জীবন যুদ্ধ গল্প পর্ব:১০
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে জীবন যুদ্ধ গল্পের দশম পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, এই পর্বটি ও আপনাদের খুব ভালো লাগবে।তাই বিলম্ব করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
প্রিয়া আকাশের কোন কথাই শুনতে চায় না অবশেষে প্রিয়া সেখান থেকে চলে আসে। আকাশ প্রিয়াকে থামা বার চেষ্টা করে কিন্তু প্রিয়া তার কোন কথাই শোনে না। আকাশ দৌড়ে যে পিছন থেকে তার হাতটি ধরে আর বলে তুমি যেও না। তখন প্রিয়া হাত টি ঝাড়া দিয়ে আকাশের গালে চড় মারে আর বলে আমি বারবার তোমাকে বলছি আমার পক্ষে এটা সম্ভব নয় তুমি কেন বুঝতে চাইছো না। তুমি আর আমার সাথে কোন যোগাযোগই করবে না। আমি তোমাকে কোনদিনও ভালোবাসিনি।আমি ভালোবেসেছি ছিলাম রাজাকে আর রাজাকেই ভালবাসি আমি আর কাউকে ভালোবাসতে পারবো না। ভালো হয়েছে তোমার সাথে দেখা হয়ে গেল তোমার স্মৃতি অনেক দিন ধরে আমি বহন করে বেড়াচ্ছি কিন্তু আর আমি পারব না। তাই ফিরিয়ে দিলাম তোমার সেই স্মৃতি। এই বলে প্রিয়া সেখান থেকে চলে যায় আর পিছন থেকে আকাশ চিৎকার করে বলতে থাকে প্রিয়া আমি তোমাকে ভালোবাসি আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো তুমি থাকতে পারবে না আমাকে ছাড়া।
বাড়িতে এসে প্রিয়া লাবনীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে আর বলতে থাকে। আজ আমি সবকিছু শেষ করে দিয়ে এসেছি যে আমাকে ভালবাসেনি আমি তাকে ভালবেসেছি আর যে আমাকে ভালবাসে তাকে আজ আমি দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলাম। আকাশ আমাকে খুব ভালোবাসে কিন্তু আমি যে আকাশের যোগ্য নই আকাশ সেটা বুঝতে পারছে না। লাবনী বলে। প্রিয়া আমি জানি তুই আকাশকে ভালোবাসিস কিন্তু তুই আজ এটা কি করলি ভালোবাসার মানুষটাকে এত কাছে পেয়েও তাকে হারিয়ে ফেললি। তার দেওয়া স্মৃতি তুই তাকে ফিরিয়ে দিলি। আমি তো জানি তুই থাকতে পারবি না। কেন নিজেকে এত কষ্ট দিচ্ছিস ও যখন তোকে নিয়েই থাকতে চায় তুই কেন রাজি হচ্ছিস না। প্রিয়া আমার বিশ্বাস আকাশ তোকে খুব হ্যাপি রাখবে। আকাশ সবকিছু জানে তোর ব্যাপারে তার চোখে আমি তোর প্রতি ভালোবাসা দেখেছি এখনো সময় আছে আকাশের কথা গুলো মেনে।প্রিয়া বলে আমি যা করেছি আকাশের ভালোর জন্যই করেছি। আমি যদি আজ এমনটা না করতাম তাহলে আকাশ আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতো। এখন সে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে পারবে আর একদিন না একদিন সে আমাকে ঠিকই ভুলে যাবে।
প্রিয়ার চিন্তাভাবনা ভুল ছিল। সে হয়তো জানে না সত্যিকারের ভালবাসলে সে হাজার কষ্ট দিলেও তার হাত কখনোই ভালোবাসার মানুষটি ছেড়ে দেয় না। ভালোবাসার মানুষটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত তার জন্যই অপেক্ষা করে সে বিশ্বাস রাখে একদিন না একদিন ভালোবাসার মানুষটি ঠিকই ফিরে আসবে। যাই হোক দেখতে দেখতে একটি মাস কেটে গেল। হঠাৎ প্রিয়ার বাড়ি থেকে ফোন আসে আর তাকে দ্রুত বাড়িতে যেতে বলে। প্রিয়ার পরিবার কিছুই বলে না শুধু বলে দ্রুত বাড়িতে আসতে। প্রিয়া একটু ঘাবড়ে যায় আর সঙ্গে সঙ্গে সে অফিস থেকে বের হয়ে সোজা বাড়িতে চলে যায়। প্রিয়া বাড়িতে পৌঁছে তার বাবা-মাকে বলে কি হয়েছে এত আর্জেন্ট আমাকে ডাকলে কিছু হয়েছে? প্রিয়াকে তখন তার বাবা-মা কিছুই বলে না শুধু বলে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নাও রাতে কথা হবে। রাতে যখন প্রিয়া খেতে আসে তখন তার বাবা-মা তাকে বলে তোমাকে কাল দেখতে আসছে। কথাটি শোনার পর প্রিয়া প্রচন্ড রেগে যায়। সে ভাতের থালে জল দিয়ে উঠে যাচ্ছিল তখন তার বাবা রাগান্বিত কন্ঠে বলে প্রিয়া এখানে বস আর আমার কথা মন দিয়ে শোনো। দেখো প্রিয়া আমাদের বয়স হয়েছে আর তোমারও বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে। আমরা যে ছেলেটাকে দেখেছি সেই ছেলেটি তোমার যোগ্য সে তোমার সম্পর্কে সবই জানে তার পরিবারও সবকিছুই জানে। তাদের পরিবার তোমাকে পুত্রবধু হিসেবে আমাদের কাছে দাবি করেছে। আমরা তাদেরকে কথা দিয়েছি আর তুমি আমাদের কথার সম্মান টা রাখবে এটা তোমার ক্ষতি আমাদের অনুরোধ। তুমি জানো সেই ছেলেটি বলেছে তোমার অমতে সে এই বিবাহ করবে না তাই সে তার পরিবারের সাথে কাল আমাদের এখানে আসছে তোমার মুখে কথাগুলো শুনতে।
প্রিয়া সব কথা শুনে সেখান থেকে সোজা তার রুমে চলে আসে। এসে লাবনীকে ফোন দেয় আর তাকে সব ঘটনা খুলে বলে। লাবনী তার কথাগুলো শুনে বুঝতে পারে এটা একমাত্র আকাশেরই কাজ। কারণ আকাশ লাবনীকে সব প্লান সম্পর্কে বলে এসে কি করতে যাচ্ছে কি করবে। পরদিন সকালে প্রিয়া ঘুম থেকে উঠে শুনতে পারে ছেলেপক্ষ আর কিছুক্ষণ পরেই তাদের বাড়িতে উপস্থিত হবে। প্রিয়াকে তার মা বলে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিতে। ২০ মিনিট পর ছেলেপক্ষ বাড়িতে উপস্থিত হয়। প্রিয়া কোন সাজগোজ না করে তাদের সামনে উপস্থিত হয়। কারণ প্রিয়ার কোন ইচ্ছাই ছিল না এই বিবাহ করার। আর সে জানে তার এই চেহারা যদি তাদের ভালো লাগে তাহলে একমাত্র বিয়েটা সম্ভব হবে আর যেহেতু আগে থেকেই তারা তার জীবন সম্পর্কে সবকিছুই জানে এ কারণে সে কোন সাজগোজ করে না।