ধ্বংস হয়ে যাওয়া কৈশোর (শেষ পর্ব)। ১০% সাইফক্স।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


রবীনরা সবাই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে এসে ওদের এলাকার বাইরে এক নির্জন মাঠে এসে বসলো। তারপর রাসেল রবিনকে জিজ্ঞেস করল তুই ওকে চাকু মারলি কেনো? রবিন বললো ওই ছেলেটা এই অবস্থায় আমার গায়ে হাত দেয়ায় মেজাজটা বেশী খারাপ হয়ে গিয়েছিল । এজন্য ছুরি মেরেছি।

png_20220302_132811_0000.png

দলের অন্যরা বলতে থাকলো এখন ওর কি অবস্থা হয় সেটা জানা দরকার। যদি মারা যায় তাহলে আমাদের সবাই অনেক বড় বিপদে পড়বো। এর ভেতর রাসেল ওদের সেই নেতা কে ফোন দিলো। তাকে ফোন দিয়ে সবকিছু খুলে বললো। সেই নেতা ওদেরকে আশ্বস্ত করলো। বললো আমি দেখছি ব্যাপারটা।

রবিন ওর পরিচিত আরেকটি ছেলেকে ফোন দিয়ে ঘটনাটা খুলে বললো। তাকে বললো তুই একটু খবর নে তো ওই ছেলেটার এখন কি অবস্থা? সেই ছেলেটি বলল ঠিক আছে আমি খবর নিয়ে তোকে জানাচ্ছি। কিছুক্ষণ পর সেই ছেলেটি ফোন দিয়ে বলল ওরা যাকে মেরেছে তার নাম সবুজ। সে এখন হাসপাতালে ভর্তি আছে। তবে প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তার অবস্থা ভালো না। ডাক্তার বলেছে তাকে ভালো চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যেতে।

এই খবর শুনে ওরা সবাই আরো ভয় পেয়ে গেলো। ওরা জানতে পারল ওদের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ওরা সবাই মিলে পরামর্শ করল এখন আর বাড়িতে যাওয়া যাবে না। সবাই যার যার মতো এলাকা থেকে পালিয়ে যেতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ওদের সেই নেতা পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারছে ততক্ষণ পর্যন্ত ওরা পালিয়ে থাকবে। তারপর পরিস্থিতি শান্ত হলে তখন আবার সবাই এলাকায় ফিরে আসবে।

সবাই যার যার মতো করে এক এক জায়গায় চলে গেলো। পরদিন ওরা খবর পেলো সেই ছেলেটি মারা গিয়েছেন। রাসেল তখন সেই নেতাকে ফোন করে বলল এখন কি করি? সেই নেতা ওদেরকে জানালো খবরটি মিডিয়ায় খুব আলোড়ন তৈরি করেছে। এখন তার পক্ষে খুব বেশি কিছু করা সম্ভব হবে না। সে ওদেরকে পরামর্শ দিল পালিয়ে থাকতে।

রাসেল পরিষ্কার বুঝতে পারল ওদের জীবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। নেতার কাছ থেকে আর কোন সাহায্য পাওয়া যাবে না। কয়েকদিনের ভিতরে একেক করে ওরা সবাই গ্রেফতার হলো। পুলিশের রিমান্ডে সবাই পুরো ঘটনা স্বীকার করলো। যদিও ওদের সবার বাবা মা অনেক চেষ্টা করেছে ওদেরকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে।

কিন্তু সবুজ নামের ছেলেটি মারা যাওয়ার আগে ওদের নামে ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়ে গিয়েছে। যার ফলে এই কেস থেকে ওদের ছাড়া পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শেষ পর্যন্ত মামলা কোর্টে উঠলো। ওদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হলো। ওদের সবার বয়স কম হওয়ায় রবিনের ১২ বছরের সাজা হলো। আর বাদবাকি সবার ৮ বছরের সাজা হলো।এভাবেই কয়েকটি সম্ভাবনাময় কিশোরের জীবন ধ্বংস হয়ে গেলো। (সমাপ্ত)

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 3 years ago 

আমি আগের পর্বগুলো মিস করে ফেলেছি, চেষ্টা করব আগের পর্ব গুলো পড়ার তবে এই পর্ব থেকে যতটুক বুঝতে পারলাম খুব মর্মান্তিক ঘটনা ছিল, উঠতি বয়সের ক্ষমতার দাপট কত সহজেই ধ্বংস হয়ে যায় আমাদের সমাজের ছোট ছোট জীবনগুলো, যার ক্ষমতার দাপটে পাতি নেতারা এগিয়ে যায় ঊশৃংখল করার জন্য তাদের মাথার উপর থেকে যখন নেতা হাত নিয়ে নেয় তখনই তারা আসল জীবন দেখতে পায়।

 3 years ago 

আসলে এই সব পাতি নেতার ছত্র ছায়ায় বর্তমানে কিশোর গ্যাং মারাত্বক আঁকার ধারন করেছে। নেতার পাওয়ার মানেই অনেক কিছু এটা এখন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। এ থেকে আমরা বার হতে না পারলে সমাজ অনেক নিচের দিকে নামতে থাকবে।

 3 years ago 

জেলখানা থেকে সব দাগি আসামি হয় বের হয়ে আসবে সমাজ এদেরকে আর কখনোই স্বাভাবিক ভাবে নেবে না

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.18
JST 0.033
BTC 88172.86
ETH 3116.36
USDT 1.00
SBD 2.77