মাছ বাজারের নতুন অভিজ্ঞতা। ১০% সাইফক্স।
কিছুদিন আগে আমি আপনাদের সাথে একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলাম। সেখানে বলেছিলাম যে দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার কারণে বাজারে যেতে পারিনি। এদিকে ফ্রিজে মাছ-মাংসের মজুদ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছিলো। যার ফলে এখন ইচ্ছা না থাকলেও বাজারে যেতে হবে। তাই কিছুদিন আগে টেপাখোলা বাজারে গিয়েছিলাম মাছ কিনতে। কিন্তু সেখানে পছন্দমত মাছ পাইনি। যে টুকু বা পেয়েছিলাম সেগুলোর আকাশছোঁয়া দাম চাচ্ছিলো।
তাই ঠিক করলাম আমি সাধারণত প্রতিমাসে যেখান থেকে বাজার করি। সেই মাছ বাজারেই যাবো। এই মাছ বাজারটি আমাদের শহরের প্রধান মাছ বাজার। এই মাছ বাজারে আমার যাতায়াত অনেক ছোটবেলা থেকে। এখনো মনে পড়ে অনেক ছোট বয়সে বাবার সাথে এই মাছ বাজারে আসতাম। এই মাছ বাজারে আসতে চাওয়ার আর মূল কারণ ছিল একটি হোটেল থেকে নাস্তা করা। বাবার সাথে মাছ বাজারে আসলে মাছ বাজারের কাছাকাছি একটি হোটেল থেকে নাস্তা করা ছিল অবধারিত। আমার বাবা এবং আমার আমাদের দুজনেরই সেই হোটেলটির নাস্তা খুব পছন্দ ছিলো। বিশেষ করে সেখানকার পরোটা আর ডাল ভাজি সাথে মিষ্টি। বাবার সাথে মাছ বাজারে গেলে সেখান থেকে নাস্তা করা ছিল আমাদের একটি অত্যাবশ্যকীয় কাজ। তাই আজ পোষ্টের প্রথমে সেই হোটেলের ছবিটি আপনাদের কাছে তুলে ধরেছি স্মৃতি হিসেবে। আজ আর বাবা জীবিত নেই। তবে তার সেই স্মৃতিগুলো এখনো মনে পড়ে এ সমস্ত জায়গায় আসলে। যাহোক আজকে আর এখান থেকে নাস্তা করতে পারিনি।
সরাসরি বাজারে ঢুকেছিলাম। অনেকদিন পর এই মাছ বাজারে আসলাম। প্রথমে পুরো মাছ বাজারটা একবার ঘুরে দেখলাম। সাথে কিছু ছবিও তুললাম। মাছ বাজারটা প্রথমে ঘুরে দেখার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমি যে ধরনের মাছ কেনার উদ্দেশ্যে এসেছি সেটা কোথায় কোথায় পাওয়া যাবে সেটা দেখা। কিন্তু আজকে মাছ বাজারে এসে একটি জিনিস দেখে আমি খুবই অবাক হয়েছি। সেটা হচ্ছে বাজারে চিংড়ি মাছ প্রায় নেই বললেই চলে। এমন অবস্থা আমি বাজারে এর আগে কখনো দেখিনি। নদীর চিংড়ি না পাওয়া গেলেও খুলনা অঞ্চলের ঘেরের চিংড়ি বাজারে সব সময় পাওয়া যায়। কিন্তু আজ দেখলাম বাজার প্রায় চিংড়ি মাছ শূন্য। একজন বিক্রেতা অল্পকিছু ছোট সাইজের দেশী চিংড়ি নিয়ে বসে আছে। দাম চাচ্ছে কেজিপ্রতি চৌদ্দশ টাকা। দাম শুনে আকাশ থেকে পড়ার মত অবস্থা। এই দামে অনেক বড় সাইজের গলদা চিংড়ি কেনা যায়। চিংড়ি কেনার আশা বাদ দিয়ে অন্য মাছ দেখতে লাগলাম।
কিন্তু অনেক ঘোরাফেরার পরেও আমি যে মাছগুলো কিনতে এসেছিলাম সে মাছগুলো তেমন একটা পেলাম না। আবার রোজার দিন হওয়ার কারণে অন্যান্য সময় যে সাধারণ কিছু মাছ কিনি সেগুলো কেনা হলো না। কারণ রোজার ভিতর এমনিতেই মাছ খাওয়া হয় খুবই কম। তাই আমি বাজার থেকে শুধু ইলিশ মাছ আর শোল মাছ কিনলাম। মাছ কিনতে গিয়ে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হলাম। আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে আমি নগদ টাকা আনিনি।
সব টাকা আমার বিকাশ একাউন্টে রয়েছে। বাসা থেকে বের হওয়ার আগে একবার চিন্তা করেছিলাম একটি দোকান থেকে বিকাশ থেকে ক্যাশ আউট করে তারপর বাজারে যাবো। কিন্তু বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর সেটা মনে ছিলনা। যখন মাছের দরদাম করে কেনা হয়ে গিয়েছে। তখন মনে পড়ল যে পকেট এ ক্যাশ টাকা খুব বেশি নেই। তখন আমি মাছ বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনারা কি বিকাশে টাকা নেন? তখন তারা বলল হ্যাঁ নেই। তারপর তারা আমাকে একটি বিকাশ নাম্বার দিলে আমি মাছের দাম সেই বিকাশ নাম্বারে পরিশোধ করলাম। এই ব্যাপারটি আমার কাছে বেশ ভালই লাগলো। বিশ্বের অনেক দেশে এখন ক্যাশলেস কেনাকাটা ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আপনাকে এখন আর সেখানে কষ্ট করে পকেটে টাকা নিয়ে যেতে হয়না। আপনার কোন একটা ওয়ালেটে টাকা থাকলেই আপনি সেটা দিয়ে সমস্ত খরচ মেটাতে পারবেন। আশা করি আমাদের দেশও খুব তাড়াতাড়ি সে পথে অগ্রসর হবে।
তবে ফরিদপুর মাছ বাজারে আসলে আমার কাছে একটি জিনিস খুবই খারাপ লাগে। সেই ছোটবেলা থেকে যেমন দেখছি মাছ বাজারটি এখনো ঠিক তেমনি রয়েছে শুধু মাছ বাজার নয় পুরো বাজারটি তেমন রয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া এখানে লাগেনি। আসলে বর্তমান সময়ে এই ধরনের বাজার দেখলে কিছুটা খারাপ লাগে। আমরা এখন এর থেকে অনেক উন্নত একটি বাজার পেতে পারি। সেই অর্থনৈতিক সামর্থ্য ফরিদপুর পৌরসভার আছে। কিন্তু শুধু সদিচ্ছার অভাবে কোন উন্নয়ন হচ্ছে না।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
চিংড়ি এর কেজি চৌদ্দশ 🤔।কি সাংঘাতিক। যাই হোক এখন দেখছি হাতে আর কাগজের টাকা আস্তে ওঠে যাবে।বিভিন্ন ডিভাইস দিয়ে লেন দেন হবে 😀।যাই হোক ভালো ছিলো আপনার অভিজ্ঞতা। ধন্যবাদ আপনাকে।
চিংড়ির দাম এর থেকে বড় কথা তার সাইজ। চৌদ্দশ টাকা দিয়ে চিংড়ি কেনা যায় যদি সাইজ ভালো হয়। কিন্তু চিংড়ির সাইজ ছিল একেবারেই ছোট।
আজকের পোস্ট টা সত্যি অসাধারণ ছিল ভাইয়া। অনেক রকমের মাছে দেখতে পেলাম তার সাথে আপনার মাছ কেনার অভিজ্ঞতা টি বেশ ভালো লাগলো।কিন্তু আমার পছন্দের মাছ গুলোই কিনেছেন ইলিশ ও সোয়াল মাছ দাওয়াত পাইলে মন্দ হতো না। মাছ দাম দর করার পর আপনার কোনো ক্যাশ ছিল না তখন দোকানদার কে বলার পর বলছে বিকাশে দেওয়া যাবে তখন আপনি বিকাশ থেকে মাছের টাকা দিয়ে ছিলেন ঘটনা টি বেশ মজাই ছিল। একটু দুঃখ জনক ছিলো আপনার বাবা আর পৃথিবীতে নেই সেই বাজারে পাশে মিষ্টান্ন ভাণ্ডার দোকানে বসে অনেক নাস্তা করতেন কিন্তু সেই দিন আপনি কোনো নাস্তা করেন নি।শুনে খুব খারাপ লাগলো।আপনার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল ভাইয়া।
চলে আসেন। আপনাদের জন্য সব সময় ঘরের দরজা খোলা।
কথাটা শুনে ইমোশনাল হয়ে গেলাম ভাই😖😖। মাছ বাজারে গিয়ে মাছ কেনার আগে সম্পূর্ণ বাজারটা একবার ঘুরে দেখা উচিত। এতেকরে সেদিন কোন মাছের কোথায় কেমন দাম কী মাছ উঠেছে এই সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। এবং আমাদের বাংলাদেশ এখনো ক্যাশলেস কেনাকাটা পর্যায়ে যায়নি। তবে আশাকরি ভবিষ্যতে যাবে। আপনার মাছ কেনার অভিজ্ঞতা টা ভালো ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।।
ক্যাশলেস কেনাকাটা চালু হলে খুবই ভালো হতো। কিন্তু কবে হবে কে জানে?
এইসব বাজার সব গুলোয় একই অবস্থা। কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া নেই। আসলে আমিও আজকাল বেশিরভাগ সময়ই অনলাইনের মাধ্যমে কেনাকাটা করি কিংবা পেমেন্ট করতে পছন্দ করি। কারণ ক্যাশ টাকা দিয়ে লেনদেন করাটা আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগে না।
মাছ-মাংস অনলাইনে কিনে মোটেই শান্তি পাই না। সমস্যা হচ্ছে এটা।
ভাই মাছ বাজারের দারুণ একটি অবিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন আপনি। সাথে আপনার ছোট বেলার সোনালী মুহুর্ত গুলোও মনে পড়ে গেলো। আমিও ছোট বেলায় বাবার সাথে বাজারে গিয়ে নাস্তা করতাম খুব ভালো লাগতো। কই গেলো সেই দিনগুলা!
তবে চিংড়ি মাছ এতো দাম শুনে সত্যি অবাক হয়ে গেলাম আমিও। আর মাছ বিক্রেতারাও এখন বিকাশে টাকা নেয় তাইলে তো সেই বাজার আর অনুন্নত বলা যাবে না হাহাহাহা।
ধন্যবাদ আপনাকে অভিজ্ঞতা গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ভাই।
মাছ বিক্রেতা বিকাশে টাকা নেয়ার জন্য আমার খুবই উপকার হয়েছে। নাহলে আবার আমাকে অনেক দূরে যেয়ে টাকা উঠিয়ে তারপরে দাম দিতে হতো।
ভাই এই বাজারে তো অনেক ধরনের মাছ পাওয়া যায়। অনেক মাছের ফটোগ্রাফি আপনি শেয়ার করেছেন। মাছগুলো দেখে আসলে ভালই লাগছে। আর আপনার মত এরকম বিব্রতকর অবস্থায় আমিও মাঝে মাঝে পরে থাকি। আসলে নগদ টাকা রাখিনা, বিকাশে থাকে। এই কারণে এরকম অবস্থায় পড়তে হয়। তবে যখন দোকানদারকে বিকাশ থেকে টাকা দেওয়া যায় তখন তো খুব ভালোই লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই বাজার করার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমি যদিও সব মাছ খাই না কিন্তু বাজারে গিয়ে প্রচুর মাছ দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। এভাবে বাজারে ঘুরে মাছ দেখার ভেতরে একটি মজা আছে।
1 কেজি 1400 টাকা😱
তাইতো বলি আমাদের কমিউনিটিতে ইদানিং চিংড়ি মাছের রেসিপি দেখছি না কেনো🤪।আর আমার সাথেও মাঝে মাঝে এমন ঘটনা ঘটে,খরচ করার পর মনে পড়ে সাথে টাকা নেই😍
আমিও অনেক অবাক হয়েছি। হঠাৎ করে বাজার থেকে চিংড়ি উধাও হয়ে গেল কেনো?
যেকোনো পৌরসভায় যদি চাই তাহলে তার আওতাধীন বাজার এবং রাস্তাঘাট কে অনেক সুন্দর করতে পারে। কিন্তু কিছু সদিচ্ছার অভাব এই উন্নয়নে বাধা ঘটে। যেমনটি আপনি ফরিদপুর পৌরসভার মাছের বাজারের কথা বলেছেন।