পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যাওয়া। ১০% সাইফক্স।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আজ হঠাৎ করে ছোটবেলার একটি স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। কেন মনে পরল সেটা আগে আপনাদের কাছে বর্ণনা করছি। আজ সকালে উঠে চিন্তা করছিলাম বাজারে যেতে হবে। তাই আমার স্ত্রীকে বললাম বাজারে কি কি লাগবে তার একটা লিস্ট তৈরি করো। সে যখন লিস্ট তৈরি করছিল তখন আমি আমার মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম বাবার সঙ্গে বাজারে যাবে?আমার মেয়ে খুশি মনে রাজি হয়ে গেলো।

IMG_20220330_122423.jpg

রাজি হওয়ার অবশ্য একটি কারণও ছিলো। তাকে বলেছিলাম বাজারে গিয়ে একটি দোকান থেকে মজার চিকেন ফ্রাই খাওয়াবো। তারপর বাজারের লিস্ট হাতে পাওয়ার পর আমি আর আমার মেয়ে তৈরি হয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যথারীতি বাজারে পৌছালাম।

IMG_20220330_121437.jpg

বাজারে পৌঁছানোর পর প্রথমে গিয়েছিলাম একটি ওষুধের দোকানে। সেখানে কাঙ্খিত ওষুধটি না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে ফরিদপুর নিউমার্কেটে প্রবেশ করলাম। তারপর সরাসরি মার্কেটের দোতালায় চলে গেলাম। সেখানে একটি স্নাক্স শপে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে বসে তার জন্য চিকেন ফ্রাই অর্ডার করলাম। আর নিজের জন্য নিয়েছিলাম শুধু একটি লাচ্ছি।

IMG_20220330_121307.jpg

এখানে মেয়েকে নিয়ে এসে অনেক পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। আমি তখন অনেক ছোট ছিলাম। তখন থেকেই এই দোকানটাতে আমার আসা-যাওয়া। আমার মনে আছে যখন আমি আমার মেয়ের এই বয়সি ছিলাম। তখন আম্মা মার্কেটে আসতে চাইলে আমি তার সঙ্গে মার্কেটে যাওয়ার বায়না ধরতাম। কিছুতেই তার পিছু ছাড়তাম না। আমার মার্কেটে যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল এই দোকান থেকে চিকেন ফ্রাই খাওয়া।

IMG_20220330_121240.jpg

আমি আম্মার সঙ্গে মার্কেটে গিয়েছি আর এই দোকান থেকে চিকেন ফ্রাই খাইনি। এমনটা মনে হয় কখনো হয়নি। দোকানটাতে গিয়ে আমি এখনো অবাক হই। এই দীর্ঘ সময়ে দোকানটিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। ছোটবেলায় যেমন দেখেছিলাম এখনো ঠিক তেমনটিই আছে। অবশ্য চেহারার সাথে খাবারের মান এবং স্বাদ ও একই রকম আছে।

IMG_20220330_121250.jpg

মেয়ে দোকানে বসে খাচ্ছিলো আর আমি তাকে দেখে পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করছিলাম। যখন এইরকম পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ে তখন মন কিছুটা উদাস হয়ে যায়। এভাবে বেশ কিছুক্ষন দোকানটাতে বসেছিলাম। এর ভেতরে মেয়ের খাওয়া শেষ হয়ে গেলো। তারপর আমি কিছু পার্সেল নিয়ে দোকান থেকে চলে আসলাম।

IMG_20220330_121420.jpg

এই দোকানটি ফরিদপুর নিউমার্কেটের সবচাইতে পুরনো স্ন্যাকসের দোকান। এই দোকানে চিকেন ফ্রাই ছাড়াও পাওয়া যায় কলিজার সিঙ্গারা, আলুর চপ, চিকেন টিক্কা, ভেজিটেবল রোল আর বিভিন্ন রকম পানিয়। এই দোকানে এখনো যে সমস্ত কাস্টমার আসে তাদের বেশিরভাগই পুরনো কাস্টমার। দোকানে যখন বসে ছিলাম তখন সেখানে দোকান মালিকদের পরের প্রজন্ম বসেছিলো। তাদের সাথে গল্প করছিলাম পুরনো দিনের। তারাও শুনে অবাক হলো। আমি আগের যারা লোকজন দোকানে বসতো তাদের কথা জিজ্ঞেস করলাম। তারা জানালো তারা আপাতত বাড়িতেই আছে। শুনে বেশ ভালোই লাগল। আমি যখন এই দোকান থেকে চিকেন ফ্রাই খেতাম তখন ফরিদপুর শহরে মাত্র একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ছিলো। তখন চিকেন ফ্রাই এখনকার মতো এতোটা জনপ্রিয় আইটেম ছিলনা। চাইনিজ রেস্টুরেন্ট আর হাতে গোনা দুই একটি বেকারি বাদে আর কোথাও পাওয়া যেত না।

এখন তো চিকেন ফ্রাই মানুষের দৈনন্দিন খাবার তালিকায় ঢুকে গিয়েছে। এখন বেশিরভাগ ফাস্টফুডের দোকান এবং সব রেস্টুরেন্টে চিকেন ফ্রাই পাওয়া যায়। কিন্তু আমার কাছে এখনো এই দোকানের চিকেন ফ্রাই সবচাইতে সেরা মনে হয়। যাইহোক দোকান থেকে বের হয়ে আমি আর আমার মেয়ে চলে গেলাম বাজার করার উদ্দেশ্যে। তারপর বাজার করে বাড়ি ফিরে এলাম।

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানলিংক

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

ভাইয়া,আপনার মেয়ে আমি আজকে জানতে পারলাম।যাই হোক আসলে মাঝে মাঝে অনেক পুরানো স্মৃতি মনে পরে যায়।ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।শুভেচ্ছা রইলো।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আমি আসলে পরিবার নিয়ে কমিউনিটি তে কম কথা কম বলি।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার প্রতিটা কথা থেকে এই কথাটা বেশি ইন্টারেষ্টিং ছিল যে আপনি ও ছোটবেলা এই রেস্টুরেন্ট খেয়েছেন , আর এখন আপনার মেয়ে। বেশ ভালো লাগলো বিষয়টা আমার কাছে।
বাবা মেয়ে একসাথে কি মজা করে খেয়ে নিলেন। ভালোই লাগলো , কিন্তু খিদা লেগে গেলো। যাক কিছু করার নেই। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

বাপ মেয়ে মিলে আজকে ভালোই মজা করেছি। সময়টা ভালোই উপভোগ করেছি।

 2 years ago 

আসলে ছোটবেলার কাহিনী মনে পরা সবসময় দারুণ।আপনার মেয়ের অবস্থা দেখে আমার নিজের ছোটবেলার কথা মনে পরে গেল। আমিও এভাবে বাবার সাথে যাওয়ার জন্য বায়না করতাম।

 2 years ago 

আমার মেয়ে আবার ওর মাকে ছাড়া কোথাও যেতে চায় না। অনেকদিন পর মেয়েকে নিয়ে বাইরে বের হয়েছি। ভালোই ছিলো সময়টা।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 58015.02
ETH 2381.83
USDT 1.00
SBD 2.42