গল্প - জুলেখা বানুর জীবন ! - পর্ব ১(সমাজের বাস্তব চিত্র)|| 10% Beneficiaries @shy-fox ||


প্রথমেই সবাইকে জানাই সালাম,আদাব। সৃষ্টিকর্তার রহমতে আশা করছি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকলেই ভালো এবং সুস্থ আছি।


❤️ সবার জন্য অবিরাম ভালোবাসা ❤️


আজকে আমি হাজির হয়েছি একটি লিখা নিয়ে। লিখতে ভালা লাগোটা আমার বহুদিন এর। কেও যদি জিজ্ঞেস করে তোমার লিখার কারণ কি? তাহলে আমার একটাই উত্তর আসবে তা হলো জানিনা।
তাহলে আজকের লিখাটা শুরু করি। আজকের লিখার বিষয় হলো একটি গল্প।গল্পের নাম " জুলেখা বানুর জীবন ! "


জুলেখা বানুর জীবন ! - পর্ব ১


IMG_20220125_032153.jpg


খুব বাতাস এবং শীত চারপাশে।
এই শীতকালটা যখন থেকে শুরু হয় তখন থেকেই গরিব মানুষ গুলোর দুর্দশার দিনও শুরু হতে থাকে। কারণ এই শীতকালের প্রচন্ড শীতকে প্রতিরোধ করার জন্য কোন ব্যবস্থা গরিব মানুষ গুলোর কাছে থাকে না।
বড় লোকরা যেমন তেমন করে অর্থাৎ খুব আনন্দের সাথে শীতকালটা কাটায়।
তাদের খুব সুন্দর ব্যবস্থা থাকে শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য। এমনকি তারা বিভিন্ন বিভিন্ন রকমের আনন্দ আয়োজন করে।
কিন্তু শীতকাল গরিব মানুষ গুলোর যন্ত্রণাময় একটি সময়।
গরম কালে গরম সহ্য করে থেকে গেলেও শীতকালে শীত সহ্য করা বেশ কঠিন একটি কাজ হয়ে দাঁড়ায় এই মানুষগুলোর জন্য।

ঠিক তেমনটাই জুলেখা বানুর সাথে ঘটছে। আগে আমি একটু পরিচয় দিয়েনি এই জুলেখা বানুর পরিবারের,
জুলেখা বানু হলো একটি গরিব ঘরের অসহায় মহিলা। তার একজন স্বামী এবং দুই সন্তান রয়েছে।
দুটোই ছেলে, বড় ছেলের নাম জুয়েল এবং ছোট ছেলের নাম ইসমাইল।
জুলেখা বানুর স্বামীর নাম রমিজ মিয়া।
খুব গরীব ঘরের হওয়াতে তাদের জীবনে আনন্দ বিষয়টা খুব কমই আসে,
বরং
আনন্দের চেয়ে কষ্টটাই তাদের জীবনে খুব বেশি।

রমিজ মিয়া কাঠ মিস্ত্রিরির কাজ করে।জুলেখা বানু ঘরে ঘরে বুয়ার কাজ করে।
দুই ছেলে পড়াশোনা করছে।
বাবা মা দুইজনে মিলে ছেলেদের কোনো কাজ করতে দেয়না।
রমিজ মিয়া আর জুলেখা বানুর অনেক বড় স্বপ্ন দুই ছেলে একদিন পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হবে।সেইদিন আর কোনো কষ্ট, দুর্দশা থাকবেনা তাদের জীবনে।সেই কারণেই রমিজ মিয়া এবং জুলেখা বানু সারাদিন হাড়ভাংগা পরিশ্রম করে।

একটা দিনে প্রতিদিনের মতোই রমিজ মিয়া কাজের খোজে বাহির হয়।মিস্ত্রির কাজে একটা সমস্যা, প্রতিদিন কোনো কাজ থাকেনা,
কিংবা,
কোনোদিন কোনোদিন কাজ থাকলেও ভালো মজুরি পায়না।কিছু কিছু কাজ করতে সারাদিন যায় তবে কাজ অল্প।সেই দিন আবার মজুরি পায় একেবারেই সামান্য।সেই টাকা দিয়ে হয়তো একবেলায় বাজার খরচ ও চলবেনা।সেইদিন ও রমিজ মিয়া রাস্তায় দাঁড়ায় অন্য মিস্ত্রিদের সাথে।রাস্তা থেকেই তাদের কন্ট্রাক্টররা কন্টাক্ট করে কাজের জায়গায় নিয়ে যায়।দাঁড়ানোর কিছু সময় পরেই এক লোক একে দশজন মানুষকে নিয়ে যায়, রমিজ মিয়াও যায় তাদের সাথে।সেইদিন আবার ভালোই দাম ধরে কাজের।মনে মনে রমিজ মিয়া একটু খুশিই হয় টাকা বেশি পাবে সেই কারণে।যথারীতি কাজের জায়গায় চলেও যায় ট্রাকের পিছে দাঁড়িয়ে।

কাজ করতে করতে হঠাৎ রমিজ মিয়ার প্রথমবার একটু মাথাটা কেমন করে যেন চক্কর দিয়ে উঠে।তাও টাকার কথা মাথায় আসতেই একটু পানি খেয়ে আবার কাজ করা শুরু করে।দরজার উপরে একটা ডিজাইন করবে তাই দরজার কাঠটাকে সমান করে নিচ্ছে প্রথমে।একটু সময় পরেই আবার ও রমিজ মিয়ার মাথা চক্কর দেয়, আগের বারের চেয়ে এইবার একটু বেশি।এইবার ও রমিজ মিয়া একটু পানি খেয়ে আবার কাজ করা শুরু করে।

কিন্তু আর একটু পরে রমিজ মিয়া হঠাৎ মাথা ঘুরিয়ে পরে যায়!

এইবার তার মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার সময় কাঠের দরজাটিও হাত লেগে পরে যায়
এবং
কাঠের দরজা টা একটু ক্ষতি হয়। কারণ পাশেই কাঠ কাটার যন্ত্র ছিল। সেই কারণে কাঠ কাটার যন্ত্রের সাথে দরজাটির একটু ডিজাইন নষ্ট হয়ে যায়। সেদিকে না তাকিয়ে আগে সবাই রমিজ মিয়াকে ধরে,
এবং
তাকে মাথায় পানি দিয়ে, চোখে মুখে পানি দিয়ে বসায় কিন্তু একটু পরেই সবাই দেখে কাঠের ডিজাইন টা একটু নষ্ট হয়ে গেছে।
এই কারণে এখন সম্পুর্ন ডিজাইন টা একটু বদলাতে হবে।
সেই কারণে মালিক একটু গরম হয়। কিন্তু এরপর আবার ঠিক হয়ে যায়,
এবং
বলে আজকে আর কাজ করতে হবে না, আজকে যেন চলে যায়।
রমিজ মিয়া না পেরে টাকার কথা কিছু বলেনি,কারণ সে অনেক টাকার একটা দরজা নষ্ট করে ফেলেছে।
সেই কারণে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বাড়ি চলে আসে। যখন রমিজ মিয়া বাসায় আসে তখন জুলেখা বানু বাসায় ছিল না। কারণ ভরদুপুরে জুলেখা বানর মানুষের ঘরে কাজ থাকে। সেই সব কাজ মিটিয়ে আসতে আসতে অনেকটা বিকাল হয়ে যায়। তখন ছোট ছেলে ইসমাইল পড়াশোনা করছিল ঘরে বসেইম বাবাকে দেখেই তাড়াতাড়ি জিজ্ঞেস করে এত তাড়াতাড়ি বাসায় আসলো কেন।কারণ রমিজ মিয়া সচরাচর এতো জলদি বাড়ি ফিরে না,
এবং
বাজার করা ছাড়াও বাড়ি ফিরেনা।

রমিজ মিয়া নড়বড়ে ভাঙ্গা বিছানায় হেলান দিতে দিতে ইসমাইল কে বলে,
-বাপজান শরীরটা আজকে ভালা নাই। তাই আইসা পরলাম।
-ইসমাইল উত্তেজিত হয়ে কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই রমিজ মিয়া বলে তেমন কিছু না, তুমি পড়ালেহা কর।

রমিজ মিয়া ছেলেকে আজকের ঘটনার কিছুই বলেনি। কারণ ছেলে রমিজ মিয়ার মনে হয়েছে কিছু বললে এখন পড়াশোনা থেকে মন উঠিয়ে খামোখাই বাপকে নিয়ে চিন্তা করবে।

বিকেলের দিকে জুলেখা বানু বাড়ি ঢুকলো।ঢুকে কাপড় চোপড় কিছু ধুয়ে, নিজে একটু চোখে মুখে পানি দিয়ে রমিজ মিয়ার পাশে এসে বসলো।ছোট ছেলের মতো একই প্রশ্ন করলো এবং রমিজ মিয়াও ইসমাইল কে যা বলেছে তা ই জুলেখা বানুকে ও বললো।

রমিজ মিয়া খেয়াল করলো জুলেখা বানু একটু মন মরা হয়ে আছে।রমিজ মিয়া জুলেখা বানুকে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে, কেনো মন খারাপ?

জুলেখা বানু বলল..............

{চলবে}

সকলকে জানাই আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।
নিজেদের মূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমার পাশে থাকবেন।

Sort:  
 2 years ago 

আপনার গল্পটা খুবই ভালো লাগলো পড়ে। রমিজ মিয়া এবং জুলেখা বানু অনেক কষ্ট করে পরিশ্রম করে আর তাদের দুই ছেলেকে পড়ালেখা করায়। রমিজ মিয়া একটু অসুস্থ হওয়াতে কাজে থেকে বাড়ীতে চলে আসলো কিন্তু জুলেখা বানুর মন খারাপের কথা জানা হলো না। এটা জানার জন্য অপেক্ষায় রইলাম আপনার পরবর্তী পর্বের জন্য। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি এত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 59367.33
ETH 3172.01
USDT 1.00
SBD 2.43