প্রসঙ্গঃ "উড়ছে ধোঁয়া, পুড়ছে দেশ!" || আমার বাংলা ব্লগ || ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য ||
৩০ই অগ্রায়ন, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
প্রসঙ্গঃ "উড়ছে ধোঁয়া, পুড়ছে দেশ!" |
---|
টাইটেল ও থ্যাম্বনেইল দেখে হয়তো আপনারা বুঝে গেছে আজকে কি নিয়ে কথা বলবো। দিন যত যাচ্ছে আমাদের দেশে কালো ধোঁয়ার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। যেদিকেই তাকান না কেন দেখবেন শুধু কালো ধোঁয়াই বের হচ্ছে। এই কালো ধোঁয়ার সাথে মিশ্রিত অবস্থায় রয়েছে বিভিন্ন ধরণের বিষাক্ত পদার্থ। যার মধ্যে কার্বণ ডাই অক্সাইডের পরিমাণ অত্যাধিক। কার্বণ ডাই অক্সাইডের এই অধিক পরিমাণের কারণে দিন দিন ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছে ওজন স্থর। যার কারণে সূর্যের তাপমাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই তাপমাত্রার কারণে গলে যাচ্ছে কঠিন সব বরফ খন্ড। ভূমি থেকে বেড়ে যাচ্ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা। অতিবৃষ্টি, অতিখড়া, সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড়সহ দেখা মিলছে অনেক ধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগের। এর কিছু ঘটনার সূত্রপাত যেভাবেই হয় তার কিছু খন্ড আলোকপাত আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
|
---|
ইট ভাটা এমন একটি স্থান যেটা পরিচালিত করতে অধিক পরিমাণে জনবল ও কাঠ-কয়লার প্রয়োজন হয়। জনবল ও কাঠ-কয়লার উপর ভিত্তি করে এই সেক্টরের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আজকে আলোচনা করবো। এই ইট-ভাটার উপকারিতার থেকে অপকারিতা অনেক বেশি। যদিওবা প্রত্যক্ষভাবে খেয়াল করলে উপকারিতাই চোখে লক্ষ্য পড়বে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদী কথা চিন্তা করলে দেখা যাবে এর উপকারিতার থেকে অপকারিতার পাল্লা ভারী হয়ে যাবে।
|
---|
উপকারিতার কথা উল্লেখ করতে হলে শুধুমাত্র একটি কথাই মাথায় ঘুরে, সেটি হচ্ছে এখানে অধিক লোকের কর্মসংস্থান গড়ে উঠেছে। বেকারত্ব দূর হচ্ছে। গরিবরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠতেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এর বাহিরে আমি এর কোনোই উপকারিতা দেখতে পারছি না। ওহ হ্যাঁ, আরেকটি উপকারিতা হচ্ছে গাঁয়ের কাছে ইট থাকায় নগরায়ন তাড়াতাড়ি গড়ে উঠতেছে। অল্প দামে ইট পাওয়া যাচ্ছে। এসবই।
গরীব দুঃখীরা তাদের কর্মসংস্থান এর মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেছে। যার কারণে কোনো বেকার আজকে বসে থাকে না। এখানে কাজ করার মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে অধিক আয় করার সুযোগ থাকে বিধায় অনেক দূরদূরান্ত থেকেও অনেক শ্রমিক এখানে এসে কাজ করে। বেকারত্ব দূর হওয়ার ফলে চুরি,ডাকাতি, রাহজানি, ছিনতাই, পকেট-মার ইত্যাদি নেই বললেই চলে।
ইট-ভাটার সিজন প্রায় ৬ মাসের মতো হয়, এই ৬ মাসে অত্র এলাকা একটি আনন্দমুখর পরিবেশ হয়। যদিওবা এসব কিছু শুধুমাত্র অস্থায়ী সময়ের জন্য। এর কারণটি আমি উল্লেখ করবো। সর্বোপরি বলতে চাই, ইট-ভাটার কারণে অত্র এলাকার কর্মসংস্থান গড়ে উঠেছে, অভাবের কারণে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া বিবাদ কমে গেছে ইত্যাদি।
|
---|
এবার আসি অপকারিতার সংজ্ঞার কাছে। আমি প্রথমেই বলেছেই ইট-ভাটার উপকারিতা শুধুমাত্র ক্ষণ-স্থায়ী। এর উপকারিতার থেকে অপকারিতার পরিমাণ অত্যাধিক। শুরুতেই হচ্ছে, এটি পরিচালনার জন্য অধিক পরিমাণে কাঠ-কায়লার প্রয়োজন হয়। যখন অধিক মাত্রায় কাঠ-কায়লা জ্বালানো হয়, তখন এর থেকে নির্গত ধোঁয়ার সাথে যে গ্যাস নিঃসারণ হয়, সেখানে কার্বণ ডাই অক্সাইডের পরিমাণ অত্যাধিক। এই কার্বণ ডাই অক্সাইডের কারণে অত্র এলাকার তাপমাত্রা তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি পায়। এর সাথে বিনষ্ট হয়ে যায় ওজন স্তরের শক্তিমত্তা। ইট-ভাটায় যেহেতু ইট বানানো হয়, সেহেতু এর জন্য অত্যাধিক মাত্রায় মাটির প্রয়োজন পড়ে। এত মাটি কই থেকে আসে জানেন? হ্যাঁ, উচু উঁচু জমি থেকে। যখন একটি এলাকায় কয়েক দশক পর্যন্ত এই ইটভাটা চলতে থাকে সেখান কার উঁচু জমি বলতে আর কিছুই থাকে না। এর উচ্চতা এতটাই কমে যায় যে, অল্প বৃষ্টিতে বন্যার সৃষ্টি হয়।
যার কারণে ক্ষতির মুখে পড়ে ফসলি জমি। ফসলি জমির কথা বলতে গিয়ে মনে পড়লো আরেকটি কথা, ইটভাটা হতে নির্গত ধোঁয়ার ফলে আশেপাশে গাছপালা, ফসলি জমি থেকে আশানুরূপ ফসল পাওয়া সম্ভব হয় না। এর এক মাত্র কারণ হচ্ছে কালো ধোঁয়ার সাথে নির্গত কার্বণ ডাই অক্সাইড।
এই অধিক মাত্রার ধোঁয়ার কারণে শীতকালে ঘন-কুয়াশার সৃষ্টি হয়। আর এই ধোঁয়ার সাথে ধুলাবালি ও বাতাসের সাথে উড়তে থাকে। ইটভাটায় কাজ করতে আসে ছোট-বড় হরেক রকমের মানুষ। বড় মানুষের শারীরিকভাবে কোনো ক্ষতি না হলেও কম বয়সী ছেলেদের জন্যে এটি দীর্ঘমেয়াদী হুমকিস্বারুপ হতে পারে। এর কারণ হচ্ছে, এই কাজটি হচ্ছে সম্পূর্ণ শক্তিমত্তার কাজ। দেহ বল না থাকলে এই কাজ করা যে কারো পক্ষে করা কঠিন হয়ে যাবে। যখন একজন কম বয়সী যুবক বা ছেলে এই কাজ করতে যাবে, তত ধীরে ধীরে তার মাংসপেশি চিকন হতে থাকবে। একটা সময় এসে সে আর কোনো কাজ করার জন্যে শক্তি পাবে না।
সেজন্য আমার ব্যক্তিগতভাবে একটাই মন্তব্য হচ্ছে, এই ইটভাটা আমাদের সমাজের জন্য যত বড়ই না উপকার করতেছে। তার থেকে ৫গুন ক্ষতি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে যাচ্ছে। |
---|
Camera : Redmi 10 |
---|
Location: https://what3words.com/juxtaposes.monotony.sleek |
---|
আশা করি, আমার এই ব্লগটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
আমার সম্পর্কে কিছু কথাঃ-
আমি মোঃ আবু হেনা সরকার। আর আমার ডাক নাম সাগর। আমি একজন স্বাধীন চেতনাময়ী ছেলে। যে সবসময় স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দেই। আমি লিখতে, পড়তে, ফটোগ্রাফি, ভিডিওগ্রাফি, বিশ্লেষন এবং কোনো অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতে ভীষণ আগ্রহী ও ভালোবাসি। আমি একজন মিশুক ছেলে। সবার সাথে মিশতে আমার অনেক ভালো লাগে।
![sagor bordar.png](
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
https://twitter.com/sagor520028/status/1470806733521965056?s=20
খুব ভালো একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ভাই ♥️
বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের পরিবেশ রক্ষায়।
ইট ভাটাগুলো আমাদের ফসলি জমি খেয়ে ফেলছে।
একটি সময় আমাদের ফসলি জমি আর থাকবেনা।
আর পরিবেশ বেশ বিপদজনক অবস্থায় ধাবিত হচ্ছে।
খুব ভালো উপস্থাপনা ছিল ভাই ♥️
জ্বি ভাই ঠিক কথাই বলেছেন আপনিও,❤️
ভাই আপনি খুবই সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। এটি সত্যি আমাদের দেশ এবং সমাজের জন্য বিপদজনক। ইটের ভাটার কালো ধোঁয়া আমাদের বায়ুদূষণ করছে। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আর আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
প্রতিটি কাজের একটি ভালো ও খারাপ দিক আছে। ঠিক তেমনি ইটের ভাটার ভালো ও খারাপ দিক আছে। আপনি দুইটি দিক অনেক সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
জ্বি আপনি আমার পোস্টটি বুঝতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো।