||(বর্তমান অথবা বিলুপ্ত প্রায় স্থানীয় লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য||১০% লাজুক খ্যাক এর জন্য||
আসসালামুআলাইকুম, বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই?আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন।আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে খুবই ভাল আছি।আজকে আমি আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট নিয়ে।এটা মূলত একটি প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণ মূলক পোস্ট।আমি যে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি সেটা হলো (প্রতিযোগিতা -০৬ (বর্তমান অথবা বিলুপ্ত প্রায় স্থানীয় লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্য শেয়ার করুন।) আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি।আমি আপনাদের মাঝে যে বিষয়টি তুলে ধরবো সেটা হলো মাটির তৈরি আসবাব পত্র নিয়ে।যেটা আজকে আমাদের থেকে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।চলুন তাহলে আমরা হারিয়ে যাওয়া মাটির তৈরী জিনিসপত্র সম্পর্কে অবহিত হই।আশা করছি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমার সাথেই থাকবেন।
যেভাবে মাটির তৈরী জিনিসপত্র হারিয়ে যাচ্ছে!
প্রাচীন যুগে দৈনন্দিন জীবনে ব্যাবহৃত জিনিসপত্রের মধ্যে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ছিল অন্যতম।সকল কাজই যেন মাটির তৈরী জিনিসপত্র দিয়েই সামলানো যেত সেই সময়ে।এক সময় মাটির তৈরি জিনিস পত্র তৈরিতে কুমাররা মাটি দিয়ে আসবাব পত্র তৈরিতে ব্যাস্ত থাকতো সারাক্ষণ।নিত্য প্রয়োজনীয় হাড়ি পাতিল, ডাবর, মটকী থেকে শুরু করে মাটির ব্যাংক শো- পিস গহনা আরো কত কিছুই না তৈরি করতো সেটা লিখতে গেলে হাত ব্যাথা হয়ে যাবে।কিন্তু আধুনিক এই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে হারিয়ে ফেলেছি।সেটা কিন্তু আমরা কখনো চিন্তা করেও দেখি না।বর্তমান সময়ের সিরামিক, স্টিল,সিসা এবং কাস্টিল এগুলো ভীড়ে হারিয়ে গেছে আমাদের ঐতিহ্য সেই মাটির তৈরি জিনিস গুলো। আর এই বর্তমান সময়ের চাকচিক্য জিনিসপত্রের কারণেই গ্রাম বাংলার মৃৎশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে।হারিয়ে ফেলেছি আমাদের ঐতিহ্য😒।
মাটির তৈরি ব্যাংক
মাটির তৈরি ব্যাংক এই শব্দটির সাথে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত।মাটির তৈরী ব্যাংকের কথা অপরিচিত রয়েছে এরকম লোক খুজে পাওয়া বড়ই মুশকিল হয়ে পরবে।ছোট বেলায় মাটির ব্যাংকে টাকা জমা করার স্মৃতি আমাদের সকলেরই রয়েছে।মূলত এক সময় দাতব মুদ্রা সংরক্ষণের জন্য এই মাটির তৈরী ব্যাংক গুলো মানুষ ব্যাবহার করতো।বর্তমানে এতে কাগজের টাকাও রাখে অনেকেই।ছোট বেলায় আমি মেলায় গিয়ে আগে ব্যাংক কিনতাম।সেই ব্যাংকে সারা বছর টাকা জমিয়ে আবারও পরের বছর মেলায় যেতাম।এভাবে প্রতি বছরই মাটির ব্যাংক কিনতাম আমি।স্কুলের টিফিনের টাকা আত্মীয় স্বজনের দেওয়া সেলামি থেকে আমি কিছু কিছু করে টাকা মাটির ব্যাংকে জমিতে রাখতাম।এরকম অভিজ্ঞতা আমাদের সকলেরই কিছু না কিছু রয়েছে।
মাটির তৈরী ঘোড়া
এক সময় সোকেজ আলমারিতে মাটির তৈরী ঘোড়া গরু বাঘ আরো কত ধরনের প্রাণীর মূর্তি দিয়ে সজ্জিত হতো।ঘোড়ার তৈরি মাটির ব্যাংক,বাঘের তৈরি মাটির ব্যাংক ছাড়াও আরো অনেক ধরনের আকৃতি দিয়ে মাটির ব্যাংক বানানো হতো।সেগুলো দেখতে কতই আকর্ষণীয় ছিল।ছোট বেলায় সব সময় একটা আকাঙ্খা কাজ করতে একটা মাটির তৈরী ঘোড়া অথবা গরু কেনার জন্য। একটু চিন্তা করে দেখি! এই জিনিস গুলো কি আমাদের সামনে বছরে একবার চোখে পরে? পরার কথা না কেননা বর্তমান সময়ের চাকচিক্যের মাঝে এই সব জিনিস গুলো হারিয়ে গেছে।এখন আমরা ব্যাবহার করি মাটির তৈরী ব্যাংকের বদলে মানি ব্যাগ, যেটা পকেটে শোভা পায় কিন্তু আলমারিতে নয়।মাটির তৈরী এধরনের ব্যাংক গুলো কবেই হারিয়ে গেছে সেটা কল্পনাও করতে পারছি না।এভাবে আমাদের থেকে হারিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন ঐতিহ্য।
ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে অনেক গুলো হাতি ঘোড়ার কারুকার্য।বিভিন্ন রঙের রঙিন করে সাঁঝিয়ে রাখা হয়েছে।এগুলো মাটি দিয়েই তৈরি করা হয়েছে।প্রতিটি হাতি ঘোড়া দেখতে খুবই আকর্ষণীয় লাগছে।
মাটির তৈরী কলস,পাতিল
আমাদের দেশের গ্রাম বাংলায় মাটির কলস বহুল ভাবে ব্যাবহৃত হয়েছে।এটার প্রচলন খুবই বেশি ছিল।গ্রাম কিংবা শহরের প্রায় বাড়িতেই এর ব্যাবহার একসময় ছিল।মাটির তৈরী হাড়ি পাতিল থালা বাসন গ্লাস কলস জগ মগ মোট কথা দৈনন্দিন জীবনের ব্যাবহৃত জিনিস গুলোর মধ্যে সব কিছুই মাটি দিয়েই তৈরি করা ছিল।কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এই মাটির তৈরী জিনিসপত্র এখন আর নেই বললেই চলে।এটা এখন খুবই নগণ্য।অথচ মাটির তৈরী পাতিলে ভাত রান্না এবং পানি রেখে খেলে বিশাল উপকারিতা রয়েছে।সুতরাং বলা যায় মাটির কলস বা আসবাব পত্র শুধু দেখতেই সুন্দর ছিল না এটার গুনাগুন ও ছিল অনেক।
প্রাচীন ঐতিহ্যের এই জিনিস গুলো কেন আমাদের থেকে হারিয়ে গেলো সেটা আদৌ কল্পনা করি না আমরা।
মাটির তৈরী আরো কিছু জিনিসপত্র
ছবিটিতে দেখতে পাচ্ছেন হরিণ এবং বাঘ যার সৌন্দর্য একত্রে উপভোগ করা কোন জঙ্গলে বা চিরাখানায় উপভোগ করা সম্ভব নয়।কিন্তু এখানে দেখতে পাচ্ছি বাঘ এবং হরিণ একসাথে রয়েছে।এটাই তো বড় তৃপ্তি।যা আমাদের মৃৎশিল্পের মাধ্যমে উপভোগ করতে পেরেছি।কিন্তু এই সৌন্দর্য একদিন আমাদের থেকে বিলীন হুওয়ার পথে।
এখানে রয়েছে মাটির তৈরি একটি মুরগি।মুরগির সামনে রয়েছে কয়েকটি ডিম।এই কারুকার্য গুলো কুমার দের নিপুণ হাতে তৈরি করেছে।তাদের এই কাজের দক্ষতা একজন প্রকৌশলী কে হার মানবে।কুমারদের এমন কারিগরি দক্ষতাকে আমরা শ্রদ্ধা করতে পারি না বলেই আজকে এটা আমাদের থেকে বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এক সময় টেবিলের উপরে সোকেজের ভেতরে বা দেয়ালের উপরে এই পাখি এবং গাছের সৌন্দর্য অহরহ দেখা যেত।কিন্তু বর্তমান সময়ে এই রকম পাখি এবং গাছের দৃশ্য কোন টেবিলের উপরে দেখা যায় না।আমরা এগুলোকে কেন পরিহার করলাম?চিন্তা করিনি কখনো।আমি মনে করি প্রযুক্তির ছোঁয়ার এগুলো আমাদের থেকে নিমিষেই ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে।
আমাদের এই হারিয়ে যাওয়া লোক সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের সকলের উচিত একটু চিন্তা করা। যেখানে আমরা একজন দেশী বুদ্ধিমান প্রকাশনীকে খুজে পাই আর তারা হলো কুমার।তাদের এমন কারিগরি দক্ষতাকে আমাদের ১০০% সন্মান প্রদর্শন করা উচিত।কিন্তু আমরা প্রযুক্তির মায়াবী ছোঁয়ার পরশ পেয়ে নিজেদের ঐতিহ্যকে ভুলে যাচ্ছি।যা আমাদের ঐতিহ্যকে হারিয়ে ফেলার উপক্রম হয়ে গেছে।আমাদের ঐতিহ্য আমাদের নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখতে হবে এর জন্য আমাদের যা করণীয় সেগুলো অবশ্যই পালন করা উচিত।মৃৎশিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের শখের বসে হলেও এদের থেকে নাজ্য মূল্য আসবাব পত্র খরিদ করতে হবে।তবেই কুমার রায় তাদের পূর্ণ আস্থা ফিরে পাবে এবং কাজের প্রতি তাদের ভালোবাসা আরো বৃদ্ধি পাবে।
ঐতিহ্য আমাদের টিকিয়ে রাখবো আমরাই
পোস্ট ক্যাটাগরি | হারিয়ে যাওয়া লোক সংস্কৃতি |
---|---|
লেখক | @sabbirrr |
ফটোগ্রাফি | মাটির তৈরী জিনিসপত্র |
লোকেশন | লোকেশন কোড |
CC:@moh.arif @rme @winkels @rex-sumon @hafizullah @shuvo35
সংস্কৃতি প্রবহমান নদীর মতো—এর রূপান্তর আছে, মৃত্যু নেই। প্রকৃতপক্ষে লোকসংস্কৃতিই বাঙালি সংস্কৃতির মূলধারা, এর মর্মমূলেই আবহমান বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য-সভ্যতার প্রকৃত পরিচয় প্রোথিত।
এই সব লোকসংস্কৃতি এখন প্রায় বিলুপ্ত।আপনার উপস্থাপনা খুব সুন্দর হয়েছে তার সাথে মাটির হাঁড়ি পাতিলের ফটোগ্রাফি বেশ ভালো হয়েছে।শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ ভাই।আপনার মন্তব্যটি ভালো লেগেছে ভাই।গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
এসব লোকসংস্কৃতি ও ঐতিহ্য মেলার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় আগে মেলা হতো এখন আর হয় না। তাই এসব মাটির তৈরি জিনিস দেখা যায় না। খুবই সুন্দর লাগলো দেখে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন ভাই।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
সাব্বির ভাই অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনার এলাকার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে।খুব সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন।শুভ কামনা আপনার জন্য।
আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
খুব সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন ভাইয়া। ছবিগুলো খুবই সুন্দর হয়েছে। আপনি খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন এবং সুন্দর করে বিষয়টিকে তুলে ধরেছেন। সুন্দর একটি পোষ্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপনার জন্য শুভকামনা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
মাটির তৈরি এসব তৈজসপত্র এখন প্রায় বিলুপ্ত প্রায়।আগে বাজরে এক বা দুইটা মাটির তৈরির দোকান পাওয়া যেত এখন সারা বাজার খোঁজেও পাওয়া যায়না।আমাদের এখনই সজাগ দৃষ্টি রাখা দরকার ভাই।আপনার কথাগুলো যথার্থ ছিল।
খুবই সুন্দর হয়েছে,লোকসংস্কৃতি ও ঐতিহ্য মেলার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। আগে আমাদের গ্রামে মেলা হতে আর এসব নিয়ে লোক জন দোকান দিয়ে বসে থাকতো অনেক বিক্রি হতো। আর তখনকার সময়ে অনেক ভালো লাগতো। আপনার পোস্ট দেখে ভালো লাগলো। উপস্থাপনা অনেক সুন্দর হয়েছে। অনেক সুন্দর পোস্ট ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা রইলো 🥀 ধন্যবাদ ভাইয়া
মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
ভাইয়া আপনার পোস্টটি অনেক সুন্দর হয়েছে। আর এবং শৈশবের কথা মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে এই সকল মাটির তৈরি জিনিসপত্র। এক সময় মানুষের দৈনন্দিন সকল কাজে সকল কাজে ব্যবহৃত হতো। অনেক সুন্দর ভাবে আপনি উপস্থাপনা করেছেন ।আপনার জন্য শুভ কামনা
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
সুন্দর একটি লোকসংস্কৃতির নিয়ে কথা বলছেন। মাটির তৈরি আসবাবপত্র এখন প্রায় বিলুপ্ত। আগে এই জিনিসগুলো অনেক বেশি দেখা যেত এখন কোনো মেলা বাজার ছাড়া খুঁজে পাওয়া যায় না।শুভকামনা ভাই।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ফটোগ্রাফি গুলো যখন চোখ মেলে দেখছিলাম মনে হচ্ছিল আমার গ্রামের বাড়িতে কোন মেলার ভেতরে আমি ভ্রমণ করছিলাম। সত্যিই ভাই আধুনিক যুগে আমাদের লোকসংস্কৃতি গুলো যেন যুগে যুগে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মাঝ থেকে।
আর ব্লগচেইনকে সাধুবাদ জানাই এমন সুন্দর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য এবং আমাদের লোক ও সংস্কৃতি সম্পর্কে অন্যদের জানানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য
অনেক সুন্দর এবং গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।