প্রসঙ্গঃ "শিকড়ের টানে, বাড়ি ফেরা!" || আমার বাংলা ব্লগ || ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য
১০ই অগ্রায়ন, ১৪২৮ বঙ্গাব্দ
প্রসঙ্গ: "শিকড়ের টানে, বাড়ি ফেরা!" |
---|
অনেক দিন হলো বাড়ি থেকে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে হোষ্টেলে এসে ছিলাম। আমি যেখানে ছিলাম যেখানে হোষ্টেল বললে ভুল হবে। সেটি হচ্ছে আমাদের ভাড়া করা বাড়ি। মাত্র ৭ জন আমরা সেখানে থাকি। তো একটানা সেখানে থেকে খুব বিরক্তবোধ হচ্ছিলো। তার উপর এক্সাম চলছিলো। এক কথায় মাথার উপর প্রেশারে ভন ভন করতেছিলো। আজকে আমার শেষ পরীক্ষা ছিলো। পরীক্ষা নিয়ে আজকে বেশ কাহিনী হয়েছে। সেটি কোনো একদিন পোষ্টে উল্লেখ করবো। যেহেতু আজকে আমার পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো। সেহেতু আমি এখন পুরোদমে মুক্তমনা হয়ে গেলাম। তাই হওয়া বদলের জন্যে শিকড়ের খোঁজে চলে আসলাম প্রকৃতি ঘেরা এই সবুজ শ্যামল গ্রামে। যান্ত্রিক জীবনে অতিষ্ঠ হয়ে গেছিলাম। সকল ধকল কেটে উঠাই আজকে বাসায় আসা।
আজকে পরীক্ষা শেষ করেই আমার মনটা আনন্দে নেচে উঠে, আজকে বাসায় যেতে পারবো। গ্রামে সবার সাথে খোলামেলা ভাবে মিশতে পারবো। তাই পরীক্ষা দিয়ে এসেই আমি আমার রুমের সব কিছু গুছিয়ে রেখে, গোসল করে পরিস্কার হয়ে বেড়িয়ে পড়ি শিকড়ের টানে।
আমি বাড়ি ফেরার জন্যে ট্রেন ভ্রমণকেই বেছে নেই সব সময়। কারণ এই ভ্রমণের মাঝে আলাদাই একটা মজা পাওয়া যায়। দেখা হয় হরেক রকমের মানুষের সাথে। যারা কিনা একেক জন একেক কাজের জন্যে ভিন্ন দিকে ছুটে চলেছে। সবার গন্তব্য আলাদা। সবার চাহিদাও আলাদা। এসব কিছু কাছ থেকে দেখার জন্যেই মূলত আমি ট্রেন ভ্রমণকে সব সময় বিবেচনায় রাখি।
তাই আমি আজকে বাসায় ফেরার জন্যে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্যে লাইনে দাড়াই। লাইনটি বেশ বড়ই ছিলো। দিন দিন মানুষ সভ্য হয়ে যাচ্ছে, কেউ আর বিনা টিকিটে ভ্রমন করে না। তার জন্যেই মূলত লাইনটি বেশ বড়ই ছিলো।
যেসময় আমার টিকিট কাটার মুহুর্তটি আসে আমি তখন আমার গন্তব্য স্থলটি ওনাকে বলি আর উনি আমার কথা মতো আমার জন্য টিকেট করে দিচ্ছিলেন। আসলে এই কাজে যিনি থাকেন, তাকে সর্বদা কান খাড়া করে রাখতে হয়। কেননা যাত্রীদের কথা বুঝতে না পারলে পড়তে হবে মহা বিপদে।
অবশেষে আমি আমার কাঙ্খিত টিকেটটি হাতে পেয়ে যাই। এই মুহুর্তটি অনেক মজার ছিলো। কয়েক মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকেট নিয়েছি, তাই মজা তো থাকবেই।
আমি টিকেটটা পকেটে রেখে, ট্রেনের জন্যে অপেক্ষা করতে থাকলাম। বেশ কিছু মিনিট আমি ট্রেনের জন্যে দাঁড়িয়ে থাকি। আসে পাশে থাকি দেখতে থাকি স্টেশনের বেশ উন্নয়ন মূলক কাজ করতেছে আর বিভিন্ন পেশার মানুষ তার গন্তব্যের জন্য ট্রেনের অপেক্ষায় আছে।
বরাবরের মতোই ট্রেনটি যথা সময়ে প্লাটফর্মে এসে হাজির হয় আর আমি আমার সিটে গিয়ে বসি। আর সবার আনাগোনা দেখছিলাম। কেউ সিট খুঁজে পাচ্ছিলো তো কেউ সিট খুঁজে পাচ্ছিলো না। আমার সিটটা পড়েছিলো সেন্টারে কিন্তু আমার পছন্দ উইন্ডো সিট। তাই আমি উইন্ডোর পাশে গিয়ে বসে পড়ি। এবং পরবর্তীতে যার সিট তিনি এসে আমাকে জানান এটি ওনার সিট, তাই আমি তাকে সিট টা ছেড়ে দিতে চাইলাম। কিন্তু তিনি আমাকে সেখানে বসার পারমিশন দিলেন। এভাবেই প্রকৃতি দেখতে দেখতেই আমি চলে আসি। আমার কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে। আমার গন্তব্য ছিলো দিনাজপুর থেকে পার্বতীপুর। তাই আসতে বেশি সময় লাগে নি।
এর মাঝে আমি কিছু ফটোগ্রাফি করি। সেগুলো হচ্ছেঃ-
যখন আমি পার্বতীপুর প্লাটফর্ম এ নামি তখন প্লাটফর্মের অবস্থা দেখে আমার চক্ষুচরাক। এত মানুষের আনাগোনা। কোথাও কোনো সোস্যাল ডিস্টান্স বলতে কিছুই নেই। মনেই হয় নি করোনা বলতে এখন পৃথিবী কিছু আছে। এতগুলো মানুষ, সবার গন্তব্য আলাদা। সবাই যে যার মতো যাচ্ছে, কেউ কারো কথা চিন্তা পর্যন্ত করবে না।
এর পর আমি আর কোথাও বিন্দু মাত্র সময় অপচয় না করেই বাড়ির দিকে রহনা দেই। আসলে যখন নিজের মাতৃভূমিতে আসলাম তখন মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভুতি কাজ করছিলো। যদিও দিনাজপুর বলতে আমার জেলা শহরেই ছিলাম, কিন্তু জন্মভূমি, পটভূমি বলতে একটা জিনিস আছে। নিজের যেখানে বেড়ে ওটা সেই জায়গাতো অবশ্যই ভালো লাগবেই।
এই ভালো লাগা, ভালোবাসা দু'য়ে মিলেমিশে আমি আমার বাড়ির দিকে যেতে থাকি। আসার পথে এলাকার ছোট ভাইদের সাথে দেখা এবং তাদের সাথে আড্ডা দিতে দিতেই বাড়ী ফেরা।
Camera : Redmi 10 |
---|
নিজ বাসায় ফিরে আসার অনুভূতি বলে প্রকাশ করা যায় না।মনের মধ্যে কি যে ভালো লাগে,যারা দূর থেকে বাড়ি ফিরেছে তারাই শুরু বুঝতে পারবে।আর ট্রেন ভ্রমনের অভিজ্ঞতা অসাধারণ হয়।সব মিলে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মূহুর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আসলে ভাই জীবনের তাগিদে আমরা যেখানেই থাকি না কেনো। শিকড়ের টানে কিন্তু আমাদের গ্রামেই ফিরে যেতে হয়। গ্রামের প্রকৃতি দেখতে তো অপুর্ব সুন্দর্যে ঘেরা। অনেক সুন্দর একটিই পোস্ট করেছেন অনেক ভালো লাগলো আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাইয়া
অনেকদিন পর কলেজ হোস্টেল বা মেস থেকে বাড়ি ফেরার মূহুর্ত টা কিন্তু সত্যি ভাই খুবই আনন্দকর হয়। এটা একমাএ ঐ শিক্ষার্থীরাই ভালো বুঝবে। এবং আমি মনে করি ট্রেন ভ্রমনই সবচেয়ে মজাদার এবং নিরাপদ। ধন্যবাদ ভাই আপনার এতো সুন্দর একটি মূহুর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।