কিশোর গ্যাং ধারণা কি কুকুর থেকে এসেছে?
আসসালামু-আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আজ আমি বেশ মজার একটি টপিক নিয়ে কথা বলব। সেটি হচ্ছে কিশোর গ্যাং ধারণা এবং কুকুর।
বাংলাদেশের গত পাঁচ বছরের সবচেয়ে বড় আতংকের নাম হচ্ছে কিশোর গ্যাং। একটা সময় আমরা শুনতাম বস্তি এলাকায়, রেলস্টেশন এলাকায়, এই ধরনের গ্যাংয়ের কথা। মূলত মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি করার জন্য এই ধরনের গ্যাং তৈরি হত। কিন্তু বর্তমানে ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে, এমনকি গ্রামেও এ ধরনের গ্যাং ছড়িয়ে পড়েছে। মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি করা ছাড়াও নিচক এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েও এই ধরনের গ্যাং তৈরি হয়। নেশা করা এবং আড্ডা দেওয়া ছাড়া আদতে এদের কোন কাজও থাকে না।
কুকুরের বিষয়ে যাওয়ার আগে আপনাদেরকে মজার একটি তথ্য দেই। অনেক আগে একটা লেখায় বিমানের ডগ ফাইট যুদ্ধের কথা শুনি। কোন দেশের আকাশ সীমায় যদি বিনা অনুমতিতে পার্শ্ববর্তী দেশের বা অন্য কোন দেশের সামরিক বিমান প্রবেশ করে তবে ওই দেশের বিমানবাহিনী অনাহুত বিমানটিকে ধরাশয়ী করা করতে চায়। তখন অনাহুত বিমানটি যদি সারেন্ডার করে যুদ্ধ সেখানেই শেষ। কিন্তু যদি সারেন্ডার না করতে চায়, বরং লড়াই করতে চায় তখন সে বিমানটিকে বা যদি একাধিক বিমান থাকে তবে খন্ড যুদ্ধের মাধ্যমে সেগুলোকে ভূপাতিত করার চেষ্টা করা হয়। এই বিষয়টিকে আদর করে ডগ ফাইট নাম দেওয়া হয়।
ডগ ফাইট নাম দেওয়ার কারণ কুকুরের মধ্যেই এই ধরনের আচরণ বেশি দেখা যায়। আপনি খেয়াল করলে দেখবেন এক এলাকার কুকুর বা এক গলির কুকুর যখন অন্য গলিতে বা অন্য এলাকায় যায় তখন ওই এলাকার কুকুররা বহিরাগত কুকুরটিকে আক্রমণ করে। তখন যদি বহিরাগত কুকুর তার লেজ নামিয়ে ফেলে এর মানে হল সে আত্মসমর্পণ করেছে এর ফলে আর কোন যুদ্ধ হয় না। আর যদি লেজ না গুটায় এর মানে হলো সে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত। সাধারণত কুকুররা নিজের রেঞ্জের বাহিরে যেতে চায় না, যায়ও না। যদি কখনো যায় তখন লেজ দাঁড় করিয়ে রাখা কিংবা লেজ গুটিয়ে রাখার মত ঘটনা ঘটে। কুকুররা তাদের এলাকায় বহিরাগত কুকুর সহ্য করতে পারে না। আক্রমণ করে।
ঠিক এই বিষয়টাই কিশোর গ্যাংয়ের আচরণে লক্ষ্য করা যায়। তারাও ঠিক কুকুরের মত দলগত ভাব থাকে। দলের একজনের চিৎকার কিংবা ফোনের মাধ্যমে দলের বাকিরা এসে হাজির হয়। অন্য গ্যাংয়ের কোন সদস্য যদি তাদের মহল্লায় প্রবেশ করে, তখন দলগত ভাবে আক্রমণ করে। ঠিক কুকুরের মত করে।
এই বিষয়টাকেই আমার কাছে কুকুরের আচরণ বলে মনে হয়। আপনি লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন, কিশোর গ্যাংয়ের আচার-আচরণ কাজ কর্ম সবকিছুই কুকুরের দলের সাথে মিলে যায়। এই কারণেই আমার মনে হয় এই ধারণাটি কুকুরের থেকেই নেওয়া।