রেনডম ফটোগ্রাফি পোস্ট।
আমাদের দেশ ছয় ঋতুর দেশ। এই দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক ঋতুতে এক এক রকম থাকে। যেমন বর্ষাকালে চারিদিকের প্রকৃতি কারো সবুজ রঙে রাঙিয়ে যায়। আবার শীতের মৌসুমে প্রকৃতি কেমন যেন রুক্ষ রূপ ধারণ করে। গাছের পাতা পড়ে যায়। সবুজের ছোঁয়া এই সময় অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু তাই বলে কি শীতের মৌসুম খারাপ? না এই মৌসুমেও প্রকৃতির একটা আলাদা সৌন্দর্য আছে। তবে এই সৌন্দর্য দেখার মতো চোখ আপনার থাকতে হবে। প্রকৃতির প্রত্যেকটা রুপই আসলে সুন্দর। তবে এই সৌন্দর্য নির্ভর করবে আপনার দেখার দৃষ্টিভঙ্গির উপর।
স্টিমিটে জয়েন করার পর থেকে বাইরে ঘুরতে গেলেই ছবি তোলা হয়। যদিও এই ছবি তোলা আমার কাছে কখনোই খুব একটা প্রিয় কাজ ছিল না। ছবি তুলতে আমি বরাবরই অনাগ্রহী ছিলাম। অবশ্য যদি কখনো খুব সুন্দর কোন প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতাম। তাহলে একটা ছবি তোলার চেষ্টা করতাম। তবে এখন সে ব্যাপারটা অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এখন বাইরে গেলেই ছবি তোলা হয়। যেই কাজই করি সেটারই কিছু ছবি তুলে রাখার চেষ্টা করি। আর কোথাও ঘুরতে গেলে তো কথাই নেই। আর ভালো কোন কিছু দেখলে সেটার ছবি তুলে নিই সাথে সাথে আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আজ আপনাদের সাথে আমার পছন্দের কয়েকটি ছবি শেয়ার করবো।
সবুজে ঢাকা গ্রাম্য রাস্তার একটি ছবি এটি। আমি আর ফেরদৌস দুজন মোটরসাইকেলে করে গ্রামের ভেতর দিয়ে ঘুরছিলাম। গ্রামটি আমাদের শহর থেকে অল্প একটু দূরে অবস্থিত। তখন মোটরসাইকেলে চলন্ত অবস্থায় ছবিটি তুলেছিলাম। এই ধরনের রাস্তায় চলাফেরা করতে আমার কাছে সব সময়ই ভালো লাগে। শহুরে রাস্তাগুলো কেমন যেন রুক্ষতায় ভরা থাকে। সেখানে কোন সবুজের ছোঁয়া দেখতে পাওয়া যায় না।
শীতের সকালে কুয়াশা ঘেরা একটি রাস্তার ছবি এটি। কয়েকদিন আগে ভোরবেলায় হাঁটতে বের হয়েছিলাম। তখন বাইরে বের হওয়ার পর দেখি সেখানে এত কুয়াশা যে। অল্প একটু সামনের কোন কিছু দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘন কুয়াশায় চারপাশ ঘিরে ছিলো। তখনই ছবিটি তুলেছিলাম।
কয়েকদিন আগে চরে গিয়েছিলাম ঘুরতে। সেখানকার একটি ফসলের মাঠের ছবি এটি। চরের মাটি বেশ উর্বর হয়ে থাকে। সেখানে আপনি যে কোন শস্য ফলাতে পারবেন। কারণ এই চরগুলো তৈরি হয় পলি জমে জমে। সেজন্য এই জমির কৃষক এত চমৎকার ফসল ফলাতে পেরেছে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি পুকুরে ভাসমান কিছু মাছ। এই ধরনের দৃশ্য দেখতে আমাদের সবারই ভালো লাগে। সাধারণত যে সমস্ত পুকুরে অনেক মাছ থাকে। সেখানে এ ধরনের দৃশ্য বেশি দেখা যায়। এত মাছ দেখে আমার মনে হচ্ছিল সাথে সাথে একটি বরশি নিয়ে মাছ ধরতে বসে যাই। যদিও আমি মাছ ধরার ব্যাপারে খুবই অনভিজ্ঞ।
বেলা শেষের পথে। ছবিটিতে গোধূলি লগ্নের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে যখন চরে ঘুরতে গিয়েছিলাম। তখন ফেরার পথে এই ছবিটি তুলেছিলাম। আমার ছবি তোলার দক্ষতা মোটেও ভালো না। তবে এই ছবিটি মনে হয় ভালোই তুলেছিলাম। অবশ্য বিশেষ দক্ষতায় যে ছবি তুলেছি তা নয়। ছবি তুলতে তুলতে অনেক সময় দু'একটা ছবি ভালো হয়ে যায়। এই ছবিটি ও তেমন একটি ছবি।
কুয়াশা ঘেরা সকালে একটি গ্রাম্য সরু ব্রিজের উপর থেকে ছবিটি তোলা। যখন ব্রিজের উপর আমি উঠলাম। তখন খেয়াল করে দেখি ব্রিজের ওপারে কি আছে সেটা দেখা যাচ্ছে না। সেদিন কুয়াশা এতটাই ঘন ছিল যে অল্প দূরত্বের কোন কিছু পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছিলাম না। তখনই এই ছবিটা তুলেছিলাম।
ছবিতে যেই ভবনটি দেখা যাচ্ছে এটি ফরিদপুর অফিসার্স ক্লাব। দেখে মনে হচ্ছে বিল্ডিংটি খুব বেশি পুরনো নয়। কিন্তু আসলে এ বিল্ডিংটি অনেক পুরাতন। ফরিদপুর অফিসার্স ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৯৮ সালে। মানে আজ থেকে প্রায় ১২৪ বছর আগে। কিছুদিন আগেও এই বিল্ডিংটি বেশ খারাপ অবস্থায় ছিল। তবে বর্তমানে এটি সংস্কার করে রং করার ফলে বেশ ভালো দেখাচ্ছে।
নদীর ভেতর যে পিলারটি দেখা যাচ্ছে। এটি আসলে একটি ব্রিজের পিলার। সেদিন যখন চরে ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন এই পিলার গুলো দেখতে পেলাম। আসলে চরের সাথে শহরের যোগাযোগের জন্য এদিক দিয়ে একটা ব্রিজ তৈরি হওয়ার কথা ছিলো। ব্রিজের কাজ বেশ খানিকটা এগিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসায় ব্রিজের কাজটি বন্ধ হয়ে রয়েছে। তবে শোনা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই ব্রিজের কাজটি আবার শুরু হবে। এই ব্রিজটি হয়ে গেলে চরের লোকজনের শহরে আসতে আর কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না। তাদেরকে আর নৌ পথের ওপর নির্ভর করতে হবে না। তখন আমরাও সহজে মোটরসাইকেল নিয়ে চরে ঘুরতে যেতে পারবো।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মার চর, আদমপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ব্রিজের অবশিষ্ট অংশ দেখে মনে হচ্ছে চরাঞ্চলের অনেক মানুষের স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গেছে। হয়তো স্বপ্নগুলো পূর্ণ হয়নি। তবে ব্রিজটি যদি আবার হয় তাহলে অনেক মানুষ শান্তি পাবে এবং শহরের সাথে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হবে। তাদের অনেক স্বপ্ন ঘিরে আছে সেই ব্রিজের সাথে। তবে শীতকালে প্রকৃতির ভিন্ন রূপ দেখতে ভালো লাগে। এর আগে কখনো সত্যি ফটোগ্রাফি করার আগ্রহ ছিল না। কিন্তু এই প্লাটফর্মে আসার পর থেকেই নতুন কিছু দেখলেই ফটোগ্রাফি করতে ইচ্ছে করে।
আপনার মত ভাইয়া আমিও ছবি তুলতে আগে আমার খুব অনিচ্ছা ছিল।কিন্তু এখন ছবিতে আমার মোবাইল পুর্ন। 😂 এখানে কাজ করতে এসে অনেক কিছুই শিখছি। যাই হোক, ভাইয়া আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দারুন হয়েছে। 😍 আপনি ছবির নিচে সুন্দর করে বর্ণনা তুলে ধরেছেন যার জন্য এর সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।আপনি আপনার বন্ধু ফেরদৌস ভাইয়াকে নিয়ে গ্রামের রাস্তার যে পথের ছবিটি দিয়েছেন, সেই ছবিটি খুব ভাল লেগেছে।বাঁশঝাড়ের নিচ দিয়ে পথ দারুন। 😍চরের ফসলের মাঠে, কুয়াশাজড়ানো ভোর হাঁটতে গিয়ে তুলেছিলেন, গোধূলি লগ্নের দৃশ্য সব ফটোগ্রাফি সুন্দর হয়েছে। আর একটি ছবি ফরিদপুর অফিসার্স ক্লাব, এটা নতুন দেখালেও, পুরোনো। চরে ঘুরতে গিয়ে আপনি নদীতে একটি ব্রীজের পিলার দেখে সেটার ও ছবি তুলে ছিলেন। শেয়ার করেছেন এজন্য অনেক ধন্যবাদ।
আপনার রেনডোম ফটোগ্রাফি গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে আর লোকেশন গুলো এত সুন্দর ভাবে নির্ধারণ করছেন যা আসলে সবার নজর কারবে।আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
কুয়াশা মাখা শীতের গ্রাম তো অতুলনীয়। শীতের কুয়াশা মাখা ভোর কার না ভাল লাগে। আমার তো সবচেয়ে ভাল লাগে শীতের মৌসুম। তবে আপনার শীতের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে মনে হচ্ছে এবার প্রচুর শীত পড়েছে।