নতুন রেস্টুরেন্টে খাওয়ার অভিজ্ঞতা। ১০% সাই-ফক্স।
কয়েকদিন আগে আমরা পরিবারের সবাই মিলে গিয়েছিলাম বাইরে। উদ্দেশ্য ছিলো মেয়ের ভালো ফলাফল উদযাপন করা। অবশ্য আমি তাকে কথা দিয়ে ছিলাম যে সে যদি ভালো ফলাফল করতে পারে তাহলে তাকে বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাবো। আমরা বাসা থেকে প্রথমে একটি পার্কে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার মেয়ে বেশ কিছুক্ষণ খেলাধুলা করার পর আমরা সেখান থেকে বের হয়ে একটি রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
শহরে নতুন একটি রেস্টুরেন্ট হয়েছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে সেই রেস্টুরেন্ট নিয়ে আলোচনা বেশ আলোচনা হয়। সবাই বলে সেখানকার ইন্টেরিয়র ডিজাইন নাকি খুব সুন্দর। পার্ক থেকে বের হয়ে আমরা একটা রিক্সা নিয়ে সোজা সেই রেস্টুরেন্টে উপস্থিত হলাম। রেস্টুরেন্টটি শহরের ভিতরে অবস্থিত হলেও। নতুন হওয়ায় আমার এখনো সেখানে যাওয়া হয়নি। নতুন যে কোন রেস্টুরেন্টে যাওয়ার সময় আমার ভেতর এক ধরনের কৌতূহল কাজ করে।
সেখানে পৌঁছানোর পর নিচে দাঁড়িয়ে থাকা সিকিউরিটি গার্ড আমাদেরকে জানালেও রেস্টুরেন্ট তিন তলায়। সিঁড়ি দিয়ে উঠে আমরা সোজা তিনতালায় চলে গেলাম। রেস্টুরেন্টটি তিন তলায় অবস্থিত হওয়ায় ব্যাপারটা আমার কাছে খুব একটা পছন্দ হয়নি। এতো উপরে রেস্টুরেন্ট হলে সেখানে লোকজন খুব একটা আসার কথা না। কিন্তু আমরা একটি ভুল করেছি। সেই রেস্টুরেন্টে ওঠার জন্য একটি ছোট্ট ক্যাপসুল লিফট ছিলো। আমরা সেটা দেখতে পাইনি। এজন্য সিঁড়ি দিয়ে রেস্টুরেন্টে উঠেছি। আসার সময়ে অবশ্য ক্যাপসুল লিফট দিয়েই নেমে ছিলাম।
যাইহোক উপরে পৌঁছে আমরা রেস্টুরেন্টের ভেতরে ঢুকে পছন্দমত একটি জায়গায় বসে পড়লাম। প্রথমে যে জিনিসটি দেখলাম সেখানে কাস্টমার সংখ্যা একেবারেই কম। আমরা বসার কিছুক্ষণের ভেতরে আমাদেরকে ওয়েলকাম ড্রিঙ্কস সার্ভ করা হলো। ওয়েলকাম ড্রিংকসের সাদটা বেশ রিফ্রেশিং ছিলো। এই বিষয়টা একটু ভাল লাগলো। কারণ আমাদের শহরে এখন পর্যন্ত অন্য রেস্টুরেন্টগুলোতে এই রেওয়াজটা চালু হয়নি।
ওয়েলকাম ড্রিঙ্কস দেয়ার পর আমি ওয়েটার এর কাছে মেনু চাইলাম। যদিও আমি ফেসবুকে তাদের মেনু দেখেছিলাম আগেই। কিন্তু রেষ্টুরেন্টে পৌছে তাদের মেনু দেখে আমি খুবই হতাশ হলাম। এত সুন্দর করে সাজানো একটি রেস্টুরেন্টে খুবই খারাপ একটি মেনু কার্ড আমার কাছে দেয়া হলো। নরমাল একটি কাগজে কম্পিউটার কম্পোজ করে বানিয়েছে। কিন্তু হাতে পাওয়ার পর বিপত্তি হলো।
আমার মেয়ে সব সময় ফ্রাইড রাইস চিকেন ফ্রাই এই ধরনের খাবার পছন্দ করে। আমরা যখনই রেস্টুরেন্টে খেতে চাই তার জন্য সেট মেনু অর্ডার করি। কিন্তু এখানে দেখি কোন সেট ম্যেনুর অপশন নেই। এই ব্যাপারটাতে আমি খুবই বিরক্ত হলাম। আজকালকার এমন রেস্টুরেন্ট একদমই দেখা যায় না যেখানে সেট মেনুর কোনো ব্যবস্থা নেই।
যাইহোক কী আর করা যেহেতু এসেছি কিছু একটা খেয়ে যেতে হবে। তাই আমরা অর্ডার করলাম মাটন কাচ্চি বিরিয়ানি। সাথে দিতে বললাম ককটেল। খাবার অর্ডার করার ১৫/২০ মিনিট পরে তারা কাচ্চি বিরিয়ানি সার্ভ করলো। তারা বিরিয়ানির সাথে এক ধরনের চাটনি সার্ভ করেছিলো। একজনের খাওয়ার উপযুক্ত দুপিস মাটন সহ কাচ্চির দাম নিয়েছিলো ৪০০ টাকা। যখন খাওয়া-দাওয়া পর্ব চলছিলো এর ভিতর আজান দিয়ে দিলো। আমি ওদেরকে রেখে পাশেই একটি মসজিদ ছিল সেখানে নামাজ পড়তে গেলাম। নামাজ পড়ে আসার পর ওদের খাওয়া দাওয়া শেষ হলো।
এবার বিল দেয়ার পালা। বিল পরিশোধ করার সময় আমি তাদের কাছে একটু অভিযোগ করলাম। আমি তাদেরকে জানালাম যে ঢাকা শহরে সবচেয়ে নামকরা যে কাচ্চি বিরিয়ানি সেটার থেকে আপনাদের দাম অনেক বেশি। কারণ ঢাকার সুলতানস ডাইন এ চার পিস মাংস, দু'জন খাওয়ার উপযোগী রাইস, বোরহানি এবং এক পিস রোস্ট এই সব কিছু সহ যে প্যাকেজ সেটার দাম ৫৪০ টাকা। আর আপনারা এই মফস্বল শহরে শুধু দুই পিস মাটন দিয়ে কাচ্চির দাম রাখছেন ৪০০ টাকা। এটা তো ঠিক হলো না। অভিযোগ শুনে তারা জানালো তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। তারপর আমরা সেখান থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
এখন রেটিং এর পালা
রেস্টুরেন্টের পরিবেশ--৯/১০
খাবারের স্বাদ-৭/১০
দাম-৫/১০
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনার সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখার নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | খাবাসপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
জেলা শহরের রেস্টুরেন্ট হিসেবে দাম টা আসলেই অনেক বেশি। তবে রেস্টুরেন্টর ডেকোরেশন যে চমৎকার তা অস্বীকার করবো না। এ ধরনের রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবার চাইতে গল্পগুজব করেই বেশি মজা হা হা হা হা।
ঠিকই বলেছ এইসব জায়গায় খাওয়া-দাওয়া করার থেকে গল্পগুজব করতেই বেশি ভালো লাগে । সময় কাটানোর জন্য বেশ ভালো একটি জায়গা ।
আমার অভিজ্ঞতাও অনেকটা এমন ছিলো কয়েকদিন আগে নতুন রেস্টুরেন্ট এ যাওয়ার পর।আমি তো না খেয়েই বেরিয়েছিলাম।এসব অভিজ্ঞতা জাস্ট বিরক্তিকর।
পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম তো এইজন্য বের হয়ে আসতে পারিনি । আসলেই এই ধরনের পরিস্থিতি দেখলে খুব বিরক্ত লাগে ।
ভাইইয়া আপনি নতুন এই রেস্টুরেন্টে খুব ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। জ্বি ভাই আপনি ঠিক বলেছেন প্রায় রেস্টুরেন্টে এরকম দাম একটু বেশি রাখে এজন্য খুব বিরক্ত লাগে কোন রেস্টুরেন্টে খেতে যেতে। কিন্তু রেস্টুরেন্টের পরিবেশ দেখে মনে হল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ছিল। আপনার খাবারের ছবি গুলো দেখে খুব লোভনীয় লাগছিল। আমার খুব খেতে ইচ্ছা করছেল। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে আপনি পরিবার নিয়ে খুব সুন্দর একটা সময় কাটিয়েছেন।
রেস্টুরেন্টের পরিবেশ এবং খাবারের মান ভালোই ছিল । শুধু দামটা একটু অতিরিক্ত বেশি হয়েছে ।
ভাইয়া আসলে কিছু বলার নেই প্রতিটা নতুন রেস্টুরেন্টে এভাবেই দাম শুরু হয়। রেস্টুরেন্টে
প্রবেশ করার পর যখন এসব দেখা যায় তখন সত্যিই বিরক্ত লাগে। তবে রেস্টুরেন্টটা কিন্তু অনেক সুন্দর।
এসব কারনেই এই সমস্ত রেস্টুরেন্ট ভালো ব্যবসা করতে পারে না । দেখবেন অতি দ্রুত ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে ।
প্রথমেই আপনার মেয়ে ভাল ফলাফল করেছে এর জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা জানাই। আসলেই মেয়েকে যে কথা দিয়েছিলেন সেই কথা মোতাবেক তাকে বাইরে নিয়ে গিয়েছেন সেই সাথে পার্কেও নিয়ে গেছেন। আশাকরি মেয়ের সাথে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার মুহূর্তগুলো অনেক সুন্দর ছিল। এবং আপনি ওই মুহূর্তগুলো উপভোগ করেছেন ।ধন্যবাদ আপনাকে।
খাওয়া পর্বটা সে ভালই উপভোগ করেছে । সে এমনিতেই বাইরে খেতে খুব পছন্দ করে । ধন্যবাদ আপনাকে ।
আমি তো বিরিয়ানির দাম শুনে চোখে সরষের ফুল দেখলাম। আমাদের হাজী বিরিয়ানি আছে দাদা। ১০০ টাকায় এক প্লেট চিকেন বিরিয়ানি । হিহি। আমন্ত্রণ রইল।ইন্ডিয়া আসলে আপনার বোন আপনাকে হাজী নিয়ে যাবে অবশ্যই।
আমন্ত্রণ গ্রহন করলাম । ভুলে যাবেন না যেন দিদি । হা হা হা
রেস্টুরেন্টট এর ডেকোরেশন সত্যিই চমৎকার, কিন্তু ওই যে একটা জায়গায় বাধা, কিছু কিছু রেস্টুরেন্টের মালিক ভালো ডেকোরেশন করে খাবারের দাম মাত্রাছাড়া করে দেয় এবং পরিমাণে খুব কম দিয়ে থাকেন। আপনি অভিযোগ করে মন্দ করেননি, এদের বলা উচিত, না হলে রেস্টুরেন্টের ঝলকানি দেখিয়ে পকেট থেকে টাকা বের করে নেবো, এরকম মতলব এঁটে এরা বসে থাকে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাই। এটাই মনে হয় মালিকের উদ্দেশ্য ।