প্রসঙ্গঃ ব্যস্তময় একটি বিকেলের গল্প // আমার বাংলা ব্লগ // [ ১৯ আগষ্ট ২০২১ ] ১০ % to @shy-fox
৪ঠা ভাদ্র ১৪২৮
প্রসঙ্গঃ ব্যস্তময় একটি বিকেলের গল্প!
আমাদের এই সমাজে প্রায় প্রতিটি মানুষ ব্যস্ত জীবন কাটায়। তেমনি আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আমার জীবনেও ব্যস্ততা লেগেই আছে। সবাই বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। বেকার ছেলেটাও চাকুরি খুঁজতে ব্যস্ত। চাকুরিজীবি ছেলেটা তার অফিসের কাজে ব্যস্ত। গেমার ছেলেটাও গেম খেলতে ব্যস্ত। আর যারা নেশা করে তারা তো নেশায় ব্যস্ত। আসলে এই সমাজে ফ্রি বলতে কেউ নেই। কেউ চিন্তা করতে ব্যস্ত, তো কেউ গল্প করতে ব্যস্ত। শত ব্যস্ততার মাঝে থাকলে ডিপ্রেশন নামক শব্দটা জীবনের সাথে কিঞ্চিৎ পরিমাণ আসতে পারবে না। ব্যস্ততা মানুষকে সকল দুচিন্তা থেকে দূরে রাখে।
আজকের বিকেলটা আমার জন্যে প্রচুর ব্যস্ততম একটি দিন ছিলো। কেননা, কলেজ বন্ধ থাকাকালীন সময়ে হাতে কাজ বলতে কিছুই নেই। খাওয়া দাওয়া করা, ঘুমানো আর স্টিমিটকে সময় দেওয়া। কিন্তু গতকয়েক দিন থেকে আম্মু ডেন্টাল প্রব্লেমে ভুগতেছিলেন। গত সপ্তাহেও ওনাকে নিয়ে ডেন্টিস্টের কাছে নিয়ে গেছিলাম। আজকে ২য় সপ্তাহে ওনার দ্বিতীয় চেকাপের তারিখ ছিলো। তাই আজকে সেখানে আম্মুর সাথে আমার যাওয়ার কথা। আজকে সারা দিন যাবত মুশলধাঁরে বৃষ্টির কারণে যেতে পারি নি। তাই সকাল আর দুপুরটি কাটে কাজহীন ভাবেই। বিকেলের দিকে একটু আকাশ পরিস্কার হয়ে আসলে আম্মুকে নিয়ে বাইকে করে ডেন্টাল চেম্বারে যাই।
তাই এই সময়টুকুতে আম্মু পাশের দোকানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো, আর আমি ফোন নিয়ে বসে ঘুতাঘুতি করছিলাম। একটা সময় আম্মুও এসে বসে বসলো। ওনার হাতে দেখলাম একটি ফ্রাইং পান, যেটা আমার জন্যে কিনেছে। আমি যেনো সেটা নিয়ে মেসে যাই তাই। এভাবে বসে বসে প্রায় ১ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেলে এক পর্যায়ে ডাক্তার সাহেব চলে আসেন। আমরা এর আগেও আসছিলাম বিধায়, উনি আমাদের এক দেখাতেই চিনেছেন। আর অপেক্ষামান লিস্টে কেউ না থাকায়, আমরাই প্রথম পেশেন্ট। আম্মুর সাথে আমিও ভিতরে গেলাম।
এতে করে আম্মুর মনে একটু হলেও সাহস থাকবে। অপারেশন বা এই রকম সেনসিটিভ বিষয়গুলোতে মানুষ তার প্রিয়জনকেই কাছে আশা করে। আমি পাশে বসে বসে সেসব বিষয় দেখতেছিলাম। আবার কখনো বা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। মাঝে মাঝে তো আমি কিছু শেখার ও চেষ্টা করছিলাম। এটা কিভাবে করলো, ওটা কিভাবে করলো এসব বুঝতেছিলাম। যদিও বা এসব কিছু আমার মাথার উপর দিয়ে গেছে।
প্রায় ১৫-২০ মিনিট স্কিলিং ও দন্ত ওয়াশ করার পর ডাক্তার সাহেব নতুন করে প্রেসক্রিপশন করে দিলেন। আর ওষুধগুলো যথাসময়ে খাওয়ার কথাও বললেন। আবার পরবর্তী চেক আপের জন্য তিনি নতুন একটি তারিখ লিখে দিলেন। সবকিছু করার পর বাহিরে এসে আম্মু, প্রেস্ক্রিপশনে দেওয়া সকল ওষুধগুলো নিলেন। আম্মু একদিকে ওষুধ নেওয়ায় ব্যস্ত তো আমি অন্য দিকে প্রকৃতির রুপ দেখতে ব্যস্ত। এই দিন বিকেলে বৃষ্টির পরের আকাশটি যেনো হাস্যজ্জ্বল দেখাচ্ছিলো।
আমরা সেখান থেকে চলে আসি। পথিমধ্যে আকাশে খুব সুন্দর রংধনু উঠেছিলো। তাও আবার একটি নয় দুটি রংধনু। বাইকে থাকার কারণে সেসবের ছবি তুলে নেওয়ার সুযোগ হয় নি। তবে সৌন্দর্যটি উপভোগ করতে ভুলি নি। বাসায় আসতে আসতে আমাদের সন্ধ্যা ৬টা বেজে যায়।
বাসায় এসে আবার আব্বুকে নিয়ে আমাদের গ্রামের বাজারে যাই। আব্বু নফল রোযা ছিলো আজকে, তাই ওনার জন্যে ইফতারী আনার জন্য ওনার সাথে যাই। যাওয়ার সময় ঝিড়িঝিড়ি বৃষ্টি যেনো বাপ-ছেলেকে মহানন্দে ভিজিয়ে দিলো। সবকিছু করে বাসায় আব্বুকে নামিয়ে দিয়ে আবার ভাইয়ের কাছে যাই, আমাদের দোকানে। আর এভাবেই আমার পুরো বিকেল আর সন্ধ্যাটি আনন্দের সাথে ও ব্যস্তময় হয়ে উঠে। আসলে এই রকম সময় উপভোগ করা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।
আশা করি, আমার এই ব্লগটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আমার সম্পর্কে কিছু কথাঃ-
আমি মোঃ আবু হেনা সরকার। আর আমার ডাক নাম সাগর। আমি একজন স্বাধীন চেতনাময়ী ছেলে। যেসব সবসময় স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দেই। আমি লিখতে, পড়তে, ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি, বিশ্লেষন এবং কোনো অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতে ভিশন আগ্রহী ও ভালোবাসি। আমি একজন মিশুক ছেলে। সবার সাথে মিশতে আমার অনেক ভালো লাগে।
ব্যস্তময় বিকালের গল্পটা অনেক ভালো লাগলো।আপনার আম্মু যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায় সেই দোয়া করি।ধন্যবাদ ভাই।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
জীবন মানেই ব্যস্ততা ।খুব ভালো লাগলো ভাই। আপনার ব্যস্ত জীবন ভাগ করে নেবার জন্য।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
আপনার বিকালটা যদিও ব্যস্ততম ছিল। কিন্তু ব্যস্ততার মাঝেও সময়টা বেশ সুন্দর কেটেছে। সুন্দর ছিল আপনার আজকের পোষ্টটা। শুভ কামনা রইল আপনার জন্য।
সুন্দর মন্তব্য করার জন্যে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!
আমার দাতে ও একটু সমস্যা ছিল যখন আমি প্রথমবার দাঁতের ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। তখন প্রচন্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আমার আম্মু আমাকে সাহস দিয়েছিল তবে দাঁতের ব্যথা সহ্য করা যায় না। আপনি খুব সুন্দর ভাবে মার্ক ডাউন ব্যবহার করে পোস্টটি করেছেন যা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।♥
হুম ভাই!
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ!
অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছনে আপনি ।আপনার সারাদিনের এই ব্যস্ত মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করে নেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ।।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই🥰🥳
আপনার ব্যস্ততম বিকেলের গল্পটা অসাধারণ হয়েছে। আমার অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ও শুভকামনা আপনার জন্য♥
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 🥳🥰
মহরমের জন্য প্রায় সবাই রোজা রাখছে। খুব সুন্দর পোস্ট। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
হ্যাঁ ভাই!
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ
ব্যস্তময় বিকেলের গল্পটি বেশ ভালো।আপনার মায়ের সুস্থতা কামনা করি।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপু, দোয়া করবেন আম্মু যেনো তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়।
আপনার ছবি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে
ধন্যবাদ ভাই