এ ভোগান্তির শেষ কোথায়?
কিছুদিন আগে বন্ধু ফেরদৌসের সাথে বিকালে বের হয়েছিলাম ঘুরতে। উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের দিকে যাওয়ার। গ্রামের নির্মল প্রকৃতির সংস্পর্শে বিকালটা কাটানো ইচ্ছা ছিলো। সে উদ্দেশ্যেই আমরা রওনা দিয়েছিলাম। কিন্তু কিছুদূর যেতেই পথের ভেতর বাঁধে বিপত্তি। দেখি পুরো রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে আছে দানব আকৃতির ট্রাক এবং সেই ট্রাকের সামনে পেছনে দুই দিকের রাস্তাতে প্রচুর যানবাহন আটকে আছে।
অবাক হয়ে খেয়াল করলাম যেই ট্রাকের জন্য এতগুলি মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে তাদের ভেতরে কোন বিকার নেই। কোন তাড়াহুড়ো নেই। তারা নিশ্চিন্ত মনে তাদের কাজ করে চলেছে। প্রথমে কিছুটা বিরক্তি লাগলেও পরে চিন্তা করে দেখলাম আরে এটা তো আমাদের প্রতিদিনকার জীবনের অংশ। আমাদের দেশে এমন কোন জায়গা কি আছে যেখানে আপনি ভোগান্তির শিকার হবেন না? আমাদের দেশে রাস্তা দিয়ে চলা ফেরা করতে যান হকারেরা ফুটপাত দখল করে আছে। রিক্সা অটো রিক্সা রাস্তাটাকে তাদের পার্কিং লট বানিয়ে ফেলেছে।
রাস্তার পাশে মানুষ তাদের ব্যবহার্য নোংরা জিনিসপত্র ফেলে রেখে পুঁতি গন্ধময় পরিবেশ তৈরি করেছে। হোটেল রেস্তোরাঁতে খেতে যাবেন দেখবেন তারা রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় রান্নাবান্না করছে। সেই খাবারের ভেতর রাজ্য ধুলোবালি রোগ জীবাণুর সমারোহ। আমি আশ্চর্য হয়ে যাই যখন দেখি এই দেশে থাকা নোংরা স্বভাবের লোকগুলো যখন উন্নত কোন দেশে যায়। সেখানে গিয়ে তারা কি চমৎকারভাবে সেখানকার সব আইন মেনে চলে। তাহলে নিজের দেশে নিয়ম-কানুন মেনে চলতে সমস্যা কোথায়?
অনিয়ম এখন আমাদের জীবনের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। চারপাশের এত রকম ভোগান্তি দেখতে দেখতে গা সওয়া হয়ে গিয়েছে। তারপরও মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আশেপাশের সবাইকে চুপ থাকতে দেখে সেই ইচ্ছাটাও মরে যায়। এই কারণে এই সমস্ত ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাস্তাঘাটে আপনি নিরাপদে হাঁটতে পর্যন্ত পারবেন না। দিনের বেলায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের থেকে শুরু করে রাতের বেলার ছিনতাইকারীরা সবাই আপনার জীবনের শান্তি নষ্ট করতে তৎপর।
এই সীমাহীন অরাজকতার শেষ কোথায়? এই উত্তর কি আমাদের জানা আছে? হয়তো সবাই জানি আবার হয়তো কেউ জানে না। এই সীমাহীন অরাজকতা তখনই শেষ হবে যখন আমি আপনি সকলেই এই নষ্ট সিস্টেমের বিপক্ষে আওয়াজ তুলবো। না হলে সবকিছু আরো খারাপ হতে থাকবে। তাই সিদ্ধান্ত আমাকে আপনাকেই নিতে হবে আমাদের করণীয় কি? সর্বংসহা হয়ে এই নষ্ট সিস্টেমের অংশ হয়ে যাওয়া। নাকি প্রতিবাদ করে পুরো সিস্টেমটার খোল নলচে বদলে ফেলা।
ইদানিং চারপাশের মানুষগুলোকে কেমন যেন এই নির্জীব মনে হয়। এত রকম সমস্যা নিয়ে জীবন পার করছে কিন্তু কারো মুখে কোন শব্দ নেই। সবাই কেমন যেন প্রাণহীন রোবটের মত জীবন যাপন করছে। মানুষ মনে হয় এখন কোন বিষয় নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করতে ভুলে গিয়েছে। এই সমস্ত সমস্যার বিষয়ে উচিত এখন প্রবলভাবে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা। যাতে প্রত্যেকটা মানুষের ভেতর এই বোধের উদয় হয় যে একজন সুনাগরিক হিসেবে তার কি করনীয় আর কি বর্জনীয়। না হলে আমাদের এই দেশটা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | নর্থ চ্যানেল |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমাদের দেশে রাস্তা ঘাটের যানবাহনের ভোগান্তি শেষ হবে যদি কখনো সারা বাংলাদেশের রাস্তা বাইপাসে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশ এখন মহা সংকটের মধ্যে পড়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আমার মনে হয় সবচাইতে বেশি প্রয়োজন জনসচেতনতা।
দাদা আগে আমাদের রাস্তার পাশে অটো গুলো লম্বা করে পার্ক করে রাখত।সেখানে জ্যাম লাগত দেখে পৌরসভা থেকে রাস্তা বড় করা হলো।এখন অটো পাতাল করে রাখে।ফলে সেই আগের মতই জ্যাম।রাস্তা বড় করে কোন লাভই হল না।দুই দিন গিয়ে প্রতিবাদ করলাম উলটে জনগন আমারে বকা দিল।অথচ তাদের উচিৎ ছিল পাশে দাঁড়ানো।একা আমার কথা কে শুনবে।তাই আর কিছু বলি না।
এজন্য তো দেশের অবস্থা এতো খারাপ।
ঠিকই বলেছেন দাদা অনিয়ম টাই এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভোগান্তির শেষ নেই রাস্তা হোক বা আর কোন কাজ সমস্ত ক্ষেত্রে ভোগান্তি অনিবার্য। জানিনা এগুলো কখন ঠিক হবে ,কখন মূল স্রোতে ফিরে যাবে।
যখন আমরা সবাই ঠিক হবো তখনই এই সমস্যার সমাধান হবে।
আসলেই কোথাও গেলে রাস্তার জ্যামের কারণে অনেক সমস্যা হয় । রাস্তায় গাড়ি কারণে মানুষ এদিক থেকে ওদিকে পার হতে গেলেই অ্যাক্সিডেন্ট করার ভয়। আমাদের দেশের মানুষগুলো আসলে অনেক নোংরা। চারদিকে নোংরা করে রাখে আবার রাস্তার পাশে বিভিন্ন ধরনের ভাজা পড়া জিনিস ভেজে থাকে যা আমরা কিছু না মনে করে খেয়ে ফেলি । ভাইয়া আপনি অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের দেশের ভৌগোলিক অবস্থা তুলে ধরেছেন ।ধন্যবাদ এমন একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আমরা সবাই সচেতন হলে আশা করি এই সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।
ভাইয়া অনেকটা বাস্তবধর্মী এবং সময় উপযোগী একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপনি। আপনার পোস্টে উল্লেখিত এসব সমস্যার সমাধানের প্রধান রাস্তা হল জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে সচেতন হওয়া।
একদম ঠিক বলেছেন। এছাড়া বিকল্প আর কোন রাস্তা দেখছি না।
ভাই এই ভোগান্তির আর শেষ হবেনা সবাই তো শুরু হল সামনে যে আরো কত দূর দিন আছে তার কোন শেষ নেই। কি করবেন আশেপাশের মানুষকে দোষ দিয়ে সবাই পাথর হয়ে গেছে। পাথর হয়ে না হওয়ার কোন উপায় আছে? অহেতুক নিজের কাঁধে কে বিপদ ডেকে আনবে। আমাদের টনক যে কবে নরে তা এক সৃষ্টিকর্তাই জানে।
কাউকে না কাউকে তো শুরু করতে হবে। সবাই ভয় পেলে চলবে কিভাবে?