল না। লাবনী সৌরভের দিকে তাকিয়ে মুখটি অন্যদিকে ঘুরিয়ে বসে থাকলো। সৌরভ বুঝতে পারল লাবনী তার উপর রাগ করে বসে আছে। তাই সৌরভ লাবনীর কাছে যে দুটো কান ধরে সরি বলল। কিন্তু তারপরেও লাবনীর রাগ কিছুতেই কম হচ্ছিল না। তখন সৌরভ আবারো সরি বলে আর ওঠ বস করতে শুরু করলো। তখন লাবনী সৌরভকে ধমক দিয়ে বলল অনেক হয়েছে আর করতে হবে না। তখন সৌরভ মুচকি হেসে একটি গোলাপ ফুল লাবনীকে দিল। লাবনী ফুলটি দেখে আর রাগ করে থাকতে পারলো না সেও হেসে দিয়ে বলল তুমি আমার জন্য ফুল এনেছো।
হ্যাঁ আমি তোমার জন্য ফুল এনেছি তুমি এত কিছু আমার জন্য করেছো আমি যে তোমার মতন এত কিছু করতে পারবো না তাই সামান্য একটি ফুল তোমার জন্য এনেছি। লাবনী বলে আমি তোমার জন্য এত কিছু করেছি কিন্তু তুমি যে আমার জন্য একটি ফুল এনেছো এটাই আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া। কারণ আমি তোমার কাছ থেকে এমন কোন কিছু আশাই করিনি আমি খুব হ্যাপি খুব হ্যাপি। আনন্দে লাবনী সৌরভকে জড়িয়ে ধরে আর বলে আই লাভ ইউ। সৌরভ কিছুই বলতে পারল না। তারপর লাবনী সৌরভকে বলে আমি কাল তোমাকে সকাল সকাল কলেজে আসার কথা বলেছিলাম। কেন এত লেট করলে? তখন সৌরভ বলে অনেক কাজ পড়েছিল সেগুলো সারতে সারতে আমার লেট হয়ে গিয়েছে। লাবনী বলে ইটস ওকে আমি খুব চিন্তা করছিলাম। সৌরভ বলে কিসের এত চিন্তা করছিলে? লাবনী বলে সে তুমি বুঝতে পারবে না।
এরপর সৌরভ লাবনীকে বলে আজ আর কলেজ করব না আজ ঘুরতে যাব। লাবনী বলে তুমি আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে? সৌরভ বলে হ্যাঁ আমি তোমাকে ঘুরতে নিয়ে যাব কিন্তু তোমার গাড়িতে নয়। লাবনী বলে তাহলে আমরা কিসে যাব? সৌরভ বলে আমরা রিকশায় যাব। লাবনী বলে রিকশায় যাবো না না না তুমি গাড়িতে চলো আমি কোনদিন রিকশাতে উঠি নাই। সৌরভ বলে উঠোনি আজ উঠবে আমি তো এমন ছিলাম না তুমি আমাকে পরিবর্তন করিয়েছো। তাহলে আজ তুমি আমার জন্য এইটুকু করতে পারবে না। লাবনী বলে কেন পারব না তোমার হাতটি ধরে আমি তো সাত সমুদ্র পাড়ি দিতে পারি। সৌরভ বলে কি বললে আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না। লাবনী বলে কই কিছুই তো বলিনি চলো আমরা যাই। সৌরভ একটি রিকশা ডাক দিল। রিকশাটি আসতে সৌরভ উঠে পড়ল রিকশাতে। কিন্তু লাবনী উঠতে পারছিল না।কারণ সে আগে পরে কোনদিন রিকশাতে উঠেনি। তাই সৌরভ তার একটি হাত বাড়িয়ে দিল লাবনীর দিকে। লাবনী অবাক চোখে তাকিয়ে ছিল সৌরভের দিকে। তখন সৌরভ বলে আমার হাতটি তুমি ধরে তারপরে উঠে এসো। রিকশায় উঠে তারা দুজনে পাশাপাশি বসে চলতে শুরু করলো। খোলা আকাশের নিচে প্রকৃতির মিষ্টি হাওয়া এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছিল লাবনীর। সৌরভকে লাবনী ধন্যবাদ জানায়। সৌরভ বলে ধন্যবাদ কেন? লাবনী বলে আমি কোনদিন এমন ভাবে ঘুরতে বের হইনি। সব সময় গাড়িতে চড়েছি আর এসির হাওয়া খেয়েছি। কিন্তু তোমার সাথে এই রিকশাতে চলতে আমার যে কত ভালো লাগছে আমি তোমাকে বুঝাতে পারব না। এরপর থেকে আমরা যখন কোথাও ঘুরতে আসবো তখন আমরা রিকশাতে চড়ে ঘুরে বেড়াবো। হঠাৎ ধাক্কা লেগে লাবনী পড়ে যাচ্ছিল রিকশা থেকে। তখন সৌরভ তাকে ধরে ফেলল। সৌরভের এই আন্তরিকতা দেখে লাবনী বারবার সৌরভের প্রেমে পড়ে যাচ্ছিল। অবাক চোখে তাকিয়ে থাকছিল সৌরভের দিকে আর যখন সৌরভ লাবনীর দিকে তাকাচ্ছিল তখন লাবনী চোখ দুটো অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিচ্ছিল।
খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন আপনি৷ আজকে এর পরবর্তী পর্ব দেখে খুবই ভালো লাগলো৷ সৌরভ ও লাভনীর বন্ধুত্ব অনেকটাই গভীর হয়ে যাচ্ছে। যখন লাবনী তাকে বিভিন্ন ধরনের জামাকাপড় কিনে দিল, এরপরও তাকে একটি স্মার্টফোনের দোকানে নিয়ে গেল৷ তখন সে বলে তাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছে৷ তখন লাবনী বলতে থাকে তাকে জামা কাপড় কিনে দিয়েছে তো কি হয়েছে৷ এখন তার জন্য একটি স্মার্টফোন কিনে দিবে৷ কারণ তার বন্ধু খেয়েছে কিনা, ঘুমিয়েছে কিনা, সব কিছুর খবর কিভাবে নিবে৷ তাই জন্য তাকে একটি স্মার্ট ফোন কিনে দেওয়া দরকার৷ তাই লাবনী তাকে একটি স্মার্ট ফোন কিনে দিলো। এরপর একদিন লাবনীর সাথে সৌরভ এর আবার দেখা হলো৷ তখন তারা দুজনে বলল যে সে ঘুরতে যাবে। তখন তারা বলল যে অবশ্যই তারা ঘুরতে যাবে। তখন বলতে থাকে যে লাবনীর গাড়িতে করে তারা ঘুরতে যাবে না৷ তখন বলে কিসে করে সে ঘুরতে যাবে৷ তখন সৌরভ বলে রিকশা করে যাবে৷ তখন লাভনী বলে সে যাবে না। কারণ সে কখনো রিক্সায় উঠেনি। তখন সৌরভ বলতে থাকে সে রিক্সায় উঠেনি তো কি হয়েছে ৷ তাই আজকে লাবনীকে রিকশায় করে ঘুরতে যেতে হবে৷
ধন্যবাদ সুন্দর একটি পর্ব শেয়ার করার জন্য৷ পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম৷
ধন্যবাদ দাদা সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য এবং আপনার মূল্যবান কিছু কথা আমাকে শেয়ার করার জন্য।
সব সময় আপনি খুব সুন্দর কিছু গল্প শেয়ার করে যাচ্ছেন৷
এই গল্পেরও খুব সুন্দর একটি পর্ব শেয়ার করেছেন৷
পরবর্তী পর্বগুলো দেখার আশায় রইলাম৷