👉সেই কলেজ থেকে দুই জনের সাথে আমার পরিচয়। সরকারি বাংলা কলেজে সাইন্সের ছাত্র ছিলাম আমি। প্রথম ক্লাস থেকে এদের দুজনের সাথে আমার পরিচয়। একটু একটু করে যেন খুব ভালো বন্ধুতে পরিণত হয়ে যাই আমরা বেশ কয়েকজন। আমি সব জায়গাতে একটু দুষ্টুমি বেশি করি। তাই সবার সাথে খুব সহজেই আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয়ে যায়। একজনের নাম নিশাত অন্যজনের নাম স্বর্ণা। হঠাৎ একদিন কলেজ শেষ করে বাসায় যাচ্ছিলাম আমি আর নিশাত। নিশাত আমায় বলল বন্ধু তোকে তো আমি সবকিছু বলি, আজ একটা কথা শেয়ার করতে চাই তোকে। আমি বললাম এত আনচান আনচান করে কথা বলছিস কেন কি হয়েছে তাই বল। নিশাত খুব লজ্জা পাচ্ছিল। বলল বন্ধু স্বর্ণাকে মনে হয় আমি ভালোবেসে ফেলেছি। আমি বললাম ধুর বোকা সেম ব্যাচ এর রিলেশন গুলি কোনদিন বিয়ে পর্যন্ত যায় না। নিশাত আমায় বলল আমি জানি না তবে সত্যি আমি ওরে ভালোবেসে ফেলেছি। পরে আমি বললাম ঠিক আছে বিষয়টা আমি দেখছি। স্বর্ণাকে আমি খুব বুঝিয়ে বলার পর ও আর দ্বিমত করল না। সত্যি বলতে আমি নিজেও অনেক খুশি হয়ে গেলাম কারণ নিশাতকে আমি খুব ভালো বন্ধু ভাবতাম।

দেখতে দেখতে ২ বছর শেষ হয়ে গেল। ওদের রিলেশন টাও খুব সুন্দর ভাবেই চলছিল। হঠাৎ নিশাত সিদ্ধান্ত নেয় সে বিদেশ চলে যাবে। কিছুদিন পর শুনি ওর ভিসা চলে এসেছে সৌদি আরব চলে যাবে। বিদেশ চলে যাওয়ার কিছুদিন পর এক বিশাল ফাটল ধরে ওদের রিলেশনে। কোনভাবেই ঠিক করতে পারছিল না রিলেশন। নিশাত ফোন করে প্রায় কান্না করে করে ভাব। আমি বুঝতে পারছিলাম ওর কতটা খারাপ লাগছিল তখন। আমি স্বর্ণার বাসায় চলে যাই একদিন। স্বর্ণাকে খুব বুঝাই কিন্তু কেন জানিনা কিছুই বুঝতে চাইছিল না স্বর্ণা। একটা সময় অনেক বোঝানোর পর সব আবার ঠিক হয়ে যায় ওদের মাঝে। নিশাত ছুটিতে বাংলাদেশে আসে। আমি বললাম এসেছিস যেহেতু কাবিন করে রেখে যা। যা কথা তাই হয়েছে। দুজনের কাবিন হয়ে যায়। নিশাত দুই বছর পর আবার বাংলাদেশে আসে ছুটিতে। ফ্যামিলি গত ভাবে তারা সিদ্ধান্ত নেয় স্বর্ণাকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়ে যাবে তাদের বাসায়। এবার অনুষ্ঠানের পালা। আমি খুব ব্যস্ত ছিলাম কিন্তু বন্ধুর বিয়ে করে থাকতে তো হবে।

বিয়েতে যাওয়ার জন্য গাড়ি ঠিক করা থেকে শুরু করে ফুল দিয়ে গাড়ি সাজানো সবকিছু নিজের সামনে থেকে করলাম। এর পর বাসায় চলে আসি আমার সে একটু অসুস্থ থাকার কারণে আমি একাই গেলাম অনুষ্ঠানে। আমি কি পরবো সেটা সে ঠিক করে দিল এবং আমাকে সাজিয়ে-গুছিয়ে দিল সে। আমরা চারটা বাইক নিলাম আর সাথে একটা গাড়ি। আমাদের বাসা থেকে খুব বেশি একটা দূরে না। যেতে বিশ মিনিট এর মত সময় লাগে। বিয়ে বাড়িতে সবচাইতে মজার বিষয় হচ্ছে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করার আগে গেটের মধ্যে আটকে দেয়া টাকার জন্য। আমি একটা চালাকি করলাম অনেকগুলি দশ টাকার নোট একত্রিত করলাম তার ভীতর কিছু ১০০ টাকার নোট আর দুইটা পাঁচশত টাকার নোট একসাথে করে একটা ইনক্লাব এর মধ্যে নিয়ে নিলাম। যাতে করে তারা মনে করে ভিতরে অনেক টাকা আছে হাহাহাহা। আসলে মজার বিষয় হচ্ছে দুই পক্ষের সবাই আমাকে চিনে। আমরা সব মিলিয়ে বেশ ইঞ্জয় করলাম।

আমরা কিছু বন্ধু একসাথে বসলাম খাওয়ার জন্য। কারণ আমরা জানতাম জামাইয়ের জন্য কিছুই স্পেশাল থাকবে। সত্যি বলতে আমি খাবার-দাবার তেমন একটা খেতে পারিনা। আমার আশেপাশের বন্ধুরা ইচ্ছেমতো খেলো কিন্তু আমি খুব অল্পতেই শেষ। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বন্ধুকে বলে আমার বিদায় নিতে হয়েছে কারণ সেদিন আমার কিছু ডেলিভারি এমন ছিল যা দিতেই হত। তাই আমি বিকেল চারটার পর বেরিয়ে যাই। এই বিয়েটি ছিল গত শুক্রবারে।