খেলার মাঠের অভাবে বিপর্যস্ত শৈশব।
আজ বিকালে শান্তিনগর গিয়েছিলাম একটি জরুরী কাজে। কাজটা শেষ করে আমি গলির মাথার দিকে দাঁড়িয়ে ছিলাম। যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম ঠিক তার পাশেই এক চিলতে ছোট্ট জমি। সেখানে দেখলাম এলাকার ছেলেপেলেদের সাথে বিভিন্ন পেশার মানুষজন মিলে ক্রিকেট খেলছে। জায়গাটা ক্রিকেট খেলার জন্য মোটেই উপযোগী নয়। তারপরেও যেহেতু আশেপাশে আর কোন খেলার জায়গা নেই। তাই তারা এই ছোট্ট জায়গাটাকে খেলার উপযোগী বানিয়ে ফেলেছে।
যদিও এই জায়গায় খেলে ক্রিকেট খেলার মূল আনন্দ পাওয়ার কোন সুযোগই নেই। তারপরেও দেখলাম মহাসমারোহে তারা সেখানেই আনন্দের সাথে ক্রিকেট খেলছে। তাদের খেলা দেখার পর আমি চিন্তা করতে লাগলাম আশেপাশে কোথায় আর খেলার মাঠ আছে? কিন্তু অনেক চিন্তা করেও কোন মাঠের হদিস বের করতে পারলাম না। এটা কি শুধু এই এলাকার সমস্যা? মোটেই তা নয়। এটা এখন পুরো বাংলাদেশের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই সমস্যা ঢাকায় সবচাইতে প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা শহরের বেশিরভাগ বাচ্চারা এখন স্থূলকায় বাচ্চা হয়ে বেড়ে উঠছে। কারণ তাদের খেলাধুলার জন্য কোন জায়গা নেই। খেলার মাঠের অভাবে তারা সবাই দিন দিন বিভিন্ন রকম ডিভাইসে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। তাদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু যখন আমি আমাদের শৈশবের কথা চিন্তা করি। তখন এখনকার বাচ্চাদের জন্য খুবই খারাপ লাগে। কি চমৎকার সোনালী শৈশব ছিল আমাদের। বাড়ির আশেপাশেই প্রচুর খেলার মাঠ ছিলো। প্রতিটি এলাকায় ছিল একাধিক পুকুর। ইচ্ছে হলেই পুকুরে ঝাপাঝাপি করে গোসল করতাম। তাছাড়া সেই সময়টাতে মফস্বল শহরগুলিতে প্রচুর গাছপালা ও ছিল। যার ফলে শৈশবে আমাদের দস্যিপণার আরেকটা জায়গা ছিল বিভিন্ন ফলের গাছ।
কিন্তু আজকালকার বাচ্চাদের কিরকম ঘর কুনো হয়ে বেড়ে উঠছে। এইভাবে বেড়ে ওঠার কারণেই এদের ভেতর নানা রকম মানসিক বিকৃতি দেখা দিচ্ছে। কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ণ একটা ইস্যু নিয়ে দেশের কর্তা ব্যক্তিদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। অবশ্য শুধু শুধু তারা এই ব্যাপারে নাক গলাবেই বা কেনো? কারণ তাদের পরিবারের বেশিরভাগ মানুষই দেশের বাইরে সেটেল হয়ে গিয়েছে। এদেশের মানুষ চুলোয় যাক। তাতে তাদের কিছুই যায় আসে না।
অথচ একটু চিন্তা করলেই আমরা বুঝতে পারি যে সমস্যা কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। আর অল্প কিছুদিন পর আমরা বিপুল সংখ্যক রোগাক্রান্ত শিশুকে পাবো। যারা বিভিন্ন রকম অসুখ-বিসুখ নিয়ে বেড়ে উঠছে। এই সমস্ত বাচ্চারা আর কখনোই হয়তো তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবে না। এই সমস্যা থেকে মুক্তি চাইলে এই মোবাইল বা কম্পিউটারের আসক্তি থেকে তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে। যদিও এটা নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। বেশি বাণিজ্যিকভাবে চিন্তা করতে গিয়ে আমরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি।
এখন সরাসরি সরকারি উদ্যোগ ছাড়া অন্য কোনভাবেই আর সেই আগেকার মাঠগুলো ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। তবে এই ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগ পেতে গেলে সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের টনক নড়াতে হবে। আর সেটা করতে হলে দেশের প্রতিটা মানুষকে আওয়াজ তুলতে হবে। আজকে যদি সবাই এই কথা চিন্তা করে ঘরে বসে থাকি যে যা হচ্ছে হোক। তাতে আমার কি যায় আসে। তাহলে একসময় আমরা সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। তো আসুন আমরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচানোর জন্য যার যার অবস্থান থেকে নিজের মতো করে চেষ্টা করি। যদি তাতে কাজ নাও হয়। তারপরেও আমরা নিজের বিবেকের কাছে অন্তত পরিষ্কার থাকতে পারবো যে আমরা এই সমস্যার সমাধানের জন্য চেষ্টা করেছিলাম।
@rupok
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | শান্তিনগর, ঢাকা |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
এটা একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন দাদা। দিন কে দিন ফ্ল্যাট বাড়ির গ্যাঞ্জাম, বহুতল বাড়ি, কনক্রিট আর নিউক্লিয়ার পরিবারের চাপে আল্টিমেট সাফার করে শিশুদের শৈশব। এরপথ বাচ্চারা মাঠ শুধু ছবিতে দেখবে, গপ শুনবে যে মাঠ নামে একটা জিনিস ছিলো যেটা এখন এক্সটিংট।ভাবলেই খারাপ লাগে।
একদম ঠিক বলেছেন দিদি। বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আসলেই খুব খারাপ লাগে।
একদম সময়উপযোগী পোস্ট করেছেন।ছোট ভাই সারাদিন মোবাইলে ব্যস্ত থাকে ওরে বললাম বাইরে গিয়ে ক্রিকেট খেল।তখন বলল মাঠ কই? তখন বুঝতে পারলাম কি ভয়াবহ অবস্থা।আমরা খালি আসক্তির জন্য ছেলে মেয়েগুলো কে দোষ দেই,অথচ তারা অবসর কিভাবে কাটাবে সে ব্যবস্থা আমরা রাখি নি।ধন্যবাদ ভাইয়া এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পোস্ট করার জন্য।
এ দায় আমার আপনার সবার। আমরা সবাই শুধু বাণিজ্যিকভাবে চিন্তা ভাবনা করি। এজন্যই দেশ থেকে খেলার মাঠ বেমালুম গায়েব হয়ে গিয়েছে।
আসলে ভাই আজকে আপনার পোস্টটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ পোস্টটি একদম বাস্তবের সাথে মিল রয়েছে। আসলে আমাদের সমাজে ছেলেমেয়েরা এখন মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। তারা মাঠে খেলাধুলা করে না, কিন্তু তাদের দোষ দিয়ে কি হবে। আমাদের আশেপাশে যেগুলো মাঠ ছিল সেগুলো এখন প্রতিষ্ঠানে ভরে গেছে। সেখানে বড় বড় বিল্ডিং উঠেছে বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। যার কারণে মাঠ খুঁজে পাওয়া যায় না। আসলে আমাদের নিজেদের ভাবতে হবে তাদেন নিয়ে। শিশুদের জন্য খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে।
এই চিন্তা ভাবনাটা যদি আরও ২০ বছর আগে থেকে সরকার করতো। তাহলে আর আজকে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।
এইতো ভাইয়া কিছুদিন আগেই আমাদের এলাকায় মাঠ না থাকার কারণে আমরা তো মোবাইলে সারাদিন গেম খেলতাম। এখন যাই হোক আপনার ছবির মত একটা ছোট মাঠ পাইছি ওখানে ফুটবল খেলি আমরা বিকেলে। সামনে শীতকাল আসছে এখন থেকে ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু হবে তাই আমাদের ওই মাঠে মনে হয় এখন থেকে হয়ে যাবে। আর হ্যাঁ মাঠ না থাকার কারণে অনেক ছেলেমেয়েরা কিন্তু এখন মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে। আসলে এটা আমাদেরই সমাধান করতে হবে।
মোবাইলে আসক্তি আমাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিচ্ছে।
আপনাদের শৈশবের কথাগুলো এখনকার বাচ্চারা শুনলে রুপকথা মনে করবে। ক্রমেই দিনে দিনে মাঠগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে। আমার নিজের এলাকায়ও কোনো খেলার মাঠ নেই। সকাল বিকেল সবসময়ই দেখি পোলাপানরা ঐ মোবাইল নিয়ে পড়ে আছে। কারণ ওদের তো আগে জায়গা করে দিতে হবে তারপর না দেখা যাবে এই গুলো থেকে ওদের সরিয়ে আনা যায় কীনা। কিন্তু সেই উপায় নেই।।
আসলেই ঠিক বলেছেন। আমাদের শৈশবের কথা শুনলে এখনকার বাচ্চাদের কাছে রূপকথার গল্পই মনে হবে।
ঠিক বলেছেন ভাই ,আগামীতে আগামী প্রজন্ম খেলার মাঠের অভাবে শারীরিকভাবে পঙ্গু হয়ে যাবে। সত্যিই আমাদের আমলে সেই ছোটবেলার স্মৃতি ভুলার মত নয়। অসংখ্য খেলার মাঠ, পুকুরে ভরপুর ছিল এলাকাগুলো। এখন তা বিভিন্ন বিল্ডিং এ ভরপুর হয়ে যাচ্ছে। অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেছেন ভাই। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
নিজেদের শৈশবের সাথে বর্তমান শিশুদের কথা চিন্তা করলে আসলেই খুব খারাপ লাগে। কি চমৎকার ছিল আমাদের দিনগুলি। আর এখনকার শিশুরা সবাই গৃহবন্দী হয়ে তাদের সময় কাটায়।
ছেলেমেয়েরা মোবাইলে আসক্ত হয়ে যাবার সব থেকে বড় কারণ বলে আমি এই জিনিসটাকে মনে করি। কেননা আমি ঢাকা শহরে দীর্ঘদিন থেকেছি সেখানে আমি দেখেছি খেলার জন্য কোন নেই। ছেলেমেয়েরা চাইলেও খেলা করার সুযোগ পায় না। ফলে তারা বাধ্য হয়ে মোবাইলের বিভিন্ন ধরনের গেমস এর মধ্যে আসক্ত হয়ে যায়। আমি মনে করি এই সমস্যাটার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী।
খেলাধুলা তো দূরে থাক তাদের একটু সময় কাটানোর কোন জায়গা নেই। এমনকি হাঁটা চলার জন্য পর্যন্ত পর্যাপ্ত জায়গা নেই।
কিন্তু মূল সমস্যা হচ্ছে আমরা সবাই চুপচাপ বসে আছি। আমরা যদি এখন এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করি। তাহলে একটা সময় এমন অবস্থা তৈরি হবে যে তখন আর কোন পথ খোলা থাকবে না।
খুবই সুন্দর করে গুছিয়ে কথাগুলো লিখেছ দাদা। এই কথাগুলো শুনতে খারাপ লাগলেও কথাগুলো বাস্তব। দিন দিন এই খেলার মাঠের অভাবে শিশুর বিকাশের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তারা ছোটবেলা থেকে খেলার মাঠে খেলার সুযোগ না পেয়ে ফোনের প্রতি প্রচন্ড ভাবে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে যার ফলাফল আগামীতে খুব একটা ভালো হবে না । এত বড় একটা সমস্যার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুস্থ সমাধান সত্যি খুব প্রয়োজন।
সমস্যা হচ্ছে দাদা এই সমস্যা যাদের সমাধান করার কথা। তাদের কেউই এটা নিয়ে ভাবছে না।