মানুষ হবো কবে?|| 10% Beneficiaries @shy-fox ||
প্রথমেই সবাইকে জানাই সালাম,আদাব। সৃষ্টিকর্তার রহমতে আশা করছি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকলেই ভালো এবং সুস্থ আছি।
❤️ সবার জন্য অবিরাম ভালোবাসা ❤️
আজকে আমি লিখবো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে।কেনো যেনো হুট করে এই বিষয়টি নিয়ে লিখতে ইচ্ছা করছে। কোনো স্পেশাল কারণ নেই বললেই চলে। কিন্তু একটা ঘটনা দেখে লিখতে ইচ্ছা করতেছে তাই ই লিখা। ঘটনাটা খুবই সামান্য তবে সেটা নিয়ে ভাবতে গেলে একদম অসামান্য!
মানুষ হবো কবে?
এটা আমি তৈরি করেছি কেনভা এবং স্পেপসিড এপস দিয়ে ।
আমাদের জীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আমি মনে করি মানুষের মতো মানুষ হওয়াটাই। আমরা সকলেই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে স্কুল, কলেজের গন্ডি পার হয়ে যাই ঠিকই। যার ইচ্ছা সে উচ্চ শিক্ষায় হাত বাড়ায়, যার ইচ্ছা যা সে তাই করে। কিন্তু ব্যাপার একদম ই সেটা নয়।
তাহলে ব্যাপারটা কী?
ব্যাপারটা হচ্ছে আজকের একটা ঘটনা দেখলাম। তা হলো,
আমাদের দাদার পোস্ট ই একজন কপি করেছে। ব্যাপারটা তখন পর্যন্ত ও আমার কাছে স্বাভাবিক লেগেছে কারণ এই প্লাটফর্মে তো অনেক আগে থেকেই সেজন্য এসব দেখতে দেখতে এখন আর এসবকে খুব একটা অবাক করার মতো বিষয় লাগে না । তবে টনক নড়লো হাফিজ ভাই এর কথা শুনেই। কথাটা ছিলো,
ওই ইউজারটি দাদার পোস্ট ই কেনো কপি করলো?
সে চাইলে তো জেনারেল কারো পোস্ট কপি করতে পারতো!
তখন ই আমার মাথার মধ্যে চিন্তার ছাপ পরলো।
আমরা আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে সবাই কাজ করছি। তার বিনিময়ে দাদা আমাদের সাপোর্ট দিচ্ছেন,ভরসা দিচ্ছেন, ভালোবাসা দিচ্ছেন।
দাদা আমাদের মতো ইউজার নয়, দাদা কিন্তু ভালো মাপের ই একজন জনপ্রিয় মানুষ এই প্লাটফর্মে। অর্থাৎ দাদার পোস্ট কপি করলেই সে ধরা খাবেই খাবে। তাও কেনো এই কাজ করলো?
ব্যাপারটা আমি মনে করি একদম পরিষ্কার!
কারণ দাদাকে উত্তেজিত করতে চেয়েছে সে!
আমাদের দাদা আমাদের যেভাবে সাপোর্ট করে যাচ্ছে তা আমি মনে করি অনেকেরই ঠিক হজম হচ্ছেনা।
এই প্লাটফর্মের মাঝের একটা সময় দেখেছি তখন শুধু অনেকেই চিন্তা করতো কি করে নিজে খেতে পারবো,কি করে নিজে পকেট ভরবো, কি করে নিজের আত্বীয়-স্বজন কে ঢুকাবো এসব ই। কিন্তু দাদাই একমাত্র এই প্লাটফর্মে এমন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে যা আর কেও তেমন একটা পারেনি বললেই চলে।
আমি বাড়িয়ে চাড়িয়ে মোটেও বলছিনা। তার প্রমাণ ও এখন ই দিচ্ছি।
আপনারা খেয়াল করে দেখেন তো আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে বাংলাদেশী এবং ইন্ডিয়ানদের মধ্যে কাদের সংখ্যা বেশি?
বাংলাদেশীদের ই তো তাইনা?
কিন্তু দাদার বাড়ি কোথায়?
সবাই জানি আমরা তা!
দাদার কজন আত্বীয়-স্বজন কাজ না করেই বা দু লাইন লিখেই পোস্ট করছে?
কেও করছে?
কেও না।
কারণ দাদার মধ্যে কাজের জায়গায় স্বজন প্রীতি নেই।
সব দিক দিয়ে যখন অনেকে দেখছে দাদার উন্নতি,দাদার কারণে অনেকের উন্নতি তখন কিছু সংখ্যক মানুষের তা আর কোনোভাবেই হজম হচ্ছেনা।
এখন তারা তাই উঠে পরে লেগেছে দাদার কমিউনিটির নাম খারাপ করতে । কপি পেস্ট মানেই বড় ধরণের চুরি আর চুরির কারণে তারা কমিউনিটির নাম খারাপ করবে।
কিন্তু তারা তো জানেই না যে এই ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। কোনো ভাবেই পার পাবে না আর তার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা দাদা আমাদের সকলের সামনেই নিয়ে নিয়েছে।
এই ব্যাপারটা থেকে হুট করে মাথায় আসলো আমরা কি আসলেই মানুষ হতে পারলাম?
যে আমাদের জন্য এতো করছেন, এতো সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে তাকে বিরক্ত করতে আমরা কতো আয়োজন করছি!
নিজেদের বিবেকের সামনে এসব করে কি দাঁড়াতে পারবো আমরা?
নাকি বিবেকটাও আমাদের ঘুণে ধরা!
আমি ভাবছি আমরা আসলে কতটুকু মানুষ হলে একজন বড় মনের মানুষকে বিরক্ত করছি তাও আবার এই মানুষটাই আমার জন্য কত বেশি করছেন!অনেকের রুটি রুজির ব্যবস্থা করছেন।
আর আমরা তাকে কি দিচ্ছি?
বিরক্ত, উত্তেজিত করা, মেজাজ খারাপ করা।
কিছুই বাদ দিচ্ছি না আমরা একদম।
আমাদের বিবেকটা কি মৃত?
নাকি ঘুমিয়ে আছে?
মাঝেমধ্যে এটা ভেবেই খারাপ লাগে যে, আমরা যেই থালায় খাই সেই থালাতেই ফুটো করতে মরিয়া হয়ে আছি।
মানুষ আর হইনি আমরা। হয়তো চাইছিইনা মানুষ হতে তা নাহলে এই কাজ গুলো কেনো হবে?
এতোগুলো মানুষ স্বচ্ছল ভাবে চলতে পারছে তাও আমাদের বাংলার মানুষ তা দেখে তো মানুষের খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু তার বদলে আমাদের মনে হিংসার জন্ম নিচ্ছে। কিন্তু কিসের এতো হিংসা, কিসের এতো সমস্যা?
একজন প্রকৃত মানুষের কাজ কখনোই এসব হবে না।প্রকৃত মানুষ সে ই যে অন্য মানুষকে সম্মান করতে পারবে, যে অন্যের কষ্ট বুঝবে, সে সঠিক পথে চলবে, যে অন্য মানুষের ক্ষতি করবেনা আর যে সত্যিকারের মানুষ।
আমরা সবাই বিদ্যে পেটে নিয়েছি, বুদ্ধি মাথায় নিয়েছি কিন্তু অনেকেই মানুষ হওয়া শিখিনি। আমরা শিখেছি কি করে অন্যের ক্ষতি করা যায়, কি করে অন্যকে বিরক্ত করা যায়, কি করে অন্যের সম্মানহানী করা যায়।
আমরা অনেকেই এটা বুঝি না যে অন্যের ক্ষতি করতে গিয়েই নিজেরই ক্ষতি হয় তার প্রমাণ হলো আজকের দাদার ডাউনভোট।
সে ঠিকই দাদাকে বিরক্ত করতে সক্ষম হয়েছে, দাদাকে উত্তেজিত করতে সক্ষম হয়েছে কিন্তু তার কোনো ভালো কি হয়েছে?
হয় নি।
আমরা সেদিন ই মানুষ হয়ে পারবো যেদিন অন্যের সুখে আমাদের মন জ্বলবে না, অন্যের সুখে আমিও সুখী হতে পারবো,যেদিন অন্যকে সাহায্য করার মতো মন তৈরি করতে পারবো।
আমার বাবা সবসময় আমাকে একটা কথা বলে।
বলে,
বড়লোক হইতে হবে না
মানুষের মতো মানুষ হ।
কিন্তু আমাদের চারপাশে মানুষ খুব কম দেখি।
শুভ ভাই এর বন্ধুর এক কথা মনে পরলো এখন।ওইযে ভাইয়ের এক বন্ধু বলেছিলো, " আমি তো আর মানুষ দেখিনা রে "।
আমরা মানুষ,আমাদের ভুল ত্রুটি থাকবেই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমরা ভুল করতে করতে অমানুষের খাতায় নাম লিখাবো।
আমাদের মানুষ হওয়া দরকার।
খুব বেশি দরকার।
মনের অজান্তেই অনেক কিছু লিখে ফেললাম।কোনো ভুল হলে মাফ করবেন।
সকলকে জানাই আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ।
নিজেদের মূল্যবান কমেন্টের মাধ্যমে আমার পাশে থাকবেন।
আমি শাহাদাত হোসেন। আমি একজন বাঙ্গালী এবং নিজেকে এভাবে পরিচয় দিতেই আমি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ছি। আমার শখ ঘুরাঘুরি করা, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া, ভ্রমণ,মুভি দেখা, খাওয়া দাওয়া নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট এসব ই। আমি নিজেকে সবসময় স্বচ্ছ ভাবে সবার সামনে তুলে ধরতেই পছন্দ করি। এবং কোনো ভুল করলে ক্ষমা চাইতে কখনোই দ্বিধাবোধ করিনা। আমি চাই নতুনের সাথে পরিচিত হবো,শিখবো,একসাথে চলবো। আশা করি আপনাদের ভালো কিছু উপহার দিবো।
ধন্যবাদান্তে, @sahadathossen
ঘটনা না টি জেনে আমি হতভম্ব হলাম এবং কষ্ট পেলাম৷ মানুষের বিবেক বুদ্ধি সত্যি মরে গেছে ভাইয়া। কেউ কারো উন্নতি সহ্য করতে পারে না তাই এমন কাজ করে চলছে৷ আমি নির্বাক।
হ্যা উন্নতি নিতে পারেনা।
খুবই প্রসাগিংক পোস্ট লিখেছেন।খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখেছেন।আর মনে হয় পোস্ট টি অন্তত সবার একবার করে পড়া উচিত আর এই বিষয় গুলও জেনে খুবই মর্মাহত হলাম।
জ্বি ভাই লিখতে ইচ্ছা হইলো।
আসলে আমাদের সমাজে দুই ধরনের লোক বাস করে।এক ধরনের লোক আছে যারা কখনও কারো ভালো চায় না। অন্যের সফলতা দেখে জেলাস ফিল করে। আসলে তাদের মনুষ্যত্ববোধ থাকা উচিৎ। সুন্দর পোস্ট করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভালো না চাওয়া মানুষ গুলার ই ভালো হয়না।
সত্যি আপনার এ ঘটনাটি পড়ে আমি মর্মাহত। প্রতিটি মানুষের কতটা বুদ্ধি-বিবেক আছে আমি জানিনা। আমি মনে করি সবারই যতটুক বুদ্ধি জ্ঞান আছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার করে চলা।
আমাদের বুদ্ধি বিবেক দিন দিন লোপ পাচ্ছে এটাই এসবের বড় কারণ। বুদ্ধির খারাপ ব্যবহার এর বদলে ভালো ব্যবহার ই কাম্য।
আমাদের অনেকের মাঝে ন্যূনতম কৃতজ্ঞতাবোধ ও কাজ করে না। আর সেজন্যই হয়তো আমাদের অধঃপতন। এগুলো নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মারা ছাড়া আর কিছুই না। দাদা তার নিজের অবস্থানে সর্বদা অনর, এবং ন্যায় নীতিতে বিন্দুমাত্র ছাড় দেন না। আর সেজন্যই আমার বাংলাব্লগের আজ চারদিকে জয়জয়কার। ভালো লাগলো আপনি এ ব্যাপারে নিজের মত করে সাজিয়ে লিখেছেন।
ঠিক বুঝেছেন, কৃতজ্ঞতা বোধ নেই বলাটাই শ্রেয়।