||ছোট গল্পঃ বাবার দেওয়া শিক্ষা||১০% সুবিধাভোগী লাজুক শেয়ালের জন্য||
যথেষ্ট অর্থবিত্ত থাকা সত্বেও রাতুলের বাবা রাতুলকে কখনো ১০টাকার বেশি টিফিন খরচ দেয়নি।সে সব সময় তার বন্ধুদের দেখিয়ে বলতো "বাবা দেখো আমার এই বন্ধুর কত দামী ঘড়ি, ওই বন্ধুর কত সুন্দর একটি স্কুল ব্যাগ রয়েছে।রাতুলের কথা শুনে তার বাবা শুধু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিতেন।তাছাড়া কিছুই তিনি বলতেন না।হটাৎ একদিন রাতুলের পায়ে সামান্য ব্যাথা করছিলো।তাই রাতুল তার বাবাকে বললো"বাবা আমাকে তোমার অফিসের গাড়িতে করে আমার স্কুলে নামিয়ে দেবে?আমার পায়ে বেশ ব্যাথা অনুভব করছি।তখন রাতুলের বাবা রাতুলের কথা একটু চিন্তা করে তাকে গাড়িতে করেই স্কুলে নামিয়ে দিয়ে যায়।এভাবে প্রায় এক সপ্তাহ গাড়িতে করেই রাতুল স্কুলে যাওয়া আসা করতে থাকে।রাতুলের বাবা চুপচাপ প্রতিদিন গাড়িতে করেই স্কুলে নামিয়ে দিতেন।কিছুদিন পর রাতুলের বাবা দেখলো রাতুল আর হেঁটেই স্কুলে যেতে চাচ্ছে না।
পরের দিন সকালে রাতুলের বাবা রাতুল কে আগেই বলে দিলো অফিসের গাড়ি ব্যাক্তিগত ব্যবহারের জন্য নয়।একথা শুনে রাতুল বেশ মন খারাপ করলো।হটাৎ একদিন সন্ধ্যায় রাতুল বাড়িতে এসে বললো, জানো! আমার বন্ধু শাহীন শহরের সবথেকে সেরা কলেজে ভর্তি হয়েছে।রাতুলের কথা শেষ হতে না হতেই তার বাবা বললো' আচ্ছা তুমি বলতো প্রতিষ্ঠান সেরা হয় নাকি ছাত্র?যদি তোমাকে সেরা কলেজে ভর্তি করিয়ে দেই তবুও যদি তুমি কোন একটা বিষয়ে ফেল করো তবে কি বলবে?তুমি ফেল নাকি কলেজ ফেল?এর পর রাতুল আর কোন কথা বাড়ালো না।
মাঝে মাঝে রাতুলের বাবা রাতুলকে নিয়ে ফুটপাতে হাঁটতো, পথ শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানুষ সম্পর্কে রাতুলকে ধারণা দেয় তার বাবা।রাতুলের বাবা চায় তার ছেলে জানুক যে পৃথিবীটা শুধু চিন্তাতেই সুন্দর।বস্তবে খুবই কঠিন!রাতুলের বাবা কখনো কিছু চাওয়া মাত্রই রাতুলকে দেয় নি।এজন্য রাতুল একদিন তার বাবার কাছে বললো, বাবা তুমি এমন কেন?তখন রাতুলের বাবা রাতুলকে বললো,সময় হলে তুমি বুঝতে পারবে।
এর পর পেরিয়ে গেলো বহু বছর।এখন রাতুল বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে।হটাৎ একদিন রাতুল মন খারাপ করে বললো, বাবা শাহীন আর মানুষ হলো না,অথচ ওর বাবা ওর জন্য কত কিছুই করলো।যখন যা চেয়েছে তাই দিয়েছে। তখন রাতুলের বাবা রাতুলকে বললো,আমি কি তোমাকে কিছুই দিতে পারিনি?রাতুল তার বাবাকে বুকে নিয়ে বললো,তুমি আমাকে প্রতিটা চাহিদা পূরণ করতে শিখিয়েছো বাবা! শিখিয়েছো কখনো যেন অভাবে আমার স্বভাব নষ্ট হয়ে না যায়। তুমি জীবনে আমাকে যে শিক্ষা দিয়েছো সেটা সত্যি সব কিছুর উর্ধ্বে।চাওয়া মাত্র যদি আমি সব কিছু পেতাম তাহলে জীবনের এত রং আমি চিনতে পারতাম না।তোমার দেওয়া শিক্ষা গুলো আমাকে জীবনের রং চিনতে শিখিয়েছে।তোমার দেওয়া শিক্ষা গুলো আমি কখনো ভুলবো না।
আরো কয়েক বছর পার হয়ে গেলো।এখন রাতুল তার নিজের ইনকাম করা টাকা দিয়ে একটি প্রয়ভেট কার কিনেছে।এখন রাতুল মানুষকে মুচকি হেসে হেসে বলে আমার জীবনের টিফিনের টাকা জমিয়ে আমি এই গাড়িটি কিনেছি।রাতুলের এমন অর্জনে বাবা খুব খুশি হয়েছে।সপ্তাহ খানেক পর রাতুলের বাবা রাতুলের নামে সমস্থ সম্পত্তি লিখে দিলেন এবং বললেন,সামলে রেখো সম্পত্তি গুলো।তখন রাতুল সম্পদের দলিল গুলো তার বাবার হাতে ফিরিয়ে দিয়ে বললো,তুমি সাথে থেকে বাবা তাহলে আর কিছু লাগবে না আমার।তখন রাতুলের বাবা খুশিতে রাতুলকে জড়িয়ে ধরে বললো আমি আমার সন্তানকে জীবনের শ্রেষ্ট শিক্ষা দিতে পেরেছি।
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।সকলের প্রতি ভালোবাসা এবং শুভ কামনা রইলো
ভাইয়া গল্পটি পড়ে আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না। এতোটুকুই বলবো, অনেক অনেক ভালোবাসি বাবা কে। ভাইয়া আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, শুভ কামনা রইলো।
অনেক ধন্যবাদ আপু,আপনার অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য ও 💖।
গল্পটি পড়ে বুঝতে পারলাম আসলে বাবা বিনা স্বার্থে নিজের ছেলেকে ভালো ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কিন্তু আমরা তা বুঝতে চায় না। আসলেই আপনার গল্পটা পড়ে বুঝতে পারলাম যে বাবারা অনেক কষ্ট করে আমাদের মানুষ করে। আপনি একটা যুক্তি দিয়েছেন যে কোনটি ভালো সেরা কলেজ না সেরা ছাত্র এটা আমার খুবই ভালো লেগেছে। আর বিশেষ করে আবার লাস্টে যখন বাবা বলল, যে জমি তোমার নামে লিখে দিলাম সব কিছু ফিরিয়ে দিলো তখন সন্তান বলল, যে আমার কিছু চাইনা আমার তোমাকে চাই তুমি থাকলেই হবে এটা খুবই ভালো লাগছে গল্প শেষে অনেক শুভকামনা রইল আপনার প্রতি।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার মতব্যটি খুব ভালো লেগেছে।গঠন মূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
সন্তানদেরকে আরাম-আয়েশে রাখার চেয়ে বরং এভাবে করে জীবনের বাস্তবতা শিক্ষা দেওয়াটা অনেক জরুরী। অনেক চমৎকার লেগেছে আপনার গল্পটি এবং পরবর্তীতে যখন ছেলে সক্ষমতা অর্জন করেছে তখনই বাবা তার সমস্ত সম্পদ দিয়েছেন। এটাই হওয়া উচিত।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই গল্পটি সম্পূর্ণ পড়ে গঠন মূলক মন্তব্য করার জন্য।
বাবারা তাদের সন্তানদের সবসময় ভালো চায়।সন্তানদের অনেক সময় বাস্তব জীবণ থেকে বিভিন্ন শিক্ষা গ্রহনের জন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন। যা সন্তানের মঙ্গলের জন্য।ধন্যবাদ আপনাকে আপনার শিক্ষামূলক কনটেন্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
এই পৃথিবীতে যতই খারাপ মানুষ থাকুক না কেন কিন্তু প্রত্যেকটা বাবাই অনেক ভালো। প্রত্যেকটা বাবাই তার সন্তানের জন্য সুপারম্যান। প্রত্যেকটা বাবাই তার সন্তানকে এমন ভাবে আগলে রাখে এবং এমন ভাবে শিক্ষা দেয় যার কেউই দুনিয়াতে দিতে পারেনা। সত্যি অসাধারণ লিখেছেন ভাই।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
আসলে রাতুলের বাবা তাকে সঠিক শিক্ষা দিয়েছেন এই জন্য রাতুল এত ভালো হয়েছে ।বাস্তবতা বুঝতে শিখিয়েছে ভাই ।এটাও বুঝতে শিখিয়েছে রাস্তায় পরে থাকা শিশুদের চাইতে সে খুব ভাল আছে ।অনেক সুন্দর করে লিখেছেন আপনি ।
অনেক ধন্যবাদ ভাই মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
আপনি খুব সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন
ধন্যবাদ
অনেক শিক্ষনীয় গল্প এটি।রাতুলের শেষ কথাগুলি শুনে সত্যিই কান্না পাচ্ছিল।এইরকম আরো শিক্ষনীয় গল্প শুনতে চাই।আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
হুমম আপু মাঝে মাঝে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ।অনেক ধন্যবাদ আপু আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
আপনি খুব সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন আসলে বাবার দোয়া শিক্ষা কোনদিনও ভোলার নয়।
ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ ভালো করার জন্য বাবা-মা কি না করে অনেক সময় নিজের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও নিজের প্রয়োজনটা না মিটিয়ে ছেলে মেয়ের প্রয়োজন মেটায়।হয়ত সে রকম ভাবে কোন দিন বলাই হয় নি বাবা তোমাকে খুব ভালোবাসি
অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
কথাটা অনেক ছোট্ট হলেও এই কথা থেকে অনেক কিছু শিক্ষা নেয়ার আছে।
প্রথিবীতে বাবাই হলেন আমাদের সবচেয়ে বড় জ্ঞানভাণ্ডার। যার সাথে কোনো কিছুর তুলনা করা যাই না। আমরা আমাদের জীবনে যাই কিছু করিনা কেন সবকিছুই বাবাদের অবদান। ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান পোস্টের জন্য।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ গঠন মূলক মন্তব্যের জন্য।