তোমার ছোঁয়া গল্প পর্ব:৩

in আমার বাংলা ব্লগlast month

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি 'তোমার ছোঁয়া' গল্পের তৃতীয় পর্বটি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে তোমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-asadphoto-1024963.jpg
সোর্স



স্কুল ছুটি হওয়ার পর উজ্জ্বল তন্ময়ের বাড়িতে যায়। তন্ময় তখন বাড়িতেই ছিল। উজ্জ্বলকে দেখে তার খুবই ভালো লাগে।উজ্জ্বল তার কাছে জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে তোর স্কুলে যাচ্ছিস না কেনো? তন্ময় চুপচাপ থাকে তখন উজ্জ্বল আবারো জিজ্ঞাসা করে আমি তোকে কিছু বলতেছি কথার উত্তর দে। তখন উজ্জ্বল কে তন্ময় বলে তুই তো জানিস আমি মানবিকাকে সেই ক্লাস 6 থেকে পছন্দ করি। মানবিকা জানে যে আমি ওকে পছন্দ করি কিন্তু তার পরেও মানবিকা আবিরের সঙ্গে মেলামেশা করছে। উজ্জ্বল তখন ধমক দিয়ে বলে। মানবিকা কার সাথে ঘুরবে কি না ঘুরবে সে কি তোকে বলে ঘোরাঘুরি করবে। তুই কি তার গার্জিয়ান যে তোর কথা শুনতে হবে। দোস্ত আমি জানি আমি ওর গার্জিয়ান না কিন্তু আমি তো তাকে পছন্দ করি। আমার পছন্দের মানুষটিকে যদি আমি অন্যের হাত ধরে আমার সামনে ঘুরে বেড়াইতে দেখি। তখন কি খারাপ লাগবে না। উজ্জ্বল তার প্রশ্নের জবাব দেয়। হ্যাঁ অবশ্যই খারাপ লাগবে কিন্তু তার মানে এই নয় তুই স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিবি। তখন তন্ময় উজ্জ্বলকে বলে দোস্ত আমি চোখের সামনে এটি দেখতে পারবো না যে মানবিকা অন্যের হাত ধরে ঘুরছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমি অন্য স্কুলে পড়াশোনা করব। কারণ চোখের সামনে দেখলে আমার খুবই খারাপ লাগবে তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি ওর চোখের আড়ালে থাকবো। আমি যতটা সময় ওর থেকে দূরে থাকবো। তত অল্প সময়ের মধ্যে আমি ওকে ভুলে যেতে পারবো। হয়তোবা কোনদিন পারবো না মনে অবশ্যই পড়বে কিন্তু আমি চেষ্টা করব ভুলে থাকার জন্য।


উজ্জ্বল তন্ময়ের সাথে কিছুটা সময় থেকে সে বাড়িতে ফিরে আসে। পরের দিন উজ্জ্বল স্কুলে যায়। মানবিকা উজ্জ্বলের জন্য অপেক্ষা করছিল। সে দূর থেকে যখন দেখতে পেয়েছিল উজ্জ্বল আসছে। মানবিকা দৌড়ে চলে যায় উজ্জ্বলের কাছে আর বলে। তুমি কি গিয়েছিলে তন্ময়ের বাড়িতে? প্রশ্নের উত্তরে উজ্জ্বল হ্যাঁ আমি গিয়েছিলাম। কি হয়েছে ওর? কেনো আসছে না স্কুলে? তখন উজ্জ্বল বলে। ক্লাস 6 থেকে তন্ময় তোমাকে পছন্দ করে। আর আমার মনে হয় তুমিও তাকে পছন্দ কর। কিন্তু এত বছর হয়ে যাওয়ার পরেও তোমরা কাউকে কোন কিছুই জানাওনি। সে স্কুলে আসছে না কারণটা হলো তুমি। আমি আমি কি করলাম। আজ যদি তুমি আবিরের সঙ্গে মেলামেশা না করতে। ওর চোখের সামনে তার হাত ধরে যদি না ঘুরতে তাহলে হয়তোবা এতটা প্রবলেম হত না। তন্ময় কিছুতেই মানতে পারছে না যে তুমি ওর হাত ধরে ওর চোখের সামনে থেকে ঘুরবে। তন্ময় তোমাকে খুবই ভালোবাসে। সে আমাকে বলেছে তোমাদের জীবন থেকে সে সরে যাবে। সে আমাকে বলেছেন সে নাকি অন্য স্কুলে পড়াশোনা করবে সে আর এই স্কুলে পড়াশোনা করবে না।


তন্ময় সেদিনের পর থেকে আর কোনদিন মানবিকা যে স্কুলে পড়াশোনা করতো সেই স্কুলে যায়নি। তিন বছর পর তন্ময় মাধ্যমিক শেষ করে। এখন সে কলেজে পড়াশুনার জন্য শহরে একটি কলেজে ভর্তি হয়। মানবিকা ও পড়াশোনা করার জন্য কলেজে ভর্তি হয়। তারা এখন দুজনেই কলেজ স্টুডেন্ট তারা এখন নিজেদের সম্পর্কে অনেকটাই বোঝে। তন্ময় পড়াশোনা করার জন্য শহরে একটি ম্যাচে থাকতো। বাড়িতে খুব কম সময় আসতো। তন্ময় এবং মানবিকা দের গ্রামের পাশে একটি কলেজ ছিল সেখানে মানবাধিকার পড়াশোনা করছিল। একদিন হঠাৎ তন্ময় শহর থেকে বাড়িতে আসছিল। আর ঠিক তখন সেই গ্রামের কলেজটি ছুটি হয়। মানবিকা কলেজ থেকে বেরিয়ে বাড়িতে যাওয়ার জন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল রাস্তায়। আবার এই দিকে তন্ময় ও বাড়িতে যাওয়ার জন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল ঠিক তখন তন্ময় মানবিকাকে দেখতে পায়। সে প্রথমে চিনতে পারে না। সে শুধু তাকিয়ে থাকে মানবিকার দিকে। অনেকটা দিন সে থাকে দেখেনি তাই প্রথম দেখাতে সে মানবাধিকাকে চিনতে পারেনি। মানবিকা ও তন্ময়কে প্রথম দেখে সেও চিনতে পারেনি। পরবর্তীতে তারা দুজন দুজনকে দেখে চিনতে পেরে মুচকি হেসে দেয়।


যেহেতু তন্ময় ও মানবিকার গ্রাম প্রায় পাশাপাশি। তাই তারা দুজনেই একই গাড়িতে করে বাড়িতে ফিরছিল। তারা পাশাপাশি বসেছিল। তখন তন্ময় মানবিকাকে বলে কেমন আছো তুমি? প্রশ্নের উত্তরে মানবিকতা বলে। আমি ভালো আছি তুমি কেমন আছো? আমিও খুব ভালো আছি। তখন মানবিকা বলে। সেই তুমি স্কুলে আসা ছেড়ে দিলে আর এই তিন বছর পর তোমাকে দেখছি। আচ্ছা এই তিনটা বছর আমাকে কি তোমার একটা বার দেখতে ইচ্ছা করেনি? একটাবার জানতে ইচ্ছা করেনি আমি কেমন আছি? তখন তন্ময় বলে। এ কথা বললে ভুল হবে যে তোমাকে আমার তিনটা বছরের মধ্যে দেখতে ইচ্ছা করেনি বা জানতে ইচ্ছা করেনি তুমি কেমন আছো। আমি তোমাকে দেখতে মাঝেমধ্যে স্কুলে আসতাম কিন্তু আমি তোমাকে কোনদিন দেখা দেয়নি। আমি সব সময় তোমার খবর রাখতাম তুমি কোথায় যাচ্ছ কার সাথে ঘুরছো তুমি কেমন আছো সবটাই। আমি এটাও জানতাম তুমি যখন জানতে পেরেছিলে আমি তোমার কারনে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছি।সেদিনের পর থেকে সবার সাথে কম মেলামেশা করতে। সব সময় গম্ভীর ভাবে থাকতে কথা কম বলতে। তখন মানবিকা বলে। তুমি এত কিছু জানো আমার সম্পর্কে কিন্তু একটা বার আমার সামনে এলে না কেন? তখন তন্ময় বলে। তোমার প্রতি আমার অভিমান হয়েছিল। আর যখন জানতে পারি তুমি সবটাই মজার ছলে করেছ। আমি সবটা জানার পর তখন তোমার সামনে আসতে আমার খুব লজ্জা করছিল তাই আর তোমার সামনে আসতে পারিনি। তাদের মধ্যে আরো অনেক কথা চলতে থাকে একটি পর্যায়ে মানবিকা তার কাছে কিছু কথা জিজ্ঞাসা করে।

আজ পর্বটি এখানেই শেষ করছি। বাকি পর্ব খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। সে পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64689.90
ETH 3450.92
USDT 1.00
SBD 2.50