ভূতের গল্প পর্ব ২

in আমার বাংলা ব্লগlast year

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি আপনাদের সবার মাঝে উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-pedro-figueras-626163.jpg
সোর্স



ঘুম থেকে পরের দিন সকালে উঠলাম রাতের ঘটনাটি আমি আমার বন্ধুদের বললাম কিন্তু তেমন একটা আমার কথায় গুরুত্ব দিলো না। সকালে খাওয়া-দাওয়ার পর বাইরে ঘুরতে গেলাম। বাইরের সৌন্দর্য দেখলে সত্যিই মনটা ভরে যায় সবুজের চারিপাশ যেন আঁকড়ে ধরে আছে। ঘুরতে ঘুরতে কখন যে সন্ধানে মেয়ে এলো আমরা বুঝতেই পারলাম না। সন্ধ্যা নামতেই আমরা গাড়িতে করে আবার সেই বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। বাড়িতে এসে আমরা যার যার রুমে আবার চলে গেলাম আমি ফ্রেশ হওয়ার জন্য বাথরুমে গেলাম। ঠিক তখনই চমকে ওঠার মতন ঘটনা ঘটলো আমার সাথে হঠাৎ হ্যালো জ্বলছে আর নিচ্ছে সত্যিই ভয় পাওয়ার মতন অবস্থা। এমন অবস্থায় আমি আমার ফোনটি বের করে আমার বন্ধুকে ফোন দিতে যাব তখনই দেখি ফোনের নেটওয়ার্ক নেই। ফোনের আলো জ্বালিয়ে কোনমতে ফ্রেশ হয়ে বাথরুমের দরজা খুলতেই শুনলাম আমার রুমের দরজায় কে যেন নক করছে। আমি দরজা খুলতেই চিৎকার করে উঠি। অল্প আলোতে আমি লোকটিকে চিনতে পারছিলাম না শুধু দেখতে পেলাম একজন সাদা বস্ত্র পরে দাঁড়িয়ে আছে আমার রুমের সামনে। আমি কাপাকাপা কন্ঠে তাকে বললাম কে আপনি? উনি আমাকে উত্তর দিয়ে বলল বাবু ভয় পাবেন না আমি এই বাড়ির ম্যানেজার। কথাটা শোনার পর আমার ভয়টা একটু হলেও কমে গেল তখন রাগান্বিত কন্ঠে বললাম আপনি এত রাতে এখানে কি করছেন আর এই সাদা বস্ত্র কেমন আছে কেউ দেখলে তো ভয় পাবে। উনি কোন কথা না বলে আমাকে বলল কারেন্ট লাইনে একটু প্রবলেম হয়েছে তার জন্য এমনটি হচ্ছে চিন্তা করবেন না ঠিক হয়ে যাবে।


আমি রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম ফোনে গেম খেলতে খেলতে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম ঠিক জানিনা। হঠাৎ রাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল রাত তখন ২.৩০ মিনিট বাজে। আবারো সেই রাতের মতন কে যেন বাইরে হাঁটছে কিন্তু আজ পায়ের হাঁটার সাথে নুপুরের শব্দ হচ্ছে। আমি মনে মনে ভাবতে থাকি এই বাড়িতে কোন মহিলাকে আমরা এসে দেখিনি তাহলে এত রাতে কে নূপুর পরে হাঁটছে। মনে মনে ভাবছিলাম একটা বার দেখে আসি কিন্তু ভয়ও করছিল এ কারণে আমি আর গেলাম না। সেদিন বাইরের বৃষ্টি হচ্ছিল প্রচন্ড মেঘের গর্জন হচ্ছিল ভীষণ ভয় করছিল আমার বন্ধুরা অন্য রুমে ছিলাম আমি জানিনা তারা এই নুপুরের শব্দ শুনতে পাচ্ছিল কিনা। প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে কারেন্ট ও চলে যায় চারিপাশে অন্ধকার আমি ফোনের ফ্লাশ জ্বালিয়ে জানলার পর্দাটা টেনে দিতে গেলাম । আর তখনই আমার মনে হচ্ছিল আমার পিছনে যেন আছে। মনে হচ্ছিল সে যেন আমার পিছনে আমার ঘাড়ে হাত দিতে যাচ্ছে। হঠাৎ আমি শুনতে পাই একটি মেয়ে জোরে জোরে হাসছে আর গুনগুন করে কি যেন বলছে। রাত ৪.৪৫ মিনিটে বৃষ্টি থেমে যায় তখন আবার কারেন্ট আসে কারেন্ট আসতেই যে নুপুরের শব্দ হাসি কিছুই যেন আর নেই। মনে মনে ভাবতে থাকি এটি আমার মনের ভুল কারণ একটি মানুষ যখন অতিরিক্ত পরিশ্রম অথবা দুর্বল হয়ে পড়ে তখন যদি বিশ্রাম না নেয় তখন এটি হয়ে থাকে আর যখন ভৌতিক এইসব চিন্তা করা হয় তখন আরো বেশি মনে হয়।


সেই রাতে আমি আর ঘুমাতে পারলাম না শুধু সকাল হওয়ার অপেক্ষা করছিলাম। সকাল হতেই আমি আমার বন্ধুদের রুমে যে দরজায় নক করতে থাকি। আমার বন্ধুরা দরজা খুলতেই আমি বন্ধুদের বলতে থাকি রাতের ঘটনার কথা। তারা তখন আবারো অস্বীকার করে কিন্তু আমার এক বন্ধু আমার সাথে একমত হল সেও নাকি নুপুরের শব্দ বাইরে থেকে একটি মহিলার হাসির শব্দ। বিষয়টি আমাদের খুব চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল তাই আমরা বাড়ির ম্যানেজারের সাথে কথা বলার জন্য সিদ্ধান্ত নিলাম কারণ উনি একমাত্র এই ঘটনাটি আমাদের খুলে বলতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে ওনার কাছে আমরা গেলাম কিন্তু ওনাকে কোথাও পেলাম না। বাড়ির বাইরে খুঁজতে খুঁজতে একটি মহিলাকে পেলাম উনার কাছে জিজ্ঞাসা করতেই উনি বলল ম্যানেজারকে নাকি বাজারে দেখেছে। ওই মহিলাটি আমাদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল অনেকক্ষণ পরে উনি আমাদেরকে বলল তোমরা কি ঘুরতে এসেছ? আমরা বললাম হ্যাঁ আমরা এখানে ঘুরতে এসেছি। আপনি আমাদেরকে বলল তোমরা কি এই বাড়িতে উঠেছ? আমরা বললাম হ্যাঁ আমরা এই বাড়িতে থাকছি। এই বাড়িটির কথাটি শুনতে মহিলাটি চুপ হয়ে গেল কোন কথা না বলেই হাঁটতে শুরু করলো। আমি পিছন থেকে ডাক দিয়ে ওনাকে থামতে বললাম আর উনার কাছে যে রাতের ঘটনাটি খুলে বললাম কিন্তু উনি কোন কথা বলে চুপচাপ হাঁটতে শুরু করল। আমি মনে মনে ভাবতে থাকি অনেক কেন আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেলেন না হয়তো এই বাড়িতে কোন সত্য লুকিয়ে আছে যেটা আমরা জানি না। যাই হোক ম্যানেজারের জন্য আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম।

আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Sort:  
 last year 

আপনার বন্ধুরা আপনার কথার কি পাত্তা দিবে আমারই তো পাত্তা দিতে ইচ্ছা করছে না। কারন এরকম ঘটনা বাস্তবে হয় নাকি। এগুলো সিনেমাতেই দেখা যায়। আপনার ধারণাই ঠিক অনেক বেশি ক্লান্ত থাকার কারণে ঘুমের ঘোরে এগুলো হয়তো মনে হয়েছে আপনার। যে লোকটির কাছে বলেছেন সেও হয়তো মজা করছেন ভেবে পাত্তা না দিয়ে চলে গিয়েছে। কিন্তু আপনি বেশ ভয় পেয়েছেন বোঝা যাচ্ছে।

 last year 

এরকম ভূতের গল্প গুলো পড়তে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আবার মাঝে মাঝে অনেক বেশি ভয়ও করে। আপনার এই ভূতের গল্পটির প্রথম পর্ব আমার পড়া হয়েছিল। আর আজকে এই দ্বিতীয় পর্ব পড়ে আরো বেশি ভালো লেগেছে। তবে বাড়িটিতে কোন মহিলা না থাকার সত্ত্বেও নুপুরের আওয়াজ এবং মহিলার হাসির শব্দ কিভাবে শোনা গিয়েছিল এটা বুঝতে পারিনি। এই বাড়িতে নিশ্চয়ই কোন সত্য ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে যা ম্যানেজার বলেনি। এখন অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তীতে কি হয় তা জানার জন্য।

 last year 

ভাই আপনি গল্পটা লেখার সময় বুঝি একটুও ভয় পাননি। আমি তো আপনার গল্পটা পড়ার সময় অনেক বেশি ভয় পেয়েছি, আর ভাবছি এরকম ভয়ানক গল্প কিভাবে লিখলেন। মেঘের গর্জন, নুপুর পায়ে দিয়ে হাটা মেয়ে, সেই সাথে মেয়েটার ভয়ানক হাসি এই সবকিছু ভাবতেই আমার ভয় লাগতেছে। সবাই ম্যানেজারের জন্য অপেক্ষা করার পরে কি হয়েছিল তা তো জানতেই পারলাম না। সেজন্য আমি অধীর আগ্রহে বসে আছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56784.71
ETH 2392.67
USDT 1.00
SBD 2.27