মধুখালী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা | ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আমি নতুন কোন জায়গায় গেলে চেষ্টা করি সেখানকার আশেপাশের পরিবেশের ঘুরেফিরে দেখতে। বিশেষ করে কাছাকাছিই যদি কোন বাজার থাকে সেই বাজারটা আমি অবশ্যই ঘুরে দেখার চেষ্টা করি। আমার কাছে মনে হয় কোন এলাকায় গেলে সেই এলাকার বাজার দেখলে আপনি সে এলাকাটা সম্বন্ধে একটি মোটামুটি ধারনা পাবেন। তাছাড়া নতুন জায়গায় গেলে একটু ঘোরাফেরা করতেও ভালো লাগে। যদিও আমি সেখানে গিয়েছিলাম একটি ব্যক্তিগত কাজে।

জায়গাটির নাম মধুখালী। ফরিদপুর জেলার একটি থানা এটি।ফরিদপুর শহর থেকে মধুখালীর দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার। বাসে করে সেখানে যাওয়া যায়। আপনি চাইলে মোটরসাইকেল বা অন্য কোনোভাবে ও সেখানে যেতে পারবেন। আমি মধুখালী গিয়েছিলাম সেখানে ব্যাংকে একটি কাজ ছিল আমার। কাজটি তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি চিন্তা করলাম আশেপাশের কিছু জায়গা ঘুরে ফিরে দেখি। তারপর বাড়ি যাওয়া যাবে। এই এলাকাতে আমি এর আগেও এসেছি। আমার চাকরি জীবনে আমাকে অনেকবার এই এলাকাতে আসতে হয়েছে। কিন্তু চাকরি ছাড়ার পর আর এদিকে তেমন একটা আসা হয়না।

এটা থানা সদর হলেও মূল রাস্তা থেকে একটু ভেতরে ঢুকে গেলেই গ্রামীণ আবহ পাওয়া যায়। নিরিবিলি গ্রামীণ রাস্তা, বিশুদ্ধ অক্সিজেন, কোলাহল মুক্ত পরিবেশ সবকিছু মিলিয়ে এই এলাকাটা আমার খুব পছন্দ। এই এলাকায় বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান আছে। যদিও আজকে সময় স্বল্পতার অভাবে কোথাও যেতে পারিনি। এখানে মথুরাপুর দেউল নামে একটি স্থাপনা আছে যেটি ৪০০ বছরের পুরাতন। আরো আছে সাতৌর মসজিদ। যেটি মুঘল আমলের স্থাপনা। ইচ্ছা আছে সামনে যে কোন একদিন এই দুটো জায়গা দেখে আসার। আজকে যেহেতু হাতে বেশী সময় ছিল না। তাই চিন্তা করলাম কাছের বাজার থেকে গিয়ে ঘুরে আসি। আমি যে ব্যাংকে কাজে গিয়েছিলাম সেখান থেকে বাজার খুবই কাছে। আমি আগেও আমার পোস্টে উল্লেখ করেছি গ্রামের দিকের বাজারগুলিতে ঘুরতে আমার কাছে ভালই লাগে। কারণ এখানে টাটকা শাকসবজি ফলমূল মাছ এগুলো পাওয়া যায়। যেটা শহরের বাজারগুলোতে সহজে পাওয়া যায় না। যদিও এই বাজারটা পুরোপুরি গ্রামের বাজার নয়।

IMG_20211228_122728.jpg

এই জায়গার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক। এই রাস্তাটি অত্যন্ত ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা আমাদের দেশের ভিতরে। ঢাকার সাথে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান একটি রাস্তা হচ্ছে এই রাস্তাটি।

IMG_20211228_123515.jpg

থানা সদর হলেও এখন সেখানেও অত্যাধুনিক সব গাড়ি দেখা যায়। এই সমস্ত গাড়ি ভাড়ায় চালিত। রেন্ট এ কারের ব্যবসা এখন থানা পর্যায়ে ও বেশ রমরমা বোঝা যাচ্ছে।

IMG_20211228_122834.jpg

থানা সদরে ও এখন সুন্দর সব স্থাপনা দেখা যায়। এখন দেশের যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে সেটা এই সমস্ত এলাকায় এলে বেশ বোঝা যায়।

IMG_20211228_122745.jpg

বিভিন্ন রকম ভোগ্য পণ্যের কোন অভাব আর এখন এই সমস্ত এলাকায় নেই। একটা সময় ছিল যখন এই সমস্ত এলাকার লোকজন টেলিভিশন ফ্রিজ কেনার জন্য শহরে আসত। এখন আর তাদেরকে শহরে আসতে হয় না। সবকিছু তারা হাতের নাগালেই পায়।

IMG_20211228_122410.jpg

IMG_20211228_122400.jpg

এটি একটি মিষ্টি জাতীয় দ্রব্যের দোকান। গ্রাম অঞ্চলের মানুষ জন মিষ্টি খুব পছন্দ করে। এখানে এমন কিছু মিষ্টি পাওয়া যায় যেটা শহরে সাধারণত পাওয়া যায় না।

IMG_20211228_122328.jpg

এটি একটি ফলের দোকান। গ্রামের মানুষজন ও এখন বিভিন্ন রকম বিদেশি ফল খাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। একটা সময় ছিল যখন গ্রামের মানুষজন আপেল কমলা আঙ্গুর এগুলি খেতে পারত না। এগুলি ছিল ধনীদের খাবার। কিন্তু এখন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এই সমস্ত ফল সকলের নাগালে চলে এসেছে।

IMG_20211228_122455.jpg

IMG_20211228_122449.jpg

IMG_20211228_122508.jpg


এটি মধুখালী মাছ বাজার। আমি যখন গিয়েছি তখন প্রায় দুপুর হয়ে গিয়েছে। সেজন্য মাছ বাজারে মাছ এবং ক্রেতা দুটোই কম ছিল। এই সমস্ত বাজার অনেক সকালে বসে। সেই সময়ে নানা রকম দেশীয় টাটকা মাছের সমাগম থাকে বাজারে।

IMG_20211228_122608.jpg

IMG_20211228_122620.jpg

এখানে একজন বিক্রেতা বিভিন্ন রকম বিস্কুট এবং অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে বসে আছে ক্রেতার জন্য। এই ধরনের দোকান গ্রামের বাজারের একটি প্রচলিত দোকান।

IMG_20211228_122628.jpg

এখানে দেখা যাচ্ছে একজন ডিম বিক্রেতা। এই ধরনের দোকান দেশের সমস্ত জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। তবে এখানে একটি সুবিধা আছে। গ্রামের ব্যবসায়ীরা তুলনামূলক শহরের ব্যবসায়ীদের থেকে কম দামে ডিম বিক্রি করে।

IMG_20211228_122603.jpg

এটি একটি ভাজাপোড়ার দোকান। এই ধরনের দোকান দেখলেই আমার সেখান থেকে কিছু খেতে ইচ্ছা করে। যদিও ইদানীং শারীরিক সমস্যার কারণে ইচ্ছা হলেই কিছু খেতে পারিনা। তবে এই সমস্ত দোকানের খাবার খেতে খুবই মজা লাগে। এখানে সিংগারা, পুরি, সমুচা এবং বিভিন্ন ধরনের চপ পিয়াজু পাওয়া যায়। সাধারণত বিকাল বেলায় এই সমস্ত দোকানে প্রচুর ক্রেতা সমাগম হয়।

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রহুয়াই নোভা ২আই
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানলিংক


logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok


আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি

Sort:  
 3 years ago 

আপনার ভ্রমন এর অভিজ্ঞতা জেনে ভালো লাগলো অনেক ভাই। আশা করি অনেক মজা করেছেন। আর ভ্রমনে গেলে একটু সময় নিয়ে না বার হলে আসলেও অনেক যায়গা মিস হয়ে যায়। আশা করি শিগ্রই আপনি ওই দুই যায়গায় আবার গিয়ে ঘুরে আসবেন।

 3 years ago 

আশা আছে আবার সেখানে যাওয়ার। ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 3 years ago 

আপনার ভ্রমণের এই গল্পটি ,আমাদের জন্য অনেকটাই শিক্ষনীয়। মথুরাপুর দেউলী নামের স্থাপনা, সাতৌর মসজিদ, মুঘল আমলের স্থাপনা এগুলো খুব কাছে থাকা সত্ত্বেও অনেকেই আমরা জানি না। সেই সাথে মাছের বাজার, মিষ্টির দোকান, ফলের দোকান, বিস্কুটের দোকান ইত্যাদির ছবি দেখে মনে হচ্ছে আমি নিজেই ঘুরে আসলাম। ধন্যবাদ আপনাকে

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 3 years ago 

ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়

 3 years ago (edited)

বাহ ভাইয়া আপনার ভ্রমণটুকু সময় অনেক মধুর ছিলো। আপনার ভ্রমনের সময়টুকু আমাকে অনেক সুন্দর লেগেছে ভাই। তাছাড়া ফটোগ্রাফিগুলোও অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনার ভ্রমনময় সময়টুকু আমাদের সামনে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ,। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভাইয়া,, ❤️❤️

 3 years ago 

আপনার কমেন্টে কিছু ভুল আছে। সেগুলো সংশোধন করুন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

আপনার মধুখালী ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো ।সব থেকে মিষ্টির দোকানের মিষ্টির ফটো গুলো যোশ হয়েছে ।ধন্যবাদ ভাই মধুপুর ভ্রমণের এত সুন্দর অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

মধুপুর

এটা ভুল লিখেছেন।

 3 years ago 

ওহ sorry. খেয়াল করিনি ভাই ।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর করে মধুখালী ভ্রমণের অভিজ্ঞতার কথা উপস্থাপন করেছেন। আপনার পোষ্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার পোষ্টের বিভিন্ন ফটোগ্রাফি গুলো দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। বিশেষ করে খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো অত্যন্ত সুন্দর হয়েছে। দারুন একটি পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.12
JST 0.025
BTC 56208.10
ETH 2476.58
USDT 1.00
SBD 2.26