বনশ্রীর ফুডজোন এর পরিচয় (পর্ব-১)। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
আমি গত ৫/৬ বছর যাবৎ যখনই ঢাকা আসি তখন বনশ্রীতে বোনের বাসায় উঠি। যার ফলে এই এলাকাটা আমার খুব ভালো চেনা হয়ে গেছে। বনশ্রী এলাকাটা আমার কাছে বেশ ভালই লাগে। এর একটা কারণ হচ্ছে এই বনশ্রী মূলত একটি প্রজেক্ট। এখানের রাস্তাঘাটগুলো মোটামুটি পরিকল্পনা মতোই করা হয়েছে। যার ফলে প্রত্যেকটা বাড়ির পাশ দিয়ে বেশ প্রশস্ত রাস্তা আছে।
আমি যখনই এই এলাকাতে আছি তখন এর আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। এই এলাকার আরেকটা সুবিধা হচ্ছে হাতিরঝিল এখান থেকে খুবই কাছে। আমি যেহেতু একজন ভোজন রসিক মানুষ। তাই আমি যখনই ঢাকা আসি তখন ঢাকার বিভিন্ন বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবারের স্বাদ নেয়ার চেষ্টা করি। সেজন্য এই এলাকার বেশিরভাগ খাবারের দোকান থেকে আমার খাওয়া হয়েছে।
তাই আজ চিন্তা করলাম আপনাদের সাথে বনশ্রীর কিছু খাবারের দোকানের সম্বন্ধে আলোচনা করবো বা রিভিউ দেব। আমি বনশ্রী সি ব্লক এ থাকি। বনশ্রী সি ব্লক এবং ডি ব্লক এর মধ্যবর্তী যে রাস্তা। এই রাস্তাটি সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ভরা। এই রাস্তাতে অনেকগুলি খাবারের দোকান আছে। এর ভেতরে যেমন ফাস্টফুড শপ আছে। তেমনি আবার রেস্টুরেন্ট ও আছে। তো চলুন শুরু করি আমার বনশ্রী ফুডজোনের পরিচিতি।
মিঃবেকার
আমি পেস্ট্রি খেতে খুবই পছন্দ করি ছোটবেলা থেকেই। এখনো আমার কাছে পেস্ট্রি খুবই ভালো লাগে। তাই আমি যখনই ঢাকা আসি তখন আমার পছন্দের কিছু জায়গা থেকে পেস্ট্রি খাওয়ার চেষ্টা করি। ঢাকায় আমার যে সমস্ত দোকানের পেস্ট্রি পছন্দ তার ভেতর অন্যতম হচ্ছে মিঃ বেকার। আমি দীর্ঘদিন আগে থেকেই এদের পেস্ট্রির ভক্ত। এদের পেস্ট্রির স্বাদ এবং কোয়ালিটি অনেক উন্নত মানের। আমি যখন প্রথম মিঃ বেকার এর পেস্ট্রি খাওয়া শুরু করি তখন এদের প্রতি পিস এর দাম ছিল ৮৫ টাকা। এখন সেটা বেড়ে হয়েছে দেড়শ টাকা। এদের এখানের কেক ঢাকা শহরে বেশ বিখ্যাত। পুরো ঢাকা শহর জুড়ে এদের অনেকগুলি আউটলেট রয়েছে।
টেস্টি ট্রিট
গত কয়েক বছরে ঢাকায় যে ফাস্ট ফুড শপ সবচাইতে বেশি তাদের আউটলেট বাড়িয়েছে। তার ভেতর টেস্টি ট্রিট অন্যতম। বোঝাই যাচ্ছে এদের ব্যবসা যথেষ্ট ভালো হচ্ছে। এই টেস্টি ট্রিট আমার আরো একটি পছন্দের ফাষ্টফুড শপ। এখানে মূলত ফাস্টফুড আইটেম পাওয়া যায়। সাথে কেক, মিষ্টি আরো বিভিন্ন রকমের খাবার এদের বিভিন্ন আউটলেটে বিক্রি করে। এদের খাবার আমার বেশ পছন্দ। এদের খাবারের দাম খুবই রিজনেবল। এদের পরিবেশ ও খাবার পরিবেশন যথেষ্ট স্বাস্থ্যসম্মত। টেস্টি ট্রিট প্রতিনিয়ত তাদের মেনুতে নতুন নতুন খাবার যোগ করছে। প্রায়ই এদের বিভিন্ন রকমের অফার থাকে বিভিন্ন আউটলেটে। ঢাকা শহরে এখন টেস্টি ট্রিট এর অনেকগুলো আউটলেট রয়েছে। বনশ্রীতে রয়েছে মিনিমাম ৫/৬ টি।
ওয়েল ফুড
ঢাকায় যে কটি ফুড শপ তাদের ব্যবসা বাড়িয়েছে তাদের ভিতর ওয়েল ফুড অন্যতম। এরা মূলত বেকারি আইটেম এর জন্য সুপরিচিত। সাথে এদের আউটলেটে মিষ্টি এবং ফাস্টফুড আইটেম পাওয়া যায়। এদের খাবারের মান মোটামুটি ভালই। কিন্তু আমার কাছে যেটা মনে হয় এদের খাবারের দাম অনেকটা বেশি। আগে ঢাকায় ওয়েল ফুডের অল্পকিছু আউটলেট ছিল। এখন পুরো ঢাকা জুড়েই তারা তাদের আউটলেট খুলেছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে তাদের ব্যবসা যথেষ্ট ভালো হচ্ছে। তাদের মান অনুযায়ী উচ্চমূল্যের কারণে আমি খুব একটা পছন্দ করিনা।
নির্জাস
এটি মূলত একটি জুস বার এবং টি শপ। কিন্তু এই দোকানটি বিখ্যাত তাদের বিভিন্ন রকম জুসের জন্য। এখানে আপনি বিভিন্ন রকম তাজা ফলের জুস পাবেন। সাথে আখের রস ও পাবেন। ঢাকা শহরের জুসের দোকান আছে অনেক। কিন্তু আখের রস পাওয়া যায় এমন জুসের দোকান সংখ্যা খুব বেশি না। এই দোকানের লেমন মিন্ট খুবই সুস্বাদু। এদের জুসের দাম মোটামুটি রিজনেবল এই দোকানটি বনশ্রীর লোকজনের কাছে খুবই পছন্দের এদের জুসের জন্য।
পিওর
এটি একটি মিষ্টির দোকান এদের সম্বন্ধে আমার খুব বেশি ধারণা নেই। শুধু একটি জিনিস জানি এই দোকানের মিষ্টির দাম মোটামুটি রিজনেবল। এদের মিষ্টির স্বাদ ও ভালো। যদিও এই দোকান থেকে খুব বেশি আমার খাওয়া হয়নি। কারণ আমি মূলত ঝাল খাবার পছন্দ করি। যদিও নানারকম মিষ্টি ও আমার খেতে ভালো লাগে। বিশেষ করে শুকনো মিষ্টি গুলি যেমন লাড্ডু বালুশাহি ইত্যাদি। বনশ্রীতে এদের কয়েকটি আউটলেট আছে। এদের বেঁচাকেনা যথেষ্ট ভালো।।
আল এ্যরাবিয়ান কেক এন্ড সুইটস
এই আউটলেটটি অল্প কিছুদিন আগে বনশ্রীতে ওপেন করেছে। দোকানটি বেশ বড় এবং সুন্দর করে সাজানো। এই দোকানে মূলত বেকারি আইটেম, মিষ্টি এবং বিভিন্ন রকম ফাস্টফুড পাওয়া যায়। দোকানের ডিসপ্লেতে নানান রকম লোভনীয় খাবার খুব সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দেখলেই খেতে ইচ্ছা করে।এই দোকানের খাবার সম্বন্ধে ইতিমধ্যে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে সেটা হচ্ছে এদের কেক খুবই চমৎকার। আশা করি এদের অন্যান্য খাবার ও খেতে ভালো হবে। এদের খাবারের দাম মোটামুটি অন্যান্য দোকান গুলোর মতই। নতুন আউটলেট হওয়ায় এদের সম্বন্ধে খুব বেশি অভিজ্ঞতা আমার হয়নি। তবে পরবর্তীতে যখন ঢাকায় আসব তখন এদের কিছু খাবার চেখে দেখার ইচ্ছা আছে।।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
সত্যিই ঢাকা শহরে থাকলে সবথেকে ঘোরাঘুরি করা এবং ভোজনবিলাস করতে ভালোই লাগে। আপনি যাই হোক প্রতিটা মুহূর্ত যাপন করেছেন আর জায়গাটি আপনি যেভাবে বললেন অনেক ভালোই মনে হচ্ছে বনশ্রীর।আপনি দেখছি পুরো ঢাকা শহরের সবথেকে অন্যতম জায়গা একাই ঘুরে বেড়িয়েছেন। অনেক ভালো লাগলো। প্রতিটা রেস্টুরেন্টে ছিল অন্যতম
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমাদের চট্টগ্রামেও টেস্টি ট্রিট এর অনেকগুলো আউটলেট হয়েছে নতুন নতুন। বুঝা যাচ্ছে উনাদের ব্যবসা তাহলে মাশাল্লাহ অনেক বেশিই ভালো হচ্ছে।
আল এরাবিয়ান কেক এন্ড সুইটস দোকানটি বাইরে থেকে দেখতে ভিতরের সাজসজ্জাটা দারুণ লাগছে।
টেস্টি ট্রিট ব্যবসা ভালোই করছে। ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
বনশ্রী নামটি বেশ সুন্দর।প্রত্যেকটি রেস্টুরেন্ট ও ফাস্টফুডের দোকানগুলো খুবই সুন্দর ও পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন।ওনাদের খাবারও বেশ স্বাদের বলে আশা করা যায়।ছবিগুলো খুবই সুন্দর।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনাকে দিদি।
ভাইয়া আপনার এখানে সেখানে ঘোরাফেরা পোস্টগুলো আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। খাবারের দোকানটা বাইরে থেকে দেখে মনে হচ্ছে অনেকটা আকর্ষণীয়। আর আমি নিশ্চিত যেই ধরনের খাবার ওরা বিক্রি করে সেটা হান্ড্রেড শতাংশ ভালো । অনেক ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
যদিও বনশ্রীর এই ফুডজোনে যাওয়া হয়নি ।দেখে মনে হচ্ছে জুস ও টি ক্যাফেতে যেতেই হবে ।কারন জুস আমার খুব প্রিয় ।এখানের প্রতিটি খাবার এর মান খুব ভালো নাম ও ছবি দেখৃ বুজা যাচ্ছে ।এবার ঢাকা গেলেই যাবো আগে ।ধন্যবাদ ও শুভকামনা আপনার জন্য ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ভাইয়া আপনার বনশ্রী ফুট ভজন এর পোস্ট টি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। বিভিন্ন ধরনের ফুডের ফটোগ্রাফি এবং তার বর্ণনা গুলো পড়ে সত্যি ভাই আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি। ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনি ঠিক বলেছেন ঢাকায় যতগুলো পরিকল্পনামাফিক এলাকা আছে তার মধ্যে বনশ্রী অন্যতম ।আমি একবার একটা কাজে বনশ্রী গিয়েছিলাম এলাকাটি আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। খুব গোছানো ,প্রশস্ত রাস্তা অসাধারণ ।সেখানকার একটি রেস্টুরেন্টে খেয়েছিলাম অনেক সুস্বাদু লেগেছে আমার কাছে ।তবে আজকে আপনার রিভিউটি দেখে অনেক ভালো লাগলো যে আপনি বনশ্রী নিয়ে এবং ওই এলাকার বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট নিয়ে রিভিউ দিয়েছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
খাবার ঘরের নামের বাহারের সাথে মিল রেখে ফটো ও বর্ননা উপাস্থাপন। শৈল্পিক মনের পরিচায়ক। আশির্বাদ চাই পারতে....
ধন্যবাদ আপনাকে।