প্রবাসীর সুখ দুঃখ কান্না হাসি (তৃতীয় পর্ব)।
সেই টাকা নিয়ে আজ সে অন্যের সাথে ঘর বেঁধেছে। সবুজ তার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসতো। সেই ভালবাসার বিনিময় সে এভাবে দিলো? এ কথা চিন্তা করে সবুজের দুই চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে লাগলো। সবুজ আর তার মার সাথে কোন কথা না বলে নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে থাকলো। সারাদিন ঘরে থেকে সবুজ বিকালে বাইরে বের হলো। কিন্তু বাইরে বের হয়ে সে খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হল। যার সাথে দেখা হয় সবাই তাকে একই কথা বলে। তার স্ত্রী যে অন্য পুরুষের সাথে পালিয়ে গিয়েছে সবাই তার সাথে এই প্রসঙ্গে কথা বলতে চাই। কিন্তু সবুজের কাছে এই প্রসঙ্গটা মোটেই ভালো লাগেনা।
তাই সে কিছুক্ষণ পরেই আবার বাড়িতে ফিরে আসলো।বাড়িতে ফিরে সে শুয়ে শুয়ে চিন্তা করতে লাগলো। কি চিন্তা করে এসেছিলাম আর কি হলো ? একটা মানুষ কিভাবে এমন বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে? স্ত্রীকে সে অনেক বিশ্বাস করতো। সেই বিশ্বাসের মর্যাদা সে এমন ভাবে দিলো? ঘৃণায় তার মনটা রি রি করে উঠলো। তার সন্তানের জন্য খুব খারাপ লাগতে লাগলো। সন্তানকে সে জন্মের পর কখনোই কোলে নিয়ে আদর করতে পারেনি। চিন্তা করে এসেছিল এয়ারপোর্টে নেমে প্রথমে তার সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করবে। তার সেই আদরের সন্তান এখন কোথায় আছে কেমন আছে সে কিছুই জানে না।
সন্তানের কথা মনে হতেই সে আবার তার শ্বশুরকে ফোন দিলো। তাকে ফোন দিয়ে বলল আপনার মেয়েকে বলেন আমার ছেলেকে কালকেই দিয়ে যেতে আমার কাছে। আপনার মেয়ের মত মানুষের কাছে থাকলে আমার ছেলেটা নষ্ট হয়ে যাবে। সবুজের শ্বশুর তার উত্তরে বলল ছেলে তার মায়ের কাছেই থাকবে। তুমি অন্য কোথাও বিয়ে করে নাও। এই কথা শুনে সবুজের প্রচন্ড মন খারাপ হলো। সবুজ এখনো মনে মনে আশা করছিল তার স্ত্রী হয়তো ভুল করে কারো সাথে চলে গিয়েছে। নিজেই ভুল বুঝতে পেরে হয়তো সে আবার তার কাছে ফিরে আসবে।
কিন্তু দিনের পর দিন গড়িয়ে যায় তার স্ত্রী আর ফেরেনা। সবুজ বাড়িতে আসার পর থেকেই মন মরা হয়ে বাড়িতে বসে থাকে। মাঝে মাঝে বাড়ি থেকে বের হয়ে নদীর পাড়ে গিয়ে একা একাই বসে বসে কাঁদতে থাকে। এদিকে তার পরিবারের লোকজন তার অবস্থা দেখে চিন্তা করে সবুজকে আবার বিয়ে দিতে হবে। নইলে এমন অবস্থায় থাকলে যে কোন সময় খারাপ কিছু ঘটে যেতে পারে। সবুজ সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলে তার মা তাকে তাদের মনের ইচ্ছার কথা জানায়। সবুজ পরিষ্কারভাবে না বলে দেয়। সে বলে সংসার করার ইচ্ছা আমার আর নেই। একবার সংসার করেই যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে। আমি আর এই ঝামেলায় জড়াতে যাই না।
তারপরও তার মা কয়েকদিন পরপরই তাকে বিয়ের কথা বলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সবুজ তার পরিবারের পিরাপিরিতে বিয়েতে রাজি হয়। তার জন্য পাত্রী দেখা চলতে থাকে। দুই তিনটি পাত্রী দেখার পর একটি পাত্রী তাদের সবারই পছন্দ হয়। যেহেতু সবুজের আগের একটি বিয়ে হয়েছে তাই তারা কোনরকম আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সেই পাত্রীকে তুলে নিয়ে আসে। সবুজ তার অতীত ভুলে যেয়ে নতুন করে জীবনটা শুরু করতে চায়। নতুন স্ত্রীর সাথেও তার বেশ সখ্যতা হয়ে যায়।
বিয়ের পর থেকে সবুজের মনটাও এখন বেশ ভালো থাকে। সবুজ একদিন তার মার সাথে বসে কথা বলছিল। এর ভিতর তার মা তাকে জানায় তোমার আগেকার স্ত্রীর চরম শিক্ষা হয়েছে। যে ছেলের সাথে তোমার টাকা পয়সা নিয়ে ভেগে গিয়েছিলো। সেই ছেলে তার সব টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে গেছে। (চলবে)
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
একটা কথা ঠিক যে দিন সবার এক রকম যায় না ৷ হয়তো কিছুদিন কষ্ট ৷ পরে সব ঠিক হবে ৷ যা হোক এখন সবুজ পরিবারের জন্য আবার বিয়ে করেছে ঠিক করেছে ৷ কারন কারো জন্য নিজের জীবনটা কেন নষ্ট করবে ৷
সর্বোপরি তাদের সংসার জীবন আবার নতুন করে শুরু হোক ৷
ধন্যবাদ ভাই
আসলে সবুজের জন্য ভীষণ কষ্ট লাগলো। কেন যে মেয়েরা এরকম করে বুঝিনা। এত সুন্দর সংসার নষ্ট করে। সবুজ শেষ পর্যন্ত নিজের ছেলেটাকেও দেখতে পারলো না এমন কি ছেলেকে নিজের কাছেও আনতে পারল না। কিন্তু তার মা-বাবা বেশ ভালো কাজই করেছে। সবুজকে আবার বিয়ে দিল এটাই ভালো। এখন অন্তত সে কিছুটা ভালো আছে। কিন্তু তার আগের স্ত্রীর কথা শুনে একেবারে হাসি পেলাম। ওর ভীষণ শিক্ষা হয়েছে। পরবর্তী পর্বে কি হবে তা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।