হুমায়ুন ঈদের কেনাকাটা (শেষ পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক

মার্কেটের কাছাকাছি গিয়ে তার প্রচন্ড পানির তৃষ্ণা পেলো। সারাদিন এই রোদের ভিতর হাঁটাহাঁটি করে শরীর এমনিতে অনেক দুর্বল লাগছিলো। তারপর তার ফ্যাক্টরি থেকে মার্কেট পর্যন্ত অনেক দূরে সে হেঁটে এসেছে। এজন্য তার প্রচন্ড পানির তৃষ্ণা পেয়েছিলো। মার্কেটের গেটের কাছে হুমায়ুন দেখতে পেল বেশ কয়েকজন লোক লেবুর শরবত বিক্রি করছে। অনেক মানুষজন ভিড় করে সেই শরবত খাচ্ছে। হুমায়ুন কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে চিন্তা করলো সে কি কোথা থেকে পানি খাবে নাকি ঠান্ডা এক গ্লাস লেবুর শরবত খাবে?

Polish_20220714_183155898.jpg

হুমায়ুন দাড়িয়ে চিন্তা করছিলো এর ভেতরে এক লোক এসে তাকে বলল কি অবস্থা ভাই? কেমন আছেন? হুমায়ুন লোকটার দিকে তাকিয়ে তাকে চিনতে পারল না। লোকটা তখন থেকে বলল কি ব্যাপার আমাকে চিনতে পারলেন না? এক সময় আপনার সাথে কত গল্প করেছি। এখন আমাকে ভুলে গেলেন? হুমায়ুন কিছুটা অপ্রস্তুত অবস্থায় বলো না না চিনতে পেরেছি।

আসলে সে সেই লোকটাকে মোটেই চিনতে পারেনি। কিন্তু লোকটির কথাবার্তা বলার ধরণের কারনে সে লোকটিকে না চেনা সত্ত্বেও বলল চিনেছি। লোকটি তখন বলল দেখেছেন চারদিকে কি গরম পড়েছে। তা বাজারের দিকে এসেছেন কি মনে করে? হুমায়ুন তখন বলল বাজারে এসেছি ছেলেমেয়েদের জন্য ঈদের কাপড় চোপড় কিনতে আর কিছু বাজার সদায় করতে হবে।

তখন লোকটি বলল আসেন আগে আমরা দুজনে ঠান্ডা লেবুর শরবত খাই। তারপর ধীরে সুস্থে বাজার করবেন। লোকটি হুমায়ুনের মনের কথা বলেছে। হুমায়ুনও মনে মনে লেবুর শরবত খাওয়ার চিন্তা করছিলো। যদিও লোকটাকে না চেনার কারণে তার সাথে লেবুর শরবত খেতে কিছুটা ইতস্তত বোধ করছিলো সে। তারপরেও লোকটির পীড়াপীড়িতে সে না গিয়ে পারল না। লোকটি তাকে নিয়ে বলল আপনি এখানে বসেন। আমি আমাদের দুজনের জন্য লেবুর শরবত নিয়ে আসছি। এই বলে লোকটি হুমায়ূনকে ফুটপাতের উপরে বসিয়ে রেখে লেবুর শরবত আনতে চলে গেলো।

অল্প কিছুক্ষণ পরেই লোকটি দুই হাতে দুই গ্লাস লেবুর শরবত নিয়ে হুমায়ুনের কাছে উপস্থিত হলো। এর ভেতরে হুমায়ুন চিন্তা করছিল লোকটাকে কি সে আগে কোথাও দেখেছে? দেখে থাকলে কোথায় দেখেছে সেটা মনে করার চেষ্টা করছিলো। কিন্তু কিছুতেই হুমায়ুন সেটা মনে করতে পারছি না। লোকটির সাথে শরবত খেতে খেতে হুমায়ুন বিভিন্ন বিষয়ে গল্প করছিলো।

খাওয়া শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরে হুমায়ুন হঠাৎ করে বুঝতে পারল তার প্রচন্ড ঘুম আসছে। সে লোকটিকে বলল আমি এখন উঠি আমার অনেক ঘুম আসছে। তাড়াতাড়ি বাজার করে বাড়ি ফিরতে হবে। হুমায়ুন উঠতে গেলেও উঠতে পারল না। লোকটি বলল আরে করেন কি? এই অবস্থায় বাজারে যাওয়া যায় নাকি? কিছুক্ষণ এখানে বসে রেস্ট নেন। ঘুম কাটলে তারপর বাজারে যাবেন।

হুমায়ুন বলল না ভাই আমাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হবে। বলে সে ওঠার চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু তার পা দুটো টলমল করছিলো। যার ফলে সে উঠে দাঁড়াতে পারল না। তাই হুমায়ুন আবার বসে পড়লো। বসার সাথেই হুমায়ুন অচেতন হয়ে ফুটপাতের উপর পড়ে গেলো। এই ফাঁকে লোকটি হুমায়ুনের পকেট থেকে টাকা পয়সা নিয়ে সটকে পড়লো। হুমায়ুনের যখন জ্ঞান ফিরলো তখন সে নিজেকে হাসপাতালের বিছানায় দেখতে পেলো। চোখ খুলে সে দেখলো তার স্ত্রী সন্তান তার চারপাশে ঘিরে রয়েছে আর সকলে মিলে তার দিকে তাকিয়ে কান্না করছে। (সমাপ্ত)

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আপনার তিনটি পর্বে হুমায়ুনের ঈদের কেনাকাটা গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো। গত পর্বটি যখন পড়ছিলাম তখন সংশ্লিষ্ট লেখক ভাইকে একটু আভাস দিয়েছিলাম যেন নেগেটিভ কোন কিছু দিয়ে পড়ে সমাপ্তি না হয়। যেন হুমায়ুন একটি ভালো ঈদ করতে পারে এবং তার ছেলে মেয়েদের জন্য জামা কাপড় কিনে নিতে পারেন। কিন্তু তা আর হলো না।

 2 years ago 

আসলে এই গল্পের শেষ পর্বে আমাদের জন্য অনেক শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে। হুমায়ুন এখানে অপরিচিত একটা লোককে না চিনেও সে চিনেছে বলে এখানে সে বিরাটি ভুল করেছে আর এই ভুলের মাশুলি তাকে দিতে হয়েছে সবকিছু হারিয়ে সে হসপিটালে। তাছাড়া হুমায়ুনের সরল বিশ্বাস ও হুমায়ুনকে এই বিপদে ঠেলে দিয়েছে। আর এই বিষয়গুলো আমাদেরকে অবশ্যই সব সময় খেয়াল রাখতে হবে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই গল্পটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58188.83
ETH 2585.51
USDT 1.00
SBD 2.40