লিখাটা - অন্যের ভালোলাগাকে সম্মান জানানোর।|| 10% Beneficiaries @shy-fox ||
প্রথমেই সবাইকে জানাই সালাম,আদাব। সৃষ্টিকর্তার রহমতে আশা করছি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকলেই ভালো এবং সুস্থ আছি।
❤️ সবার জন্য অবিরাম ভালোবাসা ❤️
আজকে আমি হাজির হয়েছি একটি লিখা নিয়ে। লিখতে ভালা লাগোটা আমার বহুদিন এর। কেও যদি জিজ্ঞেস করে তোমার লিখার কারণ কি? তাহলে আমার একটাই উত্তর আসবে তা হলো জানিনা।
তাহলে আজকের লিখাটা শুরু করি। আজকের লিখার বিষয় হলো -"অন্যের ভালোলাগাকে সম্মান"।
অন্যের ভালোলাগাকে সম্মান
অন্যের ভালোলাগাকে সম্মান ব্যাপারটা খুব সামান্য মনে হচ্ছে। তাই কি?
একদম ঠিকই ভাবছেন অন্যের ভালোলাগা কে সম্মান করার ব্যাপারটা নিছক সামান্য একেবারে বলাই চলে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমরা এই সামান্য ব্যাপারগুলোকে সব সময় নজরে আনিনা।এই নজরে না আনার ব্যাপারটাই খুব বড় হয়ে দাঁড়ায় আমাদের জন্য।
যেমন, আমি একটা উদাহরণ দি।
ধরেন,
আমার একটি নীল শার্ট খুব পছন্দ হয়েছে কিন্তু অন্যের সেই শার্টটা একেবারেই পছন্দ নয়। তখন তার পছন্দ না হতেই পারে! কিন্তু ধরেন তার পছন্দ নয় বলেই সে আমাকে একটি টিটকারি মূলক কথা অথবা ওইভাবে খারাপভাবে একটা কথা বললো তখন আমার কেমন লাগবে?
ওই জায়গাতে আমাকে ভাবতে হবে না। আপনি ওই জায়গাতে নিজেকে ভাবুন। আপনার ঐ শার্টটা খুব বেশি পছন্দ হয়েছে। আপনার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগছে শার্টটা। আপনার মনে হচ্ছে শার্টটা পরলে আপনাকে অনেক বেশি সুন্দর মানাবে। কিন্তু আপনার সামনেই অন্যজন আপনাকে টিটকারী করে বলছে, "শার্টটা একেবারেই সুন্দর নেই, কালার টাও খুব বিশ্রী দেখতে, কেমন যেনো লাগছে"। তখন আপনার কি মন খারাপ হয়ে যাবে না?
উপরের এই কথা কেও বললে কেমন লাগবে?
সত্যি করে চিন্তা করে দেখুন তো, আপনার কি একটু হলেও খারাপ লাগবে না?
এই যে আমার আজকের লেখার ব্যাপারটা ঠিক এখানেই। অন্যের পছন্দ এবং আমার পছন্দ আলাদা হতেই পারে এবং এটা একেবারেই স্বাভাবিক।
সৃষ্টিকর্তা আমাদের আলাদা আলাদাভাবে চিন্তা করার জন্য মস্তিষ্ক দিয়েছেন। আমাদের পছন্দ সৃষ্টিকর্তা আলাদা আলাদা করে দিয়েছেন। হতে পারে আমার কিংবা আপনার পছন্দ কখনো মিলবে আবার কখনো নাও মিলতে পারে।
সৃষ্টিকর্তা যদি আমাদের সকলের চিন্তা ভাবনা এবং পছন্দকে একই রকম করে বানাতো। তাহলে কি আমরা কখনো আলাদা আলাদা জিনিস অথবা আলাদা রকমের কোন কিছু ব্যবহার করতাম? পৃথিবীর সকলেই তো তাহলে আমার পছন্দের অথবা আপনার পছন্দের জিনিস ব্যবহার করতো।
আমরা নিজেদের পছন্দকে খুব বেশি প্রাধান্য দিই কিংবা খুব বেশি সম্মান করি। কিন্তু অন্য জনের পছন্দ কে একেবারেই তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করি আবার মাঝেমধ্যে খুব মজাও নি।
আমার একদিনের কাহিনী আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করি,
একদিন আমরা সবাই ভার্সিটির ক্লাসে বসে আছি আমরা ছেলেমেয়ে সকলেই। এক পাশে একটা মেয়েদের গ্রুপ বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। সেই গ্রুপের আরেকটা মেয়ে তখন ক্লাসে প্রবেশ করলো। ওই মেয়েটির ড্রেস আমার কাছে খুব একটা খারাপ লাগেনি। হ্যাঁ একটু রংচঙে ছিল এইটাই। একেবারে যে দেখতে অনেক বেশি বিশ্রী লাগছে তা না। ওই মেয়েটা ঢোকার পর ওই গ্রুপের অন্য মেয়েরা ওকে নিয়ে অনেক হাসাহাসি এবং ওকে অনেক রকমের টিটকারি মূলক কথা বলা শুরু করলো। ব্যপারগুলো একেবারেই হাসাহাসি করে হচ্ছিল অর্থাৎ তারা শুধুমাত্র মজা করছিলো। এতগুলো স্টুডেন্টের সামনে ওই মেয়েটির অবশ্যই খারাপ লাগছিল যা ওর চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছিল।
হতে পারে ড্রেসটা সে পছন্দ করে কিনেছে এবং তা অন্যদের চোখে ভালো লাগছে না। আমরা কখনো এটা ভাবি না যে আমার পছন্দ তো অন্যের কাছে ঠিক ততটাই অপছন্দের লাগতে পারে যতটা আমাদের অপছন্দ হয়। তাহলে আমরা মানুষকে একটা কথা বলার সময় কেন সম্মান করে কথাটা বলতে পারিনা অথবা মানুষের পছন্দ টাকে কেন আমরা সম্মান করতে পারিনা?
তার একটি মাত্র কারণ হচ্ছে আমরা নিজের পছন্দ, নিজের ভালোলাগা, নিজের সম্মান সবটাই খুব ভালো বুঝি!!
কিন্তু অন্যের ভালোলাগা, অন্যের সম্মানটা কখনোই বুঝতে পারি না!
এবং
অন্যকে যে একটা কথা বলছি সেই কথাটা যদি অন্য কেউ আমাদেরকে বলে তাহলে আমাদের কেমন লাগবে তা আমরা কোনদিনও ভাবি না। এই কথাটা যদি আমরা কোনদিন ভাবতাম তাহলে অবশ্যই আমরা নিজের থেকেই অন্যের ভালোলাগা কে সম্মান করতে শিখতাম।
অন্যরা যদি আমাদের ভালোলাগা নিয়ে কোন কথা বলে। তাহলে আমরা তাকে অনেক গুলো কথা শুনিয়ে দি অথবা তাকে কোনো না কোনো ভাবে কথা শুনাতে কোনোদিন ও পিছপা হই না। ওই জিনিসটা আমার কেন পছন্দের তার বৃত্তান্ত আমরা শুনিয়ে দি।
এই ব্যাপারগুলো আমাদের সমাজকে দিনদিন নষ্ট করে দিচ্ছে। অন্যের প্রতি সম্মান করাটাকে ও কমিয়ে দিচ্ছে। এই ব্যপারগুলো তখনই ঠিক হবে,
যখন আমরা নিজের ভালোলাগাকে যতটা সম্মান করতে পারবো। অন্যের ভালোলাগা কে ও ঠিক ততটাই সম্মান করতে পারবো।
আমরা যদি একে অপরের ভাল লাগা কে সম্মান করতে শিখি এবং সম্মান করি। তাহলে দেখবো আমরা একে অপরের অনেক কাছে চলে আসছি এবং আমরা একে অপরকে বুঝতে পারছি,আমরা একে অপরকে ভরসা করতে পারছি। এতে করে আমাদের সমাজটা অনেক বেশি সুন্দর হয়ে উঠবে।
প্রত্যেকটা পরিবর্তনই নিজ থেকে করা উচিত। তাই জন্য চলুন আমরা অন্যকে সম্মান করি এবং অন্যের ভালোলাগাকে সম্মান করতে শিখি।
আশা করি আমার আজকের লেখা আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। আমার লিখা থেকে কেও যদি একটুও কোনো ভালো লাগা পায় অথবা, ভালো কোনো শিক্ষা পায়। তাহলে আমার লিখাটা স্বার্থক।
সকলকে জানাই আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।আমি কোনো ভুল করলে মার্জনা করবেন, ভুল ধরিয়ে দিবেন।
নিজেদের মূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমার পাশে থাকবেন।
ধন্যবাদান্তে, @sahadathossen
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভিন্ন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন জিনিসের ওপর ভালো লাগা কাজ করে। অন্যের ভালোলাগার গুলোকে অবহেলা না করে, আমাদের উচিত সবার ভালোলাগার বিষয়গুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। খুব সুন্দর একটি বিষয় ফুটিয়ে তুলেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
আমরা যেহেতু প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্ন মানুষ তাই আমাদের সবার রুচিও একে অপরের থেকে ভিন্ন। আমাদের সবার উচিত সবার পছন্দকে সম্মান করা। ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর লিখেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ভাই অনেক চমৎকার একটা পোস্ট শেয়ার করেছেন।আসলে আমরা ভিন্ন ভিন্ন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন রুচি আছে।আমার রুচি যেমন আমার কাছে ভালো লাগে।তেমনি অন্যর রুচি অন্যর কাছে প্রিয়।তাই আমরা নিজের রুচি গুলোর সাথে সাথে অন্যর রুচি সম্মান দেখানে আমাদের কতব্য।আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই। শুভ কামনা রইল।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর আপনার মূল্যবান মন্তব্য করার জন্য।
You have been upvoted by @abuahmad, a Country Representative of Bangladesh. We are voting with the Steemit Community Curator @steemcurator07 account to support the quality contents on steemit.
Follow @steemitblog for all the latest update and
Keep creating qualityful contents on Steemit!