আপুর নতুন গাড়ী কেনা উপলক্ষে ট্রিট।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গতকালকের পোস্টে আপনাদের কে জানিয়েছি যে আমার বোনের নতুন গাড়ী কেনা উপলক্ষে সে আমাদেরকে ট্রিট দিয়েছিলো। যদিও সেই ট্রিট দেয়ার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু আপনাদেরকে জানানো হয়নি। আমরা যখন বাসা থেকে বের হলাম তখন বাজছিল প্রায় দুপুর দুইটা। এই সময়টাতে ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকে। যার ফলে আমাদেরকে রাস্তায় কোন সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়নি।

IMG_20220624_155242.jpg

যদিও আমরা আগে থেকে পরিকল্পনা করিনি যে কোথায় খেতে যাবো। রাস্তায় বের হওয়ার পর নিজেদের ভেতর আলোচনা করে ঠিক করলাম যে মিরপুরে একটি রেস্টুরেন্টে খেতে যাবো। সপ্তাহের অন্য যে কোন দিনে বনশ্রী থেকে মিরপুর যেতে প্রায় এক-দেড় ঘণ্টা বা তারও বেশি লেগে যেতে পারে। কিন্তু গত কালকে আমরা মাত্র ২০ মিনিটে মিরপুর পৌঁছেছিলাম। রাস্তাঘাট ছিলো একেবারেই ফাঁকা।

IMG_20220624_145113.jpg

রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম আর সকলে বলছিলাম যে ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট যদি সব সময় এমন থাকতো। তাহলে কতোই না ভালো হতো। ঢাকা শহরের যানজট নিয়ে আমরা বিভিন্ন রকম আলাপ আলোচনা করছিলাম যে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে যানজট কমানো যাবে সেটা। যদিও জানি এই সমস্ত আলাপ-আলোচনার কোন মূল্য নেই। নিজের মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্যই হয়তো আমরা আলোচনা করছিলাম। কারন রাস্তাঘাটে কোনো কাজে বের হয়ে জ্যামে আটকে থাকতে কারোরই ভালো লাগে না। এটা একটি দুঃসহ অভিজ্ঞতা।

IMG_20220624_145226.jpg

যদিও ঢাকা শহরের মানুষজনকে প্রতিদিন এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়। আপনি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করেন অথবা নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়েন। সবার জন্য একই পরিণতি। যদিও এই অবস্থা আমাদেরই সৃষ্টি। সরকারের বিভিন্ন রকম বাজে পরিকল্পনার জন্য ঢাকা শহর এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। যাইহোক এখন মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। অল্পক্ষণ পরেই আমরা মিরপুরে সেই রেস্টুরেন্ট এর কাছাকাছি চলে গেলাম। কিন্তু রেষ্টুরেন্টটি আমরা কেউই চিনি না। যার ফলে আমাদেরকে গুগল ম্যাপের সাহায্য নিতে হলো। গুগল ম্যাপের লোকেশন অনুযায়ী আমরা অল্প কিছুক্ষণের ভেতরে সেই রেস্টুরেন্টের সামনে পৌঁছলাম।

IMG_20220624_145230.jpg

সেখানে পৌঁছে আমরা দেখতে পেলাম রেস্টুরেন্টটি তিন তলায় অবস্থিত। আমরা সিঁড়ি দিয়ে উঠে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে দেখতে পেলাম মাঝারি সাইজের মোটামুটি সুন্দর করে সাজানো গোছানো একটি রেস্টুরেন্ট। দেখতে বেশ ভালই লাগছিলো। যদিও সেখানকার আসবাপত্র দেখে বুঝতে পারছিলাম রেস্টুরেন্টটি একেবারে নতুন নয়। বরং বেশ পুরনোই বলতে হবে। রেস্টুরেন্টে বসার পর ওয়েটার আমাদের সামনে মেনু কার্ড দিয়ে গেলো। আমরা পছন্দ করতে থাকলাম যে কি খাওয়া যায়।

IMG_20220624_153158.jpg

শেষপর্যন্ত আমরা দুই ধরনের সেট মেন্যু অর্ডার করলাম। সাথে চিকেনের একটি স্পেশাল প্রিপারেশন। আমরা ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করলাম খাবার সার্ভ করতে কত সময় লাগবে? ওয়েটার আমাদেরকে জানালো ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগবে। আমরা সেখানে বসে তাদের বাজানো ইংলিশ গান শুনছিলাম। প্রথমে আমরা যে টেবিলে বসে ছিলাম কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে পরিবর্তন করে অন্য একটি টেবিলে বসলাম। সেই টেবিলটি রাস্তার ধারে হওয়ায় সেখান থেকে বাইরের সুন্দর একটা ভিউ পাওয়া যাচ্ছিলো।

IMG_20220624_153150.jpg

কিন্তু আমরা রেস্টুরেন্টে গিয়েছি প্রায় আড়াইটা দিকে। যার ফলে সবাই বেশ ক্ষুধার্ত ছিলাম। এদিকে প্রায় আধা ঘন্টা পার হয়ে যায় কিন্তু খাবার দেয়ার কোনো লক্ষণ দেখিনা। যখন আমরা ওয়েটারকে ডেকে একটু তাড় দিলাম তখন সে জানালো আর কয়েক মিনিটের ভেতরে খাবার সার্ভ করা হবে। তার কথামতো অল্পক্ষণের ভেতরে আমাদের টেবিলে খাবার চলে এলো। সবাই ক্ষুধার্ত ছিলাম তার ফলে যা হওয়ার তাই হলো। খাবারের ছবি তুলতে পারিনি।

IMG_20220625_184803.jpg

একটি সেট মেনু তে ছিল ফ্রাইড রাইস, চাপ, স্যতে ভেজিটেবল আর পটেটো ওয়েজেস। সাথে ছিলো ড্রিংকস। অন্য সেট মেন্যুতে ছিলো ফ্রাইড রাইস, চাইনিজ ভেজিটেবল, ফ্রাইড চিকেন, বাফেলো উংস, আর সাথে ছিলো চিকেনের একটি স্পেশাল প্রিপারেশন। এমনিতেই আমাদের প্রচন্ড ক্ষুধা লেগে ছিলো। সাথে খাবারের স্বাদও ছিলো অনেক ভালো। যার ফলে টেবিলে খাবার সার্ভ করার সাথেই আমরা খাওয়া শুরু করলাম। অবশ্য অর্ধেক খাওয়া হয়ে যাওয়ার পর আমি দু একটি ছবি তুলেছিলাম। যাই হোক খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম।

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানমিরপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আমাদের তো বড় বোন নেই তাই আমরাও এই ধরনের ট্রিট পাইনা। যা খুব ভালো লাগলো এবং খুশি হলাম আপনার পরিবারের আনন্দের সংবাদ শুনে। প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন সকল অবস্থায় হেফাজত করুন।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার দোয়ার জন্য।

 2 years ago 

ব্যক্তিগত গাড়ির যারা চড়ে তাদের চেয়ে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চড়ি, তারাই বেশি ভুক্তভোগী। মাঝে মাঝে কম সময়ে কোথাও যেতে পারলে বেশ ভালো লাগে।যাই হোক বোনের গাড়ি কেনা উপলক্ষে বেশ ভালো ট্রিট পেলেন।ভালো ছিলো ধন্যবাদ

 2 years ago 

ভোগান্তি সবারই হয়। তবে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যারা থাকে তাদের কষ্টটা বেশী। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।

 2 years ago 

সৌভাগ্যই বলতে হবে যে, এত অল্প সময়ে বনশ্রী থেকে মিরপুরে পৌঁছাতে পেরেছ। তবে তোমাকে নিয়ে আসলেই আমি খুবই চিন্তিত। যে হারে খাওয়া-দাওয়া করছ তাতে কোন দিন না কোন বিপদ ঘটে যায়। সম্ভব হলে খাওয়াটা একটু কমাও। আর আপুর গাড়িতো দারুন হয়েছে।

 2 years ago 

ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট এরকম ফাঁকা থাকলে শহরটাতে থাকতে মজা লাগতো।

 2 years ago 

ভোজন রসিক ভাই আমার, আপুর গাড়ি কেনার খুশিতে হঠাৎ ট্রিট বিষয়টা খুবই আনন্দের। তবেই রেস্টুরেন্ট গুগল ম্যাপের সাহায্যে খুব সহজেই পৌঁছে গেছে। আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে সেদিন ঢাকা কোন জ্যাম ছিল না। ইচ্ছে করছিল ঘুরে বেড়াই, কিন্তু জ্যামের ভয়ে ঢাকার দিকে ভুলেও যাওয়ার হয় না যদি ইমারজেন্সি কোন কাজ না থাকে। অসাধারণ ছিল আপনার অনুভূতি গুলো। গাড়িতে বসে ঢাকার যানজট সম্পর্কে আলোচনা গুলো করেছেন সে আলোচনাগুলো যারা দেশ চালাচ্ছে তারা যদি ভাবতো হয়তো কিছুটা হলেও জনগণের ভোগান্তি কমতো। অসাধারণ ছিল আপনার অনুভূতি গুলো, সেই সাথে নতুন রেস্টুরেন্টে খাওয়ার আনন্দ, আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

আমিও নিতান্ত বাধ্য না হলে ঢাকায় আসি না।

 2 years ago 

আপুর বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার আনন্দই আলাদা। আবার তাও যদি হয় নতুন গাড়ি কেনার উপলক্ষে তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। প্রচন্ড খিদে লাগার পর দারুন কিছু সুস্বাদু খাবার খেয়েছেন আপনি।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন যখন খাওয়া শুরু করি তখন বেশ ক্ষুধার্ত ছিলাম।

 2 years ago (edited)

খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কোন কম্প্রোমাইজ নাই । হি হি। আপনি হচ্ছেন খাদ্য প্রেমী মানুষ। আপনি খেতে ভালবাসেন তা তো জানি।খাবারের যে সেট মেনু টি ছিল তাতে তো মাথা নষ্ট। তবে সত্যি বলতে আপনার সাথে সেই কফি টাইমে বার্গার এর স্বাদ টা এখনও মনে আছে। কিন্তু সেই স্বাদ এখন আর কোন বার্গারে পাই না। সাদা রং এর গাড়ী আমারও পছন্দ। ভাল থাকবেন।

 2 years ago 

ভাই প্রতিদিন সকালে উঠে চিন্তা করি আজকে থেকে খাওয়া-দাওয়ার পুরো কন্ট্রোল। কিন্তু সেটা পরিকল্পনায় থেকে যায় বাস্তবায়ন আর হয় না।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60497.39
ETH 2637.52
USDT 1.00
SBD 2.56