||আমার বাংলা ব্লগ: ছোট গল্পঃ নিয়তি||১০% লাজুক খ্যাক এর জন্য||
হ্যালো প্রাণ প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই?আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি শিক্ষণীয় গল্পঃ উপস্থাপন করবো।আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।চলুন শুরু করি।
একদিন এক ভিক্ষুক একটি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলো।রাস্তা দিয়ে দিয়ে তিনি অনেকটা পথ হাঁটলো।হাঁটতে হাঁটতে সে বিশাল একটি বাড়ির সন্মুখীন হলো।বড় ভবনের এমন একটি বাড়ি দেখে ভিখারী খুব খুশি হলো।সে মনে মনে ভাবলো এটা বড় লোকের বাড়ি হয়তো আজকে আমি এই বাড়িতে ভাল কিছু খেতে পারবো।ভাবতে ভাবতেই ভিখারী দারোয়ান এর সন্মুখীন হলো।ভিখারী দারোয়ান কে করুন কণ্ঠে বললো "আমি অনেক ক্ষুধার্ত"কিছু খেতে দেবে আমায়?ভিখারীর এমন কথা শুনে দারোয়ানের বেশ মায়া কাজ করছিলো।কিন্তু মায়া কাজ করলেই কি আর মালিকের অনুমতি ছাড়া কি খাবার দেওয়া যায়!তাই দারোয়ান ভিখারী কে বললো তুমি বাহিরে একটু দাড়াও আমি ভেতরে মেম সাহেবার অনুমতি নিয়ে আসি।ভিখারী জীর্ণ কণ্ঠে বললো ঠিক আছে ভাই।দারোয়ান ভেতরে যাওয়ার পর ভিখারী দেখতে পেল একটি বড় একটি বড় সুন্দর সজ্জিত করা একটি খাচার ভেতর সুন্দর একটি কুকুর। ভিখারী লক্ষ্য করলো কুকুরের সামনে একটি প্লেট ভর্তি মাংস দিয়ে রাখা হয়েছে।ভিখারী কুকুরের সামনে অনেক গুলো মাংস দেখে আরো খুশি হলো।ভিখারী ভাবলো কুকুরকে যেহেতু এত গুলো মাংস দিয়েছে তাহলে আমাকে তো ভালো ভালো খাবার খেতে দেবেই দেবে।
pixabay থেকে নেওয়া হয়েছে।
ওদিকে দারোয়ান মেম সাহেবার কাছে গিয়ে ভিখারী কে খাবার দেবার বিষয়ে বললো।তখন মেম সাহেবা রাগী কণ্ঠে বললো খাবার কি আকাশ থেকে আসে?যে কেউ চাইলে খাবার দিতে হবে?এই বলে দারোয়ানকে আরো কিছু ঝাড়ি মেরে দিল মেম সাহেবা, বললো "তোর কাজ হলো গেটে দাড়িয়ে থাকা তুই এখানে কেন!!আর যদি কখনো এভাবে নিজের কাজ রেখে অন্যের জন্য ঘ্যাণঘ্যাণাতে আসিস তো! তোকে বিদায় করে দিবো বলে রাখলাম।সামান্য একটু খাবার চাইতে এসেই এত কথা শুনতে হলো!দারোয়ান মনে মনে খুবই কষ্ট পেল।এটা ভেবে তার আরো বেশি কষ্ট হচ্ছিলো যে ভিখারী টা কতই না কষ্টে আছে না খেয়ে।দারোয়ান ভাবছে কীভাবে খাবারের জন্য দাড়িয়ে থাকা ভিখারী কে গিয়ে বলবে! যে এত বড় বাড়ি থাকা সত্বেও তোমাকে এক বেলা খাওয়ানোর মত খাবার তাদের ঘরে নেই।
pixabay থেকে নেওয়া হয়েছে
দারোয়ান ভিখারীর কাছে এসে নিচু গলায় বললো,ভাই ওনারা খুব ধনী মানুষ তো তাই খাবার কম খায় যাতে শরীর ভালো থাকে।সুতরাং তোমাকে দেওয়ার মত খাবার তাদের ঘরে নেই।এই বলে দারোয়ান তার পকেট থেকে বিশটি টাকা বের করে বললো, আমার কাছে এই কুড়িটি টাকাই আছে তুমি এটা দিয়ে কিছু খাবার কিনে খেয়ে নিও।ভিক্ষুকের মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো।খরাপ তো হওয়ার ই কথা এত বড় আশা করে সে খাবারের আবদার করলো তবুও তার কপালে খাবার জুটলো না।কিন্তু দারোয়ানের সুন্দর ব্যাবহার দেখে সে মুগ্ধ হয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন, আল্লাহ তুমি তাকে ধনী বানিয়ে দাও যে আমার ক্ষুদা নিবারণের জন্য 20 টি টাকা দিয়েছে।ভিখারী দোয়া করেই চলে গেলো।কিছুদিন পর দারোয়ান একটি লটারিতে প্রথম পুরস্কার পেলেন।সেই টাকা দিয়ে দারোয়ান ব্যাবসা শুরু করলেন, কিছু দিনের মধ্যেই তার অনেক পরিমাণ টাকা হয়ে গেল।সে তার টাকা দিয়ে একটি আশ্রম তৈরি করলো যেখানে অনাথ অসহায় লোকজন থাকবে।এদিকে যে বাড়িতে লোকটি দারোয়ানের কাজ করতো সেই বাড়ির কর্তা হঠাৎ মারা যান।এই মুহূর্তে মেম সাহেবা একবারে অসহায় হয়ে পরলো।নিয়তি তাকে এক সময় দারোয়ানের আশ্রমে যেতে বাধ্য করলো।অবশেষে মেম সাহেবা দারোয়ানের আশ্রমে।আশ্রমে আসার পর দেখলো তার বাড়ির দারোয়ান এই আশ্রমের মালিক।ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস যেটা কেউ পরিবর্তন করতে পারেনা।আমাদের এই বিষয় টা মাথায় থাকে না যখন আমরা একটু সম্পদশালী হই।এটা ভাবিনা আমরা যে আজকে আগর তলায় আছি কালকে কিন্তু চকির তলায়ও যেতে পারি।চিন্তা করুন আমার আপনার অবস্থা এর থেকেই শোচনীয় হতে পারে।
গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে দয়া করে মন্তব্য করবেন।আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য আমাকে আরো অনুপ্রাণিত করবে।
গল্পটি অনেক শিক্ষনীয় ভাইয়া।বর্তমান সমাজে হামেশাই এইরকম পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে অসহায় মানুষেরা।ধন্যবাদ ভাইয়া।
হুমম আপু ঠিকই বলেছেন আপনি।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
অনেক শিক্ষনীয় ছিল গল্পটি। আসলেই আমাদের অবস্থা যে কোন সময় শোচনীয় হতে পারে। তাই আমাদের হাতে যখন সম্পদ থাকে আমাদের উচিত সেই সম্পদ থেকে যথেষ্ট পরিমান দান করা। সেই দারোয়ান তার কাছে 20 টাকা থাকার পরেও সে পুরোটাই দিয়ে দিয়েছিল অথচ মেমসাহেব অনেক সম্পদ থাকার পরেও একবেলা খাবার দিতে অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে কিভাবে সব উল্টে গেল। চমৎকার ছিল গল্পটা।
অনেক ধন্যবাদ ভাই মূল্যবান একটু মন্তব্য করেছেন।শুভ কামনা আপনার জন্য ভাই।
বর্তমান সমাজের একটি বাস্তব বিষয় আপনার পোস্টে আপনি তুলে ধরেছেন। ধনীরা সাহায্য না করলেও মানুষের পাশে ঠিকই এক শ্রেণির মধ্যবিও মানুষ সাহায্য করে। আর হ্যা ভাগ্য যেকোন মূহুর্তে আমাদের অনেক পরিস্থিতির সম্মূখিন করতে পারে। সেজন্য সম্পদ যতদিন থাকে তার সুষ্টু ব্যবহারই উওম।
হুম ভাই আপনার মন্তব্য ঠিক।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
গল্পটি পড়ে কিছুটা কষ্ট পেয়েছি। মানুষ এখন অনেক সম্পদশালী হওয়ার পরেও গবিবদের এক বেলা খাওয়ানোর সময় নেই। গল্পটি থেকে অনেক কিছুই শিক্ষণীয় আছে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ গল্পটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য।
ভাইয়া অনেক সুন্দর করে গল্পটি লিখেছেন।আমি গল্পটি পড়ে অনেক কিছু শিখতে পেলাম ।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর একটা পোস্ট শেয়ার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ার জন্য।
খুবই শিক্ষনীয় একটি গল্প। গল্প টি পড়ে অনেক কিছু শিখার আছে। সবাই গল্পটি অনেক সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করে ফেলেছে ।আমি আর কথা বাড়াবো না। এক কথায় অনবদ্য ।অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই আপনার উৎসাহিত মন্তব্যের জন্য।
সবকিছুই নিয়তির খেলা। তবে আমাদের অবশ্যই সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত এবং যতটুকু সম্ভব মানুষের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া দরকার।।
শিক্ষণীয় গল্প আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি তে শেয়ার করার জন্য এবং আমাদের দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য অভিনন্দন
আপনাকে ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
সুন্দর গল্প+ সুন্দর মন্তব্য,,=বাস্তব 🆗
অতিরিক্ত ঔদ্ধত্যতা এবং মানুষকে মানুষ না মনে করার ফলে হাতেনাতে পেয়েছেন। যেমন কর্ম তেমন ফল।
কারো সময় এক থাকে না, সময় পরিবর্তনশীল। সময় মানুষকে যেমন উপরে তুলতে পারে তেমনিই নীচে নামিয়ে দিতে পারে।
হুমম ভাই।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
মর্মস্পর্শি সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন,এই জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
কথায় মানব "অহংকার পতনের মুল কারণ"।
সে আমি হই আর যে কেউ হোক,অহংকার করলে তার পতন আসবেই।
আপনার জন্য শুভ কামণা রইল।
গল্পটি থেকে অনেক কিছুই শিক্ষণীয় আছে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাইয়া 💖
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মন্তব্যের জন্য।