কন্যার মুখে হাসি ফোটানো। ১০% সাই-ফক্স।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


দুদিন আগে পরিবার নিয়ে বাইরে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। সে গল্প ইতিমধ্যেই আপনাদের কাছে করেছি। জায়গাটা আমার বাড়ি থেকে খুব একটা দূরে নয়। সেখানে অনেকটাই গ্রামীণ প্রাকৃতিক পরিবেশ ছিলো। যার ফলে আমরা সকলে বেশ উপভোগ করেছিলাম সেখানকার সৌন্দর্য। কিন্তু সেখানে যাওয়ার আগে মেয়েকে কথা দিয়েছিলাম সেখানকার একটি ফাস্টফুড শপ থেকে তাকে বার্গার খাওয়াবো।

IMG_20220521_182454.jpg

সেই দোকানটি বন্ধ থাকায় সে পরিকল্পনা সফল হয়নি। কিন্তু ছোট মানুষ এতকিছু বুঝতে চায় না। দোকান বন্ধ দেখে তার মুখ দেখলাম ভার হয়ে গিয়েছে। বুঝতে পারলাম এখন তাকে বার্গার না খাওয়াতে পারলে বাসায় গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হবে। কিন্তু এদিকটাতে আর কোন বার্গার এর দোকান নেই। এখন তাকে বার্গার খাওয়াতে হলে হয় ফুড পান্ডাতে অর্ডার দিতে হবে বাসায় পৌঁছে। না হলে আবার ঠিক বিপরীত দিকে যেতে হবে। কি করা যায় সেটা চিন্তা করছিলাম।

IMG_20220521_182410.jpg

হঠাৎ করে মনে পড়ল আমাদের এলাকাতে এলাকারই এক ছোট ভাই একটি ছোট্ট ফাস্টফুড শপ দিয়েছে। সেখানে কখনো পরিবারের লোকজন নিয়ে যাওয়া হয়নি। আসলে সেখানে পরিবার নিয়ে যাওয়ার মত খুব একটা ব্যবস্থাও নেই। তারপর ও চিন্তা করলাম আজ তাহলে সেখান থেকেই মেয়েকে বার্গার খাওয়াই। তাহলে আমাকে আর কষ্ট করে অন্য কোথাও যেতে হবে না। যদিও সেই দোকান থেকে দু-একবার ফুডপাণ্ডার মাধ্যমে বার্গার অর্ডার দিয়ে খাওয়া হয়েছে। আবার আমি নিজেও কয়েকবার সেখান থেকে কিনে নিয়ে গিয়েছি বাসায়। কিন্তু সেখানে বসে কখনো খাওয়া হয়নি।

IMG_20220521_180534.jpg

যাই হোক স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে সে দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এই বার্গারের দোকানটি আমার বাসার খুব কাছেই। আমার বাসা থেকে সেখানে হেঁটে যেতে পাঁচ মিনিট লাগে। যার ফলে আমরা নদীর পাড় থেকে ঘুরে রিক্সা করে সেই বার্গারের দোকানের সামনে এসে নামলাম। তারপর সেই দোকানে বসে প্রথমে আমরা মেনু কার্ড দেখছিলাম যে কি কি পাওয়া যায়। আমার ইচ্ছা ছিল সেখান থেকে চাওমিন খাওয়ার। কিন্তু দোকানের যে শেফ সে জানালো এখন চাওমিন হবে না। তারা এখনো চাওমিন বানানো শুরু করেনি। অগত্যা কি আর করা।

IMG_20220521_180435.jpg

আমরা অর্ডার করলাম চিকেন বার্গার আর চিকেন ফ্রাই। অর্ডার দেয়ার পর আমাদেরকে বলল কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। কারণ এখনই তৈরি করে দেয়া হবে। আমরা বসে সেখানে গল্প করছিলাম। ছোট্ট একটি দোকান ১০ থেকে ১২ জন সর্বোচ্চ এখানে বসতে পারবে। কিন্তু সেই জায়গাটাতেই তারা পেইন্ট করে সুন্দর করে সাজিয়েছে। দোকানের ভিতর খুব একটা খারাপ লাগছিলো না। আমরা ছাড়া আর কোন কাস্টমার সেখানে ছিল না। যার ফলে আমরা নিজেদের ভেতর গল্প করতে পারছিলাম।

IMG_20220521_180356.jpg

যাইহোক কিছুক্ষণ বসে থাকার পর প্রথমে সে আমাদেরকে বার্গার সার্ভ করলো। সে বললো চিকেন ফ্রাই এখন ভাজতে হবে। আরো কয়েক মিনিট সময় লাগবে। আমরা বললাম কোন সমস্যা নেই। আপনি আস্তে আস্তে কাজ করুন। কারণ আগে ভেজে রাখা খাবার থেকে একদম টাটকা ভাজা চিকেন ফ্রাই খেতে অনেক মজা লাগবে। আমরা বার্গার খাওয়া শুরু করলাম। বার্গারের সাইজ খুব একটা বড় নয় বরং কিছুটা ছোটই বলা যেতে পারে। কিন্তু খেতে বেশ মজা। চিকেন এর পরিমাণ ছিলো যথেষ্ট।

IMG_20220521_180943.jpg

বার্গার খাওয়া শেষ হলে আমাদেরকে চিকেন ফ্রাই দিয়ে গেলো। তারপর আমরা চিকেন ফ্রাই খাওয়া শুরু করলাম। এখান থেকে এর আগে কখনো চিকেন ফ্রাই খাওয়া হয়নি। শুধু বার্গার খেয়েছি। কিন্তু চিকেন ফ্রাইতে কামড় দিয়ে বুঝতে পারলাম এদের চিকেন ফ্রাইয়ের সাদ ও মন্দ নয় বরং বেশ ভালোই বলতে হবে। আস্তে আস্তে করে আমরা আমাদের খাওয়া শেষ করলাম। আমার মেয়ে এখানকার খাবার খুবই পছন্দ করেছে। তার হাসি মুখ দেখে সেটা বুঝতে পারলাম। তারপর বিল মিটিয়ে সেখান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

IMG_20220521_180652.jpg

IMG_20220521_180641.jpg


আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

কন্যার মুখে হাসি ফোটাতেই হবে ভাই। সে যে আরেক টা মা। নিজের মনের ভিতর একটা প্রশান্তি কাজ করে যদি পরিবারের সাথে কিছুটা সময় দেয়া যায়। তবে আপনিও যে ভোজন রসিক তা কিন্তু আমি জানি। একদিন যাবো ক্ষন খাওয়াতে হবে কিন্তু বার্গার। ঐ যে কফি টাইমে আমি আপনি খেয়েছিলাম বার্গার । সেটাও দারুন ছিল। ভাল থাকবেন । ধন্যবাদ।

 2 years ago 

মেয়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে আসলেই অনেক ভালো লাগে ভাই। বার্গার খেতে ইচ্ছা হলে যেকোনো দিন বিকালে চলে আসবেন। একসাথে বার্গার খাওয়া হবে আড্ডা ও দেয়া যাবে।

 2 years ago 

একজন বাবা হিসেবে কন্যার মুখের হাসি তার কাছে সব থেকে বেশি সুখের। সন্তানের সুখের হাসি বাবা মা যে পরিমাণ তৃপ্তি পায়, যে পরিমাণ প্রশান্তি পায় তা একমাত্র বাবা এবং সন্তান ছাড়া অন্য কারো পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। আমরা যখন খুশি থাকি, ভালো থাকি বাবা মা রা খুবই খুশি থাকে আর যখন আমরা অসুস্থ থাকি বা মন খারাপ থাকে বাবা-মার অনেক কষ্ট পাই। যে সন্তানের কোন আবদার বা চাহিদা আমরা হয়ত পূরণ করতে পারলাম না। প্রতিটা বাবা-মায়ের কাছে সন্তান হচ্ছে সবথেকে বেশি প্রিয় জিনিস যাকে খুশি রাখার জন্য পৃথিবীর সবকিছু তার হাতের মুঠোয় এনে দিতেও আমরা চাই। আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া বার্গার চিকেন ফ্রাই দুটোই খেয়েছেন দুটোই কিন্তু আমার বেশ প্রিয় খাবার। এই ভাবেই অব্রিকে হাসি খুশি রাখবেন সবসময়।

 2 years ago 

একটা সময় ব্যাপারগুলি বুঝতে পারতাম না। নিজের বাবা-মায়ের সাথে অনেক ব্যাপার নিয়ে রাগারাগি করেছি জিদ করেছি। কিন্তু নিজে বাবা হওয়ার পর এখন এই জিনিসগুলো খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি। আর নিজের পুরনো কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত হই।

 2 years ago 

যাক অবশেষে হাসি ফুটানো গেলো।বাবারা তো কন্যার মুখে হাসি ফুটানো জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যায়। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

 2 years ago 

সেদিন বার্গার খাওয়ার পর ও আসলেই অনেক খুশি হয়েছিলো। মেয়ের মুখে হাসি দেখলে যেকোনো বাবারই অনেক ভালো লাগে।

 2 years ago 

কন্যার মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছেন এটাই অনেক খুশির ব্যাপার। ছেলেমেয়ে ভালো থাকলেই ভালো লাগে জ। আর ছেলে মেয়েদের জন্য কিছু করতে পারলে তারা খুশি হয় তাহলে খুব ভালো লাগে। আর বিশেষ করে বাবারা কিন্তু মেয়েদের প্রতি বেশি দুর্বল থাকে। তবে পরিবারের সাথে মাঝে মাঝে আসার সময় কাটানো উচিত।

 2 years ago 

আসলে ও সন্তানের জন্য কিছু করতে পারলে নিজের কাছেই ভালো লাগে। এটা আগে বুঝতে পারতাম না। নিজে বাবা হওয়ার পর বুঝতে শিখেছি।

 2 years ago 

আহা বার্গার দেখে তো খেতে ইচ্ছে করছে আমার।এই ধরণের অনেক দোকান রয়েছে যেগুলোর খাবারগুলো আসলেই খুব মজার হয়।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন এইসব ছোট দোকানের খাবার অনেক সময় বেশ মজার হয়। এই দোকানের খাবার টাও অনেক মজার ছিলো।

প্রথমে আপনার পিতৃত্ব বোধের কায়মনে প্রশংসা করছি। মেয়ের সাথে ঘুরাঘুরি করতে আপনার সময় দেওয়া দেখে বুঝতে পারছি আপনি আসলে ছেলে মেয়ে ভক্ত লোক। বেড়ানো আর খাওয়াটা একটা দর্শন। বাবার কাছে ভাল থাক পৃথিবীর সকল ছেলে মেয়ে এবং পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাক সকল বৃদ্ধাশ্রম ।এই কামনায়।

 2 years ago 

মেয়ের সাথে সময় কাটাতে আমি খুবই পছন্দ করি। ওর সাথে যে সময়টা আমি কাটাই সে সময়টা আমি অনেক উপভোগ করি।

আমিও একই বেড়াজালে। আমারও একটা পাঁচ সাড়ে পাঁচ মেয়ে বছরের রয়েছে। সবাইকে নিয়ে ভালো সময় পার করেন এই কামনা।

 2 years ago 

ভাইয়া,পরিবারকে নিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের উপভোগ করার সাথে সাথে মেয়েকে কথা দিয়েছিলেন ওখানে রেষ্টুরেন্টে থেকে আপনি বার্গার খাওয়াবেন ওই পোস্টটি আমি পড়েছি। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বা সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বাবা-মা যে কত কিছু করে তা বলে বা লিখে প্রকাশ করা যাবে না।আপনার মেয়ের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আপনি বার্গার খাওয়ানোর জন্য অন্য রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেছেন। ভাইয়া, যে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছেন সেই রেস্টুরেন্টের পরিবেশটা বেশ দারুন বার্গার আর চিকেন ফ্রাই রেসিপি গুলো দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে।আর তরতাজা খাবার সত্যি অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে।ধন্যবাদ ভাইয়া, এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।।

 2 years ago 

খাবারগুলো আসলে বেশ মজার ছিলো। এতটা আশা করিনি।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74